“অনলাইনে ইনকাম” শব্দটা শুনলেই বেশীর ভাগ মানুষ এটাকে হাস্যকর বলে
উড়িয়ে দেয়। কেউ বিশ্বাসই করতে চায় না যে আসলেই সম্ভব। বন্ধুদের মাঝে
যদি কেউ বলে আমি অনলাইনে কাজ করে সত্যি টাকা পেয়েছি তাবে অন্যরা মনে করে
সে বানিয়ে বানিয়ে বলতেছে ভাব মারার জন্য। আবার অনেকে হাসাহাসি করে বলে
“হাঁ হাঁ হাঁ দোস্ত জানিস ওনা ভার্চুয়াল জগতে ভার্চুয়াল ভাবে টাকার
ইনকাম করেছে আচ্ছা তোকে টাকা গুলো কোন ফরমেটে দিলরে - .jgp ফরমেট নাকি
.png ফরমেট হাঁ হাঁ হাঁ”
মানুষ
যে কেন বেকার থাকে বুঝি না। কাজ জানলে “বেকার” শব্দটাই হাস্যকর মনে হয়।
অনলাইন কাজ করতে কোন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় না। শুধু মাত্র ইংরেজি
পড়তে পারলে, বুঝতে পারলে আর কাজ জানলে যে কেউ ইনকাম করতে পারে। এখানে
বয়সের কোন ভেদ নেই। কিশোর থেকে আঙ্কেল আন্টি বয়সেরও যে কেউ কাজ জানলেই
করতে পারবে।
অনলাইনে কাজের মধ্যে রয়েছে – ওয়েব ডেভলপমেন্ট,
সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন,
ব্লগিং, এফিলিয়েশন, আর্টিকেল রাইটিং ইত্যাদি। এগুলো ছারাও আরও অনেক কাজ
আছে যেগুলোর মাধ্যমে মানুষ সফলভাবে ইনকাম করতেছে।
বর্তমানে আমাদের
দেশের বহু মানুষ আছে যারা এই অনলাইনের কাজ করে সফল ভাবে টাকা ইনকাম
করতেছে। বিশেষ করে আমাদের যুব সমাজের অধিকাংশ ছেলেরা মেয়েরা বেশ সফলতা
পেয়েছে এই কর্মে।
আসুন এমনই কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হই যারা সফল ভাবে অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করতেছে।
মাহাবুব রায়হান
কাজের বিভাগঃ এস.ই.ও (Search Engine Optimization)
আমি
মূলত ২০০৯ এর শেষের দিকে অনলাইনে কাজের প্রতি আগ্রহি হই। ২০১০ এর মার্চ
মাসে oDesk এ একাউন্ট করি। কিছু দিন ঘাটাঘাটি করার পর আমার প্রথম কাজ পাই
২০১০ সালের মে মাসের ৬-৭ তারিখে। তখন থেকে শুরু করে এখনও কাজ করছি। প্রায়
দের বছরের বেশি সময় ধরে অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছি।
সবসময়
Independent থাকতে পছন্দ করতাম। তাই পছন্দটাকে ধরে রাখতে অনলাইনের কাজকে
পেশা হিসাবে নিয়েছি। আমি কুষ্টিয়া এর মোট মফস্বল শহরে বড় হয়েছি। অনেক
কষ্ট করে এই পেশাতে এই পর্যন্ত এসেছি। কুষ্টিয়াতে GP Internet দিয়ে কাজ
করা লাগত এবং সেখানে যারা অনলাইনে কাজ করত তারা সাধারনত এই সব শেয়ার করতে
চাইত না। তাই নিজেকেই কষ্ট করে শিখতে হয়েছে। Buyer রা কাজ দিত সেই কাজ
করতে গিয়ে অনেক ঘাটা ঘাটি করতে করতে শিখেছি কাজ গুলো। তাই যারা অনলাইনে
কাজ করতে চান তাদের অনুরোধ করবো আপনি যেই বিভাগে কাজ করতে চান সেই বিভাগে
ভাল ভাবে কাজ শিখে কাজ করতে আসুন তাহলে আর কাজ পেতে বেশি সময় ও কষ্ট হবে
না।
নাহিদা জাহান
কাজের বিভাগঃএস.ই.ও, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
আমি আমাদের লোকাল মার্কেটের কাজ গুলো বেশি করি। প্রথমে SEO র কাজ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে সম্পূর্ণ Web Development এর কাজ করি।
আমি
আগে থেকেই IT Sector এ জরিত তাই আমার কাজ পেতে তেমন একটা সমস্যা হয় নি।
২০০৯ সাল থেকে আমি Online Market Place গুলোতে কাজ করে আসছি।
প্রায়
৩ বছর ধরে কাজ করছি। এখন লোকাল ও ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট মিলে কাজ করি।
অনেক সময় দেখা যায় আমার কাজ খুঁজতে হয় না Buyer রা আমাকে খুঁজে।
আমি
বরাবরই অনেক একজন মানুষ এবং চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। যেহেতু এর কাজের
ক্ষেত্রটি আমাদের দেশে একবারেই নতুন তাই এই ক্ষেত্রে আমি আগের থেকেই এই এ
নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছি যা অন্য সকল চাকরির বাজার থেকে একটু আলাদা
এবং বৈচিত্র্যময়। আমি এই সেক্টরে সফলতার সাথে অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম
হয়েছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমার মত আরও অনেক মেয়েরা এগিয়ে আসবে এই
সেক্টরে।
মাসুদুর রসিদ
কাজের বিভাগঃ ব্লগিং, এস.ই.ও, এফিলিয়েশন
২০০৮ সাল থেকে অনলাইনে ঘুরাঘুরি করতেছি। আমার প্রথম আয়ের মুখ দেখতে প্রায় ৮ মাস লেগে যায়। ২০০৮ এর আগস্ট থেকে আয় করা শুরু করি।
আমি
অনেক কষ্টকরে কাজ শিখেছি। আমি কোন টিচার পাই নাই। আমি আর আমার ভাই জহিরুল
ইসলাম মামুন ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে অনেক আস্তে আস্তে কাজ শিখেছি। আমাদের
প্রতিটা কাজ শেখার পেছনে অনেক শ্রম, কষ্ট ও সাধনা লুকিয়ে আছে। ঘরে একটা
মাত্র কম্পিউটার আর ইন্টারনেট কানেকশন ভাইয়ের ৩ বন্ধু মিলে শেয়ার করে
চালাতাম। মাসে ১০ দিন নেট কাছে পেতাম আমরা দু'ভাই। সেই ১০দিন আজেবাজে কাজে
সময় ব্যায় না করে আমরা কিছু জানার পিছনে ব্যায় করেছি। আগে অনেক কষ্ট
করেছি বিধায় আজ আমরা দু'ভাই ই সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি।
এখনো প্রতিদিন ই কোন না কোন বিষয় শেখার প্রতি সময় ব্যায় করি। নিজের স্কিল বারানোর জন্য আমি অনেক শ্রম দিয়েছি, দিচ্ছি এবং দেব।
তাহের চৌধুরী সুমন
কাজের বিভাগঃ ব্লগিং, এস.ই.ও, এফিলিয়েশন
২০০৯
সালের শুরুর দিকে মিগে চ্যাট করার মাধ্যমেই ইন্টারনেট এর সাথে প্রথম
পরিচয় ঘটে আমার। তার বেশ কিছু দিনের মাথায় ই শুরু করেছিলাম ইন্টারনেট
জগতের বিশাল প্লাটফর্ম, যা সরাসরিই আমি শুরু করি ব্লগিং দিয়ে।
শুরু
দিকে আমার অনলাইনে আয়ের একমাত্র উৎস ছিলো ব্লগে গুগলের এডসেন্স বসিয়ে
আয় যা আস্তে আস্তে প্রফেশনাল ব্লগিং এর রুপ নেয়। এডসেন্স থেকে আয় করতে
চাইলে ব্লগে হিউজ ভিজিটর আবশ্যক আর অরগানিক ওয়েতে ভিজিটর আনতে এস.ই.ও
জনতেই হবে। তাই ব্লগিং এর জন্য এস.ই.ও শিখা শুরু করি। আস্তে আস্তে
নিজেকেকে এস.ই.ও ‘র এডভান্স ফিল্ডে সুইচ করতে থাকি। পরে আমার ইনকাম
সোর্সকে ডাইভারসিফাই করতে শুরু করি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে।
আসলে
সত্যি কথা বলতে কি একেবারে খুবই কম সময়ে আমি অনলাইনে সফল হয়েছিলাম।।
প্রথম কারন হিসাবে আমি বলবো সঠিক সময়ে সঠিক গাইড লাইন যা পেয়েছিলাম খুব
কাছের বন্ধু প্রতিষ্ঠিত ব্লগার মাসুদুর রশিদ এর কাছ থেকে। বন্ধু মাসুদের
সাফল্য দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম, ওর কাছ থেকেই ব্লগিংয়ের অ-আ-ক-খ
শেখা। ওর সাফল্য দেখে মনে হত, আমিও চেষ্টা করলে একদিন সফল হবোই। আর
সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটা বিশেষ করে আমার ক্ষেত্রে কাজ করেছে তা হচ্ছে
পড়াশুনার পাশাপাশি নিজেকে আত্বনির্ভরশীল হিসাবে গড়ে তোলা এবং নিজে নিজে
ই কিছু করে দেখনো। আর এজন্য আমি প্রথম দিকে গুগলের সার্চ ইঞ্জিনকে কাজে
লাগিয়ে নিজে নিজেই অনেক অনেক স্ট্যাডি করেছি। তাই সফলতা আসতেও খুব বেশি
সময় অপেক্ষা করতে হয়নি।
সজিব রহমান
কাজের বিভাগঃ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও এস.ই.ও
আমি
২০০৭ এর শেষের দিকে অনলাইন জগতে বিচরন শুরু। ২০১০ পর্যন্ত দীর্ঘ ২ বছরেরও
বেশি কোন আয় ছাড়াই শুধু কাজ শিখার পিছনে সময় দিয়েছি।
আমি এখন
মূলত ওয়েব ডেভেলপার হিসাবে কাজ করছি। তবে আমার প্রথম আয় এর উৎস ছিল
ব্লগিং ও এসইও । এখন ও এসইও থেকেও আয় করছি। আমি গত দেড় বছর ধরে গুগল
আডসেন্সে ও ফ্রীল্যান্সিং থেকে আয় করছি।
ছোটবেলা থেকেই ইন্টারনেট
এর উপর অনেক ঝোঁক ছিলো,কিন্তু নিজের কম্পিউটার না থাকার কারনে বেশ কষ্ট
করে সাইবার ক্যাফে বা বন্ধুদের কম্পিউটার এ বসে বসে অনলাইন ঘাঁটা ঘাটি
শুরু করি। আসলে তখন কিন্তু আমার কোন আয়ের চিন্তা ছিল না।চিন্তা ছিল যে
কিভাবে আমি কাজ শিখব।সেই চিন্তা নিয়েই বিভিন্ন ফোরাম, ব্লগ ইংরেজি ওয়েব
সাইট ভিজিট করে করে কাজ শিখেছি, টানা ২ বছর কাজ শিখেছে প্রতিদিন ১২-১৫
ঘণ্টা সময় ব্যয় করতাম এর পিছনে। তাই সবার উদ্দেশে একটি কথা সেটা হল
টাকার পিছনে ছুটার জন্য কাজ শিখবেন না। কাজ শিখুন কাজ শেখার জন্য, তখন
দেখবেন টাকাই আপনার পিছনে ছুটছে। ধন্যবাদ।
আরিফুল ইসলাম শাওন
কাজের বিভাগঃ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং ব্লগিং
২০০৬
থেকে কাজ শিখা শুরু করছি। দুটি কম্পিউটার কোর্স করছিলাম এগুলো দিয়ে
অনলাইনে আয়ের ক্ষেত্রে তেমন প্রভাব ফেলতে পারে নাই। ফ্রিলেন্সিং মার্কেট
প্লেসে অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গেলে প্রতিনিয়তই কাজ
শিখাতে হয়। তাই আমি এখনও শিখার উপরেই আছি।
বর্তমানে আমি ওয়েব
ডেভেলপমেন্ট এবং ব্লগিং থেকে আয় করছি। ২০০৮ এর শেষের দিক থেকে এখন
পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে আয় করছি। ফ্রীলান্সারদের আয়ের বেপারটা সম্পূর্ণ
সময় এবং কাজের পরিসীমার উপরের নির্ভর করে। যত বেশি দক্ষ এবং দীর্ঘ সময়ের
কাজ তত বেশি আয়।
ফ্রিলান্সিং এ আমার শুরুটা হয়েছিল অনেকটা
নাটকীয়তার মাঝে। এসএসসি পাশ(২০০৬ সালে) করার পরের ১টি বছর ব্যক্তিগত
সমস্যার কারণে আমাকে বাধ্য হয়েই পড়াশুনা থেকে দূরে থাকতে হয়েছে। কিন্তু
আমার লক্ষ ছিল পড়াশুনা থেকে দূরে থাকলেও আমি যেন অন্য কিছুতে সময়গুলোকে
কাজে লাগাতে পারি। তাই সময়গুলোকে কাজে লাগাতে ২০০৬ এর মাঝামাঝি সময় থেকে
টানা ২০০৭ এর শেষ পর্যন্ত টানা দুটি কম্পিউটার কোর্স করি। এবং সাথে
ইন্টারনেটে আয় কিভাবে করে সেই খোঁজ করতে থাকি। সেই সময় হয়তো আমার
আশেপাশে হাতে গুনা কয়েকজন ছাড়া তেমন কেউ ইন্টারনেটে আয় করতেন না বা
ব্যাপারটি জানতেনও না। কোন ভাবে তাদের ব্যাপারে জানতে পারি এবং তাদের সাথে
যোগাযোগ করে কাজের ধরন জেনে নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। সাথে চলছিল আমার
কম্পিউটার শেখা। দুটো জিনিস একই প্লাটফর্মে অনেকটা আনন্দ নিয়েই করতাম।
বিল্লাহ মামুন
কাজের বিভাগঃ এস.ই.ও, ব্লগিং
ইন্টারনেটের
সাথে পরিচয় ২০০৭ এর মাঝামাঝি সময়ে। টেকটিউনস সহ বাংলা ব্লগগুলোতে
নিয়মিত ব্রাউজিং আর ইন্টারনেট ঘুরাঘুরি করে ইন্টারনেট জগতটা সম্পর্কে
ভালো একটা ধারণা হয়েছিলো।
প্রথম দিকে সার্চ ইন্জিন অপটিমেজশন নিয়ে
ঘাটাঘাটি করি শুধু শিখার উদ্দেশ্যে। ২০১০ এর প্রথম দিকে এসে এডসেন্স এবং
SEO এই দুইটা টার্মের ব্যাপারে বেশ আগ্রহী হয়ে এই দুইটা টার্ম ভাল ভাবে
রপ্ত করি।
এখন আমার কাজ বা ইনকাম বলতে এডসেন্স এবং SEO এই দুটি
যাকিনা ব্লজ্ঞিং এর মাধ্যমে করে থাকি। ইনকামের শুরুটা হয় ২০১০ এর শেষের
দিক থেকে।
আমার অনলাইনে সফল হবার পিছনে বাংলা ব্লগগুলোর অবদান
অসামান্য। একসময় ঘন্টার পর ঘন্টার ব্লগগুলোতে দিয়েছি বিশেষ করে টেকটিউনস
এ । এই ব্লগগুলো না থাকলে হয়তো এইসব ব্যাপার এত সহজে খুঁজে পাওয়া যেতো
না । মাঝে মাঝে ভাবতাম যে অকারণে নেটে এত সময় কেন দিচ্ছি কিন্তু পরে কোন
উত্তরটা বুঝতে পারলাম। কিছুই অকারনে নয় সেদিনের সেই সময়গুলো আজকে নতুন
পথ দেখাচ্ছে আমাকে। সম্পূর্ণ ইন্টারনেট জগত সম্পর্কে ধারণা আর গুগল
সার্চিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার এতে সহজে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার
অবস্থানটা ঠিক কোথায় আছে। ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি অনলাইনে সফল হবার জন্য
ধৈর্য্য অনেক জরুরি। অনেকেই হাল ছেড়ে দেয় কিন্তু একটা নির্দিষ্ট
টার্গেটে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে তবেই আগ্রহ এবং উন্নতি দুইটাই বাড়তে
থাকবে।
বিথী আক্তার
কাজের বিভাগঃ গ্রফিক্স ডিজাইন
জীবনে প্রথম কম্পিউটারের মালিক হয়েছি ২০০৪ সালে। তখন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত শিখছি। শিখার কোন শেষ নেই।
বেশিরভাগ
গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়েই কাজ করছি ...এটা কেবল আমার সখের বসে করা । বলা
যায় সখ থেকে আয়। এছাড়াও ওয়েব ডেভলোপমেন্ট এর কাজেও আছি।
freelancing
এর ব্যাপারটা মাথায় ছিল ৫/৬ বছর আগে । নানান বাঁধায় সেটা আর সম্ভব হয়
নাই। এখন ১ বছর ধরে সফল ভাবে কাজ করে অর্থ আয় করতে পারছি। ফুল টাইম জব এর
পাশাপাশি কম্পিউটার সায়েন্স এ অনার্স এ পড়ছি আর গৃহিণী বলে
রান্না-বান্নার পাশাপাশি কেবল গ্রাফিক্স ডিজাইন এর উপর কাজ করে পার্টটাইম
ইনকামটা করছি।
আসলে আমাদের দেশের অনেক মেয়েরা এখনও অনেক কিছু ফ্রী
ভাবে করতে পারে না। আমাকেও প্রথম প্রথম শত বাঁধার ভেতর থেকে কাজ শিখতে
হয়েছে। আমার কাজ শেখার প্রধান উপকরণ ছিল দেশি বিদেশি বিভিন্ন ভিডিও
টিউটোরিয়াল । আসল কথা হল মনের ইচ্ছা থাকলে হাজার বাঁধা অতিক্রম করা সম্ভব
।
ইউনুস হোসেন
কাজের বিভাগঃ ওয়েব ডেভলপমেন্ট
কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করা শুরু করি ২০০৮ সাল থেকে। সেই থেকেই অনলাইনে পথ চলা।
বর্তমানে আমি মূলত oDesk এ ওয়েব ডিজাইনার এবং ডেভেলপার হিসাবে কাজ করে ইনকাম করছি।
২০০৮
থেকেই ব্লগিং করি। তখন থেকে শখের বশত ব্লগ ডিজাইন করতাম। কিছুদিনের মধ্যেই
এই কাজটাকে খুব উপভোগ করা শুরু করি। এরপর গুগল এর সাহায্য নিয়ে আরও
এডভান্স লেভেলে কাজ শিখার চেষ্টা করলাম। ২০১০ এর মাঝামাঝি এক বন্ধুর কাছ
থেকে oDesk এর খোঁজ পাই এবং পরে সেই বন্ধুর কথায় oDesk এ একাউন্ট খুলি ও
কিছু পরীক্ষা দেই। কাজের জন্য বিড করা হয়নি তবুও হঠাৎ করেই একদিন oDesk
থেকে একটা কাজের ইন্টারভিউর জন্য ইমেইল পাই। সেটাই ছিল ফ্রিলান্সার হিসেবে
আমার প্রথম কাজ। এর পর থেকেই oDesk এ ওয়েব ডিজাইনার এবং ডেভেলপার হিসেবে
কাজ করছি।
জাকির হোসাইন
কাজের বিভাগঃ ওয়েব ডেভলপমেন্ট
ইন্টারনেট
নেওয়া হয়েছে ২০১০ সালে আমার পড়ালেখার সহায়ক হিসেবে। আর ইন্টারনেট এর
কল্যানে বিভিন্ন বাংলা ব্লগ গুলো ঘোরা হতো অনেক। সাথে ইংরেজী রেফারেন্স
সাইট গুলো।
প্রথম প্রথম আমি আয়ের জন্য চিন্তা করি নি। বা আয়ের
জন্য যে শিখব তাও চেষ্টা করি নি। ২০১১ সালের দিকে এসে আয়ের জন্য চেষ্টা
করছি এবং যা যা দরকার তা শিখে নিয়েছি। আর এ ক্ষেত্রে আমার আগের শেখা
গুলোও কাজে লেগেছে। আমি ওয়েব ডেভলপমেন্টের কাজ করি এবং এ ক্যাটাগরিতে কাজ
করেই টাকা ইনকাম করছি।
আমি ৬ মাসের মত অনলাইনে ফ্রীল্যান্সিং করছি।
এখনও করতেছি। অনলাইনে আসার কথা প্রথমেই বলছি আমার লেখা পড়ার সহায়ক
হিসেবে অনলাইনে আসা। আর ফ্রীল্যান্সিং এ আসা হচ্ছে টাকা রুজি কারার জন্য।
বলতে গেলে দুটোতেই আমি খুশি।
মাহবুব আলম
কাজের বিভাগঃ এস.ই.ও
ক্লাশ
সেভেন থেকে সাইবার সেন্টারে ইন্টারনেট ব্যবহার করা শুরু হয়। ২০০৮ সালের
শেষ দিকে টেকটিউনস সাইটের ঠিকানা পাই। শখের বশত টেকটিউনসে এস.ই.ও নিয়ে
চেইন টিউন করার সময় এটি সম্পর্কে ব্যাপকভাবে আগ্রহ জন্মে এবং তা নিয়ে
কাজ করা শুরু করি। প্রথমে একটি ফ্রি ব্লগ সাইট বানিয়ে তার এস.ই.ও করি এবং
ভালো ফলাফল পাত্তয়ার পর থেকে এটি নিয়ে বর্তমানে সময় কাটাচ্ছি।
এস.ই.ও
কাজ করে আমি ব্যক্তিগতভাবে বেশ কিছু অর্থ উপার্জন করেছি। তবে এজন্য আমাকে
প্রথম তিন মাস সময় ব্যয় করতে হয়েছে কোন প্রকারের অর্থের আশা ছাড়াই। গত
ছয় মাস ধরে প্রতিমাসে শুধুমাত্র এডের মাধ্যমে বেশকিছু টাকা আয় করেছি
নিয়মিত ভাবে।
ইন্টারনেটে কাজ করার জন্য হাতে কলমে কারো কাছ থেকেই
শিক্ষা পাইনি। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টাতেই এ পর্যন্ত আসা। লেখালেখি করতে
গিয়ে মূলত আগ্রহ জন্মে কাজের প্রতি। চাকুরির প্রতি তেমন ঝোক নেই। কেননা
সেখানে কোন স্বাধীনতা নেই। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে গেলে নিজের
ইচ্ছে মতই করা যায়। ইচ্ছে আছে অনলাইনেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। আর একটি
কাজ করতে গেলে অবশ্যই ভালো মত জেনে বুঝে করা উচিত। এতে করে পরবর্তীতে আরো
কাজ পাত্তয়া সহজ হয়।
কষ্ট করলে সফলতা আসবেই। একদিন আগে বা
একদিন পরে সফলতা আসতে বাধ্য। তবে অনলাইনে কাজ করতে হলে ৩টি গুণাবলী একজন
মানুষের মধ্যে থাকাটা জরুরীঃ-
- অনেক ধৈর্যশক্তি।
- প্রচণ্ড শিখার ইচ্ছা।
- কাজ করার মনমানসিকতা।
নতুনদের জন্য কিছু কথা
- যারা নতুন ভাবে নিজেকে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে গড়ে তুলতে চান। তারা এই ক্ষেত্রে আসার আগে ভাল মত নিজেকে জানুন। আপনার মন কোন বিভাগের কাজ গুলোকে বেশি পছন্দ করে। যেই কাজে মন বসবে না সেটাতে ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করবেন না। এতে ফলাফল বিপরীত হতে পারে।
- ফ্রিল্যান্সার হিসাবে যে বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চান সেই বিষয়ে খুব ভাল ভাবে শিখে তারপর কর্মক্ষেত্রে যোগদান করবেন।
- শিখার কোন শেষ নেই তাই কাজ শিখার পরও ওই বিষয়ে নিয়মিত গুগল সার্চ করতে থাকুন। ওই বিষয়ে নিয়মিত আপডেট নিতে থাকুন।
- যখন কাজ শিখবেন তখন "ইনকাম করব, ইনকাম করব" এমন টার্গেট না রেখে "ভাল ভাবে শিখব, ভাল ভাবে শিখব" এমন টার্গেট রাখুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন