বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১২

মেঘনায় লঞ্চডুবি: ১১০ মৃতদেহ উদ্ধার

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চ এমভি শরীয়তপুর-১ থেকে বুধবার বিকেল চারটা পর্যন্ত ১১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি নিশ্চিত করেছে দমকল বাহিনী।

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আজিজুল আলম জানান, এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১০৮ জন। এর মধ্যে ১০৫ জনকে বিআইডব্লিউটিএ দাফনের জন্য তিন হাজার টাকা করে এবং খাদ্য ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।

লাশগুলো এনে চরকিশোরগঞ্জের একটি স্থানে রাখা হচ্ছে। সেখান থেকে শনাক্ত করে তাদের স্বজনরা লাশ নিয়ে যাচ্ছেন। 

এর আগে দুর্ঘটনার প্রায় ৩২ ঘণ্টা পর নিমজ্জিত লঞ্চটিকে যৌথ প্রচেষ্টায় তীরে ভেড়াতে সক্ষম হয়েছে দু’টি উদ্ধারকারী জাহাজ। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তুম লঞ্চটিকে টেনে পাড়ে নিয়ে আসে।

এদিকে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (ডিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান শামসুদ্দোহা খন্দকার জানান, কোন ট্যাংকারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা এখনো শনাক্ত সম্ভব হয়নি।

তীরে টেনের আনার পর সকাল থকে লঞ্চটি এসব মৃতদেহ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড সদস্যরা। এখনো একের পর এক লাশ বের হচ্ছে তীরে নিয়ে আসা লঞ্চ থেকে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে উদ্ধারকাজ তদারক করছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুল আলম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন খান।

লঞ্চের ভেতর কোস্টগার্ড ও দমকলবাহিনীর সদস্যরা তল্লাশি শুরু করলে এসব মৃতদেহ পাওয়া যায়। উদ্ধার করা লঞ্চ থেকে আরো মৃতদেহ পাওয়া যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের বরাত দিয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার বাংলানিউজকে লাশ উদ্ধারের কথা জানান জানান।

বুধবার সকালে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা শেখ জামাল জানান, ভোর চারটা থেকে তারা আবার উদ্ধার কাজ শুরু করেন। তাদের ১০ জনের মতো ডুবুরি কাজ করছেন।

বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, লাশ যেন ভেসে অন্য কোথায়ও চলে না যায় সে জন্য কোস্টগার্ড ও দমকল বাহিনী টহলে রয়েছে। 

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান জানান, লঞ্চটি প্রায় ৭০ ফুট পানির নিচে ডুবে ছিল।

প্রসঙ্গত, যতবারই লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটে, ততবারই আগে রুস্তমকে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হামজার সহযোগিতা ছাড়া কোনো উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয় না। ঘটনা ঘটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজে হামজা পাঠানোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় উদ্ধার কাজে দেরি হয় এবং হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়।

উদ্ধারকারী জাহাজের চারদিকে অর্ধশতাধিক ট্রলার নিয়ে ভিড় করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। একেকটি লাশ উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে স্বজনদের কান্না ও আর্তচিৎকারে ভারি হয়ে উঠছে মেঘনার বাতাস।

উল্লেখ্য, সোমবার রাত দু’টার দিকে প্রায় দু’শতাধিক যাত্রী নিয়ে এমভি শরীয়তপুর-১ লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার উত্তর চরমসুরা এলাকায় মেঘনা নদীতে ডুবে যায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ