এক সময় তিনি রিকশাচালক ছিলেন। অর্থ উপার্জনের জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু এখন সেই রিকশাচালক বছরে ৭০ লাখ টাকা সেলস ট্যাক্স মেটান। ব্যাপারটা সিনেমার মতো মনে হলেও, এটা বাস্তব ঘটনা।
এমনই অসাধ্য সাধন করেছেন ৫১ বছরের ধরমবীর কাম্বোজ। এক সময়ে তিনি দিল্লির রাস্তায় রিকশা চালাতেন । হরিয়ানায় নিজের গ্রামে যাওয়ার সুযোগও পেতেন না। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা তার জীবনে অনেক কিছুই পাল্টে দেয়। তড়ঘড়ি ছুটে যেতে হয় গ্রামে। আর সেখানে গিয়েই ব্যবসা শুরু করলেন তিনি।
শহরে থাকার সুবাদে দেখেছিলেন, শহুরে লোকেরা আমলকির রস এবং মিষ্টি কিনে থাকেন। স্বাস্থ্যসচেতনদের ঘৃতকুমারীর রস কিনতেও দেখেছেন তিনি। গ্রামে গিয়ে ঠিক করলেন আর শহরে ফিরে রিকশা চালাবেন না, বরং গ্রামে থেকেই আমলকি, অ্যালোভিরার জুসের ব্যবসা শুরু করবেন। যেমন কথা তেমনই কাজ।
এরপরই ওই জুস প্যাকেটবন্দি করে বিক্রি করতে শুরু করলেন। আস্তে আস্তে চাহিদা বাড়তে থাকে। হরিদ্বারের কয়েকজন বড় ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগও হয়।
ধরমবীর বলেন, ‘ব্যবসা শুরুর জন্য আমরা সাহায্য চাই। বাগান বিভাগের তরফে ২৫ হাজার টাকার সাবসিডি পাই। ২০০৭ সালে আমলকির চাষ শুরু করি। এরপর তার রস বার করে বিক্রি করতাম। ক্রমশ চাহিদা বাড়তে থাকে।’
তবে ব্যবসার ফলে নয়, তার তৈরি একটি যন্ত্রই এনে দেয় প্রতিপত্তি। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উৎপাদন বাড়াতে হয়। তখন আমলকি থেকে রস বার করতে গিয়ে অনেক সময়েই হাতে আঘাত পেয়েছেন। এরপরই একটি যন্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।
জানান, ‘আমি এবং আমার স্ত্রী এমন একটি যন্ত্র তৈরি করি, যেখানে আমলকি, অ্যালোভিরা এবং অন্যান্য সব্জির রস সহজেই বার করা যায়। এই যন্ত্রে বীজ না-ভেঙে সহজেই রস বার করা সম্ভব হয়।’
এর পরই ন্যাশনাল ইনোভেশন ফাউন্ডেশনের তরফে ধরমবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাকে পুরস্কৃত করার জন্য দিল্লি ডাকা হয়। সেখানে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় তাকে সম্মানিত করেন।
অতীতের কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে পাকা বাড়িও ছিল না। এবার বাড়ি আছে, একটি প্রোসেসিং প্লান্টও আছে। এখন বছরে প্রায় ৭০ লাখষ টাকা সেলস ট্যাক্স জমা দিয়ে থাকি।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন