মঙ্গলবার, ২৭ মার্চ, ২০১২

ফেনীর সোনাগাজীতে জমিতে খরা ও লবনাক্ততা বৃদ্ধি খেসারীর ভাল ফলন হয়নি : হতাশ কৃষক


ফেনীর সমুদ্র উপকুলীয় সোনাগাজী উপজেলায় চলতি রবিশষ্য মৌসুমে সব চেয়ে কম খরচে অধিক লাভজনক খেসারীর ফলন ভাল হয়নি। ফলে জমিতে খেসারীর বীজ ফেলে এবার কৃষকরা হতাশ ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আগামী রবিশষ্য মৌসুমে জমিতে দেওয়ার মত বীজও এবার তাদের হয়নি। সরকারী ভাবে বীজ সরবরাহ না করা হলে সোনাগাজী উপজেলায় আগামী মৌসুম থেকে খেসারীর ডালের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে বলে কৃষকরা আশংকা করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস ও সংশ্লিষ্ট কৃষকদের সুত্রে জানা যায়, রবিশষ্য মৌসুমে অতি অল্প খরচে বেশী লাভ জনক একটি ফসল খেসারীর ডাল। আমন ধান পাকার বা কাটার আগে অগ্রাহায়ন মাসের মাঝামাঝি সময় কৃষক তাদের জমিতে খেসারীর বীজ ফেলে বা বপন করে। চাষাবাদের জন্য জমিতে যেমন কোন চাষ বা সার দিতে হয়না। তেমনি কোন ধরনের কীটনাশকও প্রয়োজন হয়না। ধান কাটার পর যাতে গর“ ছাগল ওই ফসল নষ্ট করতে না পারে শুধু সে দিকেই একটু খেয়াল রাখতে হয়। ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি সময় ক্ষেত থেকে খেসারীর ফসল তোলা হয়। বাড়ীতে নিয়ে কৃষক এবং কৃষানী লাঠি দিয়ে উঠানে ফেলে পিটিয়ে খেসারীর ছড়া থেকে ডাল সংগ্রহ করা হয়।
উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে এবং সোনাগাজী পৌর এলাকার বেশীর ভাগ গ্রামে এক সময় কৃষকরা জমিতে খেসারীর চাষ করতো। অতি উর্বর জমির জোরালো কাঁচা খেসারী গর“কেও খাওয়ানো হতো।  খেসারীর শুকনো খড়ও গরুও সুসাদু খাদ্য।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়, গত বছর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে তিন হাজার দতুই শত হেক্টর জমিতে কৃষকরা খেসারী উৎপাদন করে। প্রতি হেক্টরে প্রায় সাড়ে এগারো শত কেজি খেসারীর ডাল উৎপাদিত হয়। দামও ভাল পেয়ে ছিল। অধিক লাভের আশায় চলতি বছর বিভিন্ন গ্রামে কৃষকরা আরো বেশী জমিতে খেসারী লাগায়। এবছর তিন হাজার ছয় শত পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে খেসারী চাষ করা হয়। এবার লবনাক্ততার কারনে জমিতে খেসারীর গাছ উঠলেও অল্প কিছুদিন পরই বেশীর ভাগ গাছ মারা যায়। ফলে উৎপাদন চরম ভাবে ব্যহত হয়। অনেক কৃষক বিক্রিতো দুরের কথা এবছর খাওয়ার জন্যও খেসারীর ডাল পায়নি।
চর চান্দিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বড় ধলি গ্রামের সিরাজুল হক দুই একর (এক হেক্টরের কাছাকাছি), মধ্যম চর চান্দিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেন তিন একর (এক হেক্টরের চেয়ে বেশী) জমিতে খেসারীর বীজ বপন করেন। গত বছর একর প্রতি ৪৫০-৫০০ কেজি খেসারীর ডাল পেলেও এবছর ৭০-৮০ কেজির বেশী পাবেনা বলে তারা জানান।
উপজেলা উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা আকরাম উদ্দিন বলেন, আগামীতে কৃষকদেরকে খরা ও লবনাক্ত সহিষ্ণু জাতের বীজ সরবরাহ না করলে কৃষকরা খেসারী চাষে আগ্রহী হবে না।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়া ও খরার কারনে জমিতে লবণের স্তর পড়ায় বেশীর ভাগ গাছ মারা যায়। এ কারনে জমিতে অল্প কিছু গাছ থাকলেও আশানুরুপ ফল আসেনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ