রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

ব্যারিস্টার হতে চলেছেন তারেক রহমান


বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারসন তারেক রহমানের ব্যারিস্টার হতে আর আড়াই বছর লাগবে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে তিনি এলএলবি এবং পরবর্তী এক বছরে ব্যারিস্টারি সম্পন্ন করবেন। তারেক রহমান সপরিবারে লন্ডনে রয়েছেন। সদ্য লন্ডনফেরত জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবী ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সকালের খবরকে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

দৈনিক সকালের খবরে উল্লেখ করা হয়, মায়ের ইচ্ছা পূরণে চিকিৎসার পাশাপাশি তারেক রহমান পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তারেক রহমানই নন, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও মেয়ে জায়মা রহমানও পড়াশোনা নিয়ে লন্ডনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দিন তারেক রহমান সপরিবারে লন্ডনে যান। দেশে বর্তমানে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জন, আয়কর ফাঁকি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ মোট ১৪টি মামলা রয়েছে। তার অনুপস্থিতিতে মামলাগুলোর কার্যক্রম চলছে। সব মামলায়ই তিনি জামিনে রয়েছেন। জিয়া পরিবার সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, তারেক রহমান রাজধানীর বিএফ শাহীন স্কুলে লেখাপড়া করলেও ১৯৮৩ এসএসসি পরীক্ষা দেন গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল থেকে। ১৯৮৫ সালে তিনি নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু পড়াশোনা শেষ না করেই ঢাকার বাইরের একটি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন। এরপর তিনি দীর্ঘদিন পড়াশোনা থেকে দূরে থাকেন। এ সময়ে তিনি ব্যবসা ও পরে সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। 

জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদ্য লন্ডনফেরত আইনজীবী তার নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক সকালের খবরকে জানান, ওয়ান-ইলেভেনের সময় গ্রেফতার ও মুক্তি লাভের পরে মা খালেদা জিয়ার ইচ্ছায় তারেক রহমান লন্ডনে চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি আবারও পড়াশোনা শুরু করেন। লন্ডনে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর তিনি সেখানকার একটি কলেজে এলএলবিতে ভর্তি হন। ইতোমধ্যে তিনি পড়াশোনায় দেড় বছর কাটিয়েছেন। পরে দেড় বছরে তিনি এলএলবি সম্পন্ন করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। এরপর ব্যারিস্টার হতে তাকে আরও এক বছর পড়াশোনা করতে হবে। 

তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও সেখানে কার্ডিওলজির ওপর ডিপ্লোমা করছেন। এছাড়া তাদের মেয়ে জায়মা রহমান লন্ডনে একটি স্কুলে স্ট্যান্ডার্ড নাইনে পড়ছেন। তারেকের ইচ্ছা জায়মা ‘ও’ লেবেল এবং ‘এ’ লেবেল সম্পন্ন করে অক্সফোর্ডে ভর্তি হবে। সেখানে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরবে।

জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ ওই আইনজীবী আরও জানান, পড়াশোনা ছাড়াও তারেক রহমান প্রতিদিন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকাগুলো পড়েন এবং টিভি চ্যানেলের টক শো’গুলো দেখেন। রাজনীতির সর্বশেষ হাল হকিকত জানতে মাঝে মধ্যে তিনি মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। বিএনপি সংশ্লিষ্ট অনেকেই লন্ডন থেকে ফিরে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে দেশে নেতাকর্মীদের কাছে প্রচার করেন। এর বেশিরভাগই মিথ্যা বলে ওই আইনজীবী জানান। তার মতে, খালেদা জিয়ার অনুমতি ছাড়া তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাতৎ করেন না। তিনি জানান, দলীয় নেতাকর্মীরা তার প্রথম বাসা চিনে ফেলায় তার মায়ের পরামর্শে বাসা পরিবর্তন করেছেন। যতটা সম্ভব আড়ালে থাকার চেষ্টা করছেন। তার শারীরিক অবস্থা এখন কিছুটা ভালো। তবে ক্র্যাচ ছাড়া চলতে পারেন না। ঘরের মধ্যেও ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাঁটেন তিনি। সপ্তাহে দু’দিন যান থেরাপি দিতে।

ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) মহাসচিব এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন সকালের খবরকে জানান, ডা. জোবাইদা রহমান একজন কার্ডিওলজিস্ট। ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের আমলে তাকে টাঙ্গাইলে বদলি করা হয়েছিল। তিনি অত্যন্ত মেধাবী। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে তার ব্যাচে তিনি প্রথম হয়েছিলেন। তারেক রহমানের মুক্তির পরে তিনি স্বামীর সঙ্গে লন্ডনে চলে যান। বর্তমানে তিনি ছুটিতে আছেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ