সোমবার, ২ এপ্রিল, ২০১২

গোয়েন্দাসংগঠন মোসাদ এবং বাংলাদেশ বনাম ইসরাইল তত্ব(দূর্বলচিত্তের প্রবেশ নিষেধ)






ইসরাইলী গোয়েন্দাসংস্হা মোসাদের নামতো কমবেশী সবাই শুনেছেন।শোনাই বা যাবেনা কেন?মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠদেশের নাগরিকমাত্রই মোসাদের নামটি একবার হলেও শুনেছেন।পুরো শতাব্দীর সব ঘটনাবলী পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রণকারী ১১ই সেপ্টেম্বরের হামলার ঘটনার পরপরই মূলত বিশ্বব্যাপী মোসাদের ব্যাপারসেপারে সচেতন হতে থাকে মানুষ।সৌদীআরব,বাহরাইন,কুয়েত,কাতার,লেবাননের মত আরব দেশগুলোকে যেমন হাতে রাখে ইসরাইল তেমনি অন্যান্য আরব ও মুসলিম রাষ্ট্রে যেমন ইরান,ইরাক,পাকিস্তান এবং কমিউনিস্ট চীনের সাথে রয়েছে এই সংস্হার চরম প্রতিদ্বন্দিতা।মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে ইহুদী,ইসরাইল,মোসাদ এই নামগুলো এমন আতংক,শংকা,ভয়,ঘৃণা,উদ্দীপনা,চমকের সাথে নেওয়া হয় যে যারা এমনকি বিশ্বরাজনীতির খবরও রাখেন না তারাও এইশব্দগুলো শুনতে শুনতে কানে ব্যাথা অনুভব করে থাকেন।অনেকেই সন্দেহপোষণ করে থাকেন বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ট্যারোরিষ্ট ট্যাগ দেওয়ার পেছনে মোসাদের অবদান শতভাগ।হয়ত হতেও পারে।তবে এই গোয়েন্দাসংস্হাটি যেসব উপায়ে পূর্ব-পশ্চিম সবদিকই নিয়ন্ত্রণ করে ইসরাইল এবং ইহুদী জংগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার্থে,তা রীতিমত অন্যান্য শীর্ষস্হানীয় গোয়েন্দাসংস্হাসমূহের কাছে রোমাঞ্চকর এবং অনুকরণীয়।



মোসাদ আসলে কি?


আগেই বলেছি যারা জানেন তারা তো জানেনিই।যারা জানেন না তাদের জন্য বলি,একবার মোসাদের নজরে পড়লে বিশ্বের কোনো কোণেই লুকিয়ে নিস্তার পায় না সেই 'টার্গেট'। হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হাতে প্রায় ৬০ লাখ ইহুদির মৃত্যুর পর গোটা দুনিয়ার ইহুদীদের একটি প্রভাবশালী অংশ নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের 'স্বপ্নের কর্মসূচি'তে শামিল হয়।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে 'পবিত্র ভূমি' বলে পরিচিত বৃহত্তর ফিলিস্তিনকেই তারা বেছে নিয়েছিল নতুন এই বাসভূমি হিসেবে। কিন্তু আরব ভূখণ্ডে ঘেরা এই শিশুরাষ্ট্রকে রক্ষা করা মোটেই সহজসাধ্য ছিল না।আর সেই ঐতিহাসিক চাহিদা মেটাতেই রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার ১৯ মাসের মাথায়, ১৯৪৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডাভিড বেন গুরিয়ন মোসাদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কালে কালে যা পরিণত হয় এক দুর্দান্ত গোয়েন্দাসংস্হায়।হিব্রু ভাষায় মোসাদ শব্দের অর্থ 'প্রতিষ্ঠান'। আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের এই বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার নাম হয় 'দ্য ইনস্টিটিউট অব ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অপারেশনস'।





ইসরাইলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং মোসাদ:


হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হাতে প্রায় ৬০ লক্ষ ইহুদির মৃত্যুর পর গোটা দুনিয়ার ইহুদি সম্প্রদায়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্নের প্রকল্পে সামিল হয়েছিল৷ ইহুদি, খ্রীস্ট ও ইসলাম ধর্মের কাছে ‘পবিত্র ভূমি' বলে পরিচিত বৃহত্তর প্যালেস্টাইনকেই তারা বেছে নিয়েছিল নতুন এই বাসভূমির জন্য৷ নাৎসিদের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদিদের সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হত৷


এই জায়নিস্ট আন্দোলনেরই ফলশ্রুতি ইসরায়েল৷প্রথমে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি,তারপর সম্মিলিত আরব শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে নতুন রাষ্ট্রের ভিত্তিকে ক্রমশঃ আরও শক্তিশালী করে তুলেছে ইসরায়েল৷ ইউরোপে ইহুদি নিধনযজ্ঞ বা ‘শোয়া'র দুঃস্বপ্ন ভুলতে পারে নি সেদেশের মানুষ৷ফলে আরও একবার নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দূর করতে যে কোন পদক্ষেপ নিতে শুরু থেকেই প্রস্তুত ইহুদি এই রাষ্ট্র৷কিন্তু নিজস্ব স্বার্থ রক্ষা করতে ইসরায়েল যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে এসেছে, তাকে ঘিরে বিতর্কের কোন শেষ নেই৷১৯৪৮ সালে জাহাজে করে ইহুদিদের ‘পবিত্রভূমি’ প্যালেস্টাইনে আগমন৷


রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার ১৯ মাসের মাথায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডাভিড বেন গুরিয়ন ১৯৪৯ সালে মোসাদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন৷তবে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগেই যেসব ইহুদি নিষিদ্ধ সংগঠন সংগ্রাম চালাচ্ছিল,তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে যে কাঠামো গড়ে উঠেছিল,তাকে মোসাদএর পূর্বসূরি বলা চলে৷


ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডাভিড বেন গুরিয়ন

হিব্রু ভাষায় ‘মোসাদ' শব্দের অর্থ ইন্সটিটিউট৷ আনুষ্ঠানিকভাবে এই বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার নাম ‘দ্য ইন্সিটিটিউট অফ ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অপারেশনস'৷


১৯৪৯ সালে মোসাদের জন্ম হলেও ১৯৯৬ পর্যন্ত কেউই জানতোনা এই সংস্হাটার প্রধান কে। ১৯৯৬ সালে যখন সাবতাই কে অপসারন করে ডেনি ইয়াতমকে নিয়োগ দেওয়া হয় এক ঘোষনার মাধ্যমে, তখন এই প্রথম বিশ্ববাসী জানতে পারে এই সংস্হাটার প্রধান কে। কিডনাপ করা ও গুপ্তহত্যায় এই সংস্হাটা বিশ্বে অদ্বিতীয়। ডেভিড বেনগুরিয়ান মুলত এই সংস্হাটার প্রতিষ্ঠাতা। মোসাদের বেশীরভাগ লোকই সাবেক সন্ত্রাসী সংগঠন হাগানাহ,ইরগুন,স্টানগেন্গ এর লোক।


১৯৫৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে ২৮তম কম্যুনিস্ট সম্মেলনে যখন নিকিটা ক্রুশ্চেভ এক গোপন মিটিংয়ে স্টালিনকে অভিযুক্ত ও অস্বীকার করে নিজেই প্রেসিডেন্ট বলে ঘোষনা করে, ঐ বক্তব্যের এক কপি মোসাদ সিআইএর হাতে দিয়ে দেয়। এই প্রথম সিআইএ মোসাদের কার্যক্রম উপলব্ধি করে যাতে সিআইএ অবিভূত হয়।কারন সিআইএর মত সংস্হাটি ও এই রকম একটা সেন্সেটিভ সংবাদ সংগ্রহে ব্যর্থ।পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মোসাদকে সাহায্য করার জন্য অগনিত ভলেন্টিয়ার।এরা সবাই জন্মগত ইহুদি এবং জায়োনিস্টের সমর্থক।এরা সবসময় তৈরী থাকে শত্রুর তথ্য জানানো বা গোয়েন্দাগিরী করা সন্দেহবাজনদের উপর।



কার্যক্রম:


চরম গোপনীয়তার ঘেরাটোপে থাকা মোসাদের কীর্তিকলাপ সম্পর্কে নানা কাহিনী প্রচারিত থাকলেও কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানা যায় না। ইসরায়েলের আইন অনুযায়ী শুধু সংস্থাপ্রধানের নাম প্রকাশ করা যায়। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই পরিচালিত হয় মোসাদের কার্যকলাপ।মোসাদের ওয়েবসাইটে সামান্য সংগঠনের 'লক্ষ্য' এবং 'কার্যকলাপ' সম্পর্কে সামান্য কিছু তথ্য রয়েছে। তবে মোসাদের হয়ে কাজ করতে ইচ্ছুকদের জন্য একটি 'ফরম' রয়েছে ওয়েবসাইটটিতে।

এটিই হল মোসাদের ওয়েবসাইট।তবে এ ওয়েবসাইটে নিজ দায়িত্বে ঢুকবেন।কথিত আছে মোসাদের ওয়েবসাইটে ক্লিক করলেই সংস্হায় সংরক্ষিত সার্ভারে মুহুর্তেই আইপি ট্রেস করে লোকেশন ডিটেক্ট করা হয়।


হেডকোয়ার্টার
গুপ্ত হত্যায় দক্ষ এই মোসাদ হামলার জায়গায় থাকেনা।বেশীরভাগ সময়েই এরা চেষ্টা করে স্হানীয় মাফিয়া বা সন্ত্রাসীদের দ্বারা নিজেদের কাজ করে নিতে, যদি মাফিয়াদের দ্বারা সম্ভব না হয়, তাহলে শুধুমাত্র ওখানেই মোসাদের ডেথ স্কোয়াড কাজ করে।

ইসরায়েলি সরকারের জন্য কৌশলগত, রাজনৈতিক ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করার মতো কাজের বাইরেও মোসাদের কাজের পরিধি যথেষ্ট বিস্তৃত।গুপ্তচর সংগঠনের ঘোষিত উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের সীমানার বাইরে গোপনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা, শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলো যাতে বিশেষ ধরনের অস্ত্র তৈরি বা সংগ্রহ করতে না পারে,তা নিশ্চিত করা এবং দেশে-বিদেশে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলার ষড়যন্ত্র আগাম প্রতিরোধের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।


অন্যান্য বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার তুলনায় ‘মোসাদ'এর দায়িত্ব বা কাজের পরিধির বেশ পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়৷ সংস্থাটির স্বঘোষিত উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের সীমানার বাইরে গোপনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা, শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলি যাতে বিশেষ ধরনের অস্ত্র তৈরি বা সংগ্রহ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা এবং দেশে-বিদেশে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলার ষড়যন্ত্র আগাম প্রতিরোধ করা৷এছাড়া তালিকায় রয়েছে আরও কিছু উদ্দেশ্য৷যেসব দেশে ইসরায়েলের অভিবাসন সংস্থা আইনত সক্রিয় হতে পারে না, সেই সব দেশ থেকে ইহুদিদের ইসরায়েলে নিয়ে আসার দায়িত্বও পালন করে ‘মোসাদ'৷মনে রাখতে হবে,বিশ্বের যে কোন ইহুদি ব্যক্তির জন্য ইসরায়েলের দ্বার খোলা রয়েছে,যাতে তারা সেখানেই পাকাপাকি বসবাস করতে পারে৷ইসরায়েলের সীমানার বাইরে বিশেষ অভিযানের পরিকল্পনা ও কার্যকর করার বিশেষ দায়িত্বও পালন করে মোসাদ৷




সংগঠন ব্যবস্হাপণা:


http://www.globalsecurity.org/
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি সামরিক ও অসামরিক গোয়েন্দা বিভাগের বাছাই করা কর্মকর্তাদের দিয়ে পরিচালিত মোসাদের মোট আটটি বিভাগ রয়েছে।এর মধ্যে পাঁচটি ডিপার্টমেন্টের কিছু তথ্য জানা যাচ্ছে :

কালেকশন ডিপার্টমেন্ট:
এটি মোসাদের সবচেয়ে বড় বিভাগ। বহির্বিশ্বে ডিপ্লোম্যাট, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ অন্যান্য ছদ্মবেশে কাজ করেন এই বিভাগের এজেন্টরা।

পলিটিক্যাল অ্যাকশন এবং লিয়াজোঁ ডিপার্টমেন্ট:
এ গ্রুপের কাজ প্রতিটি বন্ধুভাবাপন্ন দেশের গোয়েন্দা ও গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করা।

স্পেশাল অপারেশন ডিপার্টমেন্ট:
এই গ্রুপকে গুপ্তহত্যার কাজে ব্যবহার করা হয়।

ল্যাপ ডিপার্টমেন্ট:
এই গ্রুপ প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে মনস্তাত্তি্বক যুদ্ধের জন্য প্রচার চালায় ও শত্রু শিবিরে ভুল খবর ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করে।

রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট:
যাবতীয় গোয়েন্দা গবেষণা ও 'কাউন্টার ইনটেলিজেন্স'-এর ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ বৃদ্ধির নিরন্তর কাজ করে চলেন এই গ্রুপের গবেষকরা।

কিছু অপারেশন:


১৯৬৭ সালের যুদ্ধে মোসাদ সপিস্টিকেটেড যন্ত্রের সাহায্যে মিশরের গতিবিধি নজরে রাখতো।একদিন সকালে সাতটা হতে আট টার মধ্যে যে সময় মিশরের এয়ার ফোর্সের বেশীর ভাগই নাস্তা খায় এবং শিফট চেন্জ হয় ঐ সময় ইসরাইল এট্যাক করে বসে।যুদ্ধের জন্য তৈরী থাকা ৩০০ এর ও বেশী বিমান ধংস হয়ে যায়।মাত্র ৬ দিন যুদ্ধ করতে পারে আরবরা।যুদ্ধের পুরো কৃতিত্বই মোসাদের।


১৯৭০ সালে ফিলিস্তিনে এক নয়া গ্রুপ গড়ে উঠে ব্লাক সেপ্টেম্বর নামে । জার্মানির মিউনিখে অলিম্পিক গেমস চলাকালে এরা ১১ জন ইসরাইলী এথলেটকে কিডনাপ করে।২০০ ফিলিস্তিনির মুক্তি ও নিজেদের সেইফ পেসেজ দেওয়া ছিলো ওদের দাবী, জার্মান সরকার মেনে নেয় এবং চুক্তির জন্য মিলিটারি এয়ারপোর্টে আসতে বলে।মিলিটারি এয়ারপোর্টে জার্মান স্পেশাল ফোর্স আগে হতেই প্রস্তুত ছিলো।অপহরনকারীরা যখনই বুঝতে পারে ওদের ট্রাপে ফেলা হয়েছে,তখনই সব বন্দী এথলেটদের হত্যা করা হয়।পুলিশের পাল্টাগুলিতে ৫ জন অপহরনকারী নিহত ও তিন জন বন্দী হয়।


ঘটনাটি ছিলো অতি ভয়াবহ।মোসাদ স্পেশাল টিম গঠন করে অপারেশান রথ অফ গড ঘোষনা করে।পুরো ইউরোপ জুড়ে ব্লাক সেপ্টেমবারগ্রুপকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয়।৭২ হতে ৭৩ পর্যন্ত এই গুপ্তহত্যার কাজ চলতে থাকে।পিএলওর নেতারা প্রায় দিশা হারাবার উপক্রম।ইউরোপ জুড়ে মোসাদের এই হান্টিং ডাউনে ভুলক্রমে নরওয়েতে এক নিরীহ মরোক্কান ওয়েটারকে হত্যা করে ফেলে মোসাদ।নরওয়ের পুলিশ ৬ মোসাদ এজেন্টকে গ্রেফতার করে।


১৯৭৬ এর জুনে ফ্রান্স হয়ে ইসরাইলগামী এক বিমান কে ফিলিস্তিনিরা হাইজ্যাক করে উগান্ডায় নিয়ে যায়।ওরা বিভিন্ন দাবী দাওয়া পেশ করতে থাকে। ইসরাইলী ও হোস্টেজকে উদ্বার করতে মোসাদ ইসরাইলী কমান্ডো সাথে নিয়ে চালায় অপারেশান থান্ডারবোল্ড ঐ অভিযানের ক্ষিপ্রতা এতই ছিলো যে মাত্র ৯০ মিনিটে প্রায় সব বন্দীদের উদ্বার করা হয়।



জনাথন পোলারড আমেরিকার নৌবাহিনীতে চাকরি করতেন, মূলত সে মোসাদের হয়ে আমেরিকায় কাজ করতো।আমেরিকার মিলিটারির অনেক গোপন দলিলপত্র চুরি করে ইসরাইলে পাচার করে দিতো।ইসরাইল ঐ দলিল সোভিয়েত রাশিয়াকে দিয়ে সামরিক সরন্জামের অনেক কিছুই হাসিল করে নিত।পোলারড একদিন ধরা খেয়ে যায় এবং সারা জীবনের জন্য কারাদন্ড দেওয়া হয়।শুধু পোলারডের কাহিনী নয়,এই রকম অনেক আমেরিকান(ইহুদী) ইসরাইলের হয়ে গুপ্তচরের কাজ করতো আমেরিকার স্পর্শকাতর মিলিটারি রিসার্চ সেন্টারে।মনিকা লিউনেস্কি ও ক্লিনটনের ফোনে আড়িপাতার কাজও ওরাই করেছিলো।


২০১০ এ জানুয়ারিতে হামাস লিডার মাহমুদ আল মাবুহকে দুবাইতে রোটানা হোটেলের ভিতরে হত্যা করে মোসাদ। মোসাদ বিভিন্ন দেশ হতে দুবাইতে আসে। দুবাই পুলিশ জানিয়েছে এই হত্যায় ২৭ জন মোসাদ স্পাই অংশগ্রহন করে। মাহমুদ কে দুবাই এয়ারপোর্ট হতে অনুসরন করে মোসাদ। যে সব দেশ হতে মোসাদের গোয়েন্দারা দুবাই এসেছে, এবং দুবাই হতে বের হয়েছে।


সিসিটিভিতে ধরা খাওয়া পুরো ঘটনায় দেখা যায় এয়ারপোর্ট হতে হোটেল, শপিং মল, লবি হতে লিফট পর্যন্ত।যেভাবে হোটেল রুমে ওরা মাহমুদকে হত্যা করে।



হত্যায় অংশ নেওয়া এজেন্টরা
বাংলাদেশে কেন এত আলোচিত এবং কারা সন্দেহের পাত্র:

বাংলাদেশে সাধারণত ইসলামবিদ্বেষী কোন কার্যকলাপ হলেই "র",সিআইএ এর সাথে মোসাদের নামটিও ছোট্ট করে শোনা যায়।আসলেই কি তারা বাংলাদেশে ইসলামবিরোধীতৎপরতার সাথে জড়িত?তা হয়ত জানা হবে না কখনই তবে কোন বড় নাশকতা ঘটলেই নাস্তিক সম্প্রদায়ের উপর বরাবরই সেই আদিকাল থেকেই যত দোষ নন্দঘোষের মত মোসাদের সোল এজেন্ট হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করার অভিযোগ উঠে আসছে।আবার নিরপেক্ষ সুশীল সমাজের সন্দেহের তীরটা যায় কিছু উগ্রমৌলবাদী সংগঠনের বিপক্ষে।তবে এর কোনটাই কোনদাবীকারীরা প্রমাণ করতে পারেন নি।তবে এমন একজন রয়েছেন যার বিরুদ্ধে অনেক ধরণের অভিযোগ শোনা যায়।তিনি হলেন সালাঊদ্দীন শোয়েব চৌধুরী।


সালাঊদ্দীন শোয়েব চৌধুরী

তিনি ২০০৩ সালে ২৯ নভেম্বর ইসরাইল যাওয়ার পথে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসরাইলী পাসপোর্ট সহ আটক হন।উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে কোন নাগরিক ঈসরাইল ভ্রমন করতে পারেন না।সেই সময় ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষে গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।



আটকের পূর্বে ইনি দৈনিক ইনকিলাবের একজন নিয়মিত কলামিস্ট ছিলেন।তৎকালীন সময়ে ইসলামী-জাতীয়তাবাদের একনিষ্ঠ সেবক ছিলেন।

তবে ২০০৭ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারী যুক্তরাষ্ট্রের হাউস রেজলিউশান ওনার পক্ষে ইঊনাইটেড স্টেটস হাঊস কমিটি অন ফরেইন অ্যাফেয়ার্স বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় একটা বিল পাশ করেছিল যেখানে বাংলাদেশ সরকারকে তার বিরুদ্বে আনিত সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছিল।সবচেয়ে বড় কথা হলো এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার মৃত্যুদন্ড হতে পারত।

যাই হউক ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার আটকের খবর প্রকাশ করে
জেরুজালেম পোস্টে এবং অন্য একটি ইসরাইলী পত্রিকায় খুব গুরুত্বের সাথে ছাপা হয় যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

উনার উপস্হিতিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গীবাদী ইসলামী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী-(হুজি) ইসলামী ডেমোক্রেটিক পার্টি-(আইডিপি) নামে প্রকাশ্য রাজনীতি শুরু করে।


উনার বিরুদ্ধে আনীত সবচেয়ে স্পর্শকাতর অভিযোগটি হল বহির্বিশ্বের কাছে তিনি অভিযোগ করেন যে বাংলাদেশের মসজিদগুলোতে ইহুদী ও খ্রীস্টানদের হত্যা করার জন্য ব্যাপকভাবে আহবান করা হয়।তার লেখা একটি
আর্টিকেলপড়ুন।
এছাড়াও তিনি যে ইসরাইলের বন্ধু তা তিনি একটি স্বাক্ষারনামায়স্বাক্ষর করে দেখান।


http://www.reborn-by-design.com
এই ওয়েবসাইটটিতে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। আপনি কি ইসরাইলের বন্ধু?(I am a proud friend of Israel, Are you?) শিরোনামের এই সাইটটির ৩য় পেজের ২৭১ নম্বরটিতে দেখবেন সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধূরীর নাম। তিনি ইসরাইল ইন্সাইডার (Israel Insider) নামক একটি ইসরাইলী দৈনিকের অনিয়মিত কলাম লেখক। গত ০৬ জুন ২০০৬ তারিখে Israel Insider পত্রিকায বাংলাদেশে অগ্রগতির লক্ষন (Bangladesh: signs of progress) শিরোনামে একটি কলামে তিনি লিখেছেন,
Previously, the people of Bangladesh received only anti-Israeli news, and certainly nothing about the tiny openings of interfaith dialogue between Jews and Muslims. That began to change recently with the appearance of such pieces in the pages of Dhaka daily Amader Shomoy. Amader Shomoy is published in Bangladesh's vernacular language of Bangla, and now to a limited extent in English as well(বাংলাদেশের মানুষ এতদিন শুধুমাত্র ইসরাইল বিরোধী সংবাদগূলোই পেত, ইয়াহুদী-মুসলমানদের আন্তধর্মীয় সংলাপের কোন খবরই পেতনা।কিন্তু সম্প্রতি এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে শুরু করে ঢাকার দৈনিক আমাদের সময়ে এ সম্পর্কিত কিছু সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে)। উল্লেখ্য, সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী দৈনিক আমাদের সময়ের বিশেষ সংবাদদাতা।


২০০০ সালে বিবিসির প্রখ্যাত সাংবাদিক আসামের অধিবাসী ভারতের পূর্বাঞ্চলের সংবাদদাতা সুবির ভৌমিক দি উইক পত্রিকায় aborted mission: did Mossad attempt to infiltrate Islamic radical outfits in south Asia? (ব্যর্থ মিশন: মোসাদ কি দক্ষিন এশিয়ার ইসলামী উগ্রবাদীদের মাঝে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে?)শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে লিখেছেন,২০০০ সালের ১২ জানুয়ারি ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কলকাতায় ঢাকা-অভিমুখী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে ১১ বিদেশী নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন।বাংলাদেশী বিমান ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করছিল সন্দেহে বিমান চড়ার একটু আগে তাদের আটক করা হয়।তারা কলকাতা থেকে ঢাকা আসছিল।তবে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, ‘আমরা যখন বুঝতে পারি তারা তাবলিগের লোক; তাদের ছেড়ে দেই।’ টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।কিন্তু বাংলাদেশ তাদের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।পরে ইসরাইলি চাপের মুখে ভারত তাদের নিয়ে ঘাটাঘাটি না করে তেল-আবিব ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়।


দিল্লীতে বাংলাদেশী হাইকমিশনের এক কূটনীতিক তখন জানান, ‘তাদের ঢাকায় অবতরণের অনুমতি ছিল,অথচ ভিসা ছিল না। আমরা তাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই,কারণ আমরা এ সুযোগ দিতে পারি না।’সেই ১১ জনের কাছে ইসরাইলি পাসপোর্ট ছিল।ধারণা করা হচ্ছিল,তারা আফগান নাগরিক।কিছু সময় ইরানে ছিল।তাদের কাছে ঢাকায় অবতরণের অনুমতি ছিল এবং দিল্লী ভিত্তিক একটি ট্রাভেল এজেন্সি তাদের বাংলাদেশ বিমানের কলকাতা-দিল্লি রুটের টিকিট দেয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ বিমানের এক কর্মকর্তা জানান,‘কারো কাছে বৈধ টিকিট থাকলে" নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেয়ার অধিকার আমাদের আছে।’ বাংলাদেশ বিমান কর্মকর্তাদের কাছে সেই ১১ জনের সবাইকে ‘বেশ রহস্যজনক’ মনে হয়।


সেই ১১ জনের জাতীয়তা তথ্য নিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা" হতবাক। সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্সের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে তারা মুসলিম। তারা বলেছে, দু’মাস ধরে তারা তাবলিগের কাজে ভারতে আছে। অথচ তারা ইসরাইলি নাগরিক।পশ্চিমতীরে তাদের বাস।’ তিনি বলেন, তেল-আবিব তাদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করে।মনে হচ্ছে,তারা ইসরাইলের একটি স্পর্শকাতর সংগঠনের হয়ে কাজ করছে এবং একটি মিশনে তারা বাংলাদেশ যাচ্ছিল।‘মোসাদ’ নামে এই ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মৌলবাদী নেটওয়ার্কগুলোকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করতে শিয়া মুসলিমদের "ই ইসলামি" নেটওয়ার্কগুলোতে প্রবেশ করায়, এটি সর্বজনবিদিত।ভারতের গোয়েন্দা বিশ্লেষক অশোক দেববর্ম বলেন,বিন লাদেনের মতো একটি নেটওয়ার্ককে ভেঙে দেয়ার জন্য ইরানে ১১ আফগানকে নিয়োগ দিয়ে তাদের ইসরাইলি নাগরিকত্ব দিতে পারে মোসাদ। এটি অসম্ভব কিছু নয়। বাংলাদেশে একটি ইসলামি সংগঠনে অনুপ্রবেশ করে মিশন শুরু করত তারা।তাদের মুক্তির ব্যাপারে ইসরাইল চাপ দেয় এবং ব্যর্থ অভিযান থেকে তাদের দ্রুত ফিরিয়ে নেয়া হয়।মোসাদের গোয়েন্দারা বলেছে, একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের
অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপের কারণে অপারেশনটি নিষ্ফল হয়ে পড়ে এবং তাদের দ্রুত প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ভারতের ব্যুরো অব সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি (বিসিএএস) ১১ জানুয়ারি একটি অতিগোপনীয় সার্কুলার জারি করে (NO. ER/BCAS/PIC/CIRCULAR/99)। সেখানে ভারত থেকে ছেড়ে যাওয়া বাংলাদেশ বিমানের একটি এয়ারক্রাফটের সম্ভাব্য ছিনতাইয়ের চেষ্টার ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়। রিজিওনাল ডেপুটি কমিশনার অব সিকিউরিটি (কলকাতা এয়ারপোর্ট) স্বাক্ষরিত এই সার্কুলারের কপি পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট ভারতীয় এজেন্সিগুলোতে এবং কলকাতায় বাংলাদেশ বিমানের স্টেশন ম্যানেজার মোঃ শাহজাহানের কাছে।এতে বলা হয়, এ উদ্দেশে আটজন পশতুভাষী মুজাহিদ ভারতে ঢুকে পড়েছে।তারা চেয়েছিলেন বিমান ছিনতাইকারী ধরতে।কিন্তু ধরা পড়ে গিয়েছিল মোসাদের প্রশিক্ষিত লোক। পরে তড়িঘড়ি করে ছেড়ে দেয়া হয় তাদের।



উল্লেখ্য,২০০৮ এর জানুয়ারীতে বিশ্ব এজতেমায় ইসরাইলী নাগরিকদের অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছিল সরকার।দৈনিক নয়া দিগন্ত ২৫ জানুয়ারী ২০০৮ সংখ্যায় এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট করে।


২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮ ইসরাইলের স্বঘোষিত বন্ধু সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরীর উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে মাঠে নামে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদ, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি বা আইডিপি নাম নিয়ে। ১ ডিসেম্বর ২০০৩ ডেইলী স্টার লিখে, বিমানবন্দরে তাকে গ্রেফতার করার সময় তার কাছে একটি প্রজেক্ট প্রোফাইল পাওয়া যায়,যাতে তিনি ইসরাইলের কাছে তিনটি দৈনিক পত্রিকা যথা দৈনিক সোনালী দিন,দৈনিক রূপান্তর, দৈনিক পরিবর্তন প্রকাশের জন্য ১২ কোটি টাকা সাহায্যের আবেদন করেছিলেন।তিনি তার আবেদনে ইসরাইলী বন্ধুদের মুসলিম প্রধান দেশে মিডিয়া গড়ে তোলার জন্য আহবান জানিয়ে বলেন, কোটি কোটি ডলার খরচ করে যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চেয়ে মিডিয়া সৃষ্টি করুন, এতে ইসরাইল বেশি লাভবান হবে।


সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।ওয়াল স্ট্রীট জার্নালের ১৫ অক্টোবর ২০০৬ এর কলামে বলা হয় মি. চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয় মূলত ইসরাইলের পক্ষাবলম্বন এবং পাসপোর্টে অনুমতি না থাকার পরেও ইসরাইল ভ্রমনের চেষ্টা করার জন্য।পত্রিকাটি মি. চৌধুরীর উদ্বৃতি দিয়ে লিখে,

When I began my newspaper [the Weekly Blitz] in 2003 I decided to make an end to the well-orchestrated propaganda campaign against Jews and Christians and especially against Israel. In Bangladesh and especially during Friday prayers, the clerics propagate jihad and encourage the killing of Jews and Christians
(আমি যখন প্রথম সাপ্তাহিক ব্লিতস (weekly blitz) প্রকাশ করি তখন সিদ্ধান্ত নেই ইয়াহুদী খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে বিশেষত ইসরাইলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যে সংঘবদ্ধ প্রচারনা চলছে তার অবসান ঘটাতে। বাংলাদেশে শুক্রবারের খুতবায় মোল্লারা মূলত জিহাদের বানী প্রচার করে এবং ইয়াহুদী খৃষ্টানদের হত্যা করতে উদ্বুদ্ধ করে)।

তিনি ইসরাইল ভিত্তিক সংগঠন ইফলাক (IFLAC, international forum for literature and culture for peace) এর সদস্য এবং ইসরাইল-ইসলাম বন্ধুত্বের একজন উপদেষ্টা।তার জেলমুক্তির জন্য জোর লবিং চালাতে এগিয়ে আসেন স্বঘোষিত ইহুদী মানবাধিকার কর্মী ড. রিচার্ড বেনকিন। তিনি দৈনিক আমাদের সময়ের আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা । ড. বেনকিন সালাউদ্দীন শোয়েব চৌধুরী মিলে
http://www.interfaithstrength.com এই ওয়েবসাইটটি চালান । উক্ত ওয়েবসাইটটির বিষয়বস্তু বিশ্লেষন করলে কথিত ইয়াহুদী মানবাধিকার কর্মীর তার এদেশীয় সাগরেদের আসল উদ্দেশ্য সম্পর্কে আর সন্দেহের অবকাশ থাকেনা।এখানে বাংলাদেশকে মূলত একটি মৌলবাদি রাষ্ট্র এবং ইসলামী উগ্রপন্থী জঙ্গিবাদীদের অভয়ারন্য হিসেবে দেখানো হয়েছে।উপস্থাপন করা হয়েছে বহু মিথ্যা " আধাসত্য বিকৃত তথ্য।টার্গেট একটাই, বাংলাদেশকে বিশ্ববাসীর সামনে সন্ত্রাসী, মৌলবাদী, তালেবানী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করানো।

ওয়েবসাইটটির কয়েকটি সংবাদ শিরোনাম এরকম ইসলামী সন্ত্রাসীদের নতুন আখড়াবাংলাদেশ কি ইসলামী সন্ত্রাসীদের হাতে চলে যাচ্ছে?ইসলামী উগ্রবাদীদের কবলে বাংলাদেশবাংলাদেশ কি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের অভয়ারন্য?ইরান বাংলাদেশে সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে বাংলাদেশ কি মৌলবাদি রাষ্ট্র হছে?ইত্যাদি ।


২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৮ প্রকাশিত একটি সংবাদে বলা হয়,ইসলামী ডেমোক্রেটিক পার্টি-আইডিপি নামে প্রকাশ্য রাজনীতি শুরু করল হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী-হুজি।গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে ইফতার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ করল সাবেক আফগান মুজাহিদদের এই সংগ ন আইডিপি।


অবশ্য সংগঠনের আহবায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেছেন,তাঁদের সংগঠন এ দেশে ১৯৯২ সালেই আত্মপ্রকাশ করে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ নামে।এরপর ১৯৯৮ সালে তা বিলুপ্তি ঘোষণার পর ‘ইসলামী গণ-আন্দোলন’ নামে সংগঠন করেছিলাম।সেই সংগঠন থেকে এখন আইডিপি নামে কাজ করছি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ