বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮

সম্পর্কচ্ছেদ করায় প্রেমিককে হত্যা করে রান্না করলেন প্রেমিকা!

দীর্ঘ ৭ বছরের সম্পর্ক শেষ করে ছেড়ে চলে গেলেন প্রেমিক। চরম দুঃখে, হতাশায় প্রাক্তন প্রেমিকের উপরে ভয়াবহ রকমের প্রতিশোধ নিলেন ত্রিশ বছর বয়সী এক নারী। প্রেমিককে খুন করার পর তার দেহ কেটে রান্না করে খাওয়ালেন শ্রমিকদের। ৩ মাস আগে আরব আমিরাতে মরোক্কোর বংশোদ্ভূত এক নারী এ ঘটনা ঘটান। সম্প্রতি ঘটনাটি প্রকশিত হয়।

হত্যাকাণ্ডের আগে প্রেমিক ওই নারীকে জানান, নিজ দেশে গিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করবেন তিনি। ঘটনাটি শুনে সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। পরে সুযোগ বুঝে হত্যা করে প্রেমিকের মাংস দিয়েই বানিয়ে ফেলেন বিশেষ এক আরবি খাবার ‘মাচবুস’। সেই খাবার খাইয়ে দেন বাড়ির বাইরে কর্মরত নির্মাণ সংস্থার পাকিস্তানি কর্মীদের।
আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম ‘খলিজ টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির ওমান সীমান্তবর্তী শহর আল আইনে এই ভয়ঙ্কর কাণ্ডটি ঘটে।

পুলিশ জানায়, হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান নারীর প্রাক্তন প্রেমিক। নিখোঁজে যুবকের ভাই এসে খোঁজখবর করতে থাকেন। কিন্তু কিছুই স্বীকার করেন না মহিলা। তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
অবশেষে সম্প্রতি ওই মহিলার বাড়ির ব্লেন্ডারে একটি দাঁত পাওয়া যায়। তাতে শুরু হয় সন্দেহ। ডিএনএ টেস্ট করে জানা যায়, ওই দাঁত তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকেরই। পরে চাপের মুখে তিনি স্বীকারও করেন এই খুনের কথা এবং হত্যা-পরবর্তী রান্নাবান্নার কথা।
ওই নারীকে গ্রেফতার করেছে আল আইন পুলিশ। বর্তমানে তাকে মনোচিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।

ভারতে পিরিয়ডের কারণে গোয়ালঘরে রাখা কিশোরীর মর্মান্তিক মৃত্যু

পিরিয়ড চলার কারণে একটি গোয়ালঘরে আলাদা থাকতে বাধ্য করা হয় ১৪ বছরের কিশোরী বিজয়লক্ষীকে। ঘূর্ণিঝড় ‘গাজা’ আঘাত হানার রাতে ঘরটি থেকে বের হতে পারেনি সে। আটকা পড়া অবস্থায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় তার। মর্মান্তিক ঘটনাটি ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের।

বিজয়লক্ষ্মীর পরিবার জানায়, ১৬ নভেম্বর রাতে ঝড়ের সময় ঘরটির ভেতরে আটকা পড়েছিল সে। পরে ভূমিধ্বসে ঘরটি দেবে যায়।
মেয়েটির পরিবার গোয়ালঘরের পাশে বড় ঘরে ছিল। তারা সবাই ঘর থেকে বের হতে পেরেছিল এবং কেউই হতাহত হয়নি। বিজয়লক্ষ্মীর দাদি ভিসালক্ষ্মী বলেন, ঘরটির ওপরে একটি গাছ পড়ায় কেউ তার নাতনিকে বের করে আনতে পারেনি। পরে ভূমিধ্বসের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, পিরিয়ডের সময় মেয়েদের অন্য ঘরে থাকতে বাধ্য করার রীতির বিরুদ্ধে জেগে উঠতে সবার চোখ খুলে দেয়ার মতো ঘটনা।
ঘূর্ণিঝড় গাজার আঘাতে ভারতের তামিলনাড়ুতে ৪৬ জন মারা যান।
ভারতের অনেক গ্রামীণ এলাকায় পিরিয়ড সম্পর্কে কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। অনেকে মনে করে মেয়েরা এ সময় অপরিচ্ছন্ন থাকে। তাই তাদেরকে গোয়ালঘর অথবা রান্না ঘরে থাকতে বাধ্য করা হয়।

মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৮

'নিজেকে এতটা অসহায় কোনোদিনও মনে হয় নাই'

আজ সকালে হাতিরঝিলে বাইক অ্যাক্সিডেন্টে একজন স্পট ডেড আর একজন কোনোরকমে বেঁচে ছিল।

আমি প্রায় ৩০ মিনিটের বেশি একা গাড়ি থামানোর চেষ্টা করলাম আর সাথে যে এত্তগুলো মানুষ দেখছেন ইনারা তামাসা দেখছিল। সাথে তিন জন র‍্যাবের লোকও ছিল, কত করে বললাম ভাই আপনারা একটু হেল্প করেন- একটা সিএনজি আটকান কিন্তু তারা কোনো স্টেপ না নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকে।
একটা পুলিশের গাড়ি আটকালাম, তাদের কাছে হেল্প চাইতে বলল, ‘এটা আমাদের ইউনিট না।’
সচিবালয়ের গাড়ি ধরে বললাম ভাই একটু সাহায্য করেন, হয়তো একজনকে বাঁচানো যাবে এখনো। উত্তরে বলে, ‘অমুক সচিবের গাড়ি, তাড়া আছে।’
একটা টিভি চ্যানেলের গাড়ি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি পাশ দিয়ে দেখে গেল, কিন্তু থামালো না৷
৯৯৯ এ কতবার কল দিলাম, আশপাশের কয়েকজনকে দিয়ে কল দেওয়ালাম, কিন্তু আনঅ্যাভেইলেবল (Unavailable) দেখাচ্ছিল।
অবশেষে প্রায় ৩০ মিনিট পর একটা সিএনজিতে করে নেওয়া হল।
কোথায় মানবতা? মানুষ মরে পড়ে থাকলে কেউ এগিয়ে আসে না। নিজেকে এতটা অসহায় কোনোদিনও মনে হয় নাই। আজ যদি আপনার পরিবারের কারো সাথে এমন হয় পারবেন চুপ থাকতে? নানা টাল্টি-বাল্টি করে পালাতে? এমন সেলফিস জাতি আমি আজ প্রথম দেখলাম।

কুমার বিশ্বজিতের 'বলতে পারিনি'

কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের নতুন গান-ভিডিও 'বলতে পারিনি' এখন 'রবিস্ক্রিনের টপ ২০'-এর শীর্ষস্থানে। কিছুদিন আগে এই প্ল্যাটফর্মে এক্সক্লুসিভলি প্রকাশিত গানটি ১৮ নভেম্বর সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বাংলাঢোলের ইউটিউব চ্যানেলে। এ উপলক্ষে লাইভে এসেছিলেন গানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিল্পী ও কুশলীরা। 

একটি গানের জন্য শিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালকের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকে মিউজিক ভিডিও নির্মাতা ও মডেলদের। ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় 'বলতে পারিন' সংশ্লিদের নিয়ে লাইভে এসে গানের নেপথ্য কাহিনি বলেছেন কুমার বিশ্বজিৎ। রবিস্ক্রিন অ্যাপ, বাংলাঢোল ও রবিস্ক্রিনের ফেসবুক পেইজ থেকে একযোগে প্রচারিত লাইভে শিল্পীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন গানটির গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক তরুণ মুন্সী, নির্মাতা সৈকত নাসির, মডেল মীম মানতাসা, ফারহান খান রিও ও বাংলাঢোলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক। 
বাংলাঢোল স্টুডিও থেকে প্রচারিত লাইভে দর্শকদের উদ্দেশে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় দিয়েছি আপনাদের জন্য। মাঝে মধ্যে সার্থক হয়েছি, কখনো কখনো ব্যর্থ হয়েছি। আশা করি গানটি আপনাদের ভালো লাগবে। ' 
দেশীয় কনটেন্টের জনপ্রিয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম রবিস্ক্রিনে সমাদৃত হয়েছে 'বলতে পারিনি'। এবার ইউটিউবের দর্শক বাংলাঢোলের চ্যানেল থেকে অনায়াসে উপভোগ করতে পারবেন মিউজিক ভিডিওটি। পাশাপাশি দেশীয় অন্যান্য স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মেও রয়েছে গানটি। যে কেউ ২৪৬৪৬ নম্বরে ডায়াল করে এটি শুনতে পাবেন।

‘কেউ আমারে আটকাইয়া রাখতে পারব না’

দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিলেও ক্লাসে কখনো দ্বিতীয় হয়নি কামরুন নাহার লিজা। শুধু তা-ই নয়, চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতাসহ আরো নানা বিষয়ে রয়েছে তার দক্ষতা।


২০১১ সালের কথা। ত্রিশালের চিকনা মনোহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢুকল ছোট্ট একটি মেয়ে। জীর্ণ পোশাক আর শীর্ণ দেহের মেয়েটি চোখ পিটপিট করে তাকাচ্ছিল প্রধান শিক্ষকের দিকে। জানাল, তার নাম লিজা। মেয়ের এক হাতে ধরে আছেন মা। কেন এসেছে—প্রধান শিক্ষক এমন প্রশ্ন করতেই মেয়েটির চটপট উত্তর—‘আমি এই স্কুলে পড়তে চাই, স্যার। আমি ভালো করে পড়াশোনা করব। আপনি দেইখেন, স্যার। কেউ আমারে আটকাইয়া রাখতে পারব না।’ বিশ্বাস করলেন প্রধান শিক্ষক। ব্র্যাক স্কুল থেকে পড়াশোনা করে আসা মেয়েটি ভর্তি হলো তৃতীয় শ্রেণিতে।
২০১৮ সাল চলছে। চলে গেছে বেশ কয়েকটি বছর। আত্মবিশ্বাসী, চঞ্চল মেয়েটি তার কথা রেখেছে।   ক্লাসে কখনো দ্বিতীয় হয়নি সে। এখন পড়ে ত্রিশাল নজরুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে। লিজা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চিকনা মনোহর গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। লিজা মা-বাবার তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। বাবা রফিকুল ইসলাম আগে দিনমজুরের কাজ করতেন, এখন অন্যের জমি বর্গা চাষ করে সংসারের খরচ জোগাড় করেন। মা পারভীন আক্তার সেলাইয়ের কাজ করেন। সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাওয়া অনেকটা স্বপ্নের মতো তাঁদের কাছে। কিন্তু নিজের চেষ্টায় ও কিছু মানুষের সহায়তায় সব প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করে এগিয়ে চলেছে। পিইসি ও জেএসসিতে বৃত্তি পেয়েছে। স্কুলের যেকোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সব সময় সেরা। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে উপজেলা, এমনকি জেলায়ও এখন তার পদচারণ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। যেকোনো ছবি আঁকতে বললে সময় নেয় ১০ মিনিট।
 পাশে পেয়েছে যাঁদের
লিজা চিকনা মনোহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন বর্তমানে দরিরামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাইয়ুম। অসাধারণ প্রতিভাধর, কিন্তু আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত মেয়েটির প্রতি বিশেষ একটা জায়গা তৈরি হয় তার মনে। দরিদ্র দিনমজুর বাবার অভাবের ছোঁয়া স্পর্শ করতে দেননি তিনি। উপজেলা পর্যায়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ হওয়ার পর যাতায়াতের ভাড়ার টাকার অভাবে জেলাভিত্তিক প্রতিযোগিতায় যেতে পারছিল না লিজা। তখন কাইয়ুম স্যারই তাকে নিয়ে যান জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। যাওয়ার মতো ভালো পোশাক না থাকায় তার ব্যবস্থাও করেন তিনি। প্রাথমিকের গণ্ডি পার হয়ে নজরুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির পরও নিয়মিত খোঁজখবর রাখতে শুরু করেন। লিজাও বাবার মতোই সম্মান করে সব পরামর্শ মেনে চলে তাঁর। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় আরেকটি ঘটনা ঘটে। অর্থনৈতিক দুর্দশা আর আশপাশ থেকে আসা বিয়ের প্রস্তাবে মেয়েটাকে বিয়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন মা-বাবা। বাধ সাধেন আব্দুল কাইয়ুম। লিজার বাড়িতে গিয়ে বিয়ের বিষয়ে তার মা-বাবাকে নিরুত্সাহিত করে ওর পড়াশোনার খরচের দায়িত্ব নেন।
এদিকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গড়া ত্রিশাল সায়েন্স ল্যাব শিক্ষা পরিবারের সদস্যরা তাকে নানা বিষয়ে শিক্ষা দিচ্ছে। সায়েন্স ল্যাব শিক্ষা পরিবারের সাজিদুল ইসলাম সাজু, ইউনুস জামিল রানা, আল ইমরান নুরুল্লাহ আল কাউছার বলেন, অদম্য লিজার স্বপ্নপূরণে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এতে লিজা যেমন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে, তেমনি অন্যরাও লেখাপড়ায় অনুপ্রাণিত হবে।
 লিজাকে নিয়ে যা বললেন শিক্ষকরা
আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘লিজা অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী, ক্লাসের প্রথম দিনই তার মেধা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সে সব সময় সেরা ছিল। তা ছাড়া ছবি আঁকা, কবিতা আবৃত্তি, রচনা প্রতিযোগিতা—সব ধরনের প্রতিযোগিতায় কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে যখন লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম, তখন আমি তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। লিজা একদিন দেশসেরা হয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখবে।’
নজরুল  বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভর্তির পর থেকে এই প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক লিজার প্রাইভেটের কোনো অর্থ নেন না। ওর প্রতিভাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সবাই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশা করছি, এবার এসএসসিতেও সেরা রেজাল্ট করবে।’
 আত্মপ্রত্যয়ী লিজা
ত্রিশালে শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ‘বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ ব্রিগেডের’ হয়ে সামাজিক দায়িত্ব পালনে লিজা সবার আগে থাকে। তার আত্মবিশ্বাসও খুব বেশি। এ প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম একটা ঘটনার উল্লেখ করেন। ব্রিগেড সদস্যদের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে সাইকেল সরবরাহ করা হয়। যারা সাইকেল চালাতে পারে না, তাদের শেখানোর ব্যবস্থা করা হয় স্কুলের পক্ষ থেকে। কিন্তু লিজার বেলায় ঘটল ভিন্ন ব্যাপার। স্কুল ছুটির পর লিজা তাকে সাইকেল দিয়ে দিতে বলল। রাতে শিখে কাল সাইকেল চালিয়ে স্কুলে আসবে। যেই কথা সেই কাজ। লিজা বিকেলে হেঁটে হেঁটে সাইকেল নিয়ে গেলেও বাড়ির আঙিনায় এক রাতে সাইকেল চালানো শিখে পরের দিন সকালে বাড়ি থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে স্কুলে এসে হেড মাস্টারের সামনে হাজির হয়ে বলে—‘স্যার, আমি সাইকেল চালানো শিখে ফেলেছি।’
লিজা দরিদ্র ঘরের সন্তান হলেও ব্যক্তিগত অনুদান (আব্দুল কাইয়ুম ব্যতিক্রম) নিতে নারাজ। তার পারিবারিক অসচ্ছলতার কথা চিন্তা করে রফিকুল ইসলাম স্যার কারো কাছ থেকে অনুদান নিয়ে তাকে সহযোগিতার প্রস্তাব দিলে লিজা রাজি হয়নি। বলে—স্যার, আমি কারো দয়ায় বড় হতে চাই না। তবে সরকার বা কোনো প্রতিষ্ঠান আমাকে সহযোগিতা করলে ভিন্ন কথা। পরবর্তী সময় প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন করতে বললে তাত্ক্ষণিক বসে সে আবেদন লিখে দেয়। 
লিজা বলে, দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি আমি। কাইয়ুম স্যারসহ অন্যান্য শ্রদ্ধেয় শিক্ষক যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে না দিতেন, তবে হয়তো এত দিনে আমার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যেত। আমি সবার দোয়া নিয়ে লেখাপড়া করে বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে চাই। মা-বাবাসহ যারা সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই। চাই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে প্রত্যয়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।
লিজার মা পারভীন আক্তার বলেন, আমার যত কষ্টই হোক না কেন, আমার মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাব। আমার এই মেয়েকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন।
 লিজার নানা অর্জন
♦    ২০১২ সালে লিজা ত্রিশালের চিকনা মনোহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্রোহী কবির জন্মবার্ষিকীতে আয়োজন করে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। ওই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চিত্রাঙ্কনে প্রথম স্থান লাভ করে মেয়েটি।
     ওই বছরই উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় শিশু-কিশোর প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে উপজেলায় তৃতীয় স্থান অর্জন করে।
♦    ২০১৩ সালে উপজেলায় চিত্রাঙ্কনে প্রথম হয়।
♦    ২০১৪ সালে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে নজরুল স্মৃতিকেন্দ্র আয়োজিত শিশু-কিশোর প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে।
♦    এর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে লিজার বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ও প্রথম পুরস্কার ছিনিয়ে আনা। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট আয়োজিত শিশু-কিশোরদের রচনা প্রতিযোগিতায় ‘খ’ বিভাগ থেকে অংশগ্রহণ করে দেশসেরা ‘উত্তম’ প্রতিযোগী নির্বাচিত হয়। পুরস্কার নেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে।
♦    এ ছাড়া চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা, আবৃত্তিতে এরই মধ্যে সে অর্জন করেছে অর্ধশত সনদপত্র।

তৃতীয় লিঙ্গের তিন প্রহরী

পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় নীলা একদিন টের পেলেন, অন্য ছেলে-মেয়েদের চেয়ে তিনি আলাদা। মেয়েদের সঙ্গে মিশতে খুব ভালো লাগত তাঁর। ছেলেরা দুষ্টুমি করত। বাথরুমে ঢুকলে দরজা বাইরে থেকে আটকে দিত। মেয়েদের বান্ধবী হিসেবে দেখলেও ছেলেদের প্রতি অন্য রকম এক অনুভূতি কাজ করত নীলার মনে। পছন্দের ছেলেটির জন্য আগেভাগে স্কুলে গিয়ে বেঞ্চ খালি রাখতেন, পাশে বসার চেষ্টা করতেন।

ছোটবেলায় শুধু মা-ই জানতেন, নীলা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। সমাজ যাঁদের ‘হিজড়া’ নামে ডাকে। ধীরে ধীরে নিজের পরিবর্তন বুঝতে পেরে ছেলেদের পোশাক ছেড়ে বড় বোনের জামা-কাপড় পরা শুরু করেন নীলা। এ জন্য ভাইয়ের অনেক মার খেতে হয়েছে তাঁকে। তবু মেয়েদের মতো সাজতেন।
নীলার বাড়ি বাগেরহাট। পরিবারে ভাই-বোন ও মা আছেন। বোঝার বয়স হওয়ার আগেই মারা গেছেন বাবা। পরিবারে শান্তি না পেয়ে একসময় আরেক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে নবীনগরের ‘নিরিবিলি’তে চলে আসেন তিনি। একবার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষিকা সাকিনা আক্তার জেন্ডার স্টাডিজের ওপর এক গবেষণার কাজে গিয়েছিলেন ‘নিরিবিলি’তে। নীলা তখন সেখানে গুরুর কাছে থাকেন। দোকানে দোকানে টাকা সংগ্রহ করাই তাঁদের প্রধান কাজ। নীলা জানালেন, ‘সাকিনা আক্তার আমাদের প্রস্তাব দেন, ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পেলে কাজ করব কি না। ভাবলাম, মানুষ ভালো বলবে, সম্মান দেবে। তাহলে যাব না কেন?’
গণবিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের সুযোগ পেলেন নীলা। শুরুতে যোগ দেওয়া নিয়ে তাঁর সংশয় ছিল। ভেবেছিলেন, কোনো হেনস্থার শিকার হতে হয় কি না। কিন্তু ১ অক্টোবর চাকরিতে যোগ দিয়ে তাঁর ধারণা পাল্টে গেল। বললেন, ‘আগে লোকজন আমাদের অবজ্ঞা করত। এখন কেউ তা করে না। শিক্ষার্থীরা মান্য করে চলে, আমাদের কথা শুনে তাঁরা স্বেচ্ছায় আইডি কার্ড পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে। এই তো সেদিন কিছু শিক্ষার্থী এসে বলল, মেলা উপলক্ষে তারা যে দোকানটি দিয়েছে, আমরা যেন সেটির নাম রেখে দিই।’
নীলা জানালেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা থাকলে শিক্ষকদের মতো তাঁদেরও খাবার দেওয়া হয়। এমনিতে সকালে রান্না করে নিয়ে আসা খাবার সকাল ও দুপুরে খান। বাসায় একাই থাকেন। নিজের রান্না নিজেই করেন। প্রথমবার বেতন পাওয়ার পর মায়ের জন্য দুই হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। গুরুকে মিষ্টি কিনে দিয়েছেন। বান্ধবীদের ডেকে ছোট একটা পার্টি করেছেন। জানালেন, গত সপ্তাহে ঘোড়াপীর মাজারের কাছে চা খেতে গিয়েছিলেন। লোকজন উত্সাহ দিয়ে বলেছে, ‘তোমরা এখন কাজ করছ দেখে খুব ভালো লাগছে।’ এমন প্রশংসা শুনে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি নীলা।

আনুশকার চুম্বনে

'কিস কা কিসসা' বলিউডে কম নেই। বলিউডের প্রায় ছবিতেই এখন কারণে-অকারণে চুমুর দৃশ্যের ছড়াছড়ি। কিন্তু একই ছবিতে সাত সাতবার চুম্বনের ঘটনা বলিউডে দুর্লভ। তবে বলিউডের আপকামিং ছবি ‘বম্বে ভেলভেট’-এর নায়ক-নায়িকা অর্থাৎ রনবীর-আনুশকাকে এই ছবিটিতে সাতটি জায়গায় লিপ-লক করতে দেখা যাবে। আর এই কিসই নাকি কাল হয়েছে বিরাটের।
এর আগেও অনেক ছবিতে লিপ-লক দৃশ্যে দেখা গিয়েছে আনুশকাকে। কিন্তু এবারের ‘কিস’ নিয়েই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ শুরুর আগে সকাল ৮টায় স্টার স্পোর্টসে বম্বে ভেলভেটের ট্রেলর লঞ্চ করলেন রনবীর কাপুর। বলাবাহুল্য ট্রেলারের স্থান করে নিয়েছে অনুষ্কা-রণবীরের চুম্বন। আর এই কিস দেখেই নাকি মন খারাপ হয়ে যায় বিরাটের। তাই মনে করা হচ্ছে এদিন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে অসফল ভারতের সহ অধিনায়ক।
‘বম্বে ভেলভেট’ মূলত পিরিয়ড অফ মুম্বাই। ষাটের দশকের প্রেক্ষাপট নিয়ে তৈরি এই ছবি। সিনেমাটিতে জ্যাজ গায়িকার চরিত্রে রয়েছেন আনুশকা অন্যদিকে স্ট্রিট ফাইটার রণবীর। রহস্য আর অ্যাকশনের জমজমাট ছবির গল্প। এই ছবিতে প্রথমবার ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে করণ জোহরকে।

ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে অতিরিক্ত রুট অনুমোদন সেবা চালু

ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে অতিরিক্ত রুট অনুমোদন সেবা চালু করা হয়েছে। এ জন্য অতিরিক্ত ৩০০ টাকা ফি দিতে হবে। 
আজ মঙ্গলবার ভারতীয় হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।
Image result for indian visa
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈধ ভিসায় অতিরিক্ত রুট অনুমোদনের সকল আবেদন আগামী ২২ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশের সকল ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে (আইভিএসি) গ্রহণ করা হবে। এই সেবার জন্য প্রক্রিয়াকরণ ফি হিসেবে আইভিএসিকে ৩০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। 
সকল আইভিএসিতে রুট অনুমোদনের আবেদন জমা দেয়ার জন্য আলাদা কাউন্টার থাকবে। একজন আবেদনকারী বিদ্যমান ২৪টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং গেদে/হরিদাসপুর রেল ও সড়কপথ ছাড়াও অতিরিক্ত দু’টি রুটের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ভারতীয় হাই কমিশন ও ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের ওয়েবসাইটসমূহে
(https://www.hcidhaka.gov.in/pdf/endorsementofportapplicationform.pdf ও http://www.ivacbd.com/Other-Forms) আবেদন ফর্ম পাওয়া যাবে। এখন থেকে ভারতীয় হাই কমিশন, ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনার সহকারী হাই কমিশনসমূহে অতিরিক্ত রুট অনুমোদনের কোন আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

পৃষ্ঠাসমূহ