রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১২

মুঠোফোনে পুরস্কারের টোপ

একদিন দুপুরে আমার নাম্বারে আননোন কল এলো। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে পুরষ্কারের বার্তা নিয়ে এক লোকের কণ্ঠ ভেসে এলো। বলল, আমি ১৬৫০০ টাকা জিতেছি, আর এই পুরস্কার কিভাবে পেতে হবে তা জানার জন্য সেই নাম্বারেই কল ব্যাক করতে হবে। এই বলেই লাইনটা কেটে দেয়। 

আমি কলব্যাক করলাম। আর সে আমাকে বোঝাচ্ছিল কিভাবে টাকাটা সংগ্রহ করতে হবে। আমি তার কথার মাঝেই টাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, তোমার কণ্ঠের যে ছিরি, তোমাকে টেলিকমিউনিকেশনে চাকরী দিলটা কে? ছাগলের বাচ্চা, ধান্দা করার আর জায়গা পেলে না?'

ওপাশ থেকে লাইনটা কেটে দিল। পরব্তীতে অনেকবার চেষ্টা করেও তার সংযোগ আর পেলাম না।

এর ক'দিন পর, আমার খালাতো বোনের গ্রামীণ নাম্বার লক্ষাদিক টাকার পুরস্কারের কথা বলে কল আসে, আর সে টাকা তোলার জন্য খরচ বাবদ ৬০০০০ টাকা দিতে বলে, আর বোনটি আমার সরল বিশ্বাসেই আমার কাছে ৬০০০০ ধার চাইতে আসে এই চুক্তিতে যে পুষ্কারের টাকার অর্ধেকটা আমাকে দেবে। আমি তাকে আমার অভিজ্ঞতার কথা বলে অনেক কষ্টে তাকে নিবৃত করি। 

বন্ধুরা, কম বেশি অনেকেই এই প্ররোচনায় পা দিয়েছ। কেও বেঁচে গেছ, কেও বা সরল বিশ্বাসে এই প্রতারণায় পা দিয়েছ কৃষক কলিম উদ্দিনের মত।

টেলি কোম্পানি ইন্সস্ট্যান্ট বোনাস ছাড়া কখনি কোন পুরস্কার ঘোষণা করেনি। আর টুকটাক যে সব পুরস্কার ঘোষণা করা হয় তা দৈনিক পত্রিকা বা টিভি'তে প্রচার করে থাকে। 

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, বেশ ক'বছর ধরেই প্রতারকরা এই কাজ করে আসছে, কিন্তু টেলি কোম্পানি গুলো আজ পর্যন্ত এই ব্যাপারে সচেতনা মূলক কোন প্রচারণা তারা করেনি। 
যদি তারা তা করত, কৃষক কলিম উদ্দিন আজ এই প্রতারনার স্বীকার হত না। 

তাই বন্ধুরা, সাবধান !!! 

কৃষক কলিম উদ্দিনের প্রতারনার স্বীকারের কাহিনীঃ
কৃষক কলিম উদ্দিনের বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আমোদপুর গ্রামে। গত বুধবার তাঁর মুঠোফোনে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, একটি মুঠোফোন কোম্পানির লটারি জিতেছেন তিনি। পুরস্কার হিসেবে ১৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা ও পাঁচ ভরি ওজনের স্বর্ণপদক দেওয়া হবে। পুরস্কারের টাকা বাড়িতে হেলিকপ্টারে করে পাঠানো হবে।
এ জন্য সরকারি ভ্যাট (কর) ও হেলিকপ্টার ভাড়া দিতে হবে কলিমকে। দুই দিনের ব্যবধানে দুই কিস্তিতে ৮১ হাজার ৫০০ টাকা পাঠান কলিম। তারপর আবার ফোন। এবার দাবি ৬৪ হাজার টাকা। পাঠাতে হবে ফরিদপুরে। কলিমের মনে সন্দেহ জাগে। গত শুক্রবার তিনি প্রথম আলোর রাজশাহী কার্যালয়ে এসে ঘটনা খুলে বলেন। পরে কৌশলে ৫০০ টাকা পাঠিয়ে প্রথম আলোর ফরিদপুর প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রতারককে আটক করা হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ