বুধবার, ১১ এপ্রিল, ২০১২

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত সার্বভৌমত্ব বন্ধক রেখে বিদেশী ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হাসিনার



কথায় বলে যেখানে বাঘের ভয় সেখানে রাত হয়। সেই ১৯৭০ সালে শেখ মুজিব আক্ষেপ করে বলেছিল যে পশ্চিম পাকিস্তানে এক মণ চালের দাম ২০ টাকা আর আমার এখানে ৪০ টাকা। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই চালের দাম ১৯৭৪ সাল নাগাদ দাড়াল ৪০০ টাকা। দেশে সেই ১৯৭২ সাল হতেই র্দূনীতি, লুটপাট চলছিল। কাউকেই মুজিব ধরে রাখতে পারেনি। কারণ তার আপন ভাই নাসের, ভাইগ্না শেখ মণি এবং গাজী গোলাম মোস্তফা এরাই সব র্দূনীতিবাজদের গড ফাদার ছিল। তারপর ক্ষমতার পট পরিবর্তনে জিয়া বিধ্বস্ত অর্থনীতির দেশকে একটি ভিত দিয়ে যান। এরপর এরশাদের সময় র্দূনীতি হলেও দেশকে দেউলিয়া হতে হয়নি। আবার খালেদা জিয়ার সময়ও কম-বেশী র্দূনীতি হলেও দূশ্চিন্তায় পড়তে হয়নি। ১৯৭২-৭৫ ছাড়া ১৯৯৬ পর্যন্ত দেশ কম হলেও এগিয়েছে কোনদিনও দূশ্চিন্তা করতে হয়নি। কিন্তু যেই ১৯৯৬ সালে আলীগ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতায় এল তখনই প্রথম ধাক্কায় দেশের শেয়ার বাজার হতে কম হলেও ৪০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হল। কৃত্রিম ভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে কোন নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই এক তরফা কারসাজি করার ফল। তারপর গ্যাস-কয়লা ও বিদ্যুৎ অসম চুক্তি করে এদের দাম কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া প্রতিটা ক্ষেত্রেই র্দূনীতি করার ফল এমন হয় যে যেখানে ১৯৯৫ সালে টিআাইবির রেকর্ডে নাইজেরিয়া ১ম, পাকিস্তান ৫ম, ভারত ৯ম এবং বাংলাদেশ ১২তম ছিল সেখানে আমরা সবাইকে টপকে হাসিনার আমলে মে ২০০১এ বিশ্বের ১নং র্দূনীতিগ্রস্থ দেশ হিসেবে পরিচিত হই। হাসিনা প্রথম আমলে দেশের প্রতিটা সেক্টরকেই দূর্বল ও বিশৃঙ্খল করে রেখে গিয়েছিল। পরে খালেদা জিয়ার জোট সরকার ক্ষমতায় এলে শেয়ার বাজারে গতি সহ পুনরায় দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করেন। এখানে উল্লেখ্য যে হাসিনা ২০০১ এ ক্ষমতায় ছাড়ার সময় আন্তর্জাতিক বাজারে যে জ্বালানি তেলের দাম ২২ ডলার/ব্যারেল ছিল তা ৯/১১, আফগানিস্তান যুদ্ধ এবং ইরাক দখলের জন্য সেই তেল ৭০-৮০ ডলার হয় ২০০৩এ। তারপরেও জোট সরকার সব কিছুই মূল্য স্থিতিশীল রেখেছিল। হাসিনার ২০০১ যে মোটা চালের দাম ছিল ১৪ টাকা(জনকন্ঠ ১০/১০/২০০৫) সেটা জোট আমলে দাড়ায় ১৮ টাকা। অন্যান্য সব জিনিসের দাম ৩০% এর বেশী বাড়েনি। তারপর দেশী-বিদেশী চক্রান্ত সফল করে হাসিনা অনেক মুখোরোচক ও আকাশচুম্বী ওয়াদা করে ক্ষমতায় এসে শুরুতেই র্দূনীতির জন্য সব কিছুতেই দেড়ী ও অবহেলা করে। যেমন বিদ্যুতের জন্য যে গ্যাস-কয়লার প্রয়োজন তা উত্তলনে তিতাস অথবা সহজ শর্তে বিদেশী কাউকে না দিয়ে অহেতুক দেড়ী ও পরে অসম শর্তে উচ্চ মূল্যে গ্যাস কেনার পায়তারা করে কানকো-ফিলিপস ও আধুনা গ্যাস প্রমকে লিজ দেওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়। ফলে ২০০৯ হতে আজ পর্যন্ত স্থায়ী কোন বিদ্যুৎ ষ্টেশন বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে পারেনি। আবার উপরন্ত চালু কেন্দ্র গুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার না করাতে সেগুলোর উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। শুরুতেই কিভাবে ডিজেল ভিত্তিক কুইক রেন্টাল অস্থায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়া যায় তার ধান্ধায় থাকে হাসিনার সরকার। ফলে বিগত এক বছরে এই কুইক রেন্টালের পিছনে রাষ্ট্রের ২০ হাজার কোটি টাকা ভর্তূকি দিতে হয়। এই ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল কিন্তে কি রাষ্ট্রীয় কি বেসরকারী কোন ব্যাংকই আর ঋণ দিবে না। উপরন্ত মধ্যপ্রাচ্যেল তেল রপ্তানীকারক দেশ গুলোও বাকীতে তেল বেচবে না। ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু সহ যোগাযোগ খাতেও চরম র্দূনীতি ও অপচয় হচ্ছে। বিদেশে রপ্তানী সামান্য কিছু বাড়লেও কর্মসংস্থান কমে গিয়ে রেমিটেন্স কমে গিয়েছে। ফলে আমদানী ব্যায় যোগান দেওয়া রাষ্ট্রের পক্ষে কঠিন থেকে কঠিন হচ্ছিল। কারণ আমদানী শুধু খাদ্য বা অন্য ভোগপণ্য নয় দেশের গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন রপ্তানী মুখী শিল্পের জন্যও আমদানী করতে হয়। এটার একটা ভারসাম্য থাকে। কিন্তু র্দূনীতির জন্য জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও যোগযোগ খাতে এত অপচয় ও র্দূনীতি বেড়েছে তার জন্য বৈদেশিক ডলারের রিজার্ভ আর ভারসাম্যে রাখা যাচ্ছে না। পদ্মা সেতুতে র্দূনীতি ও ঘাপলা করে বিশ্বব্যাংককেও একহাত দেখিয়ে দেওয়ার কারণে আই.এম.এফ, এডিবি সহ আন্তর্জাতিক স্বীকৃত কোন সংস্থা অল্প সুদে তাদের ঋণ দিবে না। এখন উপায় একটাই যে দেশের সার্বভৌমত্ব বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়া। যা গত বছর ২০১১তেই চিন্তা করা হয়। আর এখন শোনা যাচ্ছে যে হাসিনার মহাজোট এই সার্বভৌমত্ব বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে;

Click This Link 

প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার এর মাধ্যমে সংগ্রহ করবে। অর্থনীতিবিদগণ এই ঋণের বোঝাকে বড় ধরণের শংকার কথা বলেছেন। এতে প্রচুর ঝুকি থাকে। উচু সুদের হার, একেবারে সময় মত ঋণের কিস্তি ইত্যাদি চরম ভাবে মেনে চলতে হয়। একটু ব্যাত্যয় হলেই রাষ্ট্রের জন্য ঋণ দাতা বিদেশীরা দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করতে পারে। তাতে আর কোন ভাবেই বাধা দেওয়া যায় না। এ বিষয়ের ঝুকি সমন্ধেও মির্জা আজিজুল ইসলাম বিশেষ ভাবে সতর্ক করেছেন। 

আজকে মহাজোট সরকারের ৩ ও ফখরুদ্দিনের ২ বছর মোট ৫ বছর পেড়িয়ে গেলেও আওয়ামী-বাকশালী গং শুধু তারেক রহমান ও হাওয়া ভবনেরই দোষ খুজে পায়। দেশকে দেউলিয়া করে আজকে দেশের জন্য অত্যন্ত ঝুকি পূর্ণ ঋণ নিতে যাচ্ছে এমন আশংকা শুনেও খালি জোট আর তারেক রহমানের বদনাম। পৃথিবীর তৃতীয় বিশ্বের সব দেশেই কম-বেশী র্দূনীতি হয়। কিন্তু কারা দেশের সার্বভৌমত্ব বন্ধক রেখে ঋণ নেয়? যেখানে প্রাকৃতিক অথবা যুদ্ধের কারণে সমস্যা তারা বাদে যারাই এই ঋণ নেয় বুঝতে হবে সেখানে বড় ধরণের গলদ রয়েছে। আমাদের দেশে ১৯৭২-৭৫, ১৯৯৬-২০০১ এবং ২০০৯ এর পর ছাড়া বাকী সময়ে কোন দিনও সার্বভৌমত্ব ঋণ নেওয়াতো দূর চিন্তাও করতে হয়নি। আর আজকে এত এই জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পদ্মা সেতুতে নগ্ন র্দূনীতির জন্য হাসিনার সমালোচনা কি করবে তার চেয়েও খালি অতীতে কি হল। বলেছিল যে হাসিনা ও তার দল দিন বদলে বিশ্বাস করে। এখন দেশের সার্বভৌমত্ব বন্ধক রেখে যদি ঋণ নেওয়া দেখতে হয় তো এই দিন বদলের দরকার নেই। এরাই নাকি বলে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি। খালি বলে জিয়া কেন উমকু যুদ্ধাপরাধীদের দেশে আসতে দিল। কুলাঙ্গারের দলেরা বুঝেনা যে এদের আসতে না দিলে মধ্যপ্রাচ্যে আজকে ৪০-৫০ লক্ষ বাংলাদেশীর কর্মসংস্থান হত না। যারা বছরে ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স পাঠায়। মুজিব ও তার বাকশাল টিকে থাকলে হয় দেশ সিকিম অথবা সোমায়িরা হয়ে যেত। আল্লাহ জিয়ার উসিলায় বাংলাদেশকে অনেকদিন হেফাজত করেছেন। এখন স্বাধীনতার স্বপক্ষের তথাকথিত শক্তি হাসিনা বাংলাদেশকে এমন অবস্থায় নিয়ে এসেছেন যে বলতে হয় "ভিক্ষা চাইনা কুত্তা সামলান"! কিন্তু আফসোস তারপরেও হাসিনার চামচারা তাদের নেত্রীর কোন দোষই খুজে পাবে না। সব দোষ তারেকের! 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ