শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১২

বেলুন


বেলুন
বেলুনে আকাশ ভ্রমণ শুর হয় সপ্তদশ শতকের শেষে। শুরু করেন ফ্রান্সের মন্টগলর্ফি। ১৭৮৩ সালের ৪ জুন ফ্রান্সের এনোনে তারা কাপড়ের তৈরি বেলুনে ধোঁয়া ভরে প্রথম বেলুনটি আকাশে ওড়ান। সে বছরই ২১ সেপ্টেম্বর আরেক ফরাসী বিজ্ঞানী জা ফ্রাঁসোয়া পিলাত্রে ডি রোজিয়ের প্রথম মানববাহী বেলুনে চড়ে ৮০ ফুট ওপরে ঘুরে আসেন। ঠিক তার প্রায় একশ বছর পর ১৮৭৫ সালের ৭ জুন বেলুনে চড়ে প্রথম ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন ফরাসি জঁপিয়ের ব্লাংর্কাড ও আমেরিকান চিকিৎসক জন জেফ্রিক । ১৯৩১ সালে জার্মানীর অ্যাসবার্গে বায়ুমন্ডলের স্ট্রাটোস্ফয়ার অবধি প্রথম বেলুন নিয়ে যান সুইস চিকিৎসক অগুস্ত পিকার ও তার সহকারী। ১৯৭৮ সালে বেলুনে চড়ে প্রথম আটলান্টিক পাড়ি দেন বেন আব্র“জো, ম্যাক্সি এন্ডারসন ও ল্যারি নিউম্যান। এরপর ১৯৮১ সালের নভেম্ভরে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেন আব্র“জো ও নিউম্যান। 
১৯৯৫ সালের ফেব্র“য়ারিতে একা বেলুনে চড়ে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার ঘটনাটা ঘটান ফসেট। দণি কোরিয়ার সিউল থেকে সাসকাচিওয়ানের মেন্ডহামে নামেন তিনি। তার বেলুনটির নাম ছিল ‘সলো স্পিরিট’। এটি ছিল ৪৩ মিটার লম্বা ও ১৮ মিটার চওড়া। বেলুনটিতে হিলিয়াম ও গরম বাতাসের পরিমাণ ছিল সাড়ে ৫ লাখ ঘনফুট হিলিয়াম এবং ১ লাখ ঘনফুট বাতাস। এটির ডিজাইনার ছিলেন ডোনাল্ড ক্যামেরন এবং এর নির্মাতা সংস্থা ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলের ক্যামেরন বেলুন লিমিটেড। এছাড়া আফ্রিকাতেও প্রথম পাড়ি দেন ফসেট ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে। ১৯৯৯ সালের মার্চে বেলুনে চড়ে প্রথম বিশ্ব পরিক্রমায় সফল হন অগুস্তের নাতি সুইস পাইলট বার্ট্রান্ড পিকার ও ইংরেজ পাইলট ব্রায়ান জোন্স। 
বেলুনের কোন ইঞ্জিন নেই, কেবল বাতাসের শক্তিতেই ওড়ে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্যে একজোড়া ব্যাটারি দিয়ে ক্যাপসুলের ভেতরের তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৭০ ফারেনহাইটের ওপর রাখা হয়। ক্যাপসুলের বাইরে ৪০ ট্যাংক ফুয়েল থাকে । এই ফুয়েল পুড়ে হিলিয়াম গরম হয়ে বেলুনকে উড়তে সাহায্য করে। পাইলট স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে বেলুনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আবার কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত অটোপাইলটের মাধ্যমে ক্রমাগত ওপরে উঠে যেতে পারেন। এ সময় পাইলট ইচ্ছা করলে বিশ্রাম নিতে পারেন। নেভিগেশনের জন্যে বেলুনের আংশ আর দ্রাঘিমাংশের অবস্থান জানতে ব্যবহার করা হয় গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম। সলোস্পিরিট আর মিশন কন্ট্রোলের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে থাকে ইনমারস্যান্ট বি স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন। এর ব্যাকআপ হিসেবে ইনমারস্যান্ট মিনি এম স্যাটেলাইট টেলিফোন এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্যে ব্যবহার করা হয় হাইফ্রিকোয়েন্সি। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ