মুর্শিদাবাদ থেকে ঢাকা। রাজকীয় হীরাঝিল প্রাসাদ থেকে ঢাকা শহরের এক ছোট্ট ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন নবাব সিরাজউদদৌলার নবম বংশধরেরা। একদা বাংলা, বিহার, ওড়িশার আকাশ বাতাস কেঁপে উঠতো যাদের হুংকারে, ভাগিরথীর তীরে মুর্শিদাবাদ নগরে আলোকোজ্জ্বল মহল সর্বদা সরগরম থাকতো যে দাপুটে নবাবের পদচারণায় সুবে বাংলার সেই শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদদৌলার বংশধরেরা এখন ঢাকা শহরে বসবাস করছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে, নীরবে নিভৃতে। অনেকেই তাদের খবর জানে না, অনেকেই খবর নেয় না।
নবাব সিরাজউদদৌলা বাঙালি ছিলেন না। বাঙালির আপন ছিলেন, বাঙালির দরদি ছিলেন। তিনি বাংলার ছিলেন না কিন্তু বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন। ভালবাসতেন বাংলাকে, বাঙালিকে। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশীর প্রান্তরে সিরাজের পরাজয় এবং ২রা জুলাই ঘাতকের হাতে তার প্রাণ হারানোর মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়ে যায় বহুকালের জন্য। আমাদের এই ঢাকার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা হয়ে আছে নবাব পরিবারের দুর্দিন, দুঃসময়ের জীবন। সিরাজউদদৌলার মৃত্যুর পর তার প্রিয়তমা স্ত্রী লুৎফুননিসা, একমাত্র শিশু কন্যা উম্মে জোহরা, নানা আলীবর্দী খানের স্ত্রী আশরাফুন্নেসা সহ নবাব পরিবারের নারীদের ৮ বছর বন্দি করে রাখা হয়েছিল বুড়িগঙ্গা পাড়ের জিঞ্জিরা এলাকার একটি প্রাসাদে। স্থানীয় লোকজন ওই জরাজীর্ণ প্রাসাদটিকে এখনও জানে ‘নাগরা’ নামে।
বর্তমানে ঢাকা শহরের খিলক্ষেত এলাকার লেকসিটি কনকর্ড-এর বৈকালী টাওয়ারে বসবাস করছেন নবাব সিরাজউদদৌলার নবম বংশধরেরা। তাদের একজন সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেবের সঙ্গে তার ফ্ল্যাটে বসে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি কাজ করেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে। বর্তমানে ড. ফজলুল হক সম্পাদিত সাপ্তাহিক পলাশী পত্রিকার সহ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। ওই বাসাতেই আছেন তার পিতা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ গোলাম মোস্তাফা। তিনি নবাব সিরাজউদদৌলার ৮ম বংশধর। তার প্রয়াত স্ত্রী সৈয়দা হোসনেআরা বেগম ছিলেন নবাবের স্ত্রী লুৎফুননিসার রক্তের উত্তরাধিকার। এখানেই বাস করছেন তিনি এবং তার ২ ছেলে গোলাম আব্বাস আরেব ও ইমু এবং ২ কন্যা মাসুমা ও মুনমুন।
কিভাবে তারা নবাব সিরাজউদদৌলার বংশধর? বংশতালিকার সে হিসাব দিলেন গোলাম আব্বাস আরেব। ইরান থেকে ভাগ্য অন্বেষণে বাংলায় আসা নবাব আলীবর্দী খানের কোন ছেলে সন্তান ছিল না। তার ছিল ৩ কন্যা। ঘসেটি বেগম, ময়মুনা বেগম ও আমেনা বেগম। আলীবর্দী খানের বড় ভাই হাজী মির্জা আহমেদের ছিল ৩ পুত্র। মুহাম্মদ রেজা, মুহাম্মদ সাঈদ ও মুহাম্মদ জয়েনউদ্দিন। আলীবর্দী খানের ৩ কন্যাকে বিয়ে দেন তার ভাই হাজী আহমেদের ৩ পুত্রের সঙ্গে। মুহাম্মদ রেজার সঙ্গে বিয়ে দেন ঘসেটি বেগমের। মুহাম্মদ সাঈদের সঙ্গে ময়মুনা বেগমের এবং আমেনা বেগমের বিয়ে দেন জয়েনউদ্দিনের সঙ্গে। জয়েনউদ্দিন ও আমেনা বেগমের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। তাদের বড় সন্তান নবাব সিরাজউদদৌলা, অপর ২ ছেলে হচ্ছেন ইকরামউদদৌলা ও মির্জা মেহেদি। ২ কন্যা আসমাতুন নেসা ও খায়রুন নেসা। নবাব সিরাজউদদৌলা বিয়ে করেন ইরাজ খানের কন্যা লুৎফুননিসাকে। ইরাজ খানের পূর্বপুরুষরা ছিলেন মোঘল দরবারের কর্মকর্তা। সিরাজউদদৌলার একমাত্র কন্যা উম্মে জহুরা বেগম। সিরাজউদদৌলার যখন মৃত্যু হয় তখন উম্মে জহুরা শিশু। সিরাজ কন্যা জহুরা বেগমের বিয়ে হয় সিরাজের ভাই একরামউদদৌলার পুত্র মুরাদউদদৌলার সঙ্গে।
তাদের একমাত্র পুত্র শমসের আলী। তার পুত্র সৈয়দ লুৎফে আলী। তার কোন ছেলে সন্তান ছিল না। তার একমাত্র কন্যা ফাতেমা বেগম। ফাতেমা বেগমের ২ কন্যা হাসমত আরা বেগম ও লুৎফুননিসা বেগম। লুৎফুননিসা নিঃসন্তান। হাসমত আরার ছেলে সৈয়দ জাকির রেজা। তার ছেলে সৈয়দ গোলাম মর্তুজা। সৈয়দ গোলাম মর্তুজার ছেলে এই সৈয়দ গোলাম মোস্তফা।
ঢাকা শহরে বসবাস করা নবাব সিরাজউদদৌলার বংশধরদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে এখনও কি যেন এক ধরনের অজানা আতঙ্ক তাদের মাঝে। সম্ভবত সে আতঙ্ক থেকেই অন্তর্মুখী প্রচারবিমুখ হয়ে আছেন তারা। মিডিয়াকে এড়িয়ে চলেন, সমাজে নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে রাখেন। ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মীর জাফরের বংশধররা স্ব-স্ব পরিচয় দিয়ে দাপটে আছেন।
নবাব সিরাজউদদৌলা বাঙালি ছিলেন না। বাঙালির আপন ছিলেন, বাঙালির দরদি ছিলেন। তিনি বাংলার ছিলেন না কিন্তু বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন। ভালবাসতেন বাংলাকে, বাঙালিকে। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশীর প্রান্তরে সিরাজের পরাজয় এবং ২রা জুলাই ঘাতকের হাতে তার প্রাণ হারানোর মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়ে যায় বহুকালের জন্য। আমাদের এই ঢাকার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা হয়ে আছে নবাব পরিবারের দুর্দিন, দুঃসময়ের জীবন। সিরাজউদদৌলার মৃত্যুর পর তার প্রিয়তমা স্ত্রী লুৎফুননিসা, একমাত্র শিশু কন্যা উম্মে জোহরা, নানা আলীবর্দী খানের স্ত্রী আশরাফুন্নেসা সহ নবাব পরিবারের নারীদের ৮ বছর বন্দি করে রাখা হয়েছিল বুড়িগঙ্গা পাড়ের জিঞ্জিরা এলাকার একটি প্রাসাদে। স্থানীয় লোকজন ওই জরাজীর্ণ প্রাসাদটিকে এখনও জানে ‘নাগরা’ নামে।
বর্তমানে ঢাকা শহরের খিলক্ষেত এলাকার লেকসিটি কনকর্ড-এর বৈকালী টাওয়ারে বসবাস করছেন নবাব সিরাজউদদৌলার নবম বংশধরেরা। তাদের একজন সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেবের সঙ্গে তার ফ্ল্যাটে বসে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি কাজ করেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে। বর্তমানে ড. ফজলুল হক সম্পাদিত সাপ্তাহিক পলাশী পত্রিকার সহ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। ওই বাসাতেই আছেন তার পিতা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ গোলাম মোস্তাফা। তিনি নবাব সিরাজউদদৌলার ৮ম বংশধর। তার প্রয়াত স্ত্রী সৈয়দা হোসনেআরা বেগম ছিলেন নবাবের স্ত্রী লুৎফুননিসার রক্তের উত্তরাধিকার। এখানেই বাস করছেন তিনি এবং তার ২ ছেলে গোলাম আব্বাস আরেব ও ইমু এবং ২ কন্যা মাসুমা ও মুনমুন।
কিভাবে তারা নবাব সিরাজউদদৌলার বংশধর? বংশতালিকার সে হিসাব দিলেন গোলাম আব্বাস আরেব। ইরান থেকে ভাগ্য অন্বেষণে বাংলায় আসা নবাব আলীবর্দী খানের কোন ছেলে সন্তান ছিল না। তার ছিল ৩ কন্যা। ঘসেটি বেগম, ময়মুনা বেগম ও আমেনা বেগম। আলীবর্দী খানের বড় ভাই হাজী মির্জা আহমেদের ছিল ৩ পুত্র। মুহাম্মদ রেজা, মুহাম্মদ সাঈদ ও মুহাম্মদ জয়েনউদ্দিন। আলীবর্দী খানের ৩ কন্যাকে বিয়ে দেন তার ভাই হাজী আহমেদের ৩ পুত্রের সঙ্গে। মুহাম্মদ রেজার সঙ্গে বিয়ে দেন ঘসেটি বেগমের। মুহাম্মদ সাঈদের সঙ্গে ময়মুনা বেগমের এবং আমেনা বেগমের বিয়ে দেন জয়েনউদ্দিনের সঙ্গে। জয়েনউদ্দিন ও আমেনা বেগমের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। তাদের বড় সন্তান নবাব সিরাজউদদৌলা, অপর ২ ছেলে হচ্ছেন ইকরামউদদৌলা ও মির্জা মেহেদি। ২ কন্যা আসমাতুন নেসা ও খায়রুন নেসা। নবাব সিরাজউদদৌলা বিয়ে করেন ইরাজ খানের কন্যা লুৎফুননিসাকে। ইরাজ খানের পূর্বপুরুষরা ছিলেন মোঘল দরবারের কর্মকর্তা। সিরাজউদদৌলার একমাত্র কন্যা উম্মে জহুরা বেগম। সিরাজউদদৌলার যখন মৃত্যু হয় তখন উম্মে জহুরা শিশু। সিরাজ কন্যা জহুরা বেগমের বিয়ে হয় সিরাজের ভাই একরামউদদৌলার পুত্র মুরাদউদদৌলার সঙ্গে।
তাদের একমাত্র পুত্র শমসের আলী। তার পুত্র সৈয়দ লুৎফে আলী। তার কোন ছেলে সন্তান ছিল না। তার একমাত্র কন্যা ফাতেমা বেগম। ফাতেমা বেগমের ২ কন্যা হাসমত আরা বেগম ও লুৎফুননিসা বেগম। লুৎফুননিসা নিঃসন্তান। হাসমত আরার ছেলে সৈয়দ জাকির রেজা। তার ছেলে সৈয়দ গোলাম মর্তুজা। সৈয়দ গোলাম মর্তুজার ছেলে এই সৈয়দ গোলাম মোস্তফা।
ঢাকা শহরে বসবাস করা নবাব সিরাজউদদৌলার বংশধরদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে এখনও কি যেন এক ধরনের অজানা আতঙ্ক তাদের মাঝে। সম্ভবত সে আতঙ্ক থেকেই অন্তর্মুখী প্রচারবিমুখ হয়ে আছেন তারা। মিডিয়াকে এড়িয়ে চলেন, সমাজে নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে রাখেন। ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মীর জাফরের বংশধররা স্ব-স্ব পরিচয় দিয়ে দাপটে আছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন