রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

ফ্রান্সে বাংলাদেশীদের রাজনৈতিক আশ্রয় স্থগিত করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রবাসীরা


ফ্রান্সে বাংলাদেশীদের রাজনৈতিক আশ্রয় স্থগিত করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশীরা। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে এক মানববন্ধন ও সমাবেশের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিগগির এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, এর অঙ্গসংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আঞ্চলিক সমিতি ও সম্প্রদায়ের কয়েক শত লোক অংশগ্রহণ করেন। সংগঠনগুলোর বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে প্রায় প্রতি দিন রাজনৈতিক সহিংসতায় হত্যা, খুন, অত্যাচার, নির্যাতন, ক্রসফায়ার, মিথ্যা মামলা ও গুপ্তহত্যার মতো ঘটনা ঘটে চলছে। নিত্যদিনের পত্রপত্রিকা ও মিডিয়ায় আসা ঘটনাগুলো তার প্রমাণ। এ থেকে পরিত্রাণ পেতেই অনেকে প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে ফ্রান্সে চলে এসেছেন।
বক্তরা আরো বলেন, প্রবাসজীবন বাংলাদেশীদের জন্য ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। নানা পর্যায়ে দুর্নীতি, রাষ্ট্রপক্ষের অদক্ষতা, দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি ও দায়িত্বহীন প্রলাপের কারণে বাংলাদেশীদের জন্য এ অবস'ার সৃষ্টি হয়েছে ও হচ্ছে। এর সর্বশেষ শিকার ফ্রান্স প্রবাসীরা। যে রাষ্ট্রটি ছিল নানা দিক থেকে বাংলাদেশীদের জন্য সারাবিশ্বে প্রথমসারির সুযোগ-সুবিধার, রাজনৈতিক আশ্রয় ব্যতীত এখানে বৈধভাবে থাকার কোনো পথ নেই বললেই চলে। সে পথটি এখন প্রায় বন্ধ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের কর্তাব্যক্তিরা ইউরোপের একাধিক দেশে রাষ্ট্রীয় সফরে এসে বলেছেন, বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক, গোত্র-বর্ণ বা ধর্মীয় কোনো সমস্যা নেই। তাই ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ গত ২৫ নভেম্বর বিষয়টি আলোচনায় আনে। সর্বশেষ গত ২ ডিসেম্বর তারা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, বাংলাদেশ, আর্মেনিয়া, মালদোভা ও মন্টিনেগ্রোর নিশ্চিত নিরাপদ দেশ। গত ৯ ডিসেম্বর এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। নতুন আইন মতে, ২০১২ থেকে এসব দেশের লোকদের রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের সুযোগ আগের মতো থাকছে না। অবশ্য ডিসেম্বর মাস থেকেই আগের নিয়মে নতুন করে কেউ রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করতেও পারছেন না।
অন্য দিকে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছাত্রত্ব ভিসা ও অভিবাসন আইন কড়া করায় নানা চাপের মধ্যে আছে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশী প্রবাসী। সরকারের অদূরদর্শিতার ফলে প্রবাসীরা এখন দিশেহারা। দেশে ক্রসফায়ার, গুপ্তহত্যা, সাজানো জেল-জুলুম-নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায় ও অপহরণের ভয়ে প্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে এসেও যেন তাদের স্বস্তি নেই। অথচ দেশের জিডিপিতে এই প্রবাসীদের অবদান ১৩ শতাংশ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ