গল্প: সতীন
মা খাবার নিয়ে আসলো আমরা খেলাম। আজ সারাটাদিন খুব ধকল গেছে আমার উপর দিয়ে। বাবাও খুব ক্লান্ত।
আমি আমার রুমে গিয়ে শুয়ে আছি চোখ জোড়া বুঁজে আসছে একটু ঘুমিয়ে গেলাম।
একটু ঘুমানোর পর বিছানা থেকে উঠে মাগরিবের নামাজ পড়ে নিলাম।
বাবার রুমে গিয়ে দেখি বাবা নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। আসলে মানুষ টা আজকে খুব ক্লান্ত।
তাই আর কিছু বললাম না। ভাই আমার রুমে আসলো বললো,আপু একটা দারুণ খবর আছে রে! বললাম, কি খবর ভাই?
সে বললো আপু জানিস তোর স্বামীর বউ
নাকি কখনো মা হতে পারবে না।
কিছুটা অবাক হয়ে বললাম, তোকে এ কথা কে বললো ভাই?
সে বললো,আমি আজ ওদের বাড়ির ঐদিকে কোন একটা কারণে গিয়েছিলাম সেখানেই শুনেছি।
তোর শাশুড়ী কি বলে জানিস! বলে তোর অভিশাপের কারণেই নাকি এমনটা হয়েছে।
এমন সময় মা রুমে আসলো তিনিও সব শুনলেন।
আমি বলে উঠলাম এমনটা তো হওয়ার কথা নয় অপরাধ করলো একজন আর সাজা পাবে আরেকজন।
মা বললো,তার কারণে তো সংসার নষ্ট হয়ে গেছে ওর এমনটা হওয়া স্বাভাবিক।
বললাম,ও ভাবে বলোনা মা।
মা আমাকে ধমক দিয়ে বললো, চুপ কর যার জন্য তোর সব শেষ হয়েছে তার জন্য অত দরদ কিসের।
মা বিরবির করতে করতে চলে গেলো। মাকে কিভাবে বুঝাই। লোকটা আমাকে একটা সময় খুব ভালোবাসতো।
চোখজোড়া ভিজে গেছে পুরনো দিনের কথা ভেবে।
বাহিরে মা আর বাবা কথা বলতেছে। তাদের কথা আমি কিছু টা শুনলাম যা শুনলাম তাতে মনে হলো, আজকে যে ঘটক সাহেব আসছিলো মা তার কথাই বাবাকে বলতেছে।
মা বাবাকে বলতেছে, ছেলের বংশ ভালো। ছেলে প্রফেসর। বউ নাকি অন্য ছেলের সাথে চলে গেছে।
বাচ্চা কাচ্চা কিছু নাই আর বয়সও নাকি বেশি নয়।
বাবা বলতেছে, দেখি ওর চাকরির কি হয়।
মা বলতেছে, চাকরি হয় হবে না হলে নাই।
ওর মুখের দিকে তাকালে আমি থাকতে পারিনা। হাসিখুশি মেয়ে টা কেমন মনমরা হয়ে থাকে একথা বলে মা হুহু করে কেঁদে উঠলো।
ঘর থেকে মায়ের কথা শুনে আমারও চোখ চিকচিক করে উঠলো।
বাবা কিছু বললো না। শুধু বললো,আমিও আমার মেয়ের কষ্ট বুঝি এই বয়সে সে এতো বড় দুঃখ মনের মধ্যে রেখেও এগিয়ে যাচ্ছে ওকে এগোতে দাও।
বাবার কথা শুনলে মনের মধ্যে সাহস পাই।
রাতটা কোন রকম কাটিয়ে গেলো। সকালে বাবা আমায় ডাকলেন
কাছে গেলাম বাবা বললো,মা কালকে তোর মায়ের কথা শুনেছিস তুই! বললাম হ্যাঁ বাবা সব শুনেছি
বাবা তুমি যা বলবে সেটাই হবে। আমি চাই আমার জীবন টা তুমি আবার নতুন করে গুছিয়ে দাও
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন