শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৩

অস্থির রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ড

উঠতি মাস্তানদের নিয়ন্ত্রণে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে এলাকাভিত্তিক দুর্ধর্ষ শ্যুটার বাহিনী। খুনোখুনি ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার মহড়া শুরু করেছে তারা। জাতীয় নির্বাচন, ঈদ ও পূজাকে সামনে রেখে আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজির প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে তারা। সূত্রমতে, সরকারের শেষ সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঢাকার বাইরে বদলি হয়েছেন বেশির ভাগ কর্মকর্তা। অনেকেই নিজের ঘর গোছানোয় ব্যস্ত। এর বাইরে যারা আছেন, তাদের বেশির ভাগ কর্মকর্তা হরতাল ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকায় অস্থির হয়ে উঠছে রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ড। মহড়ার অংশ হিসেবে গত রোববার রাতে রমনা থানাধীন মগবাজার এলাকায় ব্যবসায়ী সাকেরকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি করে অস্ত্রধারীরা। গোয়েন্দা পুলিশের মতে- টেন্ডারবাজির জের ধরে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এর আগে শনিবার দুপুরে রূপনগর থানাধীন ট ব্লকের ৮৭/৮৮ নম্বর বাড়ির নিজ ড্রইং রুমে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী জাফরুল হককে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত হয়েছেন, এটি আন্ডারওয়ার্ল্ড সন্ত্রাসীদের কাজ। ওই এলাকার একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নির্দেশনা মোতাবেক চারজনের কিলার গ্রুপ জাফরুল হককে হত্যা করে পালিয়ে যায়। দুই লাভের হিসাব মিলিয়ে পেশাদার সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। প্রথমত দিনে-দুপুরে খুন করে নিজেদের শক্তিমত্তা সম্পর্কে অন্য গ্রুপের কাছে জানান দেয়া, দ্বিতীয়ত মোটা অঙ্কের টাকা। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নিয়োজিত পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পূর্বশত্রুতা ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে একটি পক্ষ সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ কারণে সন্ত্রাসী গ্রুপ ওই ব্যবসায়ীকে বাইরে খুন করার সুযোগ কাজে না লাগিয়ে বাসার ভেতরে ঢুকেই হত্যা করেছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা জানান, সমপ্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ধরন এবং অপরাধ সংঘটনের প্রক্রিয়া বিশ্লেষণে বোঝা যাচ্ছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মিরপুরে রকি ও সবুজবাগে পুলিশ ইন্সপেক্টর ফজলুল করিম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। রকি হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা মুন্না গ্রুপের লোকজনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্রমতে, মুন্না গ্রুপের বাইরে গাজী সুমন ও মুক্তার গ্রুপের কিলার বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দু’জনেই ভারতে পালিয়ে গেছে। কিন্তু সেখান থেকেই তাদের বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের এলাকায় হানা দিয়ে গুলির ঘটনা ঘটাচ্ছে। পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহদাতের নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাসী জামিল গত তিন মাসে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৬ ব্যবসায়ীকে গুলি করেছে। চাঁদা আদায়ের জন্য ব্যবসায়ীর পা লক্ষ্য করে গুলি করাই তার কাজ। সূত্র জানায়, পাকিস্তানি মোহাম্মদ আলী খুনের দুই কিলার আবু মুসা ও আবু সালেহ সহোদর। তারাও নিজেদের গ্রুপ নিয়ন্ত্রণে লোকবল ও অস্ত্র সংগ্রহে নেমেছে। এদিকে মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী নবী হোসেনের বাহিনীতে শুরু হয়েছে কিলারদের নয়া মেরুকরণ। পলাতক বসের আড়ালে কিলার মোখলেছ, সবুজ ও জামান পৃথক পৃথক গ্রুপ তৈরির কাজ শুরু করেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোপনে ধারণ করা কথোপকথনের রেকর্ডে তা ধরা পড়েছে। গোয়েন্দারা জানান, কাফরুলের ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস কাশিমপুর কারাগারে বসেই নিজের বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে। চিরকুট, দর্শনার্থীদের মোবাইল ফোন কিংবা কারা কর্মকর্তাদের সরবরাহ করা ফোন ব্যবহার করে বাহিনীর লোকজনকে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রলীগ নেতা ফজলুল হক পাটোয়ারী হত্যাকাণ্ডে বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেলেও তার প্রধান সহযোগী সৈনিক রুবেল কাফরুল এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ডজন খানেক কিলার। ওদিকে গুলশান ও বাড্ডা এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মাস্টার সিরাজ, বাউল সুমন, জয়নাল, আলমগীর, জাহাঙ্গীর, ফরহাদ ও কায়সার গ্রুপের সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় খুন, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিতে লিপ্ত তারা। র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিটের তথ্যমতে, মিল্কি হত্যাকাণ্ডে যুবলীগ নেতা চঞ্চল পালিয়ে যাওয়ায় তার বাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। যদিও অনেকেই দল পরিবর্তন করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টা করছে। গোয়েন্দারা জানান, ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করছে মূলত সরকারদলীয় সংগঠনের ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। স্থানীয় উঠতি বয়সী মাস্তানরা এদের হাতিয়ার। পাশাপাশি যুবদলের ছত্রছায়ায় অনেক সন্ত্রাসী তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। সূত্র আরও জানায়, রাজধানীর কদমতলী এলাকায় মোহাম্মদ আলী হত্যা মামলার আসামি কাইল্যা আমীর, শওকত, শরীফ ও কাইল্যা মামুন হত্যায় ভাড়া খাটে। পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের জন্য অস্ত্র মহড়া শুরু করেছে। স্থানীয় সরকারদলীয় নেতা মফিজ এই গ্রুপের গডফাদার। তার নিয়ন্ত্রণেই এরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এছাড়া, কদমতলী থানাধীন দনিয়া ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা ওসমান, দাদন ও শ্যামপুরের মুহিত ভয়ঙ্কর শ্যুটার বাহিনী গড়ে তুলেছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী কচির সহযোগী নজরুল, শামীম, আক্তার, মঈন, ফিরোজ, ভাগ্নে রবিন ও সাজু গেণ্ডারিয়া এলাকার নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। গোয়েন্দা পুলিশের আশঙ্কা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে আরও খুনোখুনি ঘটতে পারে। যাত্রাবাড়ী এলাকার আতঙ্ক হয়ে উঠেছে ক্রসফায়ারে নিহত শীর্ষ সন্ত্রাসী মুন্না ওরফে সুইপার মুন্নার সহযোগী কালা সেন্টু ওরফে মোল্লা, ল্যাংড়া বাচ্চু, জাফর ওরফে দাউদ ওরফে কিলার জাফর, বোয়াল মিন্টু ওরফে মিন্টু ঘোষ, মুহুরী ফিরোজ ও ক্যারফা কামাল। কুত্তা লিটন, সম্রাট, শামীম, মেহের, শামছুদ্দিন ওরফে ম্যাগনেট ও এতিম মনির। গোয়েন্দারা জানান, সমপ্রতি প্রভাবশালী একজন প্রতিমন্ত্রীর সহায়তায় এই আসামিরা কারাগার থেকে বেরিয়েছে। ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। একই ভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওয়ারী এলাকার ব্যবসায়ীরা। ঈদকে সামনে রেখে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবির কৌশলী বার্তা পাচ্ছেন তারা। ওয়ারী থানা পুলিশের তথ্যমতে- সমপ্রতি কারাগার থেকে বের হয়েছে ক্রসফায়ারে নিহত শীর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত শহীদের সহযোগী ডাকাত মতিন। বাইরে বেরিয়েই সে স্থানীয় সন্ত্রাসী ও শ্যুটার ময়না, বাবু ওরফে ফয়সাল বাবু, জামান, মল্লিক, রিপন, লিটন ওরফে হকার্স লিটন ও রনি ওরফে ভাগ্নে রনিকে নিয়ে গড়ে তুলেছে নিজস্ব বাহিনী। কোতোয়ালি ও বংশাল এলাকার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী রয়েল, আশিক, মামুন, ফারুক, জুবায়ের ও রাজীব গ্রুপের দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। এছাড়া মিতু, ফেমাস আরিফ, আক্তার ও কালা মাসুদ নতুন বাহিনী গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। লালবাগ ও চকবাজার এলাকায় লেদার লিটনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী লিটন, শিলকান, জামান শিকদার, মাসুদ, জনি, অপু, সমীর, ইকবাল ও আলম গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়া, পুরান ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী বিদ্যুৎ, কাওসার, শিপন, টুটুল, শান্ত ও রাসেল কারাগার থেকেই দল গোছানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, সন্ত্রাসীদের দমন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। বিভিন্ন কৌশলে তাদের গ্রেপ্তার করতে বিশেষ অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে।
৬ মাসে ৩০০ দাগি আসামির জামিন
জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে যাচ্ছে অস্ত্র ব্যবসায়ী ও দাগি সন্ত্রাসীরা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি ফাঁকি দিয়ে ফের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে তারা। ফলে সরকারের শেষ সময়ে বাড়ছে খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি। ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করে থাকেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারাবন্দি অপরাধীরা জামিনের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে গেলে পুলিশের করার কিছুই থাকে না। এটি আইনগত প্রক্রিয়া। তবে তাদের বিরুদ্ধে নতুন কোন মামলা হলে পুলিশ গ্রেপ্তার করে থাকে। পুলিশের তথ্যমতে, গত ৬ মাসে অন্তত তিন শতাধিক দাগি সন্ত্রাসী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী গোপনে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়েছে। এদের মধ্যে চলতি মাসের প্রথম দিকে পুরান ঢাকার অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী কবীর ও গত রমজানের ঈদের আগে ওয়ারী এলাকার সন্ত্রাসী শিমুল জামিন নিয়ে বের হয়েছে। সমপ্রতি কারাগার থেকে বের হয়েছে একাধিক খুন, ছিনতাই, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার আসামি মিরপুরের সবুজ, পুরান ঢাকার রানা ও জুনায়েদ, ধানমন্ডি এলাকার আব্বাস, মন্টু, কানা সাত্তার, যশোর-সাতক্ষীরা এলাকার হাজী শাহাবুদ্দিন। ৬ মাস আগে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে অস্ত্র ব্যবসায়ী ইস্রাফিল। একই সময়ে বের হয়েছে অন্ধ সংস্থার সভাপতি হত্যা মামলার আসামি রমজান। গোয়েন্দারা জানান, কারাগার থেকে বেরিয়েই রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে শুরু করে সায়েদবাদ এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি ও চাঁদাবাজি শুরু করেছে রমজান। তার গ্রুপে দুই ডজন সন্ত্রাসী রয়েছে। সূত্রমতে, রমজান বাহিনীর অপরাধ কর্মকাণ্ড নজরদারি করছে পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের তথ্যমতে গত দুই মাসে অর্ধ শতাধিক চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটিয়েছে। এছাড়া ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের তথ্য পেয়েছেন তারা। তবে বিশেষ মহলের চাপে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। সূত্রমতে, সরকারদলীয় একজন প্রভাবশালী প্রতিমন্ত্রীর সুপারিশে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের দাগি সন্ত্রাসীরা সহজেই জামিনের সুযোগ পাচ্ছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ওই প্রতিমন্ত্রী সন্ত্রাসী ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের পক্ষে জামিনে মুক্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় অস্ত্র ব্যবসায়ী শিমুল, কবীর ও ইস্রাফিল জামিন নিয়ে বাইরে বের হয়েছে। রাজধানীর এনা প্রোপার্টিজ-এর ২৪ লাখ টাকা লুটে জড়িত দুর্ধর্ষ ডাকাত ও ছিনতাই গ্রুপের সদস্য পিচ্চি হান্নু, আলমগীর, ইমতিয়াজ ও রাসেল জামিনে মুক্তি পেয়েছে। জামিন নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে দুর্ধর্ষ ছিনতাই চক্র সানডে গ্রুপের সদস্যরা। সপ্তাহের প্রতি রোববার এ গ্রুপের সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করে থাকে। এরা হচ্ছে আলী, হেলাল, খায়ের ও পিচ্চি হেলাল। সমপ্রতি পুলিশ হত্যা মামলার আসামি গোয়াল মিন্টু ও মুহুরি ফিরোজ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হয়েই সায়েদাবাদ এলাকায় ছিনতাই কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। পুরান ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত শহীদের দুর্ধর্ষ কিলার বাহিনীর সদস্য কিলার ফিরোজ জামিনে মুক্তি পেয়ে লালবাগের যুবলীগ নেতার হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, কিলার ফিরোজের পরিকল্পনায় এতিম মনির কারাগার থেকে জামিনে বের হয়েই লালবাগের ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা করে। এ ছাড়া ডজনখানেক অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পরও প্রভাবশালী অস্ত্র ব্যবসায়ী কবীর, ইস্রাফিল, শাহরুখ ও শিমুল জামিনে মুক্তি পেয়েছে। জামিনের অপেক্ষায় রয়েছে আরেক অস্ত্র ব্যবসায়ী কামাল। সূত্র জানায়, কারাবন্দি কিলার আব্বাস, কাইল্যা পলাশ, সুইডেন আসলাম, আরমান, ইমন, মগবাজারের সুব্রত বাইনের সহযোগী রনি জামিন মুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ডাকাত শহীদের আরেক সহযোগী বিদ্যুৎ, কাওসার কারাগারে থাকলেও জামিনে বের হয়ে গেছে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বাবু, আসলাম ও নান্টু। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বলেন, রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রযুক্তিগত কৌশলের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। এতে সন্ত্রাসীরা জামিনে বের হওয়ার পরও বেশির ভাগ অপরাধীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা সম্ভব হচ্ছে। এতে জামিন পাওয়া সন্ত্রাসীদের পক্ষে নতুন করে অপরাধ কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ অনেকাংশেই কমে গেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ