বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১২

মারা গেলেন সাঈদীর মামলার সাক্ষী বাসুদেব, আরো সাক্ষী অসুস্থ

মারা গেলেন সাক্ষী বাসুদেব মিস্ত্রি। গত ৮ জানুয়ারি তিনি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য দেয়ার ১৬ দিনের মাথায় মঙ্গলবার তিনি পিরোজপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস'ায় মারা যান। আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার সময়ও তাকে কিছুটা অসুস' দেখা যায়। 
গত ৮ জানুয়ারি দশম সাক্ষী হিসেবে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে জবানবন্দী ও জেরায় বাসুদেব মিস্ত্রি জানিয়েছিলেন, বর্তমানে তার বয়স আনুমানিক ৫৩ অথবা ৫৪ বছর। ১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল ১৩-১৪ বছর।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে জবানবন্দীতে বাসুদেব বলেছিলেন, ১৯৭১ সালে বাবার সাথে মিস্ত্রিকাজে জোগালি দিতাম। বয়স আনুমানিক ১৩-১৪ বছর হবে। বাবা মানিক পসারীর বাড়িতে কাজ করতেন। আমিও তার সাথে কাজ করতাম। পশ্চিমারা যুদ্ধ শুরুর দুই-তিন মাস পর পারেরহাট স্কুলে ক্যাম্প করল। শান্তিবাহিনীর লোকেরা রাজাকার বাহিনী গঠন করে। দেলু শিকদার, সেকেন্দার শিকদার, মোসলেম মাওলানা, হাকিম কারী, রুহুল আমিন, মন্নান আরো অনেকে মিলে রাজাকার বাহিনী গঠন করে। 
মে মাসের ৮ তারিখে পাঞ্জাবি আর্মি, রাজাকার, শান্তিবাহিনীর লোকজন মানিক পসারীর বাড়িতে আসে। তাদের আসতে দেখে বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। তারা বাড়িতে ঢুকল। ইব্রাহিম কুট্টি ও মফিজ উদ্দিন মানিক পসারীর বাড়িতে কাজ করত। ওদের ধরে বেঁধে ফেলল। দিলু শিকদার, সেকেন্দার আলী শিকদার, মোসলেম মাওলানা, দানেশ আলী মোল্লা, রুহুল আমিন, হাকিম কারী, মোমিন এদের দেখেছি তখন। এদের চিনি। ওরা ধান-চাল সব লুটপাট করে নিয়ে গেল ভাগ করে। আর দামি মালামাল নিলো দিলু শিকদার। এরপর দিলু আর অন্য রাজাকার মিলে ঘরে আগুন দিলো। ইব্রাহিম আর মফিজকে নিয়ে রওনা দিলো। বাজারের ব্রিজের ওপর উঠল। তারপর দেলোয়ার সাঈদী হেগো লগে (পাক আর্মি) কী যেন বলল। আমরা আড়ালে বসে দেখছি। ইব্রাহিমকে বাঁধন খুলে ব্রিজ পার হয়ে ঘাটের দিকে নিয়ে গেল। মফিজকে নিয়ে গেল ক্যাম্পের দিকে। আর ইব্রাহিমকে গুলি দিয়ে ফেলে দেয়। তারপর আমরা দৌড়ে বাড়ি যাই। 
ক্যাম্পে নিয়ে মফিজকে খুব নির্যাতন করে। পরে মফিজ পালিয়ে এসে এ কথা আমাদের বলেছে। সাক্ষী পরে বলেন, আমাদেরসহ আরো অনেক হিন্দুদের বাড়িঘর দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ও অন্যান্য রাজাকার পুড়িয়ে ফেলে। 
আরো সাক্ষী অসুস' : গত ১৭ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় আবদুল হালিম বাবুল নামে একজন সাক্ষীর জবানবন্দী ও জেরা শেষে নতুন সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল মধুসূদন ঘরামীর। কিন' রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান তিনি অসুস'। পরের দিন ১৮ জানুয়ারিও তাকে হাজির করা যায়নি অসুস'তার কারণে। এরপর আদালত ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেন। কিন' ২৪ জানুয়ারিও মধুসূদন ঘরামীকে হাজির করতে পারেননি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা। ২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকালে চারজন সাক্ষীর নামের তালিকা দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকে জানান, দুপুর ২টায় তারা নতুন সাক্ষী হাজির করতে পারবেন। আদালত বলেন, চারজনের মধ্য থেকে প্রথম দুইজনের যেকোনো একজনকে দুপুর ২টায় হাজির করতে হবে। কিন' দুপুর ২টায় তারা চারজনের তালিকা থেকে শেষের দুইজনের একজনকে হাজির করেন। আদালত এর কারণ জানতে চাইলে প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, তারা অসুস'।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ