সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৩

অন্তঃসত্ত্বাকেও চাকরিচ্যুত করা হয় নেই মাতৃত্বকালীন ছুটি

বাংলাদেশে একটি গার্মেন্টের শ্রমিকদের করুণ দশা ফুটে উঠেছে বিদেশী এক রিপোর্টে। তাতে দেখা গেছে, দ্য গ্যাপ অ্যান্ড ওল্ড নেভি’র জন্য বাংলাদেশের যে কারখানায় পোশাক প্রস্তুত হয়, সেখানে নারীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অবৈধভাবে চাকরি থেকে ছাঁটাই দেয়া হয়। ওই সব নারীকে মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া হয় না। এ কারখানায় সপ্তাহে ১০০ ঘণ্টারও বেশি কাজ করতে বাধ্য করা হয়। তাদের চড়-থাপড় মারা হয়। ধাক্কা দেয়া হয়। ঘুষি মারা হয়। কানাডার টরন্টো স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পিটার্সবুর্গ ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল লেবার অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস প্রকাশ করেছে ‘গ্যাপ অ্যান্ড ওল্ড নেভি ইন বাংলাদেশ: চিটিং দ্য পুওরেস্ট ওয়ার্কার্স ইন ও ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক রিপোর্ট। এ ইনস্টিটিউটের পরিচালক চার্লস কারনাগান বলেছেন, এ ধরনের নির্যাতন চলছে আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে। তবে গ্যাপ ইন-করপোরেশনের মুখপাত্র লরা উইলকিনসন বলেন, যে কারখানা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তার কার্যোপযোগিতা অডিট করা হয়েছে। অডিট রিপোর্টের সঙ্গে এসব রিপোর্ট মেলে না। মেলে না শ্রমিকদের সাক্ষাৎকারের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, তাদের কোম্পানি বৃহস্পতিবারই ওই রিপোর্ট হাতে পেয়েছে। এরপর তারা তদন্ত শুরু করেছেন। তিনি বলেন, যদি অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে তা হবে গ্যাপ-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের চুক্তির লঙ্ঘন। এমন ঘটনা ঘটলে ওই কারখানার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হতে পারে। ৬৮ পৃষ্ঠার ওই রিপোর্টে আশুলিয়ার নেক্সট কালেকশন কারখানার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এ কারখানার শ্রমিক সংখ্যা ৩৭৫০। এখানে যে পোশাক তৈরি হয় তার শতকরা ৭০ ভাগের ক্রেতা দ্য গ্যাপ অ্যান্ড ওল্ড নেভি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ কারখানায় কিছু অন্তঃসত্ত্বা নারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাদের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া হয়নি। অন্যদের দিয়ে করানো হয়েছে কঠোর কাজ। এমনই এক ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা মরিয়ম বেগম তার সন্তান হারিয়েছেন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তিনি ছিলেন দুর্বল ও অসুস্থ। সে অবস্থায়ই তাকে দিয়ে সপ্তাহে ১০০ ঘণ্টার বেশি কাজ করায় কারখানার ম্যানেজার। এতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ৭ মাসের মাথায় তিনি তার সন্তান হারান। তিনি তখন ওল্ড নেভি’র জিন্স বানাচ্ছিলেন। আরেকটি ঘটনায় তানিয়া বেগম নামে এক নারীকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। তাকে মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া ও সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়নি। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাকে জেলে পাঠানোর ও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে নেক্সট কালেকশন। কারণ, তিনি মাতৃত্বকালীন ভাতা দাবি করেছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ