মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

গল্প:সতীন লেখা : ফিলিপ সরকার পর্ব : ১১

 গল্প:সতীন

লেখা : ফিলিপ সরকার

পর্ব : ১১
-


-
আগে ওর চাকরির রেজাল্ট দেখি তারপর।
মা শুধু বাবাকে বললো,তারপরও একটা বার যদি দেখতে ভালো হতো।
-
সেদিন ঘটক বললো,ছেলেটা নাকি প্রফেসর বাবা নেই মা আছে কিন্তু তিনিও বয়স্ক।
বাবা মায়ের কথায় কিছু টা স্তিমিত হয়ে বললো,ঠিক আছে দেখবো কিন্তু আমার মেয়ের কিছু একটা হওয়ার পর।
আগে ওকে নিজের পায়ে দাড় করাবো তারপর।
আর এই ভুল আমি করবো না। আমি সেখানে বসে বসে তাদের কথা শুনলাম।মাকে বললাম,মা আমিও বাবার সাথে একমত
মা মুখ কালো করে বললো,সেটা তো জানি তুই তো শুধু তোর বাপের মেয়ে আমার কে তুই?
বাবা হো হো করে হেসে বললো, এভাবে বলছো কেন?
তুমি কি চাওনা আমাদের মেয়ে সুখে থাক।
তারা ঝগড়া করতেছে আমি রুমে চলে আসলাম।দিনটা চলে গেলো রাত হয়ে আসলো।
খুব চিন্তা হচ্ছে কিছু দিনের মধ্যে রেজাল্ট হবে।
জানিনা কি হবে আদৌ পারবো কি না।
পরের দিন সকাল বেলা উদাসিনী মন নিয়ে বাহিরে বসে আছি।
মাঝে মাঝে মনটা খারাপ থাকে আজও তাই হচ্ছে।
দুরে এক মহিলাকে দেখতে পাচ্ছি আমার দিকেই আসছে।
দুর থেকে খুব একটা বোঝা যাচ্ছে না কে ওটা
যখন কাছে আসলো তাকে দেখে খুশিতে আমার চোখে জল চলে আসলো।
তিনি আমাকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলেন। ইনি সেই ভাবি যিনি আমার তালাকের সময় নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে
অনেক আদরযত্নে নিজ হাতে খাবার খাইয়ে থাকতে দিয়েছিলেন।
মায়ের মত সেই মানুষ টাকে অনেক দিন পরে দেখলাম।
আমাকে ভাবি জড়িয়ে ধরে কেদে যাচ্ছেন বলতেছেন,কেমন আছিস তুই? কত দিন পরে তোকে দেখলাম।
জানিস কাল থেকে তোর কথা আমার খুব মনে পরছিল।
সারারাত ঘুমাতে পারিনি তাই সকাল হতেই আমি ছুটে আসলাম তোদের বাড়িতে।
ভাবিকে আমি কেমন আছি না আছি সব খুলে বললাম।
ভাবি খুশি হয়ে আমাকে আবার জড়িয়ে ধরে বললো,যাক রে শুনে খুব শান্তি পেলাম।
এমন সময় বাবা আসলো বাবা ভাবিকে চিনতো তাই তাকে আর যেতে দিলেননা।
বললেন,মা তুমি আজকে থেকে যাও। মা আসলো মা তাকে দেখে আবেগে কেঁদে উঠলো।
বাবা ভাইকে বাজারে পাঠালেন বাজার করার জন্য।
ভাবিকে আমি আমার রুমে নিয়ে আসলাম।
তারপর ভাবিকে ওদের ব্যপারে জিগ্যেস করলাম।
ভাবি বললো,আছে মোটামুটি ভালো কিন্তু জানিস তোর শাশুড়ী এখন হারে হারে টের পাচ্ছে।
তুই কি ছিলি বললাম কেন ভাবি সে তো তাদের খুব প্রিয় ছিলো
ভাবি হেসে বললো,ডাইনি বুড়ি প্রতিদিন ঝগড়া না করলে খেতে পারেনা
বুড়ি সেদিন আমাকে তার দুঃখের কথা জানালো
বুড়ি সেদিন আমাকে তার দুঃখের কথা জানালো।
আমি খুব আগ্রহ নিয়ে বললাম, ভাবি আপনি কি বললেন, ভাবি হেসে উঠে বললো, দুর পাগলি আমি আর কি বললো? বললাম চাচি আসল সোনা ছেড়ে নকল সোনা নিয়ে পাগল হয়ে গিয়েছিলেন।
নকল সোনার গুন তো এমন হবেই। বলে ভাবি হাসলেন।
ভাবির মুখের দিকে তাকিয়ে আছি ভাবি আমার থুতনি টেনে বললেন, পাগলি এখন তুই আবার তোর নতুন জীবন শুরু কর।
বললাম, ভাবি বাবা আমার জীবনে নতুন করে আশার আলো দেখিয়েছে তাই বাবা যা করবে আমি তাতেই রাজি।
ভাবি বললেন,তুই সত্যিই খুব ভালো রে। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে ভাবি চলে যাওয়ার সময় বললো, তুই খুব সুখি হবি এমন সুন্দর মনের মানুষ কখনো দুঃখে থাকতে পারেনা।
ভাবি চলে গেলো ভাবির যাওয়ার দিকে চেয়ে আছি।
মা বললো,কিরে মা তুই খাবি না? মায়ের বুকে মাথা রাখলাম আর বললাম, মা ওদের বিচার শুরু হয়েছে।
মা বললো,আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
দুপুরে খেয়ে শুয়ে আছি ভাবছি আমার চাকরি টা হবে তো?
আমার শাশুড়ির কথা মনে পরে গেলো মানুষট লোভি ছিলো যার ফল সে পাচ্ছে।
রাতে বাবা আসলো মা আবার বাবাকে ঐ ঘটকের কথা বলছে।
আমি শুনলাম মা বললো,ছেলে প্রফেসর ছেলের কেউ নাই আর বিশেষ করে সে অবিবাহিত।
বাবা মারা গেছে অনেক আগে মা কিছু দিন আগেই মারা গেছে।
বাবা বললো,আমাদের মেয়ে ডিভোর্স হওয়া তাকে এটা জানিয়েছে।
মা বললো,জানিনা কিন্তু তারা আসতে চেয়েছে।
বাবা মাকে বললো,দেখো আমিও চাই আমার মেয়ের মুখে আবার হাসি ফুটুক সে সুখি হোক।
মা বলছে, আমি ওর মুখের দিকে তাকাতে পারিনা।
একমাত্র তুমি ওর পাশে বন্ধুর মত আছো জন্য
মেয়েটা একটু ভালো আছে। বাবা চুপ করে আছে।
মনে হলো বাবা একটু একটু করে রাজি হচ্ছে।
দুই দিন চলে গেলো হঠাৎ সেই ঘটক এসে বলে গেলো, ছেলে আর তার একমাত্র বড় বোন আমাকে দেখতে আসছে।
শুনে আমি আকাশ থেকে পরে গেলাম কি হবে এখন এতো তারাহুরো শুরু হলো কেন?
বাবা ভাইকে বাজারে পাঠালো। মা ঘর পরিস্কার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেছে।
দুপুর হয়ে আসলো তারা বাড়িতে এখন আসবে।
আমার খুব ইতস্ত লাগতেছে।তারা এসেই গেলো।
আমাকে তাদের সামনে নিয়ে যাওয়া হলো।
মাথা নিচু করে তাদের সামনে বসে আছি জানিনা কি হবে হয়তো ডিভোর্সি জন্য অপমান হতে হবে।
কিন্তু আমার বাবার সম্মান আমি রাখবো
তিনি যেনো অসম্মান না হন।
এসব ভাবতে ভাবতে চোখ দিয়ে দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো যদিও সেটা কেউ দেখে নি।
-
চলবে
-

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ