শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

পুলিশ বাহিনীর অসামান্য কৃতিত্ব !!!

অপহরণের এক মাসেও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যার খোঁজ মেলেনি। 
এদিকে আওয়ামী লীগের কাপ্তাই উপজেলা ও জেলার একাধিক নেতা এবং অনিল তঞ্চঙ্গ্যার পরিবারের ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তি তাঁর অপহরণ ঘটনার জন্য দলীয় কোন্দলকে দায়ী করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জড়িত থাকতে পারেন বলে তাঁরা সন্দেহ করছেন। 
গত ১০ জানুয়ারি কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের নিজ গ্রাম আগুনিয়াছড়া থেকে অটোরিকশাযোগে রাঙামাটি শহরে আসার পথে সকাল সাড়ে আটটার দিকে অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা অপহূত হন। এ খবর শহরে জানাজানি হলে ঘটনার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল করেন। ওই মিছিল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়। 
পুলিশ সুপার (এসপি) মাসুদ-উল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, যে স্থানে অনিলকে রাখা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তার চারদিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে। 
কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থোয়াই চিং মারমা বলেন, অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যার সঙ্গে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুচাইন মারমার দীর্ঘদিন ধরে কোন্দল ছিল। এ ছাড়া অনিল নিজেই বলতেন, তিনি জেলার গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে যাচ্ছেন। সে কারণে অনিল অপহরণ হতে পারেন বলে দলের অনেকে মনে করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা একই সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা। তাঁর অনুপস্থিতিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল না করতে বারবার অনুরোধ করার পরও দলের কিছু নেতা কাউন্সিল আয়োজনে অতি উৎসাহী ছিলেন। কিন্তু তার পরও ওই নেতারা ভোটাভুটিতে দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ না পাওয়ার অবস্থা দেখে কাউন্সিল পণ্ড করেছে। প্রসঙ্গত, গত ৪ ফেব্রুয়ারি এই কাউন্সিল পণ্ড হয়।
যোগাযোগ করা হলে অংসুচাইন মারমা বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমার জড়িত থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না। অপহরণকারীরা ফায়দা লুটতে এসব অপপ্রচার ছড়াচ্ছে।’ 
উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল আয়োজন সম্পর্কে অংসুচাইন বলেন, ‘আমি সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলাম। তবে আমার কাউন্সিল আয়োজনে কোনো হাত ছিল না। জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে কাউন্সিল আয়োজন করা হয়েছিল।’ 
অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যার পরিবারের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার অপহরণকারীদের সঙ্গে টাকা লেনদেনের প্রমাণ তাঁদের হাতে আছে। বিষয়টি আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ে জানানো হয়েছে। তবে তাঁদের বলা হয়েছে, এখন এসব বলা ঠিক হবে না। অনিলের মুক্তির পর দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অনিল তঞ্চঙ্গ্যার বড় ছেলে ঝন্টু তঞ্চঙ্গ্যা হতাশা ব্যক্ত করে জানান, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আট থেকে ১০ দিন আগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারেননি। তবে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, ‘সেভাবে আমাকে সুনির্দিষ্টভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।’ জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সবাইকে তিনি বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথম থেকে উদ্ধারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ