বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৩

রিজার্ভ ফোর্স নামাচ্ছে জামায়াত-শিবির!

bjia.jpgচূড়ান্ত আন্দোলনে ফল ঘরে তুলতে দীর্ঘদিন ছুটি ও আত্মগোপনে থাকা নেতা-কর্মীদের মাঠে নামাচ্ছে জামায়াত-শিবির। এই গ্রুপ এরই মধ্যে রাজধানীসহ সারাদেশে নাশকতার শুরু করে দিয়েছে।সূত্র জানায়, আন্দোলনে কেন্দ্রবিন্দু ঢাকা মহানগরীকে উত্তাল করতে ২৫ অক্টোবরকে সামনে রেখে আন্দোলনে কেন্দ্রবিন্দু ঢাকা মহানগরীকে উত্তাল করতে চায় তারা। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছেন দলটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম বুলবুল। সূত্র জানায়, তিনি মহানগর ও থানা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি পর্যায়ক্রমে ওয়ার্ড শিবির নেতাকর্মীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। এছাড়াও কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ড. মু. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, মোবারক হোসাইন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান ও অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন এবং শিবির নেতা মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের তৎপরতা বাড়িয়েছেন। এরা মূলত এতোদিন আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিলেন। এছাড়া শিবিরে সদ্য জামিন পাওয়া নেতারা প্রকাশ্যে না এলেও ভেতরে ভেতর সব কলকাঠি নাড়ছেন বলেও জানা গেছে। শিবির সূত্রে জানা গেছে, মতিঝিলসহ রাজধানীতে বিভিন্ন সময় পুলিশ পেটানোর জন্য প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা আবারো মাঠে নামছে। জামায়াত-শিবির নেতারা জানিয়েছেন, শেষ মুহুর্তে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তারা তাদের শক্তিশালী রিজার্ভ ফোর্সকে মাঠে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। অতীতের মতো পুলিশ পেটানোর পাশাপাশি নতুন করে সরকারি অফিসে হামলা, অগ্নিসংযোগ, থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন, ঢাকায় আওয়ামী লীগের থানা ও ওয়ার্ড লেভেলের অফিসে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছে তারা। সূত্র জানায়, অভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর মহানগরও। সঙ্গে বাছাই করা ৩৩টি জেলার জামায়াত ও শিবির সভাপতিকে একই ধরনের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্র থেকে। জেলাগুলো মধ্যে অন্যতম হলো, সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাও, মাগুড়া, পটুয়াখালী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, পিরোজপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কক্সবাজার জেলা। এরই অংশ হিসেবে গত দুই দিন সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রাজধানীর বনানী ও টঙ্গীতে আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে জামায়াত শিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা। গ্রুপটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৫ অক্টোবর ১৮ দলের সমাবেশেকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যাপক নাশকতা, পুলিশের ওপর হামলা, জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন দেওয়ার সব প্রস্ততি নিয়ে রেখেছেন তারা। গত কয়েকদিন বিভিন্ন জেলায় হামলা করে মূলত প্রশাসন ও কর্মীদের কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় তাণ্ডব প্রস্ততি চলছে আরো দু’মাস আগে থেকে। তাণ্ডবে অংশ নিতে ঈদে সকল কর্মীদের ছুটি বাতিল করে শিবির। জামায়াত-শিবির সূত্র জানায়, ঢাকায় পর্যায়ত্রুমে আন্দোলন চাঙ্গা রাখতে মাঠে নামছে জামায়াতের প্রায় ৩ লাখ নেতাকর্মী। ঈদ পূণর্মিলনী নামে রাজধানীসহ সারাদেশে ২৫ অক্টোবর আক্রমণের ধরন ও কৌশল বোঝান দায়িত্বশীল নেতারা। কর্মীদের এ-ও বোঝানো হয়, এটা হচ্ছে চূড়ান্ত আন্দোলন। এজন্য ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবারই রাজধানীর সব থানা ও ওয়ার্ড শাখার জামায়াত-শিবিরের নেতাদের দলীয় নির্দেশনা পৌঁছে দেয় ঢাকা মহানগর জামায়াত। নেতাকর্মী ও ক্যাডারদের কাছে একটাই বার্তা জামায়াতের, এবার `জেল জুলুম, নির্যাতনসহ` সব ধরনের ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত হয়ে মাঠে নামতে হবে। জামায়াত জানিয়েছে, ২৫ অক্টোবর ও পরবর্তী সময়ে সরকারের তৎপরতার মুখে বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়লেও যেন বিরোধী দলের শোডাউনে কোনো প্রভাব না পড়ে, এমন বিবেচনায় জামায়াত প্রস্তুত হচ্ছে। পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা রাখতে যোগাযোগ বাড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সূত্র। জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীতে জামায়াতের কেন্দ্রীয়, মহানগর ও থানা শাখার কার্যালয়গুলো দীর্ঘ দিন বন্ধ রয়েছে। দলের শীর্ষ নেতাদের মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের জন্য নেতাকর্মীরা রাজধানীতে সাঁড়াশি পুলিশী অ্যাকশন ও ব্যাপক ধরপাকড়ের মুখে পড়েন। এ কারণে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা দলীয় কর্মসূচিতে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর ও থানা পর্যায়ের অনেক নেতা আত্মগোপনে চলে যাওয়ার কর্মী ও সমর্থক পর্যায়ে কিছুটা হতাশা কাজ করছে। ২৫ অক্টোবর সরকারের শেষ দিন হওয়ায় পুলিশ প্রশাসন মারমুখি অবস্থানের পরিবর্তন ঘটাবে এমন বিবেচনায় ২৫ অক্টোবর থেকেই দলের নেতারা প্রকাশ্যে আসবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ