সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১১

Earn money form social market place

Hello, at first take my salam. I am very sorry for writing English.
Today I am going to introduce you with a social marketplace based web site. I have worked that web site from 2010. I think that it is very much easy for new freelancer. It has some speial feature for selling twitter follower, Facebook friends, Facebook fan pages, also different types of social site account. So it might be easy one for new freelancer , because you will not face any bid system of complex system , when you would like to sell of buy .

It has another option for selling freelanceing service with out bid,

Now , I am going to explain it’s payment option. It is much more important to us for getting payment .
There are several option for payment
Like as paypal, moneybookers, mastercard and also visa card. So you should not worried regarding payment.

So, keep on touch, it might be important social market place for Bangladeshi freelancers.
http://www.speedbuy.biz

ফিলিস্তিনকে ইউনেস্কোর সদস্য হতেও দেবে না যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিনকে ইউনেস্কোর সদস্যপদ দেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে আজ ভোটাভুটি হবে। ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদের ১৯৩ সদস্য দেশের দুই-তৃতীয়াংশের ভোট পেলে ফিলিস্তিন ওই সংস্থার পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করবে।
তবে, আজকের ভোটাভুটির আগেই যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য হিসেবে গ্রহণ করা হলে ইউনেস্কোকে অর্থ দেয়া বন্ধ করে দেবে ওয়াশিংটন। ইউনেস্কোর মোট বাজেটের ২২ শতাংশ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য, ওই অর্থের একটা বড় অংশই ব্যয় হয় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে।
ইউনেস্কোর পূর্ণ সদস্যপদ পেল ফিলিস্তিন,মার্কিন হুমকিতে কোন কাজ হয়নি ৩১ অক্টোবর (রেডিও তেহরান) : যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের  বিরোধিতা সত্ত্বেও জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর পূর্ণ সদস্যপদ পেয়েছে ফিলিস্তিন। আজ ফ্রান্সে ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে ফিলিস্তিনের পক্ষে ১০৭টি ও বিপক্ষে ১৪টি ভোট পড়েছে। ৫২টি সদস্য দেশ ভোট দানে বিরত ছিল। যেসব দেশ ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে তারমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র,ইসরাইল,কানাডা,অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানিও রয়েছে। তবে আরব, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা ও এশিয়ার প্রায় সব দেশই ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
আজকের ভোটাভুটির আগেই যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দিয়েছিল, ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য হিসেবে গ্রহণ করা হলে ইউনেস্কোকে অর্থ সহায়তা দেয়া বন্ধ করে দেবে ওয়াশিংটন। ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বুকুভা অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয়ার মার্কিন হুমকির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইউনেস্কোর মোট বাজেটের ২২ শতাংশ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য, ওই অর্থের একটা বড় অংশই ব্যয় হয় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে। ইউনেস্কোতে কোন দেশের ভেটো ক্ষমতা না থাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের বিরোধিতা ও হুমকিতে কোন কাজ হয়নি।
ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালকি ফিলিস্তিনকে ইউনেস্কোর পূর্ণ সদস্য হিসেবে গ্রহণ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ফিলিস্তিন ইউনেস্কোর পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার ফলে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের পথে তা এক ধাপ অগ্রগতি হিসেবে গণ্য হচ্ছে। যদিও জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করবে বলে এরইমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বললেও শান্তির সব উদ্যোগেই ভেটো দিয়ে আসছে।#

তেহরান রেডিও/এসএ/এমএইচ/৩১.৮ 

আওয়ামী লীগের জোড়া হার

অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার পর নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার প্রতিশ্র"তির প্রেক্ষাপটে নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানের ভরাডুবি দৃশ্যত ক্ষমতাসীন দলের একযোগে দুই পরাজয়।

রাজধানী সংলগ্ন নগরীটির মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর অনতিক্রম্য ব্যবধানে এগিয়ে থাকাকে সরকারের রাজনৈতিক হার বলে মনে করছেন অনেকে।

ক্ষমতাসীন জোটের সাংসদ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে সরকারের একটা বড় শিক্ষা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ যাকে পছন্দ করতেন তাকে মনোনয়ন না দিয়ে একজন সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজকে মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সে সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, এখন তারা বুঝতে পারছে।"

এ 'ভুল' থেকে আওয়ামী লীগের শিক্ষা নেয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে সেনা মোতায়েন নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তে দৃশ্যত ক্ষুব্ধ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা রোববার বলেছেন, এ বিষয়ে সরকারের ব্যাখ্যা চাইবে তারা। সরকারের তরফেও বিষয়টির কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত।

যদিও নাম না প্রকাশ করার শর্তে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাই সরকারি সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।

প্রার্থীদের দাবির মুখে নির্বাচন কমিশন শুক্রবার সকাল থেকে নির্বাচনী এলাকায় চার কোম্পানি সেনা মোতায়েনের নির্দেশনা দিলেও তা না হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিন দিনভর অনিশ্চয়তার পর রাতে সিইসি সাংবাদিকদের জানান, এ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হচ্ছে না।

সরকারের ব্যাখ্যা না পেয়ে এটিএম শামসুল হুদা রোববার ভোটগ্রহণের পর হতাশার সুরে সাংবাদিকদের বলেন, "সাংবিধানিকভাবে তারা দিতে বাধ্য।....তাদের উচিত ছিলো, আমাদের সঙ্গে কথা বলা।"

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান মনে করছেন, শেষ মুহূর্তে বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে বিষয়টি গোটা নির্বাচনকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিতে পারতো।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আকবর আলি বলেন, "সাংবিধানিক ক্ষমতা বলেই নির্বাচন কমিশন নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন চেয়েছিল। কিন্তু সরকার সে ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া না দিয়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতাকে অবজ্ঞা করেছে।"

"আর এখানেই সবচেয়ে বড় ভয়। সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাইরে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে যে নির্বাচন করার পরিকল্পনা করেছে তা কতোটা বিশ্বাসযোগ্য হবে?", প্রশ্ন তার।

"কোনো নির্বাচনে কমিশন সেনাবাহিনী চাইলে সরকার যদি তা না দেয়, বিরোধীদল দল যদি সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন তোলে তাহলে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।"

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর বিজয়কে ইতিবাচক চোখে দেখছেন তিনি।

তিনি বলেন, "এই বিজয় বাংলাদেশের গণতন্ত্রের শুভ সূচনা বলে আমি মনে করি। এই নির্বাচন থেকে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি বিষয়ে ভালোভাবে শিক্ষা নিতে হবে। আর সেটি হচ্ছে- তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃত্বের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দেয়া। এ নির্বাচনে তৃণমূল নেতৃত্ব জয়যুক্ত হয়েছে। আর পরাজয় হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।"

এ প্রসঙ্গে আকবর আলি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাকে মনোনয়ন দিয়েছিল নারায়ণগঞ্জের তৃণমূলের মানুষ তাকে প্রত্যাখ্যান করে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছে। এ থেকে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বের আরও একটি শিক্ষা নিতে হবে। তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে হবে।

"আর এ কাজটি যদি আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অনুসরণ করে তাহলে আমাদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে", পর্যবেক্ষণ তার।

হাদীস

হাদীস - ১.

আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রাসূল, মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, “যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাকওয়া অবলম্বনকারী।” সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আমরা এ সম্পর্কে প্রশ্ন করছি না। তিনি বললেন, “তাহলে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হলেন আল্লাহর নবী ইউসুফ, যার পিতা নবী (ইয়াকুব) যার দাদা নবী (ইসহাক) যার পরদাদা হলেন নবী ইবরাহীম খলীলুল্লাহ।” সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আমরা আপনাকে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করছি না। তিনি বললেন, “তবে কি তোমরা আরবের বিভিন্ন বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছ? জাহেলিয়াতের যুগে যারা উত্তম ছিল ইসলামেও তারা উত্তম। যদি তারা শিক্ষা লাভ করে।”

বর্ণনায় : বুখারি ও মুসলিম।

হাদীসের কতিপয় শিক্ষা ও মাসায়েলঃ

১- আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তি হল যে সবচেয়ে বেশি তাকওয়া অবলম্বনকারী। যেমন আল্লাহ নিজেই বলেন,

তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সে-ই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া অবলম্বনকারী। (সূরা হুজুরাত, আয়াত ১৩)

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এ আয়াতের আলোকেই। এর দ্বারা সে সত্যই প্রমাণিত হলো যে, তিনি নিজের পক্ষ থেকে কিছু বলেন না।

“আর সে মনগড়া কথা বলে না।” সূরা আন নাজম, আয়াত ৩

২- কুরআনের আয়াত ও হাদীস দ্বারা এটাই প্রমাণিত হল, যার মধ্যে তাকওয়ার পরিমাণ যত বেশি, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে সে তত বেশি প্রিয় ও সম্মানিত।

৩- ইউসুফ আলাইহিস সালামের পিতা ছিলেন নবী ইয়াকুব আলাইহিস সালাম। তাঁর পিতা ছিলেন নবী ইসহাক আলাইহিস সালাম। তাঁর পিতা হলেন নবী ইবারহীম আলাইহিস সালাম। তাঁর চার পুরুষ নবী, সে হিসাবে তিনি বিশাল সম্মানের অধিকারী।

৪- সাহাবায়ে কেরাম বংশ মর্যাদার দিক দিয়ে আরবের সম্মানিত বংশ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে উত্তর দিলেন তার অর্থ হল, বংশ মানুষকে সম্মানিত করে না। আবার বংশ মানুষকে লাঞ্ছিতও করে না। মানুষকে সম্মানিত করে শিক্ষা। যে সঠিক শিক্ষা অর্জন করে, সে জাহেলি যুগের হলেও সম্মানিত হতে পারে। নিম্ন বংশের হলেও সম্মানিত হতে পারে। যদি কেউ সামাজিকভাবে সম্মানিত হতে চায়, তবে তাকে শিক্ষা অর্জন করতে হবে। সাথে সাথে নেক আমল করতে হবে। শিক্ষা ও নেক আমল ব্যতীত শুধু বংশ বা সম্পদের মাধ্যমে কেউ সামাজিকভাবে সম্মানিত হতে পারে না। নবী কারীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“যে কর্মে পিছনে পড়ে গেল বংশ তাকে অগ্রগামী করতে পারে না।”

এ হাদীসে মানবসম্পদ উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে। সঠিক শিক্ষা ব্যতীত আদর্শ মানুষ হওয়া যায় না।

৫- জাহেলিয়াত ছেড়ে দিয়ে শুধু মুসলমান হলেই উত্তম মানুষ হওয়া যায় না। উত্তম মানুষ হতে হলে তাকে ইসলামি শিক্ষা অর্জন করতে হয়। এই শর্তই করা হয়েছে আলোচিত হাদীসে।

৬- একজন মানুষ যে জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে পারদর্শী কিন্তু ইসলাম সম্বন্ধে তেমন জানে না, তাকে জাহেলি সমাজের ভাল মানুষ বলা যায়। কিন্তু যদি সে ইসলামি জ্ঞান অর্জন করে তাহলে সে ইসলামি সমাজের সর্বোত্তম মানুষে পরিণত হয়ে যায়। এই মর্মেই এ হাদীসে দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Sleep Sleep Sleep

৪,০০০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনের সাক্ষীরা গেল কোথায়?


ডিজিটাল যুগ, তাই সংখ্যাটি ৪,০০০ নাকি ৪০,০০০ মনে করতে পারছি না। কেবল তো মাত্র একটি ডিজিটের তফাৎ! কিন্তু এতগুলো পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েছিল জামায়াত নেতা মওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদি বা দেইল্লা রাজাকারের বিরুদ্ধে। দেইল্লা মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট ও ধর্ষণসহ এমন কোন অপরাধ নেই যে তা করেননি- এমনটিই বলা হয়েছিল ওই তদন্ত প্রতিবেদনে।
কিন্তু এখন একজন সাক্ষীকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একজন নারীও প্রকাশ্যে বলছেন না যে, দেইল্লা তাকে ধর্ষণ করেছিল। থানায় এমন কোন মামলা নেই যাতে বলা হয়েছে দেইল্লা খুন করেছিল।

এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমসহ শীর্ষ পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামীকাল তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়া হবে। রাজধানীর বেইলি রোডে আজ এক সংবাদ সম্মলেনে এ কথা জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান।

গোলাম আযমসহ পাঁচ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট চূড়ান্ত ৩১ অক্টোবর (রেডিও তেহরান) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমসহ শীর্ষ পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামীকাল তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়া হবে। রাজধানীর বেইলি রোডে আজ এক সংবাদ সম্মলেনে এ কথা জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান। তিনি দাবি করেন, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা গোলাম আযমসহ জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন। আবদুল হান্নান খান আরো বলেন, গোলাম আজমের বিরুদ্ধে গত বছরের ১ আগস্ট তদন্ত শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা না থাকলেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হচ্ছে। এতে গোলাম আজমকে গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান এবং আব্দুল কাদের মোল্লাকে গত বছর আটক করা হয়। তবে, গোলাম আযমকে এখনো আটক করা হয়নি। আটকের পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। কিছুদিন আগে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসেইন সাঈদী এবং বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে।#
তেহরান রেডিও/এসআই/এমএইচ/৩১.৯

ব্রেকিং নিউজ- ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দিয়েছে জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো।



ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দিয়েছে জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো। ১৭৩ টি দেশের মধ্যে ফিলিস্তিনের পক্ষে পড়েছে ১০৭ ভোট, বিপক্ষে ১৪ টি ভোট এবং ৪০ টিরও বেশি দেশ ভোটদানে বিরত ছিলো।
তিন হারামির বাচ্চা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও জার্মানি সদস্যপদের বিরোধিতা করে ভোট দিয়েছিল। এ চেষ্টায় সফল হওয়ায় রাষ্ট্র হিসাবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি লাভে ফিলিস্তিনের পথ আরো প্রশস্ত হলো হলে বিশ্লেষকদের বিশ্বাস।

যুদ্ধাপরাধিদের বিচারের দাবীতে

যুদ্ধাপরাধিদের বিচারের দাবীতে
মহেশখালীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বারকলিপি

মহেশখালী অফিস:৩১ ডিসেম্বার

দেশে ও দেশের বাইরে থাকা যুদ্ধাপরাধিদের বিচার দ্রুত কর্যকর করার দাবীতে গতকাল মহেশখালীতে মুক্তিযোদ্ধারা প্রধান মন্ত্রীর কাছে একটি স্বারকলিপি দিয়েছে। মহেশখালীর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তারা এই স্বারক লিপিটি দেন।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম কাইছার হোসেন জানান, সকালে মহেশখালী মুক্তিযুদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ তার মাধ্যমে প্রধান মন্ত্রী বরাবরে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার দ্রুত কর্যকর করার দাবী সংবলিত একটি স্বারকলিপি দেন। নেতৃবৃন্দ এতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যকর ভুমিকায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত কার্যকর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। স্বরকলিপিটি যথাযত কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

মাহবুব রোকন
মহেশখালী অফিস
ফোন: ০১১৯৫০৭৭৯৬১

ইসলামী হুকুমাতের নমুনা

গ্রীষ্মের প্রখর দুপুরে একদিন লু-হাওয়া বইছিল। হযরত উমর রাযিঃ একাকী মরুভূমির দিকে যাচ্ছিলেন। হযরত উসমান রাযিঃ তাঁকে দূর থেকে দেখে চিনে নিলেন। নিকটে গিয়ে আওয়াজ দিলেন “হে আমিরুল মুমিনীন! এ প্রচন্ড গরম ও লু- হাওয়ার(মুরুভূমির গরম বালু ঝড়) মধ্যে আপনি কোথায় যাচ্ছেন” ? তিনি জবাব দিলেন, “বায়তুল মালের একটি উঠ উধাও হয়ে গেছে। সেটার তালাসে বের হয়েছি”। হযরত উসমান রাযিঃ বলেন, “ একজন খাদেমকে পাঠালে তো হত”। তিনি বলেন- কিয়ামতের দিন তো আমাকে প্রশ্ন করা হবে; খাদেমকে প্রশ্ন করা হবে না। হযরত উসমান রাযিঃ বললে, “একটু বিলম্ব করুন। তারপর না হয় বের হয়ে যাবেন। তখন গরমও একটু কমবে”। তিনি বলেন, “ জাহান্নামের আগুন এর চেয়েও গরম”।একথা বলে তিনি প্রখর রোদে মুরুভূমির প্রান্তরের দিকে ছুটে চললেন। এই ছিল তাদের রাজত্ব।
আরেকবার হযরত উমর রাযিঃ মিম্বারে দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। খুতবায় তিনি বলেন, “শ্রবণ কর এবং মান্য কর ”। কিন্তু তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলে- “শ্রবণ কর না এবং মান্য কর না”।
হযরত উমর রাযিঃ জিজ্ঞেস করলেন- কেন? লোকটি বলল- “আপনি দুটি কাপড় পরে আছেন যা গণিমতের মাল হিসাবে পেরেছেন। কিন্তু প্রত্যেকের জন্য তো একটি করে কাপড় এসেছিল। আপনি দুটি কাপড় কোথায় পেলেন”?
হযরত উমর রাযিঃ বললেন-নিশ্চয়ই। তুমি ঠিকই বলেছ। হে আব্দুল্লাহ! (হযরত উমর রাযিঃ এর পুত্র) তুমি এর জবাব দিয়ে দাও। তখন হয়রত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযিঃ দাঁড়িয়ে বললেন- আজ আমিরুল মুমিনের পরার মত কোন কাপড় ছিল না। আমি আমার কাপড়টি তাঁকে ধার দিয়েছি। এতে করে তার দুটি কাপড় হয়েছে। একটি পরেছেন এবং অন্যটি তিনি গায়ে জড়িয়েছেন। এ জবাব শুনে অভিযোগকারী কাঁদতে লাগলো এবং বলল- আল্লাহ্‌ আপনাকে প্রতিদান দান করুন। আপনি এখন খুতবা দিন, আমরা শুনবো এবং আনুগত্য করবো।

এ ছিল ইসলামী হুকুমতের নমুনা। যেখানে ধনী- গরীব নির্বিশেষে সবাই রাষ্ট্র প্রধানকে জিজ্ঞাস করার অধিকার ছিল। সাহাবায়ে কিরামের জন্য খেলামতের দায়িত্ব সুখকর ছিল না। তাদের অবস্থা বর্তমান রাজা-বাদশাহদের মত ছিল না যে, তারা অহর্নিশ ভোগ- বিলাসে আর আমোদ ফুর্তিতে কাটাবেন।

" ১০০টাকা প্রাইজবন্ডের ড্র হলো আজকে। আপনারটাও মিলিয়ে নিন।"



একক সাধারণ পদ্ধতিতে (অর্থাৎ প্রত্যেক সিরিজের জন্য একই নম্বর) এই ড্র অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ১০০ টাকা মূল্যের ৩৫টি সিরিজ বাজারে রয়েছে।

প্রতিটি সিরিজের জন্য ৪৬টি সাধারণ পুরস্কার দেওয়া হবে। মোট পুরস্কার ১ হাজার ৬১০টি।

*প্রথম পুরস্কার জিতেছে- ০৮৩৫৮৩৬। প্রথম পুরস্কার হচ্ছে ৬ লাখ টাকার সমমান।

**ড্রতে দ্বিতীয় হয়েছে ০৯৬১১৩৯। পুরস্কার ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা সমমান।

***তৃতীয় পুরস্কার রয়েছে ১ লাখ টাকার দুটি। বিজয়ী নম্বরগুলো- ০৪৮০৭৪৮ এবং ০৭৬৬৫৯৬।

****৪র্থ পুরস্কার পেয়েছে- ০১৮৩৯৩৮ এবং ০২১৬৮০৫।

৫ম পুরস্কার ৪০টি। পুরস্কার ১০ হাজার টাকা। নম্বরগুলো: ০০১১১৮৯, ০০৩৮৭৬৩, ০০৮৮৮৭৯, ০১১১১৫২, ০১১৫৩৮৯, ০১৪৭৩৭৮, ০২১৫২০৮, ০২২০৭৮৯, ০২৩৭৭৬৯, ০২৭৫৩৫০, ০২৮১৩৬৩, ০২৮৫২৫৮, ০৩০২০৬৫, ০৩০৯৫৬৮, ০৩৩৯৮৬৫, ০৩৩৯৮৬৫, ০৩৮৬৭২১, ০৪০৭৯২০, ০৪৩৫৭২১, ০৪৪৩৭০৭, ০৪৭১০৫৬, ০৫৮২৭০৫, ০৬৫২২০২, ০৬৮৩৫৩৬, ০৬৯৪৩৬৭, ০৭০২১৭৮, ০৭৩৫২৩৮, ০৭৩৫২৩৮, ০৭৫০১০৫, ০৭৬২৩৪৬, ০৭৬৯৪৭৬, ০৮১৮৯৮০, ০৮৬১০৮১, ০৮৭০১১০, ০৮৭০৬৭১, ০৯০১৪৬১, ০৯০৩৮৪৬, ০৯৩৫৬৬৬, ০৯৪০৯২৮, ০৯৫৯২১৩, ০৯৭৫৮৭৭ এবং ০৯৯০৯৮৪।

প্রচলিত হারাম খাদ্য দ্রব্য ও আমার সরল স্বীকারোক্তি

হালাল এবং হারাম খাওয়া দাওয়া নিয়ে সব সময়ই আমার চিন্তার ভিন্নতা আছে। হারাম খাদ্য দ্রব্য খাওয়া নিষেধ ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি। নিষেধ তো কত কিছুতেই আছে। ঘুষ, সুদ , জেনা , মিথ্যে কথা বলা , পরনিন্দা , পরচর্চা , চুরি ডাকাতি , একদম নিকটাত্মীয় ছাড়া মহিলাদের চেহারা দেখা , খুন আরো অনেক অনেক কিছুই নিষেধ আছে ধর্মে। মানি কতজনে আমরা ? কিন্তু কেউ যদি কোন হারাম হিসেবে চিহ্নিত খাদ্য দ্রব্য খায় , তা হলেই আমরা বিশেষ ভাবে তাকে দেখি বা হাসাহাসি করি। কিন্তু একজন ঘুস খোরকে আমরা সমাদার করি। খুনি একজনকে বাঁচানোর জন্য জাঁদরেল উকিল নিয়োগ করি। খালেদা হাসিনা কে আমরা বয়কট করিনা , শরিয়তের নিষেধ পালন করেন না বলে।
আল্লাহ নিজে আদম হাওয়াকে গন্ধম খাওয়া থেকে বিরত করতে পারেন নি। আমরা হারাম বিষয়ে যা জানি তা হলো - প্রচলিত কথা বা হুজুর গন আমাদেরকে যা বলেন তাই। একজন মুসলমান হিসেবে বিশ্বাষ করি - আদম হাওয়া আমাদের আদি পিতা মাতা। খাওয়ার বিষয়ে ওনারা আল্লাহর নিষেধ শুনেন নাই। এই অমান্যের বৈশিষ্ট আমাদের মধ্যে থাকবে, তা আর বিচিত্র কি ? ।

হারাম হিসেবে প্রচলিত যে সব খাদ্য আমি খেয়েছি ।

১। কাকরা ।
বাসার পাশের এক মৎস্য কর্মকর্তার বাসায় মাঝে মাঝে কাকরা এবং কচ্ছপ রান্না হতো । একদিন বলেই ফেললাম , আমিও খেতে চাই। প্রথম খেলাম কাকরা । দারুণ স্বাদ । শলা চিংড়ি মাছের মতই । ভুনা খেলে টেস্ট বেশী। এরপর থাইল্যান্ড যতবার গিয়েছি- একবার ও বাদ যায়নি। দারুন রান্না থাইল্যান্ডের পাতায়ায় ।


খুবই টেস্টি :)


এভাবেও পাওয়া যায় :)


২। কচ্ছপ
যারা এটা খান নি , তারা বুঝবেন না কত সুস্বাদু এটা । এটাও প্রথম খেয়েছি পাশের বাসার ওই দাদার বাসায়। তারপর খেপুপাড়া রাখাইন পল্লিতে এক বন্ধুর বাসায় । খাসির কুরকুরে হাড্ডির মত। কচকচে গোস্ত । তবে কেউ যদি এর আসল স্বাদ পেতে চান , তবে তাঁকে থাইল্যান্ড যেতে হবে। রেসিপি জানলে অবশ্য রান্না করা যায়। কিন্তু রেসিপি তো জানিনা :(


কচ্ছপের ফ্রাই ।


কত লোভনীয় দেখলেই বুঝা যায়। এটা খেতে হবে একটু ঝাল সস দিয়ে :)


৩। শামুক
প্রথম এটা খেয়েছি থাইল্যান্ডের পাতায়াতে । আস্ত সিদ্ধ করা থাকে । আপনার যেগুলো পছন্দ হবে , সেগুলোর উপরের দিকটা কিছুটা ভেঙ্গে , মসলা সহ প্লেটে আপনার সামনে দিবে। নিজের ইচ্ছেমত মসলা মিশিয়ে কাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মুখে দিতে হয় । আমার কাছে ততটা ভালো লাগেনি। তবে ট্যুরিস্টরা এটা খায় খুব।






৪। পোকামাকড়
এটাও থাইল্যান্ডে প্রথম খেয়েছি। দু ধরনের পাওয়া যায় । হালকা ভাজা , এটা খেতে হয় সস দিয়ে। আর করকরে ভাজা, এটা খেতে হয় মরিচের গুড়া , বিট লবন ছিটিয়ে , অনেকটা আমাদের দেশের চানাচুর ভাজার মত।
খারাপ লাগে না খেতে :)


সস দিয়ে খাওয়া :)


পোকা মাকড় বিক্রেতা । বিশাল বাজার ।


হালাল হারাম সম্পর্কে কোরআন / হাদিছ :
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছেঃ احل لكم صيد البحر وطعامه متاعا لكم তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও সমুদ্রের খাদ্য হালাল করা হয়েছে তোমাদের উপকারার্থে। (সূরা মায়েদাহঃ ৯৬)

হাদিস শরীফে রাসুল সাঃ ইরশাদ করেনঃ সমুদ্রের পানি পবিত্র এবং এর মধ্যে মৃতপ্রাণী হালাল। (তিরমিযি, আবু দাউদঃ হাদিসটি আল্লামা আলবানী ছহীহ বলেছেন।)

শুনেছি আরব দেশে কাকড়া খুবই লোভনীয় এবং পছন্দনীয় একটি খাদ্যদ্রব্য। তবে সে কাকড়ার রং টা সাদা। আমাদের দেশের কাকড়া লাল/কালো । আরবের মুসলমানগন কই জানেন না , কাকড়া খাওয়া হারাম ? ওনাদের হেদায়েত করার জন্য , আমাদের দেশের হুজুরদের পাঠাতেই হবে ;)
খুবই বিভ্রান্তির মাঝে আছি :)

আজকে এক ইস্কুলে গিয়া দেখলাম ৪টা নতুন ল্যাপটপ ৪ মাস যাবৎ একটা ঘরে তালা বন্ধ অবস্থায় পরে আছে।

আজকে এক ইস্কুলে গিয়া দেখলাম ৪টা নতুন ল্যাপটপ ৪ মাস যাবৎ একটা ঘরে তালা বন্ধ অবস্থায় পরে আছে।


আপনি জানেন সারাদেশে হাজার হাজার স্কুলে হাজার হাজার কম্পিউটার ল্যাপটপ পাঁচ ছয় বছর থেকে শুরু করে মাসের পর মাস পরে আছে।এর মধ্যে অন্তত ৩০% পাওয়া যাবে যেগুলো কেনার পর একবারও ওপেন করা হয়নি এবং এখন যথারিতি নষ্ট ও পরিত্যাক্ত।গত তিন বছরেই দেশে সরকারী টাকায় লক্ষাধিক কমপিউটার, ল্যাপটপ কেনা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য।ফলাফল হচ্ছে এই মেশিনগুলোর ৯৮% এখনও ছবিটির মত অবস্থায় আছে।যে কয়টা চলে তার প্রতি একশটির একটিতে ইন্টারনে সংযোগ আছে।আর চলে সপ্তাহে ৪০ মিনিট।একবার এক স্কুলে নাইন টেনের একশ জন ছাত্রছাত্রীকে প্রশ্ন করেছিলাম তোমরা কয়জন জীবনে কমপিউটার দেখেছ, হাত তুলেছে সবাই।আর যখন বলেছি, কয়জন জীবনে কমপিউটার টাচ করেছ, হাত তুলেছে দুই জন।অথচ ওদের স্কুলেই তালাবদ্ধ পরে আছে কয়েকটি মেশিন।বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল বিসিসি ঢাকায় টেন্ডার করে এসব হাজার হাজার প্রডাক্ট কিনছে।পরে বিভিন্ন স্কুলে, কলেজে পাঠাচ্ছে এই বলে, আপনারা মেশিনগুলো নিয়ে একটা রুমে যত্ন করে তালা বদ্ধ করে রাখুন, আমরা পরে ইঞ্জিনিয়ার পাঠাবো এগুলো চালু করতে, এর আগে হাতও দিবেন না।আর মাস্টার সাহেবরা এগুলো যত্ন করে তুলে রাখছে।এই মুহুর্তে দেশের দশ হাজার প্রাইমারী স্কুলের হেডমাস্টারের লকারে একটি ইনটেক ল্যাপটপ ও একটি মাল্টি মিডিয়া পাওয়া যাবে।

যা হউক, এই অবস্থা কেন, সব স্কুলের মাষ্টারাই কি অপদার্থ।না তা ঠিক নয়।তাহলে এমন হওয়ার কারন কি।আমি জানি।কারন ইন্টারনেট।এর দাম ও অবস্থা।

আর একটা বিষয় আছে।সরকারী ভাবে কেনা এই মালগুলো চৌদ্দ নম্বরের চেয়েও খারাপ।কারন আমাদের কম্পিউটার লেপটপ আমদানী কারকরা যেকোন চৌদ্দ নম্বরের উপরে কোন মাল দেশে আনে না যা বাংলাদেশের আমদানীকারকরা নিজের মুখে আমাকে বলেছে ভয়েস আছে।আর সরকারী টেন্ডারে কেনা মালের ক্ষেত্রে চৌদ্দ নম্বর থেকেও কিছু যন্ত্রপাতি খুলে রাখা হয়।

পানি পরিষ্কার করতে নষ্ট কাঁচ।


সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অফ গ্রিনউইচের গবেষকরা নষ্ট কাঁচ ব্যবহার করে ভূপৃষ্ঠের পানি পরিষ্কার করার একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। খবর গিজম্যাগ-এর।

গবেষকরা রঙিন কাঁচ, চুন এবং কস্টিক সোডা মিশিয়ে ১০০ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটিয়ে একটি উপাদান তৈরি করেছেন যা পানি বিশুদ্ধ করতে কাজে লাগবে।

গবেষক ড. নিকোলা কোলম্যান জানিয়েছেন, এ পদ্ধতিতে তৈরি উপাদানটিকে বলে টোবারমোরাইট যা মিনারেল হিসেবে পানিতে থাকা বাজে উপাদান দূর করে।

গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়েস্টম্যানেজমেন্ট’-এ।

রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১১

ঈদুল আযহা ও কুরবানীর তাৎপর্য এবং কুরবানীর মাসায়েল। ২য় কিস্তি


بسم الله الرحمن الرحيم 


اَلْحَمْدُ لِلّهِ رَبِّ الْعاَلَمِيْنَ وَالْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِيْنَ والصَّلوةُ و السَّلاَمُ عَلى اَشْرَفِ الْاَنْبِياءِ وَالْمُرْسَلِيْنَ وَعَلى اَلِه وَاَصْحَابِه اَجْمَعِيْنَ




কুরবানীর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য 
প্রকৃত পক্ষে কুরবানীর তিনটি মৌলিক ও মহান উদ্দেশ্য রয়েছে।
এক. আল্লাহর একত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করে সারা দুনিয়ার মুসলমান কেবল মাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে তাঁরই নামে এবং তাঁরই রাসূল প্রদর্শিত পন্থায় কুরবানী করে। এ সবের মাধ্যমে তারা এ কথারই সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ এক, তার কোন শরীক নেই, তিনিই সর্ব শ্রেষ্ঠ সার্বভৌমত্বের মালিক কেবল মাত্র তিনিই। তিনি ছাড়া অন্য কারো বিধান মানা যেতে পারে না। তাঁর দেয়া শরীয়তই সাফল্যের পথ আর তাঁর সন্তুষ্টি বিধানই মুক্তির চাবিকাঠি।
দুই. মহান আল্লাহ তায়ালার মালিকানা স্বীকার করা। অর্থাৎ সমস্ত জগতের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা। তিনিই অনুগ্রহ করে আমাদের জীবন ও ধন সম্পদ দান করেছেন। আমাদের জীবন ও সম্পদের প্রকৃত মালিক তিনিই। এ জীবন ও সম্পদ তিনি আমাদের নিকট আমানত রেখেছেন। এগুলোর ব্যয় ও পরিচালনার ব্যাপারে আমি সেচ্ছাচারী হতে পারিনা। প্রকৃত মালিকের ইচ্ছা ও সন্তুষ্টি অনুযায়ী এগুলোর ব্যয় ও পরিচালনা হবে। তাঁরই ইচ্ছা ও সন্তুষ্টি অনুযায়ী আমার জীবন সম্পদ ব্যয় করার জন্য আমি সদা প্রস্তুত। এ প্রস্তুতির নিদর্শন স্বরূপই তাঁর নামে পশু কুরবানী করছি। পশু যবেহের সাথে সাথে তার গলদেশ থেকে যেভাবে রক্ত প্রবাহিত হয়, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য তাঁর পথে এমনি করেই আমার বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতেও একনিষ্ঠ ভাবে প্রস্তুত।
তিন. আল্লাহর নেয়ামাতের কৃতজ্ঞতা স্বীকার। অর্থাৎ আমার যাবতীয় ধন-সম্পদ আল্লাহরই দেয়া নেয়ামত। এগলো তাঁরই একান্ত অনুগ্রহ। আমার প্রতি তাঁর এ সীমাহীন অনুগ্রহের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এ সম্পদ আমি তাঁরই নামে কুরবানী করছি। আমি যে তাঁর নিকট সত্যি কৃতজ্ঞ, আমার এ কুরবানী তারই নিদর্শন।


কুরবানীর রূহানিয়াত ও প্রাণ শক্তি 

প্রাক ইসলামী যুগে লোক কুরবানী করার পর তার গোশত বাইতুল্লাহর সামনে এনে রেখে দিত। তার রক্ত বাইতুল্লাহর দেয়ালে দেয়ালে মেখে দিত। কিন্তু আল কুরআন ঘোষণা করলো- তোমাদের এ গোশত ও রক্ত কোনটারই প্রয়োজন আল্লাহর নেই। তাঁর কাছে তো কুরবানীর সে আবেগ-অনুভূতি পৌঁছে যা যবেহ করার সময় তোমাদের মনে সঞ্চারিত হয় বা হওয়া উচিত। গোশত ও রক্তের নাম কুরবানী নয়। বরং কুরবানী এ তত্ত্বেরই নাম যে, আমাদের সব কিছুই আল্লাহর জন্যে এবং তাঁর পথেই উৎসর্গ করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, কুরবানকারী শুধু মাত্র পশুর গলায়ই ছুরি চালায় না, বরং তার সকল কু-প্রবৃত্তির উপর ছুরি চালিয়ে তাকে নির্মূল করে। এ অনুভূতি ব্যতীত যে কুরবানী করা হয়, তা হযরত ইবরাহীম আ. ও হযরত ইসমাঈল আ. এর সুন্নাত নয়। এটা একটা জাতীয় রসম মাত্র। তাতে গোশতের ছড়াছড়ি হয় বটে, কিন্তু সেই তাকওয়া পাওয়া যায় না যা কুরবানীর প্রাণ শক্তি। 
মহান আল্লাহ বলেন
لَنْ يَنَالَ اللهَ لُحُوْمُهَا وَلَا دِمَائُهَا وَلـكِنْ يَّنَالُهُ التَّقْوى مِنْكُمْ- “ও সব পশুর রক্ত, মাংস আল্লাহর কাছে কিছুতেই পৌঁছে না। বরং তোমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের তাকওয়া তাঁর কাছে পৌঁছে”।{ সূরা আল হজ্জ-৩৭}

যে কুরবানীর পেছনে তাকওয়ার আবেগ-অনুভূতি নেই আল্লাহর দৃষ্টিতে সে কুরবানীর কোনই মূল্য নেই। আল্লাহর কাছে সেই আমলই গ্রহীত হয়, যার প্রেরণা দান করে তাকওয়া ।
এ ব্যাপারে ইরশাদ হচ্ছে -
اِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ “আল্লাহ শুধু মুত্তাকীদের আমল কবুল করেন”। { সূরা আল মায়িদ্হ -২৭}
সুতরাং কারো কারো এ প্রশ্ন করার কোন অবকাশ নেই যে, প্রত্যেক বৎসর জাতি শুধু পশু যবেহ করার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করবে এবং তিনদিন গোশত খাবে। এর দ্বারা তো জাতীয় কোন উন্নতির লক্ষণ দেখা যায় না। কারণ, কুরবানী শুধু গোশত ভক্ষণ করার জন্য নয় বরং ইহা শরীয়তের একটি হুকুম, সুন্নাতে ইবরাহীমী কে স্বরণ করে আল্লাহর রাস্তায় জান মাল কুরবানী করার এক শক্তিশালী জযবা পয়দা হয়। তা নাহলে অন্যান্য উম্মতের জন্যে গোশত খাওয়া তো মোটেও জায়িয ছিলনা।


কুরবানী আল্লাহ তায়ালার একটি বিশেষ রহমত ও বরকতের বিধান 

১. কুরবানীর সময় পশু কুরবানী করার মাধ্যমে আমাদের পশু সুলভ আচরণ পরিবর্তিত হয়ে সেটা যথার্থ মানব সুলভ আচরণে পরিণত হয়। সুতরাং কুরবানীর বিধানটা মুমিন বান্দার চরিত্র সংশোধনের জন্য আল্লাহ তায়ালার একটি বিশেষ রহমত।

২. ধনী-গরীব, অসহায়, দুস্থ ইত্যাদি নানা রকম মুসলমান এ দুনিয়ায় বসবাস করে থাকে। আর তারা সকলেই গোশত উপভোগ করার আশা করে থাকে। কিন্তু অভাব, অসুবিধা, অবহেলা, ও স্বভাবগত দোষের কারণে তাদের মধ্যে অনেকে গোশত উপভোগ করার সুযোগ পায়না এবং অনেকে সুযোগ করে নেয় না।

কুরবানী আল্লাহ প্রদত্ত এমন একটি অপরিহার্য বিধান যে, এটি পালন করার ফলে বছরে অন্তত একবার সকলেই আল্লাহ পাকের এ বিশেষ নেয়ামতটি উপভোগ করার সুযোগ পায়। এমনকি কুরবানীর গোশত অমুসলিমদেরকে ও দেয়া যাবে বলে শরীয়তে বলা হয়েছে। সুতরাং কুরবানীর বিধান আল্লাহ প্রদত্ত দুনিয়ার সকল মানুষের জন্যই একটি বিশেষ রহমতের বিধান।

৩. প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ পশু কুরবানী করা সত্বেও পরবর্তী এক বছরের মধ্যে আবার কুরবানী দেয়ার মতো পশুতে দুনিয়া ভরে উঠে। আবহমান কাল থেকেই এরকম হয়ে আসছে। এর কারণ হলো কুরবানীর পশু গুলোর প্রতি উপযুক্ত যতœ নেয়া হয়। এ পশু গুলোর উপযুক্ত তদবীর করার ফলে বরকত দেখা যায়। আর যে সব পশুর তদবীর করা হয় না তার বরকত ও দেখা যায় না।

উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় বিড়াল ও কুকুর একবার কয়েকটি বাচ্চা প্রসব করে অথচ বিড়াল ও কুকুরের সংখ্যা দুনিয়ায় খুব বেশী দেখা যায় না।
অপর পক্ষে গরু একবার একটা বাচ্চা দেয়, তা সত্বেও দুনিয়ায় বিপুল সংখ্যক গরু দেখা যায়। প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক গরু কুরবানী দেয়া সত্বেও তা বিলীন হয়ে যায় না। বরকতের জন্যেই এরূপ হয়ে থাকে। আর এটা আল্লাহর একটি বিশেষ রহমত ছাড়া আর কিছুই না।


কুরবানীর শিক্ষণীয় বিষয় সমূহ 

১. প্রকৃত মুসলমান হতে হলে আল্লাহর হুকুম যেরকমই হোক না কেন তা বিনা বাক্যে মেনে নিতে হবে। তার পরিণাম ভাল কি মন্দ তা চিন্তাও করা যাবে না, কারণ, তা আল্লাহর হুকুম। আর আল্লাহর হুকুম মেনে নিলে তার ফল কোন দিন ও মন্দ হয় না।
২. আল্লাহর হুকুম সহজই হোক আর কঠিনই হোক তা মেনে চলার ব্যাপারে মনের ঝোঁক প্রবণতা একই প্রকার থাকতে হবে। কারণ, মানব জীবনের চরম লক্ষ্যই হচ্ছে আল্লাহর যাবতীয় হুকুম আহকাম মেনে চলে সর্বদাই আল্লাহকে রাজী খুশী রাখা। কাজেই মুসলমানদের মনের ঝোঁক সর্বদাই এমন থাকতে হবে যে, আল্লাহর হুকুম মানতে গিয়ে বাঁচলে ও জীবন সফল, মরলেও জীবন সার্থক।
৩. আল্লাহর হুকুম মানার ব্যপারে পার্থিব কোন লাভ-লোকসান, কোন মায়া-মুহাব্বত, কামনা-বাসনা বা যে কোন কিছুর প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারবে না। এটাই প্রকৃত মৃসলমানী।
যেমন হযরত ইবরাহীম আ. রাজী হয়েছেন
@ আগুনের কুন্ডে নিক্ষিপ্ত হতে। @ সদ্যজাত শিশু সন্তানকে তার মা সহ বিজন মরুভূমির মধ্যে রেখে আসতে। @ নিজ হাতে নিজের সন্তানকে কুরবানী করতে, কোন বাঁধাই প্রতিবন্ধক হতে পারেনি।
৪. বছরে মাত্র একবারই আমরা কুরবানী দেই। কিন্তু এর ফল সুদূরপ্রসারী। কুরবানী আমাদের জন্য ত্যাগ ও তিতিক্ষার একটি ট্রেনিং এর ব্যবস্থা ও বটে।
উল্লেখ্য যে, ত্যাগ ও কুরবানী ছাড়া কোন ভাল কাজই সম্পন্ন হতে পারে না। চাই আল্লাহর হক হউক আর বান্দার হকই হউক।
৫. আমাদের দ্বীন দুনিয়ায় উন্নতি ও অগ্রগতি আমাদের সালফে সালেহীনদের কুরবানীর ফসল, যা আমরা ভোগ করতেছি। তাই পরবর্তী প্রজন্মের কল্যাণের জন্যে আমাদেরকে সেই ভাবে কুরবানী ও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।


কুরবানী মুসলিম উম্মাহ্র ঐক্যের প্রতীক 

সারা দুনিয়ার মুসলমান ঈদুল আয্হার দিন কুরবানী করার মাধ্যমে এ কথার সাক্ষ্য দেয় যে, তারা এক উম্মাহর অন্তর্ভূক্ত। কেবলমাত্র আল্লাহর নামে পশু কুরবানী করে তারা এ কথার সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ই তাদের মালিক। তিনি তাদের মা’বুদ, তিনি তাদের রব। তাঁর আইন ছাড়া আর কারো বিধান তারা মানে না।
ইসলামী শরীয়াতের বিধান অনুযায়ী কুরবানী করে তারা এ কথা প্রমাণ করে যে, ইসলামই তাদের জীবনাদর্শ, এটাই তাদের চলার পথ। এটাই হচ্ছে তাদের জীবন বিধান। তারা ইসলাম ছাড়া অন্য কোন পথ ও মত মানতে রাজী নয়। মুহাম্মদ সা. এর সুন্নাতের ভিত্তিতে কুরবানী করে তারা এ কাথারই সাক্ষ্য দেয় যে, তিনি তাদের একমাত্র রাহবর ও পথ প্রদর্শক, তাঁকে ছাড়া কারো অনুসরণ ও অনুকরণ করতে তারা রাজী নয়। মোট কথা কুরবানী মুসলিম উম্মাহ্র এক শক্তিশালী ঐক্যের প্রতীক।


কুরবানীর দাবী ও আহবান এবং মুসলিম উম্মাহর করণীয় 

বছর পরিক্রমায় কুরবানীর ঈদ এসে হাজির হয় মুসলিম জাতিকে হযরত ইবরাহীম আ. এর ত্যাগের চেতনায় নতুন ভাবে উজ্জীবিত করতে।
কুরবানীর সাথে জড়িত রয়েছে হযরত ইবরাহীম আ. এর তাওহীদবাদী জীবন ও একটি জাতি গঠনের সুদীর্ঘ সংগ্রামের ইতহাস।
হযরত ইবরাহীম আ. কে আল্লাহ পাক এ শাশ্বত পয়গাম, চিরন্তন ইমামত ও নেতৃত্বের সম্মান দিয়ে দুনিয়াতে পাঠিয়েছিলেন। এক নতুন জগতের বিনির্মাণের মহান উদ্দেশ্যে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে প্রস্তুত করেছিলেন।
তিনি তদানীন্তন সমাজের বিশ্বাস, ধর্মীয় আবেগ, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মহাবিদ্রোহ সূচনা করলেন। যার ফলে তাঁকে কঠিন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন: 
১. নমরূদ কর্তৃক প্রজ্জ্বলিত অগ্নিকুন্ডে নিক্ষিপ্ত হওয়া।
২. তাওহীদের হেফাজতের প্রয়োজনে চিরদিনের জন্য প্রিয় জন্ম ভূমি ত্যাগ করা।
৩. আল্লাহর নির্দেশে জনশূণ্য মরু-মক্কায় স্ত্রী হাজেরা ও কোলের শিশু ইসমাঈল কে রেখে যাওয়া ইত্যাদি ছিল বিশ্ব নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও মুসলিম জাতি গঠনের যোগ্যতা অর্জনের বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষা।
৪. হযরত ইবরাহীম আ. এর জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা, প্রেমের অগ্নি পরীক্ষা এলো চুড়ান্ত পর্যায়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আল্লাহ দেখতে চাইলেন তাঁর খলীলের ভালবাসা তাঁর প্রতি কতটা একনিষ্ঠ ও নির্ভেজাল। তাই নির্দেশ এলো কলিজার টুকরা ইসমাঈলকে কুরবানী করে দাও। নির্দেশ পাওয়া মাত্র তিনি প্রস্তুত হলেন আল্লাহর ইচ্ছা পূর্ণ করার জন্য। পুত্র ইসমাঈলকে তিনি জানিয়ে দিলেন আল্লাহর ইচ্ছার কথা। বালক ইসমাঈল আল্লাহর নির্দেশের সামনে নিজেকে কুরবানীর জন্য পেশ করে দিলেন। আল্লাহর নামে কুরবানী হওয়া, আল্লাহর নির্দেশে প্রিয় সন্তানের কুরবানী দেয়া, উভয়ই ছিল আল্লাহর প্রেমের উজ্জল ¯িœগ্ধতায় শুভ্র সমুজ্জল। শয়তানের প্ররোচনায় পার্থীব মায়া-মমতা উপেক্ষা করে প্রত্যয় দীপ্ত পদক্ষেপে তাঁরা এগিয়ে গেলেন তাদের লক্ষ্যে। মিনা প্রান্তরে তপ্ত বালুতে পরম যতেœ প্রিয় পুত্রকে শুইয়ে দিলেন পিতা ইবরাহীম আ.। পূর্ণ শক্তিতে তীক্ষè শানিত ছুরি চালালেন পুত্রের গলায়। আল্লাহর মহাপরীক্ষা সফল হলো, ইবরাহীম আ. উত্তীর্ণ হলেন।

আল্লাহর প্রেমের এমন ঘটনাকে চির অমর করার উদ্দেশ্যে, এমন কুরবানীর প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করিয়ে দেবার জন্য আল্লাহ প্রতি বছর ঈদুল আয্হার দিনগুলোতে সকল মুসলমানদের জন্য এই কুরবানীর বিধান কে এক উত্তম ইবাদত হিসেবে ওয়াজিব করে দিলেন।

ঈদুল আয্হার উৎসব ভুরিভোজনের কোন উৎসব নয়! বরং খোদাদ্রোহী তাগুতী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রথম পাঠ-প্রথম সবক। এ পাঠকে মুসলমান জাতির জন্য ওয়াজিব তো এজন্যই করে দেয়া হয়েছে, যেন তারা এই ঈদ উৎসবের মাধ্যমে আল্লাহর রাহে প্রাণ দেয়ার উৎসাহ পায়, সাহস অর্জন করে। হযরত ইবরাহীম ও হযরত ইসমাঈলের এ অভূতপূর্ব দৃশ্য বারবার ভেসে উঠে পবিত্র ঈদে মুসলমানদের মানস পটে।
কুরবানীর আগমন ঘটে মুসলমান জাতির অন্তরে এ জীবন অনুভূতি জাগ্রত করার জন্য যে, ঈমান ও তাওহীদের পথে তাদের এ জীবন হচ্ছে দুনিয়ার সকল অপশক্তি ও শয়তানী চক্রের বিরুদ্ধে আপোসহীন সংগ্রাম ও সংঘাতের জীবন।
এই কুরবানী আহবান জানায় মুসলমান জাতিকে শক্তিশালী ঈমান, নির্ভেজাল প্রেম এবং নজীরবিহীন ত্যাগ ও কুরবানীর আদর্শ অনুসরনের মাধ্যমে অন্যায় , অসত্য ও খোদাদ্রোহী তাগুতী শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণায়।

আল্লাহর কাছে কুরবানীর পশুর রক্ত মাংস কিছুই পৌঁছেনা। বরং আল্লাহর কাছে পৌঁছে বান্দার তাকওয়া, আন্তরিকতা ও একাগ্রতা। যেহেতু আজ আমাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি মহব্বত অনুপস্থিত, নিয়তের প্রবিত্রতা কলুষিত তাই কুরবানীর রক্ত শুধু জমিনই লাল করছে, আমাদের হৃদয়কে আল্লাহর মহব্বতে রঞ্জিত করছেনা। সে জন্য আমাদের কুরবানী আনুষ্ঠানিকতায় রূপ নিয়েছে, যা আমাদেরকে ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার হিম্মত জোগাচ্ছেনা।
জাতির সত্যিকার কল্যাণ করতে হলে ত্যাগ করতে হবে হযরত ইবরাহীমের আ. মতো। আজ আমরা ইবরাহীমী কুরবানীকে ভূলে গেছি। আজ তাই গোটা বিশ্বে মুসলমানদের করুণ দশা। আমাদের কুরবানীর অবস্থা দেখে আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বলেছিলেন,

“ঈদের নামায আমাদের শিখিয়েছে সত্যিকার কুরবানী করলেই মিলবে নিত্যানন্দ। আমরা গরু-ছাগল কুরবানী করে খোদাকে ফাঁকি দেবার চেষ্টা করছি। তাতে করে আমরা নিজেদেরকেই ফাঁকি দিচ্ছি। আমাদের মনের ভিতরে যে সব পাপ, অন্যায় স্বার্থপরতা ও কুসংস্কারের গরু-ছাগল যা আমাদের সৎবৃত্তির ঘাস খেয়ে আমাদের মনকে মরুভূমি করে ফেলেছে, আসলে কুরবানী করতে হবে সেই সব গরু-ছাগলের। হযরত ইবরাহীম আ. নিজের প্রাণতুল্য পুত্রকে কুরবানী করে দিলেন বলেই তিনি নিত্যানন্দের অধিকারী হয়েছিলেন। আমরা তা করিনি বলেই আমরা কুরবানী শেষ করে চিড়িয়াখানায় যাই তামাসা দেখতে। আমি বলি ঈদ করে যারা চিড়িয়াখানায় যায়, তারা চিড়িয়াখানায় থেকে যায় না কেন?

মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ জনতাকে নজরুলের ভাষায় চিড়িয়াখানায় আশ্রয় নেবার সময় এসেছে। কারণ, আজো আমরা কুরবানীর পশুর গলায় ছুির চালাতে গিয়ে মুখে উচ্চারণ করি -

اِنَّ صَلوتِىْ وَ نُسُكِىْ وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِىْ للهِ رَبِّ الْعلَمِيْنَ “আমার সব প্রার্থণা নামায, রোযা, তাপস্য, জীবন-মরণ সব কিছু বিশ্বের একমাত্র পরম প্রভূ আল্লাহর পবিত্র নামে নিবেদিত”।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো অন্তরে এর কোন অনুভূতিই নেই। যখন মুসলমানদের কুরবানীতে হযরত ইবরাহীম আ. ও হযরত ইসমাঈল আ. এর ত্যাগের অনুভূতি বিদ্যমান ছিল তখন দেখেছি ওহুদের যুদ্ধে, বদরের ময়দানে, খায়বরের জঙ্গে মুসলমানদের বিজয়। দেখেছি হযরত ওমর ফারুক রা. এর বিশ্ব বিজয়ী বাহিনীকে অগ্রসৈনিক রূপে, দেখেছি দূর আফ্রিকায় মুসা, তারিকের, মিশরের পিরামিডের পার্শ্বে, ইরান মুলুকের আলবোর্জের জিব্রাল্টারের উত্তুঙ্গ জলরাশির মধ্যে নাঙ্গা শমশের হাতে মুসলিম সেনাদেরকে ঝাঁপিয়ে পড়তে। দেখেছি ক্রুসেডের রণে, জেহাদের জঙ্গে সুলতান সালাউদ্দীনের বিজয়।
আজ আল্লাহর রাহে কুরবানীর চেতনায় ইবরাহীমী জযবা নেই বিধায় গোটা বিশ্বব্যাপী মুসলমান চরম ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে, অপমানিত হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্যে আজ মা হাজেরার অনুপ্রেরণায় শত শত মা তাদের কচি-কচি সন্তানকে শুধু মাত্র ঈমানী জযবায় শহীদী ঈদগাহে পাঠাচ্ছেন। শত শত নারী-পুরুষ জীবন বিলাচ্ছে তাদের ঈমান, ইজ্জত রক্ষা করতে। আর বিচ্ছিন্ন ভাবে নয়, শক্তিমান দানবদের উৎপাত থামাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে এক হয়ে জান-মালের কুরবানীর জন্য এগিয়ে আসতে হবে। শুধু মাত্র গরু কুরবানী করেই আল্লাহ কে ফাঁকি দিলে গোটা জাতি ফাঁকির অতল গর্ভে হারিয়ে যাবে।
মুসলামান জাতিকে স্মরণ করা প্রয়োজন রাসূল সা. ও সাহাবাদের কুরবানীর ইতিহাস। তাঁদের কুরবানীর অন্যতম ইতিহাস হোদায়বিয়ার প্রান্তরের কুরবানী। হোদায়বিয়ার প্রান্তরে একদিকে রাসূল সা. এর সাথে নিয়ে আসা কুরবানীর পশুগুলোকে কুরবানী দিলেন, অন্য দিকে শত্রুদেশে এসে একদল মুসলামানের সত্যের জন্য আতœদানের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। এই দ্বিবিধ কুরবানীর ফলে মুসলমানদের জন্য আল্লাহ কবুল করলেন “ফতহে মুবীন” সুস্পষ্ট বিজয়।

কুরবানীর শিক্ষাকে সার্থক করার জন্য আজ সবচেয়ে বড় প্রয়োজন গোটা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ কে সম্মিলিত হওয়া, সংঘবদ্ধ হওয়া। যে উখ্ওয়াত-সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ব, যে একতা ছিল মুসলিমের আদর্শ যার জোরে মুসলিম জাতি এক শতাব্দীর মধ্যে পৃথিবী জয় করেছিল, আজ আমাদের সে একতা নেই তারা হিংসায়, ঈর্ষায়, কলহে ঐক্যহীন বিচ্ছিন্ন, এই বিচ্ছিন্নতার সুযোগ গ্রহণ করেছে ইসলামের শত্রুরা।

মুসলমানদের বিজয়ের পেছনে ছিল ঐক্যবদ্ধতা, মৃত্যু ভয়হীনতা ও আল্লাহর রাহে জানমালের কুরবানী। এসব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে মুসলমানেরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। 
রাসূলুল্লাহ সা. মুসলমানদেরকে সাবধান করে বলেছেন : শিঘ্রই আমার উম্মতের উপর এমন একটি দু:সময় আসবে যখন দুনিয়ায় বিভিন্ন জাতি তাদের দিকে এমন ভাবে ধাবিত হবে যেমন ধাবিত হয় ক্ষুধার্ত মানুষ খাদ্যের দিকে। সাহাবাদের কেউ একজন জিজ্ঞেস করলেন, তখন আমরা সংখ্যায় এতোই কম থাকবো? (যে অন্যান্য জাতিগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদেরকে গিলে ফেলার জন্য ছুটে আসবে?) রাসূলুল্লাহ সা. বললেন: না, সেদিন তোমাদের সংখ্যা কম হবেনা বরং তোমরা সংখ্যায় অধিক হবে। কিন্তু তোমরা হবে বন্যার পানির ফেনার সমতুল্য। অবশ্যই আল্লাহ সে সময় তোমাদের শত্রুর অন্তর থেকে তোমাদের ভীতি দূর করে দেবেন এবং তোমাদের মনে তাদের ভয় সৃষ্টি করে দেবেন। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন : হুজুর! আমাদের মনে এ দূর্বলতা ও ভীতি দেখা দেয়ার কারণ কি হবে? 
রাসূলুল্লাহ সা. বললেন - 

حُبُّ الدُّنْيَا وَكَرَا هِيَةُ الْمَوْتُ দুনিয়া প্রীতি ও মৃত্যুভীতি। অর্থাৎ সেদিন তোমরা দুনিয়াকে ভালোবাসবে, দুনিয়াকে আঁকড়ে ধরবে এবং মৃত্যুকে অপছন্দ করে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ পরিত্যাগ করবে। { সুনানে আবু দাউদ, সূত্র: হযরত সাওবান রা. হতে বর্ণিত।}

রাসূলুল্লাহ সা. এর হাদীস আজ সত্যে পরিণত হয়েছে। আজ গোটা মুসলিম বিশ্বকে জয় করে নিচ্ছে ইহুদী,নাসারা ও মুশরিক ঐক্যবদ্ধ শক্তি। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে মুসলমানদের ঈদগাহে আসতে হবে শুধু কুরবানীর পশু নিয়ে নয়, বরং রাসূলের আদর্শে আদর্শিত হয়ে নিজেদের জান-মাল কে আল্লাহর রাহে কুরবানীর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে।
বর্তমান বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কাছে কুরবানী আহবান জানায় শক্তিশালী ঈমান, নির্ভেজাল প্রেম এবং নজীর বিহীন ত্যাগ ও কুরবানীর ইবরাহীমী আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে বদ্ধমুল কুসংস্কার, অসত্য কুফরীও তাগুতী শক্তির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করার। কুরবানীর এ আহবানে সাড়া দিতে পারলেই এক নতুন সাজে সজ্জিত এবং নতুন প্রত্যয়ে উদ্দীপ্ত হয়ে উঠবে তাওহীদবাদী গোট মুসলিম উম্মাহ্। বিজয় মুসলমানদেরই হবে ইন্শাআল্লাহ।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন -

وَ لَا تَهِنُوْا وَلَا تَحْزَنُوْا وَ اَنْتُمُ الْاَعْلَوْنَ اِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِيْنَ- “আর তোমরা নিরাশ হয়োনা এবং দুঃখ করোনা। যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই বিজয়ী হবে। { সূরা আলে ইমরান -১৩৯।}

মহান আল্লাহ আরো বলেন -
وَكَانَ حَقًّا عَلَيْنَا نَصْرُ الْمُؤْمِنِيْنَ “মুমিনদের সাহায্য করা আল্লাহর জন্য অবশ্য কর্তব্য হয়ে যায়”।{ সূরা আর রূম -৪৭।} 

মহান আল্লাহ আরো ঘোষণা করেন -
اَلَا اِنَّ نَصْرَ اللهِ قَرِيْبٌ- “ সাবধান! নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটেই”। { সূরা আল বাকারাহ -২১৪।}

জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বলেছিলেন -

“ভেঙ্গেছে দুয়ার, জেগেছে জোয়ার, রেঙেছে পূর্বাচল, খুলে গেছে দেখ দুর্গতি ভরা দুর্গের অর্গল। মৃত্যুর মাঝে অমৃত যিনি এনেছে তার বাণী, পেয়েছি তাহার পরমাশ্রয়, আর ভয় নাহি মানি। সকল ভয়ের মাঝে রাজে যার পরম অভয় কোল, সেই কোলে যেতে আয়রে কে দিবি মরণ দোলাতে দোল।”

আসুন! আমরা মুসলিম উম্মাহ্ ঈদুল আয্হায় কুরবানীর পবিত্র উৎসবে সেই মরণ দোলাতে দোল দিয়ে বিশ্বকে বাঁচাই ।

সামঞ্জস্যহীন শ্রেণীস্বার্থ ধরে রাখতে জনগণের যেসব সংকট সৃষ্টি করতে হয় তার মধ্যে শিক্ষাই প্রধান ক্ষেত্র ।

সামঞ্জস্যহীন শ্রেণীস্বার্থ ধরে রাখতে জনগণের যেসব সংকট সৃষ্টি করতে হয় তার মধ্যে শিক্ষাই প্রধান ক্ষেত্র ।
ফারুক আহমেদ
জনগণের শিক্ষা নিয়ে যাঁরা ভেবেছেন ,যে শিক্ষা মানবজাতির বিকাশ ঘটায় ,সন্মুখ গতি বুঝতে সাহায্য করে এবং সন্মুখ গতি ধরে রাখে, অল্প কথায় তেমন শিক্ষার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে তাঁরা বলেছেন-শিখে ভুলে যাওয়ার পর যা’ অবশেষ থাকে তাকেই শিক্ষা বলে ।ছোট্ট এই বাক্যটিকে বিশ্লেষণ করলে এর মধ্য থেকে অনেক কিছুই বের হয়ে আসে ।সবচেয়ে প্রথম এবং প্রধান যে বিষয়টি এর মধ্যদিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে তা’ হলো শিক্ষা তাই যা’ মানুষের মধ্যে কিছু সৃষ্টি করে । কি সৃষ্টি করে ? প্রথমেই আসে দেখার দৃষ্টিভংগি ।প্রকৃতি,প্রতিবেশ , সমাজ , সম্পর্ককে দেখার দৃষ্টিভংগি । শিক্ষাই পারে জটিল ,দুর্বোধ্য ,অস্পষ্ট দৃষ্টিভংগি থেকে মানবজাতিকে সরল , বোধগম্য এবং স্পষ্ট দৃষ্টিভংগির দিকে নিয়ে যেতে ।এদিক দিয়ে বলা যায় জটিল , মানবেতর সম্পর্ক থেকে সরল মানবিক সম্পর্কের সমাজে যাওয়ার মানব সমাজের যে লাগাতার সংগ্রাম তার বাহন বা হাতিয়ার হলো শিক্ষা । 
যুক্তির তোয়াক্কা না করে প্রশ্নহীনভাবে আপ্ত বাক্যটিকে আঁকড়ে থাকার সংষ্কৃতি থেকে শিক্ষা মানুষকে এমন এক সংষ্কৃতির দিকে নিয়ে যায় যা’ হয় যুক্তির,বোধের এবং সমাজের সকল মানুষের পরষ্পরের প্রতি বিবেচনার সহজ মানুষের সংষ্কৃতি ।শিক্ষা মানুষকে সহজ মানুষে পরিণত করে ফলে সমাজে মানুষে মানুষে সম্পর্কগুলোও জটিল থাকতে পারে না ।সম্পর্কগুলো হয় সহজ , মর্যাদার এবং সন্মানের । শিক্ষা প্রশ্ন করতে শেখায় । প্রশ্ন মানেই জটিলকে সরল করার উপায় , যা’কিছু দুর্বোধ্য তাকে বোধের আওতায় নিয়ে আসার প্রচেষ্টা । প্রশ্নের মধ্যদিয়েই ঠিক-বেঠিক নির্ধারিত হয় এবং এর মাধ্যমেই গ্রহন-বর্জনের প্রক্রিয়া চলে । শিক্ষা পরম্পরাকে দেখার দর্পন তৈরী করে এবং এর মধ্যদিয়ে লাগাতারভাবে মার্জিত , রুচিশীল মানুষ এবং মানুষের সমাজ নির্মান করে । 
এ সবকিছুই সামঞ্জস্যহীনতার শ্রেণী স্বার্থের সমাজ টিকিয়ে রাখার জন্য বিপদজনক । তাই যেখানেই সামঞ্জস্যহীন শ্রেণী স্বার্থের প্রতিনিধিরা শিক্ষার নিয়ন্ত্রক সেখানেই তাদের নিজেদের স্বার্থেই শিক্ষার দর্শন পরিবর্তন করতে হয় , শিক্ষার সংজ্ঞা পাল্টে দিতে হয় ।প্রথমেই তাদেরকে যেটা করতে হয় তা’ হলো মানুষের দেখার স্বাভাবিক দৃষ্টিভংগিকে পাল্টে দিতে হয় । প্রকৃতি ,প্রতিবেশ , সমাজ ,সম্পর্ককে দেখার এমন দৃষ্টিভংগি তৈরী করতে হয় যার মধ্যদিয়ে এগুলো দুর্বোধ্য ,জটিল এবং অস্পষ্টতার আবরণে ক্রমশঃ ঢাকা পড়তে থাকে ।এগুলোকে যত জটিল এবং অস্পষ্ট করা যায় ততই তা ব্যাখ্যার জন্য রহস্যের আশ্রয় নেয়া সম্ভব হয় ।মানুষের এবং তার সমাজজীবনের সমস্যা-সংকটের কারণ এবং তার সমাধানের পথকে রহস্যাশ্রয়ী করে তুলতে পারার চেয়ে সুবিধাজনক আর এই শ্রণীটির কাছে কিছুই হতে পারে না । সবকিছুকে রহস্যাবৃত করে তুললে যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য সামগ্রিক থেকে বিচ্ছিন্ন এবং সমষ্টি থেকে ব্যাক্তিগত দৃষ্টিভংগি তৈরী হয় ।তাই এই শ্রণী কর্তৃক পরিচালিত শিক্ষার দর্শন হলো ব্যাক্তির উৎকর্ষসাধন ।তারা প্রচার করে থাকে বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ভাবে ব্যাক্তির উৎকর্ষতার মধ্যদিয়ে গোটা সমাজ তথা মানবজাতির উৎকর্ষতায় উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব ।কিন্তু প্রকৃতি এবং বিজ্ঞান তাদের এই যুক্তিকে সমর্থন করে না ।তাই তাদেরকে প্রকৃতিকে দেখার সহজ দৃষ্টিভংগি এবং বিজ্ঞানের সংজ্ঞা পাল্টাতে হয় । 
সবকিছুকে রহস্যের মধ্যে ঠেলে দেওয়ার মধ্যদিয়ে প্রথমেই তারা যে কাজটি করতে সক্ষম হয় তা হলো সমাজের একটি বিরাট ব্যাপক অংশকে শিক্ষার আঙ্গিনায়ই প্রবেশ করতে না দেওয়া ।এরপর থাকে যারা শিক্ষার আঙ্গিনায় প্রবেশ করল তাদের নিয়ন্ত্রন করা । নিয়ন্ত্রন দুই রকমের হয় । একটি হলো সংখ্যাগত নিয়ন্ত্রন ,এই নিয়ন্ত্রন কতকগুলো প্রক্রিয়ার সমষ্টি ,এগুলো তাদের প্রয়োজনের বাইরে বিরাট একটি অংশকে আপাতঃ স্বাভাবিক নিয়মে শিক্ষাঙ্গন থেকে উচ্ছ্বেদ করার প্রক্রিয়া । অপর নিয়ন্ত্রন হলো চিন্তাগত নিয়ন্ত্রন ।এর জন্য তাদেরকে শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে এমন অবস্থার সৃষ্টি করতে হয় যাতে শিক্ষার্থীদের চিন্তা এবং কর্মকে তারা তাদের মত করে নিয়ন্ত্রন করতে পারে এবং একটি অংশকে তাদের উত্তরসূরী হিসাবে তৈরী করতে পারে ।এ কাজ করার জন্য শিক্ষার অবকাঠামো এবং পদ্ধতি তাদের মত করে সাজাতে হয় ।শিক্ষার্থীদের চিন্তার জগৎকে বন্ধ এবং বদ্ধ করার প্রয়োজন পড়ে ।
মুক্ত পরিবেশ , মুক্ত আঙ্গিনা বদ্ধ চিন্তার জন্য সহায়ক নয় ,যতটা সহায়ক একদিকে জরাজীর্ণ দৈন্য পরিবেশে এবং অপরদিকে শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত গালিচা বিছানো বদ্ধ পরিবেশে ।তাই শিক্ষার অবকাঠামোর দিক দিয়ে একদিকে যেমন দেখা যায় অস্বাস্থ্যকর জরাজীর্ণ দৈন্য পরিবেশ অপরদিকে দেখা যায় বদ্ধ পরিবেশের মধ্যে নানা রঙের জেৌলুস ।এ দুই প্রকার পরিবেশের মধ্যে আপাতঃ বিপরীত চিত্র দেখা গেলেও এই বিপরীত চিত্রের নির্মাণ একই লক্ষ্যে এবং এ দুইয়ের মধ্যে একটি সাধারণ দিক হলো উভয়ক্ষেত্রে সাধারণভাবে শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত উপাদানের অনুপস্থিতি ।উভয়ক্ষেত্রে খেলার কোন মাঠ নেই ,সমষ্টিগত উন্মুক্ত বিনোদনের কোন ব্যবস্থা নেই । উভয়ক্ষেত্রে লাইব্রেরী নেই ,ক্ষেত্রবিশেষে যা’ আছে তাকে লাইব্রেরী বলা চলে না । এই শিক্ষা ব্যবস্থার যারা নীতিনির্ধারক এবং পরিচালক খেলার মাঠ , লাইব্রেরী ,সমষ্টিগত বিনোদন এগুলো নিয়ে তাদের কোন ভাবনা বা পরিকল্পনা নেই যতটা ভাবনা , পরিকল্পনা আর কথার ফুলঝুরি দেখা যায় ইন্টারনেট, ল্যাপটপ , ডিজিটালাইজেশন(?) ইত্যাদি নিয়ে ।এগুলো নিয়ে তাদের ব্যস্ততার কারণ এগুলোর মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে চটকদার লোলভনীয় বস্ত্তুর মুলা ঝুলিয়ে এমন এক অবস্থার সৃষ্টি করা যাতে শিক্ষার দর্শন শাসকশ্রেণীর মত হয় ।
শিক্ষার দর্শন তাদের মত করতে শাসকশ্রেণীকে শিক্ষার পদ্ধতিও তাদের মত করে সাজাতে হয় । এজন্য তারা শিক্ষার বিষয়বস্ত্তু ,পাঠের মনস্তাত্ত্বিক পরিবেশ ,পরীক্ষা পদ্ধতি, শিক্ষকদের আচরণ সবকিছুকেই নিয়ন্ত্রন করে থাকে । সাহিত্য, ইতিহাস , ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ে পাঠের বিষয়বস্ত্তু তারা এমনভাবে নির্বাচন করে যাতে এগুলোর মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীদের চিন্তার যে গঠন হয় তাতে তাদের স্বার্থের জন্য বিপদজনকতো নয়ই বরং সহায়ক হয় এবং পরবর্তীতে এর মধ্য থেকেই তাদের প্রতিনিধি তৈরী হয় ।বিজ্ঞান ,গণিত এগুলোর কঙ্কাল মূলনীতিগুলোকে বদলাতে না পারলেও এগুলোর দর্শনকে খুবই বদলানো যায় এবং শাসকশ্রেণী তা করে থাকে ।ক্রিষ্টোফার কডওয়েল দেখিয়েছেন ধনিকশ্রেণীস্বার্থের রক্ষকদের হাতে পড়ে পদার্থবিজ্ঞান কিভাবে তার সামগ্রিকতা হারিয়ে নিছক কঙ্কালে পরণত হয় । গণিত , বিজ্ঞান প্রভৃতির পাঠদান পদ্ধতি এমন করা হয় যাতে শিক্ষার্থীদের কাছে এগুলোর মর্মবস্ত্তু দুর্বোধ্য এবং অস্পষ্টই থেকে যায় অথচ এগুলোর সূত্র ,ফর্মূলা মুখস্ত করে পরীক্ষায় ভাল ফল করা যায় ।এই বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে এমনটি বেশিমাত্রায় ঘটলেও সাধারণভাবে সকল বিষয়ের জন্যই একথা বলা যায় । পাঠের বিষয়বস্ত্তুকে অস্পষ্ট এবং দুর্বোধ্য রেখেও পরীক্ষায় ভাল ফল করতে পারার মধ্যদিয়ে শাসকশ্রেণীর সবচেয়ে বড় লাভটি হয় । বিরাট পরিচয়ের বুদবুদের মাঝে শিক্ষার্থীদের মনে শূন্যতার সৃষ্টি হয় , পরিচয়ের সাথে তাদের ভিতরের অবস্থা মিলে না । এ ধরনের শূন্যতা শাসকশ্রেণীর অনুগত হওয়া এবং তাদের দলে ভিঁড়ে যাওয়ার চালিকাশক্তিরূপে কাজ করে । পরিচয়ের বুদবুদে ফুলে ওঠা অথচ শূন্যতার সংকটে থাকা মস্তিষ্ক চিন্তাহীনতা , অবিবেচনা এবং স্বার্থপরতা দ্বারা দখল হয়ে যাওয়া সহজ । একারণেই মেধাবির আওয়াজের মধ্যে দখল হয়ে যাওয়া তথাকথিত ভাল ছাত্ররা স্বার্থপরতার সকল বিষয়কেই তাদের অধিকার হিসাবে মনে করাকে তাদের বুদবুদীয় শূন্য “মেধার” কাছ থেকে কোন প্রকার বাধা পায় না ।উপরন্ত্তু তারা তাদের কথিত মেধার ভার সব সময়ই খেটে খাওয়া গরীব মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়ে থাকে ।এর মধ্যদিয়ে স্বার্থপরতা এবং বিচ্ছিন্নতার শিক্ষাদর্শন কর্যকর হয় । শূন্যতা যে কিভাবে যুক্তিহীন, অবিবেচনা আর স্বার্থপরতার ভিত্তি হতে পারে তা’ পরিচয়ের বুদবুদে ফুলে থাকা প্রকান্ডদের প্রতিদিনের অসংগত আচরনের মধ্যদিয়ে বুঝা যায় ।বৈধ বা অবৈধের প্রশ্ন নয় , নিয়ম বা দুর্নিতীর প্রশ্ন নয় প্রকৃত শিক্ষা মানুষের মধ্যে যে বোধ , বিবেচনা এবং যুক্তির সংস্কৃতি সৃষ্টি করে তা কখনোই কারোর আধাঘন্টা, এক ঘন্টা বা দুই ঘন্টার শ্রমের দাম লক্ষ টাকা থেকে কয়েক লক্ষ টাকাতো দুরে থাক কয়েক হাজার টাকাও অনুমোদন করতে পারে না । পরিচয়ের বুদবুদে ফুলে থাকা শূন্য মস্তিষ্ক ছাড়া সেখান থেকে এসবের আনুমোদন আসা কঠিন ।
মস্তিষ্ক দখলের অনেক উপায়ের মধ্যে একটি হলো মনস্তাত্ত্বিক পরিবেশ সৃষ্টি করা । এই ভুখন্ডে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামের রাষ্ট্র ছিল ।একসময় এই নাম ছিল ইসলামী প্রজাতন্ত্র ।এখন আমাদের স্বাধীন সার্বভেৌম রাষ্ট্রটির নাম –গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ।যখন রাষ্ট্রের নাম ছিল ইসলামী প্রজাতন্ত্র তখনও বাধ্যতামূলক ধর্মশিক্ষা এবং ধর্মীয় পোষাকের বাড়াবাড়ি এত ছিল না যা’ এখন দেখা যাচ্ছে ।ঢাকা শহর থেকে শুরুকরে বাংলাদেশের সর্বত্র স্কুল ড্রেস হিসাবে টুপি অলিখিতভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ।গুটিকতক স্কুল ছাড়া অধিকাংশ স্কুল এবং কলেজে মেয়েদের ড্রেস হিসাবে বোরকা এবং প্রায় বোরকা অবস্থাকে অঘোষিতভাবে প্রায় নিরবে বাধ্যতামূলক করে ফেলা হয়েছে ।একথা বলার অর্থ এই নয় যে, ইসলামিক প্রজাতন্ত্র থাকলে এসব হতো না ।অবশ্যই হতো ।একথা এজন্য বলা যে , অন্য যাই হোক শ্রণী হিসাবে শাসকদের বদল হয়নি ।কাজেই যা’ ঘটছে তা ধারাবাহিকভাবেই তাদের দিক থেকে নিয়মমতই ঘটছে ।এ পর্যন্ত যা’ কিছু বলা হলো সেসব এবং আরো অনেক বিষয় আছে যা এই পরিসরে বলা সম্ভব নয় সবই শিক্ষাক্ষেত্রে জনগণের জন্য সংকট এবং নৈরাজ্য হলেও শাসকশ্রেণীর জন্য এসবই নিয়ম ।অসামঞ্জস্য শ্রেণীস্বার্থ টিকিয়ে রাখতে হলে শাসক শ্রণীকে অনিবার্যভাবেই জনগণের এসব সংকট সৃষ্টি করতে হয় । 

পৃষ্ঠাসমূহ