সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৩

চট্টগ্রামে মুফতি ইজাহারের মাদ্রাসায় বিস্ফোরকের মজুদ

সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার এলাকায় জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন ধরে যায় হেফাজতে ইসলামের নেতা মুফতি ইজাহার পরিচালিত মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে বিস্ফোরণস্থল পরীক্ষা করে পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে বিস্ফোরকের 'বড় ধরনের মজুদ' ছিল। এ ঘটনায় একটি হাসপাতাল থেকে আহত দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর খুলশী থানার লালখান বাজার এলাকায় জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার চারতলা ছাত্রাবাস ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ওই কক্ষের সব কিছু পুড়ে যায়, আহত হন অন্তত পাঁচজন। ওই ঘটনার পর মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা দাবি করেন, কম্পিউটারের ইউপিএস বা ল্যাপটপ বিস্ফোরিত হয়ে ওই ঘরে আগুন লেগে যায়।
বিকালে মাদ্রাসা ভবন ঘুরে দেখে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিস্ফোরণ ঘটার পর দমকল বাহিনী আগুন নিভিয়েছে। ছাইয়ের নিচে বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরক পাওয়া গেছে। তারা নিশ্চিত, এখানে বিস্ফোরক দ্রব্যের বড় ধরনের মজুদ ছিল। হাতে তৈরি শক্তিশালী কিছু গ্রেনেডও এখানে রয়েছে। এগুলো বেশ বিপজ্জনক।
গ্রেনেডের সংখ্যা গুনে দেখা না হলেও পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ শুরু করেছে বলে কমিশনার জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফরের আগে এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগের বিষয়।
সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় আহত দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে।
সকালে ঘটনার পর হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মুফতি ইজাহারুল ইসলামের ছেলে মুফতি হারুন ইজাহার বলেন, 'ঘটনার সময় আমি মাদ্রাসায় ছিলাম না। তবে শুনেছি কম্পিউটার ইউপিএস বিস্ফোরণে ঘরের বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে।' মুফতি ইজাহার নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিরও সভাপতি।
এদিকে মাদ্রাসায় বিস্ফোরণে আহত দুই যুবককে দুপুরে হালিশহর জেনারেল হাসপাতাল থেকে আটক করেছে পুলিশ। তারা সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
হালিশহর থানার ওসি শাজাহান কবীর বলেন, 'বেসরকারি ওই হাসপাতালে দুজন চিকিৎসা নিচ্ছিল। তাদের আটক করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।'
এদের মধ্যে সালমান (২৫) নামে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার বাড়ি সুনামগঞ্জে, বাবার নাম আবদুল হাই। আহত অপরজনের বয়স আনুমানিক ২২ বছর বলে পুলিশ জানিয়েছে। তারা দুজনই লালখান বাজারের মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হন বলে ওসি জানান।
চট্টগ্রাম মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, দুই যুবকই দগ্ধ, তাদের ৩৬ নাম্বার ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
বিস্ফোরণের পর থেকে মাদ্রাসার দারুল ইত্তাহ বিভাগের ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহৃত ভবনটি খালি করে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশ, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), দমকল বাহিনী ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল বিকালেও সেখানে কাজ করছিল।
মহানগর পুলিশ কমিশনার ছাড়াও অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার, উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা) কুসুম দেওয়ান ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. শহীদুল্লাহ ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ