মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

গল্প:সতীন লেখা : ফিলিপ সরকার পর্ব : ১২

 গল্প:সতীন

লেখা : ফিলিপ সরকার

পর্ব : ১২
-

-
চোখ দিয়ে দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো কেউ দেখেনি। আমি মাথা নিচু করে আছে।

বাবা ছেলের সাথে কথা বলতেছে। হঠাৎ কেউ বলে উঠলো, কিরে একটু ঘোমটাটা তোল আমার ভাইকে তোর মুখটা দেখা।

আমি চমকে উঠলাম। এতো পরিচিত গলা আমি মুখ তুলে তাকালাম। আর মুখ তুলে তাকাতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম।

দেখলাম আমার সামনে ভাবি বসে আছে।

বললাম,ভাবি আপনি এখানে এভাবে? ভাবি
মিটিমিটি হাসলো। বললাম,ভাবি আপনি কেন এসেছেন?

ভাবি বললো,পাগলি যার সাথে তোর বিয়ের কথা হচ্ছে সে আমার ছোট ভাই।

মাথা নিচু করে বললাম, ভাবি আপনি সবই জানেন আর জেনে শুনে এতো বড় ভুল কেন করলেন?

ভাবি বললো,আমি আমার ভাইকে সুখি দেখতে চাই বাপ মা মরা ছেলেটার সংসারটা আনন্দে ভরে উঠুক।আর আমি ভাইকে সবটা জানিয়েছি ও জেনে শুনেই এসেছে।

তারপর ভাবির ভাইয়ের দিকে তাকালাম।

খুব ছিমছাম গড়নের একটা মানুষ গম্ভীর হয়ে বসে আছে।

ভাবি তাকে জিগ্যেস করলো, কিরে ভাই তোর মেয়ে পছন্দ হয়েছে। কিছু বললো না শুধু মিটিমিটি হেসে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো।

ভাবি বললো, যাক তাহলে ভালোই হলো।

এরপর বাবা ছেলের নাম জিগ্যেস করলো তিনি বললেন,রাকিব হাসান। বিশেষ আর কিছু বললেননা।

ভাবিকে বললাম তাহলে কয়েকদিন আগে ঘটক কে আপনি পাঠিয়েছেন? ভাবি হেসে বললো,হ্যাঁ। আর যখন দেখলাম তোদের সম্মতি কম তখন আমি নিজেই আসলাম।

ভাবি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো পাগলি দেখিস তুই খুব সুখি হবি।

রাকিব সাহেব শুধু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো কিছু বলেনি।

তারা চলে যাওয়ার পর। বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, জানিস মা যার কেউ থাকেনা আল্লাহ তার সাথেই থাকেন।

বাবা মাকে বললো,দেখলে আমার মা সতি নারী জন্যই তাকে অবিবাহিত ছেলে পছন্দ করলো।

মা আমার কপালে চুমু খেলেন।

দিনটা কোন রকমে পার হয়ে গেলো।রাতে শুয়ে শুয়ে চিন্তা হচ্ছিল আবার বিয়ে করলে এবার যে কি হবে জানিনা। তবে বাবা মায়ের খুশির জন্য আমি সব করতে পারি।

তাদের খুশিই আমার খুশি। ঘুমিয়ে গেলাম। সকাল হলো। মনটা খুব খারাপ। সবেমাত্র মনটা শক্ত হলো আর তাতেই আবার বিয়ের প্রস্তাব এলো।

বাবা এসে পাশে বসে বললো,মা তুই চিন্তা করিস না।

আমার বিশ্বাস মেয়েটা যেমন তোকে ভালোবাসে রাকিবও তোকে খুব যত্নে রাখবে।

বললাম,কিন্তু বাবা!

বাবা বললো,কোন কিন্তু নয় মা। তুই সুখি হবি
আমার মা এবার ভালো থাকবে।

পাশের বাড়ীর কয়েকজন মহিলা আমার বিয়ের কথা শুনলো যেই শুনলো ছেলে অবিবাহিত।

পাশের বাড়ির মহিলারা যেই শুনলো ছেলে অবিবাহিত আর কোন লেনদেনের কথা বলেনি

তখন সবাই একরকম চমকে গেলো। কয়েকজন বললো,তুই খুব ভাগ্যবতী রে সায়মা।

আামি শুধুত তাদের কথা গুলো চুপচাপ শুনে গেলাম।

একজন মহিলা তার মেয়ে কে নিয়ে আফসোস করলেন বললেন,অনেক চেষ্টা করেছিলাম এরকম একটা ছেলে পাওয়ার জন্য কিন্তু আমার মেয়ের ভাগ্যে তা জোটেনি।

মা ঘর থেকে সবার জন্য মিষ্টি আনলো।সবাই মিষ্টি খেয়ে খুশিমনে চলে গেলো।

মা আমার পাশে বসে আমার সোনা মা বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলো।

কয়েকদিন চলে গেলো। বাবা আর মা আমার বিয়ে নিয়ে আলোচনা করতেছে কবে আর কখন বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করবে।

তারা কথা বলতে বলতে ঘটক চলে আসলো

এসে বললো,ভাই সাহেব ছেলে আর ছেলের বোন বিয়ের দিন তারিখ জানতে চেয়েছে।

বাবা ঘটক কে ঘরে নিয়ে গিয়ে বসালেন। বললেন,আমরা সেটা নিয়েই আলোচনা করতেছি।

মা বললো আচ্ছা সামনের মাসে হলে কেমন হয়? এর মধ্যে ওর চাকরির রেজাল্ট টাও বের হতো। বাবা সম্মতি দিলেন।

ঘটক চলে গেলো। বাবা আমাকে বললো,মা কালকে আমার সাথে বাজারে যাবি কিছু কেনাকাটা করতে হবে।

পরের দিন বাবা আমাকে নিয়ে গেলেন।

রাস্তা পার হতেই কারোর সাথে আমি ধাক্কা খেলাম।

ধাক্কা সামলাতে না পেরে আমি পরে গেলাম।

উঠে দাড়াতেই আমার সামনে দাড়িয়ে থাকা লোকটাকে দেখে চমকে গেলাম। আমার প্রাক্তন স্বামী আমার সামনে দাড়িয়ে আছে।

তার মানে আমি তার সাথেই ধাক্কা খেয়েছি।

তিনিও আমাকে দেখে চমকে উঠলেন। এক নাগাড়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি।

তিনি হাজার কষ্ট দিলেও তাকে ভুলতে পারিনি।

বাবা হঠাৎ আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলেন বললেন,ঐ জানোয়ারের দিকে অত কি দেখলি তুই? চল! এবার বাবা আমার হাত

ধরেছে। আমি বাবার সাথে যাচ্ছি। বাবা একটা পোশাকের দোকানে নিয়ে গেলেন বললেন,মা তোর কোন কোন জামা পছন্দ হয় তুই সেটাই নে।

বাবার দিকে তাকিয়ে বললাম,থাকনা বাবা।

বাবা বললো,তোর বিয়ে হবে আর এখন নতুন নতুন পোশাক পরলে ভালো লাগবে।

বাবা হাসতেছে।আমি তিনটা জামা পছন্দ করলাম।

সেগুলো কিনে নিয়ে বাড়িতে ফিরলাম। বাড়িতে আসার পর মা একে একে সবগুলো জামা দেখলেন।

রাতে শুয়ে আছি এমন সময় অনলাইনে দেখলাম আগামীকাল আমার চাকরির রেজাল্ট হবে।

বাবা মাকে গিয়ে বললাম। মা শুনে হাত উঁচিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন।

রাতে আর ঘুম হলো না না জানি আগামীকাল
আমার ফলাফল কি হবে।

সারা রাত জেগেই কাটালাম।

চলবে,,,,,,,?
-
১৩ তম পর্ব পড়ার জন্য এইখানে ক্লিক করুন।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ