বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১২

আচমকা নাশকতা চালানোর শঙ্কা তাবলিগের ছদ্মবেশে ঢাকায় হুজি-লস্কর

তাবলিগের ছদ্মবেশে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি) এবং লস্কর-ই-তৈয়বার কয়েক শীর্ষ ক্যাডার বাংলাদেশে প্রবেশ করায় তোলপাড় চলছে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের মধ্যে। তাবলিগ জামাত শুরু হওয়ার আগে সারা দেশে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হলেও কীভাবে জঙ্গিরা ঢাকায় ঢুকে পড়েছে, তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা। সীমান্ত চৌকিতে গোয়েন্দা তল্লাশি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।



সূত্র জানায়, পাকিস্তানের দুটি জঙ্গি সংগঠনের কয়েক শীর্ষ ক্যাডার হিযবুত তাহ্রীরের সহায়তায় অতিসম্প্রতি ঢাকায় ঢুকেছে। এ ক্যাডাররা বিস্ফোরকদ্রব্যে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এরা আচমকা কোনো ধরনের নাশকতা চালাতে পারে এমন আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চক্রটির সঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানরত হিযবুত তাহ্রীরের কয়েক শীর্ষপর্যায়ের নেতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের পরিকল্পনায় রয়েছে এ দেশের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থাপনা এবং থানায় হামলা চালানো।



এমন আশঙ্কাজনক খবরের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পর একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনকেন্দ্রিক সেনা, পুলিশ, এসএসএফ, পিজিআরসহ বিভিন্ন সংস্থা নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে।



সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় তাদের বর্তমান নিরাপত্তাব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত নিরাপত্তা সদস্যরা। শুধু বাসভবন নয়, তাদের চলাচলের সময়ও সড়কপথের নিরাপত্তা আরো বেশি জোরদার করা হয়েছে।পাকিস্তানি জঙ্গিরা ঢাকায় ঢুকে পড়ার ব্যাপারে সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তানকেন্দ্রিক দুটি ইসলামী জঙ্গি সংগঠনের কয়েক শীর্ষ ক্যাডার সম্প্রতি ঢাকায় এসেছে।



এদের মধ্যে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি) লস্কর-ই-তৈয়বা। এর মধ্যে লস্করের কাশ্মির শাখার এক শীর্ষ ক্যাডারও রয়েছে। টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমায় যোগদানের কথা বলে এরা ধর্মীয় লেবাস ধরে ঢাকায় ঢুকেছে। বিমানবন্দর সূত্র থেকে তারা এ জঙ্গি সদস্যদের এ দেশে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তারা এ তথ্য পাওয়ার পর থেকেই দফায় দফায় বৈঠক করেছেন।



তারা জানতে পেরেছেন, এ জঙ্গিদের উদ্দেশ্য রাজধানীর কয়েকটি থানাসহ সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থাপনায় হামলা চালানো। গত ২২ জানুয়ারিতেই তাদের এ হামলা চালানোর কথা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তারা সেটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তবে এ দেশের পুলিশ ও গোয়েন্দারা যে বিষয়টি টের পেয়ে গেছে, সেটি তারা জেনে গেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরো জানান, তারা এ জঙ্গিচক্রকে ধরার জন্য এরই মধ্যে একাধিক বিশেষ দল গঠন করে মাঠে নেমে পড়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ