বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১২

দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়েই দুদকের ডিজি

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ মাথায় নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক (ডিজি) ও মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফররুখ আহমেদ। তাঁর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও অভিযোগ সংক্রান্ত নথি এখনো দুদকের অনিষ্পন্ন শাখায় রয়েছে।
দুদকের নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ফররুখ আহমেদ ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদের হিসাব চেয়ে ২০০২ সালের ২৭ জুলাই দুর্নীতি দমন ব্যুরো (বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশন) নোটিশ পাঠায়। তিনি সম্পদের হিসাব জমা না দিয়ে নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ওই রিট এখনো নিষ্পত্তি না হওয়ায় এই ব্যাপারে দুদক আর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বলে দুদক সূত্র জানায়।
হাইকোর্টের কার্যতালিকায় দেখা যায়, ফররুখ আহমেদের করা রিট আবেদনটি (নং ৪১৪০/২০০২) ১০ বছর ধরে শুনানির জন্য অপেক্ষা রয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি এম হাফিজউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ফররুখ আহমেদকে যদি সম্পদের হিসাব দিতে নোটিশ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে তাঁকে দুদকে নিয়োগ দেওয়া ঠিক হয়নি। এতে দুদকের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
দুদকের একটি সূত্র জানায়, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার ফররুখ আহমেদ ২০০৯ সালে দুদকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। তিনি বর্তমানে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) ও মুখপাত্র। তাঁর চুক্তিভিত্তিক চাকরির মেয়ার গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়। এরপর আরও এক বছরের জন্য একই পদে তাঁর চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে দুদকের অনিষ্পন্ন শাখা থেকে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠানোর অনুমোদনসংক্রান্ত নথি গায়েব হয়ে যায়।
এদিকে এ-সংক্রান্ত রিটের শুনানি গ্রহণের জন্য নথিটি উপস্থাপনের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু দুদকের পক্ষ থেকে নথিটি জমা দিতে না পারায় শুনানি পেছাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে খোঁজখবর করা হলে ১৮ জানুয়ারি দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, সম্প্রতি ওই নথিটি খুঁজে পাওয়া গেছে। দুদক নথিটি আদালতে দাখিল করবে।
দুদকের নথিতে দেখা যায়, ওই নোটিশে ফররুখ আহমেদকে ৪৫ দিনের মধ্যে সম্পদের হিসাব দিতে বলা হয়েছিল। জানতে চাইলে ফররুখ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমার মতো অনেক মুক্তিযোদ্ধা ক্যাডার অফিসারকে জোর করে অবসর দেয়। এ বিষয়ে ছয় মাসের মধ্যে মামলা করেছি। ওই সময়ের মধ্যেই আমাকে অন্যায়ভাবে দুদক নোটিশ দিয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ