সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৩

পুলিশি হেফাজতে কিশোরী ধর্ষণ ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

আবারও গাইবান্ধায় পুলিশ কর্তৃক ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীকে পতিতা ও বেওয়ারিশ বানানোর চেষ্টা  চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আদালতের নির্দেশে গোবিন্দগঞ্জ থানার ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বাধ্য হলেও অভিযুক্তদের রক্ষা করতে তৎপর হয়েছে একটি মহল। পুলিশ হেফাজতে দু’দিন আটকে রেখে পালাক্রমে কিশোরী ধর্ষণের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২৮শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মাস্তা নামক স্থানে উল্লিখিত কিশোরীকে স্থানীয় লোকজন কান্নাকাটি করতে দেখে। পরে তারা থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ওই রাতেই তাকে থানায় নিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে থানায় সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ হওয়ার কথা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর ২৯শে সেপ্টেম্বর সকালে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপরও ওই দিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি। কিশোরীর অভিযোগ, ২৮শে সেপ্টেম্বর রাত থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর ভোর পর্যন্ত তিন পুলিশ সদস্য তার ওপর অকথ্য যৌন নির্যাতন চালায়। তবে তারা সে ঘটনা ফাঁস না করার ভয়ভীতি দেখায়। পুলিশের কথামতো কাজ করবে- এই আশ্বাসের ভিত্তিতে পুলিশ ৩০শে সেপ্টেম্বর দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে তাকে। আদালত ওই দিন কিশোরীকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।
সূত্র জানায়, ১লা অক্টোবর মঙ্গলবার কিশোরী কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারাগারের জেলারসহ অনেকের কাছে কিশোরী জানায়, গোবিন্দগঞ্জ থানায় আটক রেখে ৩ পুলিশ সদস্য তাকে ধর্ষণ করেছে। গত ৩রা অক্টোবর বুধবার বিকালে কিশোরীকে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে তার জবানবন্দি নেয়া হয়। ওই দিনই আদালত থেকে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা গ্রহণের জন্য আদেশ দেয়া হয়। বাধ্য হয়ে আদেশ পেয়ে পরদিন ৪ঠা অক্টোবর গোবিন্দগঞ্জ থানায় ৪ জন অজ্ঞাতনামা পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় ৪ পুলিশের নাম না থাকায় পুলিশ দায়িত্ব এড়িয়ে যায় এবং ওই দিন কর্তব্যরত পুলিশকে রক্ষায় মরিয়া হয়ে ওঠে। তারা ৪ পুলিশকে আড়াল করতে এবং অভিযুক্ত কিশোরীকে পতিতা বানানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগের কারণে গোবিন্দগঞ্জ থানা থেকে মামলাটি তদন্তের জন্য গাইবান্ধা গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের জন্য দেয়া হয়। আদেশে বলা হয় র‌্যাব, ডিবি পুলিশ ও সিআইডিকে দিয়ে এই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি শেখ দেলোয়ার হোসেন জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ চলছে। অজ্ঞাত ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত কাজও চলছে।  গাইবান্ধার পুলিশ সুপার সাজিদ হোসেন বলেন, পুরো বিষয়টি বিচার বিভাগের এখতিয়ারে চলে গেছে। আদালতের সিদ্ধান্ত ছাড়া এ ব্যাপারে কোন কথা বলা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম কাজ করছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পুলিশের কোন সদস্য অপরাধ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে ডিভি পুলিশের ওসি এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা আহসান হাবীব জানান, বাদীর ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যে ঠিকানা দেয়া আছে সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নামে কোন কিশোরীর বাড়ি নেই। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে গতকাল বিকালে গোবিন্দগঞ্জে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে নাগরিক কমিটি।


Earn from online (data entry jobs) 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ