বুধবার, ১৪ মে, ২০১৪

জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে জরিমানা চার হাজার টাকা!

অনলাইনে ভোটার হওয়ার সুযোগ দিতে চাইছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া নতুন স্মার্টকার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) পরপর দুবার হারালেই কার্ড সংগ্রহে ভোটারকে জরিমানা দিতে হবে দুই থেকে চার হাজার টাকা। দেশের সব নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দিতেই নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্র বিধিমালায় এসব বিধান রেখে সংশোধনী আনতে আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদন করার সুযোগ দিতে চাইছে ইসি। 

বিষয়টি জাতীয় পরিচয়পত্র বিধিমালায় রাখা হচ্ছে। এমনকি যারা ভোটার তালিকাভুক্ত নন তারাও জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এদিকে নির্বাচন কমিশনের স্মার্টকার্ড প্রকল্পের মাধ্যমে ভোটারদের নতুন যে আধুনিক আইডি কার্ড দেওয়া হবে, সে ক্ষেত্রে ইসি কিছু নতুন বিধিবিধান করতে যাচ্ছে। 

জানা গেছে, প্রায় দুইশ' টাকা মূল্যের স্মার্টকার্ড প্রথমে সব নাগরিককেই বিনামূল্যে বিতরণের পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কার্ডের মেয়াদ অন্তত ১০ বছর হবে। এরপর কার্ড নবায়নের জন্য ফি নির্ধারণ করা হচ্ছে (সাধারণ) ২৫০ টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য ফি থাকছে ৫০০ টাকা। 

অন্যদিকে হারানো বা নষ্ট কার্ড উত্তোলনে প্রথমবারের ফি থাকছে (সাধারণ) ৫০০ টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য ফি এক হাজার টাকা। দ্বিতীয়বার হারালে ফি ধরা হয়েছে (সাধারণ) এক হাজার টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য দুই হাজার টাকা। 

এ ছাড়া দ্বিতীয়বারের পর কার্ড হারালে বা নষ্ট হলে ভোটারকে জরিমানা বা ফি দিতে হবে (সাধারণ) দুই হাজার টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য চার হাজার টাকা। এসব ফি ইসি সচিব বরাবর পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে দেওয়া যাবে। 

ইসি সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের জালিয়াতি রোধে নাগরিকদের দেওয়া হবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য জাতীয় পরিচয়পত্র তথা স্মার্টকার্ড। দেশে তৈরি দীর্ঘমেয়াদি এ কার্ডের প্রাথমিক ব্যয় হচ্ছে প্রায় দুইশ' টাকা। এ ক্ষেত্রে ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে আধুনিক প্রযুক্তির তথ্যসমৃদ্ধ জাতীয় পরিচয়পত্র দেবে ইসি। ইসি সূত্র জানিয়েছে, টেকসই ও সুন্দর অবয়বে এ কার্ড বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় তা সাধারণভাবে স্মার্টকার্ড হিসেবেই বিবেচিত হবে। 

বর্তমানে এক পৃষ্ঠায় নাম, পিতা ও মাতার নাম, জন্মতারিখ ও আইডি নম্বর এবং অপর পৃষ্ঠায় ঠিকানা-সংবলিত লেমিনেটিং করা কার্ড পাচ্ছেন ভোটাররা। ইসি কর্মকর্তারা জানান, কার্ডের মেয়াদ অন্তত ১০ বছর হবে। প্রথমবার বিনামূল্যে বিতরণের পর হারানো বা সংশোধিত কার্ডের জন্য নির্ধারিত ফি থাকবে। 

বর্তমানে ৯ কোটি ২০ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত রয়েছেন। সর্বশেষ হালনাগাদ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত লাখ দশেক ভোটার এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারেননি। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন সেনাবাহিনীর সহায়তায় ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের কাজ শুরু করে। দেশের সব নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার বিধান রেখে গত বছর ৬ অক্টোবর 'জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (সংশোধন) বিল, ২০১৩' সংসদে পাস হয়।

এর ফলে ১৮ বছরের কম বয়সীরাও জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন। এদিকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্ত তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সংরক্ষণ ও গোপনীয়তা রক্ষার বিধান রাখা হয়েছে বিলে। কোনো ব্যক্তি বা নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা অনুমতিতে ভোটার তালিকা বা জাতীয় পরিচয়পত্র-সংক্রান্ত তথ্য বা উপাত্তের বিষয়ে গোপনীয়তা লঙ্ঘন করলে শাস্তি থাকছে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ