সোয়াজিল্যান্ডের বহুগামী রাজা তৃতীয় মাসোয়াতি (৪৪) তার ১২তম স্ত্রী
নাথান্ডো ডাউবি (২৩)-কে রাজপ্রাসাদ থেকে বের করে দিয়েছেন। স্ত্রীর
বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আইনমন্ত্রী ও রাজার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মাম্বার সঙ্গে
অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। গত সপ্তাহে রাজার অফিস থেকে তাকে রাজকীয়
বাসভবন ছেড়ে যেতে আদেশ দেয়া হয়। রাজার বর্তমান ১৪ জন স্ত্রীর মধ্যে ১২তম
স্ত্রী ডাউবি বলেন, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগে গত এক বছর
রাজপ্রাসাদে তাকে বন্দি করে রাখা হয়। এ সময় তাকে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা
করতে দেয়া হয়নি। তিনি তার অসুস্থ এক সন্তানকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পর
গণমাধ্যম বিষয়টা জানতে পারে। তিনি বলেন, তার পেছনে সব সময় একজন নিরাপত্তা
কর্মী নিযুক্ত থাকতো। যখন তিনি বেরিয়ে যান তখনও নিরাপত্তা রক্ষীরা তাকে
আটকে রাখার চেষ্টা করে। আইনমন্ত্রী নাতিমুসো মাম্বার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক
থাকার সন্দেহে আফ্রিকার শেষ রাজা মাসোয়াতি তার স্ত্রীকে তালাক দেন । এই
নাথান্ডো রাজার তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। স্ত্রীর রাজকীয় বিছানায়
অভিযুক্ত মন্ত্রীর ছবি লুকানো থাকায় তাকে তালাকের সঙ্গে মন্ত্রীকেও
বহিষ্কার করা হয়। এই অভিযোগে তাকে এক বছর আটক রাখা হয় এবং স্বামীর সাক্ষাৎ
থেকেও বঞ্চিত করা হয়। বিয়ের সময় রাজার এই স্ত্রীর বয়স ছিল ১৬ বছর এবং তিনি
তখন মিস সোয়াজিল্যান্ড ছিলেন। রাজা তার মায়ের সঙ্গে আলোচনা করেই তালাকের
এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কেননা তিনি নিরাপত্তাকর্মীকে প্রহার করেছিলেন।
রাজপ্রসাদ ছেড়ে যাওয়ার সময় রাজার এই ১২তম স্ত্রী তার সন্তান ও জিনিসপত্রও
নিয়ে যেতে পারেননি। সোয়াজিল্যান্ডের সমাজকর্মীরা হঠাৎ রাজপ্রাসাদ ত্যাগের
এ ঘটনাকে মানবাধিকার পরিপন্থি হিসেবে দেখছেন। একে একটি নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত
বলে মনে করছেন। সোয়াজিল্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী বসন্তের শুরুতে নতুন ফলভোগ
অনুষ্ঠানের আগে রাজা যখন প্রজাদর্শন থেকে দূরে তখনই এই ঘটনা ঘটলো। সোয়াজ
ঐতিহ্য অনুযায়ী রাজার জন্য বহু বিয়ে অনুমোদিত এবং তিনি প্রতি বছর একজন
কুমারী স্ত্রী গ্রহণ করতে পারেন। ঐতিহ্যবাহী রেড-ডেন্স উৎসবে নাচে ১ম
স্থান হয়েছিলেন নাথান্ডো। তার পর থেকেই তাকে রাজা স্ত্রী হিসেবে বেছে নেন।
রাজার স্ত্রীদের আফ্রিকা ও মোজাম্বিকে তার পক্ষ থেকে একটি করে বাড়ি দেয়া
হয়। যেখানে রাজকীয়ভাবে সব ব্যবস্থা থাকে উন্নত জীবনযাপনের জন্য। এভাবেই
রাজা ভোগ-দখলের মাধ্যমে, বিরোধীদের দমন করে তার রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন।
অথচ দেশটির মাত্র ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ সমস্যায় জর্জরিত। এইডস সহ মারাত্মক
রোগে আক্রান্ত দেশবাসীকে নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই বৃটেনে শিক্ষা লাভ করা এই
রাজার। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সহায়তায় রমরমা জীবনযাপন করছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন