মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

সাহারা খাতুনকে যে কারণে বরখাস্ত করা হচ্ছে না

অতি প্রাচীন একটা বাংলা প্রবাদ : দুই কান কাটা রাস্তার মধ্যিখান দিয়ে হাঁটে। আগের দিনে সামাজিক বিচারে দণ্ড হিসেবে গুরুতর অপরাধীদের একটা কান কেটে দেয়া হতো। কাটা কান যাতে বেশি লোক দেখে না ফেলে সে জন্য সাধারণত লোকটা যেদিকের কান কাটা হয়েছে রাস্তার সে দিক ঘেঁষে হাঁটত। কিন্তু দুই কানই যার কেটে দেয়া হয়েছে তার আর লুকানোর পথ খোলা থাকত না। গোঁয়ার্তুমি করে সে রাস্তার মধ্যিখান দিয়ে হাঁটে। এই হচ্ছে প্রবাদের সূত্র। 
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের হয়েছে সে ধরনের অবস্থা। অনেক অসত্য দাবি করেছেন তিনি। বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা অধিকার, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা লন্ডন-ভিত্তিক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আর নিউইয়র্ক-ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর উন্নত দেশগুলোর সরকার ও চিন্তাশীলরা বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার সমালোচনা করছেন তিন বছর ধরে। কিন্তু সাহারা খাতুন তার অপ্রীতিকর কর্কশ ভাষায় সবকিছু অস্বীকার করছেন। তিনি দাবি করেছেন বাংলাদেশে কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যা হয় না।
তবু বিলম্বে হলেও বিশ্বব্যাপী সমালোচনার কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। গত কয়েক মাস থেকে তথাকথিত ‘ক্রস ফায়ারে’ হত্যা কিছু কমেছিল। কিন্তু অন্যদিকে হঠাত্ করে বেড়ে গেছে সরকারের রাজনৈতিক বিরোধী এবং বাংলাদেশের ওপর ভারতের আধিপত্যের সমালোচক ছাত্র-কিশোরদের ছিনতাই করা। এই ছাত্র-কিশোররা ইসলামী ভাবাপন্ন হলে তো কথাই নেই। তারপর আর এই হতভাগ্য আদর্শবান তরুণদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। বিগত কিছুদিনে আবার তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধে মৃতদের সংখ্যাও বাড়তির দিকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেন অন্ধ, তিনি কিছু দেখেন না, তিনি যেন বধির, কানেও শোনেন না কিছু।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অজস্রবার বলেছেন, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা তার আমলে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। তার এ দাবি সত্যি হলে বাংলাদেশের মানুষ সমস্বরে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলত। সেটা তারা করতে পারছে না। বরং তারা বলছে আইনশৃঙ্খলা বলে কোনো বস্তু আজকের বাংলাদেশে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। বাংলাদেশী পত্রিকায় বুদ্ধিজীবীরা মোনাজাত করে প্রবন্ধ লেখেন, তারা স্বাভাবিক মৃত্যু চান। আওয়ামী লীগের ক্যাডার আর অঙ্গ-সংস্থাগুলোর গুণ্ডারা সুযোগ পেলেই বিরোধী দলগুলোর, বিশেষ করে জামায়াত সমর্থক তরুণ-যুবকদের হত্যা করছে। রাজনীতির সঙ্গে যারা সম্পর্কহীন তারাও নিরাপদ নন। ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে প্রায়ই ব্যবসায়ী খুন হচ্ছেন, ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিতে যাওয়ার পথে পিতা-পুত্র খুন হচ্ছেন। তাদের টাকা ছিনতাই হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সাধারণ মানুষের বিশ্বাস—এই দুষ্কৃতগুলো ঘটাচ্ছে শাসক দলের ভেতরের গুণ্ডারা। 
আইনশৃঙ্খলা যেখানে অনুপস্থিত, সেখানে পেশাদার দুর্বৃত্তরাও পুরো মাত্রায় সক্রিয়। চুরি-ডাকাতির সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। ডাকাতরা বাড়িতে ঢুকে মানুষ খুন করছে, ডাকাতি করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, আইনশৃঙ্খলা এখন সবচেয়ে ভালো। তার দাম্ভিক দাবি শুনলে ভয়ে মানুষের পিলে চমকায়। এই যদি ভালো হয়, তাহলে খারাপটা কেমন হবে?
ক’দিন আগে সাংবাদিক মেহেরুন রুনি ও তার স্বামী সাংবাদিক সাগর সারওয়ারকে তাদের বাসায় হাত-পা বেঁধে বীভত্সভাবে বারবার ছুরি মেরে হত্যা করা হয়েছে। তাদের অসহায় শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিডিয়ায় ছবি প্রচার করেছেন, বলেছেন এ শিশুর সব ভার তিনি নেবেন। অতীতেও মানুষের চরম ট্র্যাজেডি নিয়ে তিনি অনুকূল প্রচার পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এ শিশু যখন বড় হয়ে জানতে চাইবে কেন তার মা আর বাবা খুন হলো, কে বা কারা খুনি এবং খুনিদের বিচার ও শাস্তি হয়েছে কি, তখন কী জবাব দেবেন প্রধানমন্ত্রী?
এই বিভ্রান্তি কেন সৃষ্টি করা হচ্ছে?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এক দঙ্গল টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে ঘোষণা করলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সাহারা খাতুন হয়তো আশা করেন তার কথায় দেশের মানুষ আশ্বস্ত এবং ‘ইমপ্রেসড’ হয়েছে। তারপর থেকে কত ৪৮ ঘণ্টা এলো আর গেল! কিন্তু টেলিভিশনে খুনিদের চেহারা দেখা গেল না। পুলিশ প্রথমে বলেছিল তারা এখনও খুনিদের ধরতে পারেনি, কিন্তু আলামত পেয়েছে, শিগগির তাদের ধরা হবে। কিন্তু পুলিশের বক্তব্যও ক্রমেই পিছু হটছে বলে মনে হয়। এখন বলা হচ্ছে আলামত মুছে কিংবা ঝাপসা হয়ে গেছে, খুনিদের ধরতে আরও দেরি হতে পারে। পুলিশ কর্মকর্তারা আরও বলছেন, চোর কিংবা ডাকাতও তাদের হত্যা করে থাকতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ, আপনারা কি আশ্বস্ত বোধ করছেন? বরং লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিডিআর বিদ্রোহসহ অন্যান্য ঘটনার মতো এ ব্যাপারেও সত্য আবিষ্কারের চেয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে সত্য চাপা দেয়ার চেষ্টাই বেশি হচ্ছে।
সাংবাদিকদের ‘উল্টা-পাল্টা’ খবর প্রকাশ না করতে হুশিয়ার করে দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু তারা কী করবেন? দেশের মানুষ গ্রেফতার চায়, কার্যকারণ জানতে চায়, বিচার চায় এবং তারা জানেন যে বিচার বর্তমান বাংলাদেশে একপেশে। শাসক দলের ক্যাডার ও অঙ্গ সংস্থাগুলোর গুণ্ডাদের সাত খুন মাফ, তারা প্রধানমন্ত্রীর পোষ্য। তাদের গায়ে হাত তোলে, তাদের গ্রেফতার করে, সে সাধ্যি পুলিশের কোথায়? তাছাড়া পুলিশেও এখন শাসক দলের বহু লোক ঢোকানো হয়েছে। গোত্র-ভাইদের ধরতে কিংবা শাস্তি দিতে তাদের আগ্রহ কম। এর ওপরও এ সরকার বিশাল পুলিশ বাহিনীকে নিয়োজিত রাখছে মোটামুটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। 
বিরোধী দল সভা-সমাবেশ করবে, মিছিল করবে, সরকার তাতে ভয় পায়। যে কোনো মূল্যে গণতন্ত্রের আন্দোলন প্রতিহত করার নির্দেশ তাদের ওপর। তারা নির্বিচারে লাঠিপেটা করে, গ্যাস ছোড়ে, গুলি চালায়। শাসক দলের গুণ্ডারা বিরোধীদের বাধা দেয়, সংঘর্ষ সৃষ্টি করে, তাদের সংরক্ষণ দিতে হয় পুলিশকে। দেশে কোথায় চুরি-ডাকাতি কিংবা খুনখারাবি হচ্ছে সেদিকে মনোযোগ দেয়ার সময় পুলিশের কোথায়? এমন পরিস্থিতিতে চাপে পড়লে পুলিশ সম্পূর্ণ নির্দোষ কাউকে ধরে মারপিট করছে, গ্রেফতার করে রিমান্ডে রাখছে, এমন ঘটনা বর্তমান বাংলাদেশে বিরল নয়।
যে কারণে গুম করা হয়
কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং মানুষ গুম হয়ে যাওয়ার কারণ কী? এ সরকার কীভাবে গদি পেয়েছে চিন্তা করলে কিছু হদিশ পাওয়া যাবে। জনসাধারণের সমর্থনের জোরে নয়, ‘ভারতের বস্তা বস্তা টাকা ও পরামর্শের’ জোরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়েছিল। ভারত কেন দিয়েছিল বস্তা বস্তা টাকা ও পরামর্শ? ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী কী চুক্তি করেছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের কতখানি দান করে এসেছিলেন, সেসব দেশের মানুষকে জানতে দেয়া হয়নি, ভবিষ্যতেও যাতে তারা জানতে না পারে সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। 

ভারত সরকার মুসলমানদের দ্বারা ঘটানো সন্ত্রাস নিয়ে উদ্বেগকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। অথচ অমুসলমানদের দ্বারা কৃত সন্ত্রাস ভারতে হচ্ছে বহুগুণ বেশি। কারণ কী? কারণ এই যে ভারত এখন রাশিয়ার সঙ্গে মৈত্রী, জোট-নিরপেক্ষতা ইত্যাদি বর্জন করে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আঁতাত করছে। হাতির মাথার চড়ুই পাখির মতো ওয়াশিংটনের বিদেশনীতি নিয়ন্ত্রণ করে ইসরাইল। ইসরাইল আবার ‘ইসলামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সংগ্রাম’ মন্ত্রের উদ্ভাবক। ইসরাইলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু আর প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক এক-এগার সন্ত্রাসের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিশ্ব মিডিয়ায় প্রচারাভিযান শুরু করেছিলেন এই বলে যে, ‘ইসলামী সন্ত্রাস জুডিয়ো-খ্রিস্টান সভ্যতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।’ তার জের ধরেই ‘ইসলামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ চালাচ্ছে তারা। ইসরাইল বর্তমানে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সন্ত্রাস দমনের কৌশল সম্পর্কে তালিম দিচ্ছে। 
শেখ হাসিনাকে গদিতে বসানো ও বহাল রাখার মূল্য হিসেবে ভারত বাংলাদেশের ইসলামী ভাবধারা বিনষ্ট করতে চায়। হাসিনার সরকার জঙ্গি ধর্মনিরপেক্ষতা চালাচ্ছে। বাংলাদেশে ফসল ভালো হলে হাসিনা তার ‘মা-দুর্গার’ প্রশস্তি করেন, কিন্তু মুসলমান তার ধর্মের কথা বললে হাসিনার ধর্মনিরপেক্ষতা আহত হয়। গত বছরের জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছিলেন, বাংলাদেশের সিকি ভাগ মানুষ জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক এবং তারা ভারতবিরোধী। অর্থাত্ ভারতও তার নতুন মিত্রদের অনুকরণে ইসলামকে খতম করার যুদ্ধে ভিড়েছে, সে কাজে ভারত শেখ হাসিনার সরকারকেও ভিড়িয়েছে। বেফাঁস ভারতের সম্প্রসারণবাদী মহলের মনের কথা ফাঁস করে দিয়েছিলেন বলে তখন নিজ দেশে মনমোহন সিংয়ের প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল।
বিদেশিদেরও বিভ্রান্ত করা হচ্ছে
রাজনীতি থেকে ইসলামী ভাবধারাকে বিলুপ্ত করার জন্য শেখ হাসিনা গোড়া থেকেই তত্পর হয়েছেন। সংবিধান থেকে ইসলামকে বাদ দিয়ে পরোক্ষে সে সংকল্পই তিনি ঘোষণা করেছেন। যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে প্রথমে তিনি জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বকে জেলে পুরেছেন, ময়দান থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। তারপর থেকে অভিযোগের পরিসীমা ক্রমেই সম্প্রারিত করা হচ্ছে। এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, যে কেউ আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করবে তাকেই যুদ্ধাপরাধীর দুর্নাম দিয়ে জেলে পোরার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সুস্পষ্টভাবে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য ঘোষণা করে খালেদা জিয়া আন্দোলন শুরু করেছেন। কিন্তু সরকারের প্রচারযন্ত্রগুলো বলছে, বিএনপি নেত্রী আন্দোলন করছেন যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে। ভারতীয় প্রভুদের এবং বিদেশিদের তিনি বিভ্রান্ত করতে চান এই বলে যে, আসলে তিনি ইসলামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেই সংগ্রাম করছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সংসদে বলেছেন, ‘গুম’ বলে কোনো কথা নেই। কিন্তু গুম বলে যে একটা ব্যাপার বাংলাদেশে এখন অহরহ ঘটছে সেটা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। সংসদে তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০৫ ব্যক্তি অপহৃত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী (?) বাহিনী ৪৮ জনকে উদ্ধার করেছে, অন্য ৫৭ জনের অবস্থান চিহ্নিত করে তাদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা চলছে।’
উদ্ধারের প্রচেষ্টার কথা বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি লোক হাসাতে চান? ঢাকার ওয়ার্ড কমিশনার আলম চৌধুরীকে উদ্ধার করতে পেরেছে সাহারা খাতুনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী? অথচ সব বিবরণ অনুযায়ী অপহরণের ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে এসব বাহিনী, বিশেষ করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সাভারে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আল মুকাদ্দাস ও মোহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহ্র অপহরণের ঘটনায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বহু প্রত্যক্ষদর্শী অপহরণকারীদের র্যাবের লোক বলে শনাক্ত করেছে, অপহরণকারীরা বলেছিল জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু তারা কি ছাড়া পেয়েছে? কবে ছাড়া পাবে তারা? লক্ষণীয় যে, অপহরণ ও গুপ্তহত্যা ইসরাইলি গোয়েন্দা বিভাগ মোসাদের অতি পুরনো টেকনিক এবং আগেই বলেছি মোসাদ এখন ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সন্ত্রাস দমনের টেকনিক শেখাচ্ছে।
একুশ শতাব্দীর রাজাকার-আল বদর
একাত্তর সালে আল বদর আর রাজাকাররা বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে হত্যা করেছে, তাদের লাশ কোনো জলাভূমিতে ফেলে দিয়েছে। বিগত কয়েক মাসে নদীতে বহু লাশ পাওয়া গেছে। তাদের অনেকের হাত-পা বাঁধা ছিল। সরকার স্বীকার না করলেও এখন আমরা জানি অপহরণকারীরা কারা। গুপ্তহত্যা কারা করছে সেটাও অনুমান সাপেক্ষ। তারা যারাই হোক একাত্তরের রাজাকার আর আল বদরদের চেয়ে তাদের তফাত্ কোথায়? মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের হিসাব অনুযায়ী জ্ঞাত গুপ্ত হত্যার সংখ্যা নিম্নরূপ : ২০০৯ সালে দু’জন, ২০১০ সালে ১৮ জন, ২০১১ সালে ৩০ জন এবং বর্তমান বছরে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪৯ জন। আমরা জানি, এ সরকারের আমলে খুন হয়েছে ১২ হাজার মানুষ। আইনশৃঙ্খলার কথা মুখে আনতে সাহারা খাতুনের লজ্জিত হওয়া উচিত।
কোনো সভ্য দেশের সভ্য সরকারে সাহারা খাতুনকে মন্ত্রী নিয়োগ আশা করা যেত না। তারপরও তাকে বরখাস্ত করা অনেকদিন আগে শেখ হাসিনার উচিত ছিল। কিন্তু আমরা জানি হাসিনা সেটা করবেন না, কেননা যোগ্যতার ভিত্তিতে নয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আনুগত্যের ভিত্তিতেই এ সরকারের মন্ত্রীরা নিযুক্ত হয়েছেন হাসিনার এবং তার মারফতে দিল্লির নির্দেশ মেনে চলার জন্য।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ