শনিবার, ১৭ মার্চ, ২০১২

কম বয়সী যৌনকর্মীরা সেবন করছে গরু মোটাতাজাকরণ বড়ি





রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লির কিশোরী যৌনকর্মীরা স্বাস্থ্যবান, আকর্ষণীয় ও সুন্দর হওয়ার জন্য অহরহ গরু মোটাতাজাকরণের বড়ি সেবন করছে বলে জানা গেছে। দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে গত বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় এই তথ্য পাওয়া গেছে।
যৌনপল্লির প্রায় ৩০০ কিশোরী যৌনকর্মী এসব মোটাতাজাকরণের ওষুধ নিয়মিত সেবন করছে বলে জানানো হয়। বেসরকারি সংগঠন শাপলা মহিলা সংস্থা ‘মোটাতাজাকরণ ওষুধের (স্টেরয়েড ড্রাগস) ব্যবহার ও পরিণাম’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক চঞ্চলা মণ্ডলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান হাসান ইমাম চৌধুরী। এ ছাড়া সংস্থার প্রকল্প ব্যবস্থাপক ডমিনিকা ক্যাপুঝুকা জেচুনাও, উপজেলা ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আজিজার রহমান খান, সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল আলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে যৌনকর্মী বিউটি আক্তার (ছদ্মনাম) (৩২) বলেন, ‘১৪ বছর ধইরা আমি এই খারাপ জায়গায় আছি। এই পথে আসার তিন বছর পর থেইকা সর্দারণী আমাকে জোর কইরা সহাল-বিহাল দুইডা কইরা বড়ি খাবার দিত। বলত, এই বড়িগুলা খাইলি তুই আরও মোটা ও সুন্দর হইবি। কী করুম, উপায় না পাইয়া সর্দারণীর কথামতো বড়িগুলো খাইতে লাগলাম। অহন তো পত্যেক দিন না খাইলে সারা শরীর জইলা-পুইড়া যায়।’
স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ী সুলতান আহামেদ বলেন, ঘাটে একশ্রেণীর টাউট-বাটপার ফেরি করে ডেকাসন, ডেকস্টামেটসন, ভ্রাটলিন, ওরাডেক্সন, ওরাডক্সিনের মতো শরীর মোটাতাজাকরণের ওষুধ বিক্রি করে। আবার অনেক যৌনকর্মী নিজের দেহকে ভালো দেখানোর জন্য মিথ্যা কথা বলে এ ধরনের ক্ষতিকর ওষুধ কিনে নেয়।
যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘অবহেলিত মহিলা ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা’র সভানেত্রী মনি বেগম বলেন, ‘ডাক্তাররা এসব ওষুধ বন্ধ করে দিলে সহজেই কেউ আর ওষুধ কিনতে পারবে না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আজিজার রহমান খান বলেন, উল্লিখিত মোটাতাজাকরণ ওষুধ সেবন করলে মানসিক রোগ, চোখের দৃষ্টি লোপ, সঞ্চরণশক্তি হ্রাস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্ত সঞ্চালন বন্ধ, জন্ডিস, কিডনির সমস্যা ও শরীরের পানি জমে ঘা হওয়ার মতো বিভিন্ন রোগ হতে পারে। সবশেষে তাদের মৃত্যুও হতে পারে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ