প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপকালে ঐসব অভিভাবক জানান, সর্বনাশা ইয়াবা সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে এবং এর প্রভাব পড়েছে তাদের মেয়ের ওপর। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এক অভিভাবক বলেন, মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখতে কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করতে পিতা হয়ে ইয়াবা কেনার টাকা দিতে হয়। এর চেয়ে মৃত্যু অনেক ভাল। এ যন্ত্রণা সইবার মত নয়। ঐ ১০ অভিভাবক বলেন, আজকে আমাদের মেয়ে ইয়াবা আসক্ত হয়েছে। কাল আপনার মেয়ে হবে না তা আমরা কেউ নিশ্চিত নই। তাই সমাজ থেকে এ মরণ নেশাকে উচ্ছেদ করতে সবাইকে আন্দোলন করতে হবে। অভিভাবকরা বলেন, যুবসমাজকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংকটের চেয়ে নীরব ঘাতক মাদক বেশি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে সকলকে বিবেচনায় আনার আহ্বান জানান ভুক্তভোগী অভিভাবকরা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহম্মদ ইকবাল বলেন, যে সব পরিবারের সন্তানরা পিতা-মাতা কিংবা ভাই-বোনের স্নেহ মায়া মমতা থেকে বঞ্চিত তারাই মূলত এ ধরনের নেশার সাথে জড়িয়ে পড়ে। অনেকেই সহপাঠীদের মাধ্যমে মাদক নিতে উদ্বুদ্ধ হয়। দেখা যায় এটা এমন আকার ধারণ করে যে তারা জন্ম দিনের মতো একটি পবিত্র দিনকে উদযাপন করতে ইয়াবা গ্রহণ করে। পরিবার ও সমাজসহ সকলের সদিচ্ছা থাকলে এ দেশ থেকে ৯০ ভাগ মাদক উচ্ছেদ করা সম্ভব। প্রয়োজনবোধে চীন ও থাইল্যান্ডের মত কঠোর আইন করে শাস্তি নিশ্চিত করে মাদক সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চীন ও থাইল্যান্ডে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির মাধ্যমে সেসব দেশে মাদক অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। মহাপরিচালক জানান, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতাসহ ক্ষতিকর নানা দিক তুলে ধরতে জোরালো কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহম্মদ ইকবাল বলেন, যে সব পরিবারের সন্তানরা পিতা-মাতা কিংবা ভাই-বোনের স্নেহ মায়া মমতা থেকে বঞ্চিত তারাই মূলত এ ধরনের নেশার সাথে জড়িয়ে পড়ে। অনেকেই সহপাঠীদের মাধ্যমে মাদক নিতে উদ্বুদ্ধ হয়। দেখা যায় এটা এমন আকার ধারণ করে যে তারা জন্ম দিনের মতো একটি পবিত্র দিনকে উদযাপন করতে ইয়াবা গ্রহণ করে। পরিবার ও সমাজসহ সকলের সদিচ্ছা থাকলে এ দেশ থেকে ৯০ ভাগ মাদক উচ্ছেদ করা সম্ভব। প্রয়োজনবোধে চীন ও থাইল্যান্ডের মত কঠোর আইন করে শাস্তি নিশ্চিত করে মাদক সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চীন ও থাইল্যান্ডে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির মাধ্যমে সেসব দেশে মাদক অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। মহাপরিচালক জানান, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতাসহ ক্ষতিকর নানা দিক তুলে ধরতে জোরালো কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
মাদকদ্রব্যের গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর এমন কোন স্কুল-কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে ইয়াবা নেই। বিশেষ করে নামি-দামি স্কুল-কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীরা ইয়াবায় বেশি আসক্ত। কেনাবেচায়ও তাদের জড়িত থাকার ঘটনা বেশি।
সমপ্রতি ইয়াবায় আসক্ত ঐশীর হাতে তার বাবা-মা খুন হওয়ার পর স্কুলগুলোতে মাদকের ব্যবহার সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানো হয়। স্কুল ও কলেজে ইয়াবা ভয়াবহ বিস্তারের তথ্য প্রমাণ পান গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। নবম ও দশম শ্রেণীর ছাত্রীরাই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মূল টার্গেট। ব্যবসায়ীরা প্রথমে নামি-দামি স্কুলের ২/১ জন ছাত্রীকে মোটা অংকের টাকা কিংবা উপহার সামগ্রীর মাধ্যমে ও নানা কৌশলে বিনামূল্যে ইয়াবা খাইয়ে আসক্ত করে। তারা আবার সহপাঠীদের একই কায়দায় ইয়াবা আসক্ত করে তোলে। এভাবে স্কুলের ছাত্রীদের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আসক্ত করে ব্যবসার নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এমন তথ্য প্রমাণ পেয়েছেন।
কর্মকর্তা জানান র্যাব, পুলিশ, বিজিবি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ অন্যান্য সংস্থা বছরে যে পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে তা টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে আসা মাদকের একদিনের সমানও না। এটা প্রশাসনের চরম অব্যবস্থাপনার পরিচয়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও অলিগলি পাড়া মহল্লায় সর্বত্র ইয়াবার বিস্তার। গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা। প্রকাশ্যেই কেনাবেচা হচ্ছে ইয়াবা। অনেক সময় ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্ব করে ইয়াবা আসক্ত করছে ব্যবসায়ীরা।
মনোরোগ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ব্যাপক হারে ইয়াবার বিস্তার তরুণ সমাজের জন্য কিংবা আগামী প্রজন্মের জন্য চরম অশনি সংকেত। সময় থাকতে জাতিকে মেধাশূন্য কিংবা আসক্ত করার বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে জাতিকে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন