শনিবার, ১৭ মার্চ, ২০১২

উইকিলিকস থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কুখ্যাত ও ভীতিপ্রদ চাদাবাজ পুত্ তারেক জিয়ার দূর্নীতির কিছু তথ্য




মার্কিন দূতাবাসের দুইটি গোপন তারবার্তায় তারেক জিয়া সম্পর্কিত অংশ নিয়ে এই পোস্ট। প্রথম তারবার্তায় তারেকের রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করা হয়েছে। দ্বিতীয় তারবার্তা পুরাটাই তারেক সম্পর্কিত।
Click This Link 

২০০৮ সালের ২৭ অক্টোবরে প্রেরিত এক তারবার্তায় রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি অন্তরীণ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর দলের উপর বেগম খালেদা জিয়ার কর্তৃত্ব সুদৃঢ় করে সংস্কারপন্থীদের কোণঠাসা করার কথা জানিয়ে বলছেনঃ

"খালেদা জিয়ার মধ্যমেয়াদী কৌশল হয়তো দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এবং তাঁর পুত্র তারেকে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখা। এটা না হলেই আমাদের স্বার্থ রক্ষিত হয়। তারেকের প্রত্যাবর্তন এড়ানোর সবচেয়ে ভাল উপায় হল বিএনপির অভ্যন্তরে বিকল্প তৈরি হওয়া এবং দলের অভ্যন্তরীণ সংস্কার চালিয়ে যাওয়া।"

পরবর্তীতে ৩ নভেম্বর আরেকটি তারবার্তায় তারেক রহমান সম্পর্কে বিস্তারিত জানান মরিয়ার্টি। নীচে তারবার্তার শুরুতে সারসংক্ষেপ ও প্রেক্ষাপট এবং শেষে উপসংহার অংশ বাদ দিয়ে অনুবাদ করা হল।
Click This Link 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কুখ্যাত ও ভীতিপ্রদ পুত্র তারেক জিয়াকে ৩ সেপ্টেম্বর জেল থেকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ১১ সেপ্টেম্বর তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। তারেক রাজনীতিতে উচ্চ পর্যায়ের একজন চরিত্র, তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সরকারী ক্রয় এবং রাজনৈতিক নিয়োগের ক্ষেত্রে ঘন ঘন রাখঢাক না রেখে ন্যাক্কারজনকভাবে ঘুষ দাবী করার জন্য তিনি কুখ্যাত; তিনি বাংলাদেশের তস্করতান্ত্রিক সরকার ও সহিংস রাজনীতির প্রতীক। দূর্নীতি, চাঁদাবাজী, ঘুষ, তহবিল তছরুপ ও কর ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে বহাল থাকা সত্ত্বেও তাঁকে মুক্তি প্রদান করা হল। তারেকের গভীর রাজনৈতিক যোগাযোগ সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত বিস্তৃত; তাঁর জামিন প্রতিহত করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ ভেস্তে দিতে তিনি বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে সমর্থ হয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস তারেকের একাধিক পাসপোর্ট আছে, এর মধ্যে নতুন একটিতে তাঁকে সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের ভিসা দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি পাসপোর্টে তাঁর মাল্টিপল-এন্ট্রি বি১/বি২ ভিসা আছে (১১ মে ২০০৫ সালে ইস্যু করা)। আমাদের সন্দেহ এই পাসপোর্টটি সরকার জব্দ করেছে।

বর্তমান সরকার উচ্চ পর্যায়ের দূর্নীতিবাজদের বিষয়ে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলা করার জন্য দূর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতায়ন করেছে। দূদক তারেকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে। জানা যায় তারেক শত শত মিলিওন ডলারের অবৈধ সম্পদ পুঞ্জিভূত করেছেন। তাঁর শোষণের শিকার বহু ব্যবসায়ীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অনেকগুলো চাঁদাবাজীর মামলা রয়েছে। একটি মামলার বিবরণ অনুসারে ১৫০,০০০ মার্কিন ডলার না দিলে তিনি আল আমিন কন্সট্রাকশন কোম্পানিটি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন মালিক আমিন আহমদকে। রেজা কন্সট্রাকশন লিঃ-এর আফতাব উদ্দিন খান, মীর আখতার হোসেন লিঃ-এর মীর জাহির হোসেন, এবং হারুন ফেরদৌসিসহ অন্যান্য স্থানীয় ব্যবসায়িক নেতারা প্রত্যেকে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগে দাখিল করে বহু-মিলিওন ডলার পর্যায়ের চাঁদাবাজীর সিস্টেম্যাটিক প্যাটার্নের বিশদ বিবরণ দিয়েছেন। দূদক তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ পথে উপার্জিত সম্পদ গোপন করার এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর ফাঁকির অভিযোগও এনেছে।

তারেকের দূর্নীতিমূলক তৎপরতা কেবল স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। দূদক বৈদেশিক ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি সম্পর্কিত কয়েকটি ঘুষ গ্রহনের অভিযোগের আলামত উদ্ধার করেছেঃ

সিমেন্সঃ সিমেন্সের কাছ থেকে তারেক ও তাঁর ভাই কোকোর কাছে ঘুষ পৌঁছে দিয়েছেন এমন একজন সাক্ষীর ভাষ্যমতে তারেক সিমেন্সের প্রতিটি ব্যবসার জন্য আনুমানিক দুই শতাংশ ঘুষ গ্রহণ করেছেন (মার্কিন ডলারে)। অভিযোগটি বর্তমানে [মার্কিন] বিচার বিভাগ ও এফবিআই তদন্ত করে দেখছে।

হার্বিন কোম্পানিঃ একটি প্ল্যান্ট বসানোর জন্য হার্বিন কোম্পানি নামের একটি চীনা প্রতিষ্ঠান তারেককে ৭৫০,০০০ মার্কিন ডলার প্রদান করেছে বলে দূদক সূত্রে জানা গেছে। দূদক অনুযায়ী তারেকের এক সহযোগী ঘুষের টাকা গ্রহণ করে সিটিব্যাঙ্ক-এ জমা দেওয়ার জন্য সিঙ্গাপুর নিয়ে যান।

মোনেম কন্সট্রাকশনঃ দূদকের একজন তদন্তকারী দূতাবাসকে জানিয়েছেন যে কন্ট্রাক্ট পাওয়ার জন্য মোনেম কন্সট্রাকশন তারেককে ৪৫০,০০০ মার্কিন ডলার প্রদান করেছিল।

কবির হত্যা মামলাঃ সানভির সোবহানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা বাধাগ্রস্থ করার জন্য তারেকের ২১ কোটি টাকা (৩.১ মিলিওন মার্কিন ডলার) ঘুষ গ্রহণের সাক্ষ্য দূদকের কাছে আছে। সানভির দেশের অন্যতম প্রধান শিল্পগোষ্ঠি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের পুত্র। সানভিরের বিরুদ্ধে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক হুমায়ুন কবিরকে হত্যা করার মামলা ছিল। দূদকের তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সানভিরের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ তুলে নেওয়ার অঙ্গিকার করে তারেক উক্ত অর্থ চেয়েছিল

ঘুষ ও চাঁদাবাজী ছাড়াও তহবিল তছরুপের বিশদ ও লাভজনক প্রক্রিয়ার সাথে তারেকের যুক্ত থাকার কথাও দূদক বলেছে। কিছু সহযোগীর সাহায্যে তারেক জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি টাকা (৩০০,০০০ মার্কিন ডলার) লুট করতে সমর্থ হন। দূদকের সূত্রমতে ঐ ট্রাস্ট ফান্ডের ব্যাংক হিসাবের অন্যতম স্বাক্ষরধারী তারেক ট্রাস্টের টাকা দিয়ে তাঁর নিজ শহরে জমি কিনেছেন। ২০০৬ সালের নির্বাচনী ব্যয় পরিচালনার জন্য তিনি ঐ ট্রাস্ট ফান্ডের চেক স্বাক্ষর করে বিএনপি দলীয় সদস্যদেরকে দেন।


তারবার্তার বাকি অংশে বলা আছে তারেকের কর্মকান্ড বাংলাদেশে সরকারের উপর জনগণের আস্থা নষ্ট করেছে, দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করেছে, মার্কিন ব্যবসায়িক স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধ এবং আইন সংস্কারের জন্য মার্কিন অর্থ সাহায্যের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে ঢাকা দূতাবাসের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাগাধিকার আছে, গণতন্ত্রায়ন, উন্নয়ন এবং সন্ত্রাসবাদের কর্মক্ষেত্র উচ্ছেদ। তারেকের উদ্ধত দূর্নীতি তিনটিকেই হুমকিগ্রস্থ করেছে ।

সৌজন্যে: জহির_জুয়েল ভাই
উল্লেখ্য, মার্কিন ফেডারেল আদালতের জবানবন্দীর সূত্রে সিঙ্গাপুরের ব্যাংকে জব্দ হয় কোকোর টাকা। বাংলাদেশে কাজ পেতে সিমেন্স কোম্পানির এক কর্মকর্তা টাকাগুলো ঘুষ হিসাবে কোকোকে দিয়েছিলেন। কোকোর টাকা খুঁজতে গিয়ে সিঙ্গাপুরের আরেক ব্যাংকে তারেক-মামুনের টাকার হদিস পায় এফবিআই। আইএসআইর টাকার মতো সিঙ্গাপুরের ব্যাংকের টাকার খবরও বাংলাদেশ জেনেছে ভিন্ন সূত্রে। অনেকটা ‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে’র মতো অবস্থা আর কী! মার্কিন ফেডারেল আদালতের আদেশে সিঙ্গাপুরের ব্যাংকের টাকা জব্দ হয়।পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্ট ভাগ্যিস খালেদাকে দেওয়া টাকা ফেরত আনার কোনো আদেশ দেয়নি!

সবার শেষে বলতে চাই তারেক কোকো আমাদের জাতীর গর্ব তারাই আমাদের একমাত্র আন্তর্যাতিক ভাবে স্বিকৃত চোর।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ