শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১১

'চোরের মায়ের বড় গলা'

‘চোরের মায়ের বড় গলা’ - বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বহুল প্রচলিত একটি বাক্য। যখন থেকে ভাষা বুঝতে শিখেছি, তখন থেকেই বিভিন্ন কারনে এই বাক্যটির প্রয়োগ শুনেছি। এই বাক্যটি শুধু চোরের মায়ের উদ্দেশ্যেই নয়; নিজের কথা ও কাজের অমিল থাকলে অথবা নিজের দোষ অন্যের ঘারে চাপানোর চেষ্টা করলে অর্থাৎ ‘উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘারে’ চাপানোর চেষ্টা করলে অথবা নিজেই যে অভিযোগে অভিযুক্ত, অন্যকেও সেই একই কারনে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করলে অথবা একই অভিযোগ নিজের ক্ষেত্রে প্রমাণিত থাকলেও যিনি এই অভিযোগে অভিযুক্ত নন, তাঁকে এই অভিযোগে অভিযুক্ত করা সহ আরও অনেক কারনে এই বাক্যটি প্রয়োগ হয়। 
তবে গত কিছুদিন আগে এই বাক্যটি বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি এই বাক্যটির প্রয়োগ করেছেন। সুতরাং স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এই বাক্যটির গুরুত্ব অনেকখানি বেড়ে গেছে। 

গত ১৯-১০-২০১১ তারিখে পাটগ্রাম জসিমউদ্দিন সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “চোরের মায়ের বড় গলা।” 

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বহুল প্রচলিত এই বাক্যটি যেসব উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় ও প্রধানমন্ত্রী ক্রত্বরক এই বাক্যটির প্রয়োগ এবং তার(প্রধানমন্ত্রী)বিভিন্ন সময়ের কথাবার্তা, কর্মকাণ্ড, আচার আচরণ ইত্যাদির সাথে এই বাক্যটির সম্পর্ক ও প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে(কয়েকটি পর্বে) একটু আলোচনা করাই আজকের লেখাটির উদ্দেশ্য।

প্রধানমন্ত্রীর “পাগল” তত্ত্বঃ
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর আচার-আচরণ ও কর্মকাণ্ডের বিশ্লেষণ করে আমাদের দেশের সর্বোচ্চ আদালত অনেক আগেই তাকে বিকৃত-মস্তিষ্ক বা ‘রং হেডেড পারসন’ হিসেবে উল্লেখ করে রায় দিয়েছেন। আমাদের দেশের মাননীয় আদালত ঐ প্রথম রায়টি কেন এবং ঠিক কখন দিয়েছিলেন তা আমার বিস্তারিত জানা নেই। তবে বিভিন্ন উৎস থেকে জানা যায় ,তার প্রথম শানামলে(১৯৯৬-২০০১) সুপ্রিমকোর্ট ফুল বেঞ্চ তার(শেখ হাসিনা) সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আদালত প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অধিকতর বোধশক্তি, বিচক্ষণতা, বিবেচনাবোধ ও সতর্কতা আশা করে।’

এছাড়াও তার গত শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) সিরাজগঞ্জ জেলার বাগাবাড়ীতে বিদ্যুত্ টাওয়ার ফেলে দেয়ার কারণে জনগণকে বিদ্যুৎ দিতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জনাব মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাঁদের গ্রেফতার করে জেল হাজতে নেওয়ার কারণে হাইকোর্ট কর্তৃক সেদিন হাসিনা সরকারকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল এবং তার শাসন আমলে শেখ হাসিনাকে আরেকবার ‘রং হেডেড’ উপাধি দিয়েছিলেন মাননীয় আদালত। [তবে সে টাকা মনে হয় তার পকেট থেকে গুণতে হয়নি; ‘শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক’ বলে কথা; জনগণের টাকা দিয়েই মনে হয় এর ব্যবস্থা হয়েছিল।]

অথচ গত ১২-১০-২০১১ তারিখে নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মহাজোটের কর্মকাণ্ড দেখে খালেদা জিয়া “পাগল” হয়ে গেছেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ