শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

প্রেমে ব্যর্থতাই সু চির মুসলিম বিদ্বেষী হয়ে ওঠার কারণ!

১৯৬৪ সাল। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সু চি। সে সমমই তারেক হায়দার নামে এক পাকিস্তানি যুবকের প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই প্রেমের পরিণতিতে গড়ায়নি। দারুণভাবে ব্যথিত হন সু চি।

সেই সু চি মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর মনে করেছিলেন দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সামরিক শাসনের যাতাকলে পিষ্ট আর অত্যাচার নির্যাতন থেকে হয়ত মুক্তি মিলবে। কিন্তু মিলেনি। তার বিপরীতে সম্প্রতি সময়ে রাখাইন প্রদেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞে অং সান সু চি নিরব ভুমিকা পালন করছেন।

তার কারণ নিয়েও চলছে বিচার বিশ্লেষণ।তাদের অনেকে বলছেন, এক মুসলিম যুবক হায়দারের সঙ্গে প্রেম করে সংসার করতে না পারার ব্যর্থতাই সু চিকে মুসলিম বিদ্বেষী করে তোলেছে।

ইংরেজি এবং বনবিদ্যা নিয়ে অক্সফোর্ডে পড়তে গেলেও পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ পাননি তিনি।

পরে অবশ্য ভর্তি হন দর্শন বিদ্যায়। সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় তারেক হায়দারের। তখন তিনি পাকিস্তানের কূটনীতিক ছিলেন। সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতি নিয়ে অক্সফোর্ডে পড়তে এসেছিলেন তারেক। সু চির মা ছিলেন কূটনীতিক। একই পেশার তারেকের প্রেমে পড়তে সু চির সময় লাগেনি।

সু চির জীবনী লেখক ও সাংবাদিক পিটার পপহ্যাম বলেছেন, ‘সংস্কৃতিগতভাবে অনেক পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও সু চি এবং তারেক গভীর প্রেমে পড়েছিলেন।’

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তারেককে খুশি করতে ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলাও বন্ধ করেছিলেন সু চি। প্রেম নিয়ে সু চি এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে, তৃতীয় বিভাগে কোনো রকমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অক্সফোর্ডের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে তারেক পাকিস্তানে ফিরে যান। সু চি চাইলেও তারেক তাকে বিয়ে করেননি।

পরে হতাশায় বিমর্ষ হয়ে পড়েন মিয়ানমারের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির এই নেত্রী। সেই সময় থেকেই তিনি ধীরে ধীরে মুসলিম বিদ্বেষী হয়ে ওঠেন।

পপহ্যাম আরও লিখেছেন, সু চি প্রায় বছরখানেক বিরহে বিমর্ষ ছিলেন। এই সময়ে ইংল্যান্ডে পুরনো পারিবারিক বন্ধু স্যার পল গর বুথ ও তার স্ত্রী, ছেলে ক্রিস্টোফার সু চির প্রয়াত স্বামী মাইকেল অ্যারিসের সঙ্গে পরিচয় হয় মিয়ানমারের এই নেত্রীর। অতঃপর ১৯৭২ সালে তারা বিয়ে করেন।’

পপহ্যাম ‘দ্য লেডি অ্যান্ড পিকে’লিখেছেন, সু চির ব্যক্তিগত জীবনের অনেক কিছুই জটিলতায় পূর্ণ এবং বৈপরীত্যে ভরা। আর এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা নির্যাতনের পেছনে সু চির ব্যর্থ প্রেমের কাহিনীকেও আজকাল উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ