রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

টরন্টোতে স্ত্রী হত্যার দায়ে এক বাংলাদেশীর দশ বছরের সাজা


টরন্টো, ১০ ফেব্রুয়ারি- স্ত্রী হত্যার দায়ে টরন্টোর অধিবাসী মিজান আহমেদ নামে এক বাংলাদেশীকে ১০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে অন্টারিওর উচ্চ আদালত। আদালতে মিজান স্বীকার করেছে ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট সে তার স্ত্রীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর যখন বাথটবে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে গিয়েছিলো তখন তার ১০ দিনের নবজাতক শিশুটি পাশের বেডরুমেই অবস্থান করছিল।  মিজান সেই শিশুটিকে একা ফেলেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তাহমিনা ইয়াসমিনের (২৩) গলায় এমন ভাবে ওড়না পেঁচানো হয়েছিল দেখে যেন মনে হয় সে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ প্রথম দিকে তাই বিশ্বাস করছিল কিন্তু প্যাথলজিস্ট এর রির্পোটে উল্লেখ করা হয় যে ঘাড় মটকানোতে অন্যের হাত থাকতে পারে। পরে মিজান আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। 
উল্লেখ্য, এই দুর্ঘটনাটি ঘটার পূর্বেও স্বামী স্ত্রীর বিবাদের কারনে পুলিশেকে তাদের স্পাইদানা ও ডানডাস স্ট্রিট ওয়েস্টের এপার্টমেন্টে আসতে হয়েছে। এরই পরিপেক্ষিতে কোর্টের নির্দেশ ছিল মিজান যেন তার স্ত্রীর সাথে দেখা না করে। কিন্তু কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মিজান তার স্ত্রীর সাথে দেখা করতে যেত। সত্য ঘটনাটিকে চাপা দেয়ার জন্য মিজান আহমেদের পরিবার থেকে কোর্টকে বলা হয়েছিল যে ইয়াসমিন আগেও গলায় ফাঁস নেবার চেস্টা করেছিল।
এদিকে মিজান নিজে অপরাধ স্বীকার করায় তার বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রী হত্যার মামলা করা হয়। মামলার আসামী পক্ষের উকিল বলেন, বাংলাদেশী এই ব্যক্তি মারাত্মক মানসিক মনোব্যাধির সিজোফ্রেনিয়াতে ভুগছে। যার কারনে অতীতেও অনেকবার পুলিশকে তাদের বাসায় যেতে হয়েছে। এই মামলার বাদী বিবাদির দ্বারা পেশ করা যৌথ সুপারিশকৃত রায় মেনে নিয়ে বিচারক আদেশ পড়ার আগে বলেন ‘একজন অল্প বয়স্ক মেয়ে তার জীবন হারালো, একজন নবজাতক শিশু সম্ভবত তার পিতা মাতা উভয়কেই হারালো।’ শিশুটি এখন একজন নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে আছে। একটি দোভাষীর মাধ্যমে আদলতের কাছে মিজান তার অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়েছে। প্রাক বিচার হেফাজতে থাকার সময়টুকু বিবেচনায় রেখে মিজান আহমেদকে আরো সাড়ে তিন বছর জেল খাটতে হবে। ইয়াসমিনের এক আত্মীয় বলেছেন, মানুষ হত্যার অপরাধীর জন্য দশ বছর খুবই লঘু সাজা।  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ