সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১২

প্রথম আলোর ত্রৈমাসিক ‘প্রতিচিন্তা’র ভূমিকার জবাব: অন্ধের হস্তিদর্শন অথবা অসত্যের প্রলাপ

বুর্জোয়া রাষ্ট্র ব্যবস্থা আজ ভয়ানক সংকটের মুখোমুখি। বিষয়টার গভীরে না গিয়ে ভাসাভাসাভাবে দেখলে মনে হতে পারে শাসকের অদতার ফলেই বুঝি আজকের এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববাসির কাছে দৃশ্যমান সংকট-এর অনিবাজ্যতা সম্পর্কে বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা প্রায় দেড় শত বছর পূর্বেই কাল মার্কস দিয়ে গেছেন। মার্কস তাঁর পুঁজি গ্রন্থে মুনাফাকে তুলানা করেছেন পাগলা ঘোড়ার সঙ্গে, যে পাগলা ঘোড়া পুঁজি মালিকের নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও ছুটে চলে অদম্য গতিতে। মার্কসের অমোঘ বাণীকে সত্য প্রমাণ করে আজ যেন পুঁজির সেই মৃত্যুর ঘন্টার ধ্বনিই দিকে দিকে বেজে উঠছে। আজ খোদ পুঁজিবাদের মোড়ল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বুকেই জেগে উঠছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গণজাগরণ! এখন বিজ্ঞ জনেরা প্রশ্ন তুলতে পারেন, এই অকুপায় ওয়াল স্ট্রিট মুভমেন্ট নামে এই সংগ্রাম কি বিশ্ব রাজনীতির কোন গুণগত পরিবর্তন আনবে কী না? সেই ক্ষেত্রে আমি বলবো- না। কারণ একটি বিপ্লবী সংগ্রাম অবশ্যই একটি সঠিক বিপ্লবী পাটির অধীনেই হতে হবে। তবে হ্যাঁ, এই সংগ্রাম আমাদের এক পরম সত্যের প্রমাণ দিয়েছে। বুর্জোয়া মিড়িয়া আমাদের সামনে পুঁজিবাদি দুনিয়ার যে চাকচিক্যপূর্ণ জীবনের ছবি দেখায় এটা আসলে একদম ফাঁপা, অন্তরসারশৃন্য। আজ প্রায় একশত বছর ধরে যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ সারা বিশ্বব্যাপী দস্যুবৃত্তি করে বেড়াচ্ছে, অন্য দেশের সম্পদ দখল করতে গিয়ে হত্যা করছে কোটি কোটি মানুষকে। অথচ তারাই নিজের দেশের জনগণের ন্যুনতম জীবন ধারণের নিশ্চয়তা বিধান করতে পারেনি। আজ খোদ মার্কিন দেশেই বেকার মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ৮০ ল। এমন বেকার আর হতাশাগ্রস্ত মানুষের সামান্য বিস্ফারিত রূপ দেখলাম অকুপায় ওয়াল স্ট্রিট মুভমেন্টে।এই বাস্তবতার উপর দাঁড়িয়ে পুঁজির দাসত্ব বরণকারী করপোরেটদের পোষা সুশীল বুদ্ধিজীবীরা আদাজল খেয়ে নেমেছে; পুঁজির মরণ ব্যাধি ঘা-তে মলমের প্রলেপ দিয়ে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার আয়ুকালটা দীর্ঘ করার প্রয়াস নিয়ে। এমনই এক প্রয়াস আমরা ল করলাম, করপোরেট মিড়িয়া প্রথম আলোর ত্রৈমাসিক প্রকাশনা প্রতিচিন্তার সম্পাদকীয়তেও। মানুষ তাঁর কাণ্ডজ্ঞান দিয়েই বুঝে যুক্তি হচ্ছে সত্যের কিতাবি রূপ। ব্যক্তির সামনে যখন সত্য থাকে না তখনই শুরু হয় মন্তব্য দিয়ে সত্যকে অস্বীকার করার প্রবণতা। প্রতিচিন্তার সম্পাদকীয়তে ঠিক এই কাজটাই করা হলো, কোন রকম যুক্তির ধারেকাছে না গিয়ে মন্তব্য করল: ‘সাধের সমাজতন্ত্র প্রত্যাখ্যাত হয়ে গেছে।’ সমাজতন্ত্র যেন কোন গণভোটের রায় যেটা হ্যাঁ-না ভোট দিয়েই নির্ধারিত হবে। সমাজতন্ত্র হচ্ছে সমাজ বিকাশের একটা স্তর, পূর্বের সামন্তবাদ যদি সত্য হয়, আজকের পুঁজিবাদ যদি সত্য হয় তারই ধারাবাহিকতায় সমাজতন্ত্রও সত্য। প্রতিচিন্তার প্রকাশ ও ভূমিকার মধ্যদিয়ে করপোরেট প্রথম আলো গোষ্ঠী তার পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থের জায়গাটা পাঠকের কাছে পরিষ্কার করলো। একই সাথে পরিষ্কার করা উচিত ছিল তার বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত তথাকথিত নিরপেতার অর্থ কী? তো, প্রতিচিন্তার ভূমিকায় সমাজতন্ত্র ব্যর্থ হবার কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলোকে পাঠকের সামনে হাজির করা হয়েছে সেই কারণগুলোর মুদ্দাকথা এই রকম: ১) বাজারÑব্যবস্থা চালু রাখার স্বাভাবিক বাস্তবতাকে অস্বীকার করা; ২) প্রতিযোগিতামূলক গণতান্ত্রিক রাজনীতির স্বীকৃতি না দেওয়া; ৩) সংবাদপত্র-মিড়িয়ার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি না দেওয়া; ৪) পার্টি ব্যবস্থার বাইরে থেকে যাওয়া ‘অপর’-এর ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন। কারণগুলো পাঠের পর আমরা বুঝতে পারলাম প্রথম আলো গোষ্ঠী আমাদের এমন এক সমাজতন্ত্রের কথা বলছেন যেটা সংবিধানে থাকবে, সমাজে প্রযুক্ত হবে না। অনেকটা সেই পুরানো প্রবাদের মত- কাজির গরু খাতায় আছে গোয়ালে নেই! যে বিষয়গুলোকে সমাজতন্ত্রের সংকট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, এর কোনটাই আদপে সংকট নয়; বরং নতুন সমাজ নির্মাণের পূবশর্ত। সমাজকে ব্যাখ্যা করার যে মহান বিজ্ঞান মার্কসবাদ, তার আলোকে বিষয়গুলোকে আমরা এইভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি- আদি সমাজে বাজার ছিল না, ঠিক তেমনে সামন্ত ব্যবস্থায় যে বাজার ছিল আজকের পুঁজিবাদী সমাজে বাজার সেই অবস্থায় নেই, সমাজতান্ত্রিক সমাজে মুনাফার জন্য নয় বরং মানুয়ের চাহিদা বিবেচনায় রেখেই পণ্য উৎপাদিত হবে। মুনাফার মৃত্যুর সাথে সাথে স্বাভাবিক নিয়মেই প্রচলিত বাজার ব্যবস্থার মৃত্যু ঘটবে। অথচ প্রতিচিন্তার সম্পাদকীয় আমাদের সবক দিচ্ছে মানব সভ্যতার অস্তিত্ব মুনাফার সাথে জড়িত, একটা না টিকলে আরেকটা টিকবে না! আমরা খুব বিস্মিত হই যখন দেখি মাছের মায়ের পুত্র শোকের মতো বুর্জোয়া মিড়িয়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে, যে কিনা আবার নিজেই পুঁজির দাসত্বের কাছে বন্দী। নিরপেতার কথা বলে রাজনৈতিক মত প্রচার, আর সত্যের কথা বলে বিকৃত তথ্য প্রচারেই যার কাজ। সমাজতান্ত্রিক সমাজে যখন মিড়িয়ার স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তখন বলতেই হয়, গণতন্ত্র একক কোন ব্যক্তি কিংবা বিশেষ কোন গোষ্ঠীর বিষয় নয়, আর বুর্জোয়ারা মিড়িয়ার স্বাধীনতা বলতে বুঝেন মিড়িযার ব্যক্তিমালিকানা। সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের বিপরীতে দাঁড়িয়ে কোন ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীর অস্তিত্বকে স্বীকার করে বুর্জোয়ারা। গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রশ্নটা যখন আসে তখন আমাদের মনে রাখতে হবে কার গণতন্ত্র? বুর্জোয়ারা রাষ্ট্রের সংবিধান আর আইনের শাসনের কথা বলে, কিন্তু পৃথিবীর কোন পুঁজিবাদী রাষ্ট্রেই সংবিধান প্রণয়নে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটেনি, অথচ সমাজতান্ত্রিক দেশে সংবিধান রচিত হয় শতকরা ৯০ভাগ মানুষের চিন্তার প্রতিফলনে। যার উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি মহান রুশ বিপ্লবে মেহনতি মানুষের মতা দখল ও তার সংবিধান রচনার ইতিহাস দিয়ে। গণতন্ত্রের নামে পরাজিত শত্র“কে রাজনৈতিক অন্তর্ঘাত চালাতে দেওয়া হবে জনগণের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। যেভাবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির মধ্যদিয়ে এদেশের বুর্জোয়া দলগুলো জনগণের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে প্রতিনিয়ত বিশ্বাসঘাতকতা করে যাচ্ছে। ব্যক্তির উপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে সব তথ্য আমরা পায় তার সিংহভাগেই হচ্ছে বুর্জোয়া মিড়িয়ার অপপ্রচার। একদা আমরা দেখেছি রুশ দেশের স্বপত্যাগিরাই ছিল পুঁজিবাদী বিশ্বের অপপ্রচারের প্রধান হাতিয়ার, এমনই এক পশ্চিমা অস্ত্রের নাম লেখক সল্জেনিৎসিন। রুশ সরকারের সাথে দ্বন্দ্ব-বিরোধের ফলে ১৯৭৪ সালে দেশ ত্যাগ করে ছিলেন। পশ্চিমাদের øেহ মৈথুনে নোবেল বিজয়ী এই লেখক ক্রমশ হয়ে উঠেন রুশ সরকারবিরোধী প্রচার সাহিত্যের প্রধানতম অস্ত্র। নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি কৌতুহল মানুষের আদিমতম প্রবৃতি। এক সময় রাশিয়ার সাধারণ মানুষের হাতে হাতে সল্জেনিৎসিনের পাণ্ডুলিপির ফটোকপি ঘুরতো। দেশে ফিরে রুশ্কি পুৎ নামক একটা প্রকাশনা থেকে তার বই প্রকাশিত হয়েছিল। ২০৬ পৃষ্ঠার পেপারব্যাকের বইটার দাম রাখা হযেছিল ১০ রুবল (দেড় ডলার)। সবগুলো সংবাদ পত্রই খবরটা গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছিল। না, বইয়ের মূল্যের জন্য নয়, লজ্জাকর মুদ্রণ সংখ্যার জন্য (৫০০০ কপি)। একই সঙ্গে প্রকাশিত পপ-সম্রাজ্ঞী আলা পোগাচবা’র জীবনী গ্রন্থ , যার মুদ্রণ সংখ্যা ছিল দেড় ল কপি। ১৯৯৪ সালে রুশ সরকারের পতনের পর মুক্ত রাশিয়াই (তার ভাষায়) সাত দিনের ট্রেন ভ্রমণ করে ফিরলেন। সঙ্গে ছিল বিবিসি’র টিভি দল। দেশে ফেরার পর একটা চ্যানেলে মাসে দু’বার বক্তৃতা দিতেন, মাস কয়েক চলার পর লাভ হচ্ছে না দেখে কর্তৃপ সেই অনষ্টান বন্ধ করে দেয়। কী বিস্ময়কর ব্যাপার, যে পুঁজিবাদী মিড়িয়া তাকে তৈরি করলো প্রয়োজন মেটে গেলে সেই মিড়িয়াই তাকে ছুঁড়ে ফেলল আইক্রিমের কাঠির মতো। সলজেনিৎসিন, এক সাাৎকারে আপে করে বলেছিলেন, ‘আজ আর কথা বলতে কোন বাঁধা নেই, কিন্তু কথা শুনার লোক বড় অবাব।’ এই ক্ষেত্রে কিছু ভুল যে একেবারে হয়নি তা বলা যাবে না। চিন্তাকে চিন্তা দিয়ে মোকাবেলা করা ছিল সর্বত্তম পন্থা। কিন্তু এটা তো সমাজতন্ত্রের ভুল ছিল না, ছিল প্রয়োগিক অভিজ্ঞতার ঘাটতি। 

(২)
মূর্খ এবং মিথ্যুকরাই যুক্তির বদলে মন্তব্য দিয়ে চিন্তাকে খারিজ করে, প্রতিচিন্তার সম্পাদকীয় দ্বিতীয় অধ্যয়ে এসে আমরা দেখছি, সমাজতন্ত্রকে মৃত ঘোষিত হতে, তাও আবার শুধমাত্র ভৌগোলিক বিচারে নয়, জ্ঞানচর্চার মানদণ্ড হিসেবেও। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো র্দীঘ আলোচনায় সমাজতন্ত্রকে মৃত ঘোষণা করার পেচনে আমরা কোন জ্ঞানতাত্ত্বিক আলোচনা পেলাম না। তবে ভৌগোলিক বিচারে চীন এবং রাশিয়াকে উদাহরণ হিসেবে টানা হয়েছে। বিষয়টা সত্যিই হাস্যকর, যেন কোন দেশে টিকে থাকা আর না-থাকার উপর সমাজতন্ত্রের সঠিকতা-বেঠিকতা নির্ভর করে। তদুপি বলা যায়, রুশ দেশ কিংবা চীনে পুঁজিবাদের প্রত্যাবর্তন আমাদের ইতিহাস-জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছে। বিশ্ববাসির সামনে প্রমাণিত হয়েছে, যেকোনো পুঁজিবাদগ্রস্ত এবং পশ্চাৎপদ সমাজে সমাজতান্ত্রিক কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে তা সমৃদ্ধ হতে বাধ্য। মনে রাখতে হবে চীন কিংবা রাশিয়া সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের মতো অন্যদেশ থেকে সম্পদ লুট করে এনে নিজের দেশ গঠন করেনি, মানুষের সম্মিলিত সামাজিক শ্রমে শূন্যতা থেকে পূর্ণতার এক অনন্য উদাহারণ তৈরি করেছে। এই দুই দেশ সমাজতন্ত্র থেকে পুঁজিবাদে প্রতাবর্তন করেছে, তাই বলে সেখানে শ্রেণিসংগ্রাম থেমে নেই। কালের পরিক্রমায় আবারও সেখানে মেহনতি মানুষ ঠিকই রাষ্ট্রমতা দখল করবে। তখন পূর্বসূরিদের ফলভোগ করবে উত্তরসূরিরা। এই উন্নয়নের ফলে এখন সমবন্টন যত সহজে করা সম্ভব হবে, ততটা রাশিয়া কিংবা চীনে শুরুতে ছিল না। সম্পাদকীয়তে ধারাবাহিকভাবে আমরা তৃতীয় অধ্যায়ে এসে দেখতে পারছি, প্রতিচিন্তা নামক এই প্রয়াসের অন্তরহস্য। এই অধ্যায় আমাদের সামনে তথাকথিত তৃতীয় ধারার কিছু নমুনা হাজির করা হয়েছে। কারা এই তৃতীয়ধারা? তৃতীয় ধারার দীর্ঘ বিবরণীতে ইউরোপের পথ মাড়িয়ে লাতিন আমেরিকা। এখানে এসে আদর্শায়িত হয়েছে ব্রাজিলের জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলবা, মিসেল বাশলে এবং আর্জেন্টিনার নেস্টর কির্শনের। তাদের সাথে আছেন ভেনেজুয়েলার হুগো শ্যাভেজ এবং বলিভিয়ার এভো মরালেস। লুলা, শ্যাভেজ কিংবা মরালেসদের তৃতীয় পন্থা আলোচনার পূর্বে আমাদের লাতিন আমেরিকার কিছু ইতিহাস জানা জরুরি, শত শত বছর উপনিবেশের যাতাকলে পিষ্ট হওয়া এবং মাকিন সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন নীতির বিরুদ্ধে লাতিন আমেরিকার জনগণ সর্বদা সচেতন, তার ওপর আছে কিউবা বিপ্লবের এক বিরাট প্রভাব। লাতিন আমেরিকার তরুণদের কাছে, চে গুয়েভারা এখনো এক মুক্তির প্রতীক। ঠিক এই অনুভূতিগুলোকেই কাজে লাগিয়ে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে অনেকেই মতায় এসেছে। তার মধ্য থেকে ইভো মরালেস কিংবা হুগো শ্যাভেজকে আলাদা করে বিচার করতে হয়, শ্যাভেজ ২১ শতকের সমাজতন্ত্র নামে নতুন এক অর্থনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছেন। ভূমি সংস্কার করেছেন। তেল সম্পদ রাষ্ট্রীয়করণ করেছেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ওপর কর আরোপ করেছেন এবং শিা ও চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকারগুলো সাধারণ জনগণের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছেন। এই সব কর্মসূচির ফলেই সাধারণ মানুষের জীবন-যাপনের মান অনেকটা বেড়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, খেয়ে পরে বেঁচে থাকার নামই কী সমাজতন্ত্র? যদি তাই হতো, তা হলে মার্কস তো শুধু দরিদ্র বিমোচনের তত্ত্ব লেখলেই পারতেন। মানুষের মানবিক মুক্তির প্রশ্নটা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক মুক্তির সাথে সম্পৃক্ত নয়। ইতিহাস জ্ঞান আমাদের প্রমাণ দেয়, মানুষ কখনো দাসত্বকে মেনে নেয়নি আর এ-দাসত্ব থেকে মুক্তির প্রশ্নেই সমাজতন্ত্র। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ