সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১১

কবরে মুমিন ব্যাক্তি ও কাফের ব্যাক্তির জান্নাত ও জাহান্নাম দর্শন ।

হযরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রাসূলূল্লাহ (সা.) বলেছেন, "মুমিন ব্যাক্তি মৃত্যুর পর কবরে পৈাছে নির্ভীক এবং শান্ত-শিষ্ট ও চিন্তামুক্ত অবস্হায় উঠে বসে । অতঃপর তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তুমি কোন ধর্মে বিশ্বাসী ছিলে ? প্রতুত্তরে সে বলে, আমি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী ছিলাম । আবার জিজ্ঞেস করা হয়, তার সম্পর্কে কি ধ্যান-ধারণা পোষণ করতে যাকে তোমাদের মধ্যে প্রেরণ করা হয়েছিলো ? সে বলে, তিনি হচ্ছেন আল্লাহর রাসূল মোহাম্মদ (সা.) । তিনি আমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে সুষ্পষ্ট জীবন বিধান নিয়ে এসেছেন । আমরা তাকে বিশ্বাস করেছি এবং তার প্রদর্শিত জীবন-বিধান অনুসারে জীবন-যাপন করেছি ।অতঃপর তাকে জিজ্ঞেস করা হয় , তুমি কি আল্লাহতায়াকে কখনও দেখেছ ? প্রতুত্তরে বলে, দুনিয়ার কোন লোক-ই আল্লাহতা'য়ালাকে দেখেনা, অতএব আমি কিভাবে দেখব ?

অনন্তর তার কবরে জাহান্নামের দিকের একটি জানালা খুলে দেয়া হয়, তখন সে দেখতে পায়, জাহান্নামের আগুনের অঙ্গারগুলো একটি অপরটিকে হজম করে ফেলছে । জাহান্নামের এরূপ বীভৎস দৃশ্য অবলোকন করার পর তাকে বলা হয়, তুমি কি দেখেছ কিরূপ ভয়ংকর বিপদ হতে আল্লাহপাক তোমাকে রক্ষা করেছেন ? অতঃপরত তার কবরে জান্নাতের একটি দরজ খুলে দেয়া হয় । এ জানালা দিয়ে সে জান্নাতে অপরূপ শোভা ও অন্যান্য জিনিষগুলো অবলোকন করে । অনন্তর তাকে বলা হয়, এ জান্নাত হচ্ছে তোমার চিরস্হায়ী বাসস্হান । তুমি দুনিয়ায় ইসলামের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত ছিলে , আর কেয়ামতেরর দিন মহান আল্লাহপাকের ইচ্ছায় তুমি সে বিশ্বাসের উপর-ই উত্থিত হবে । 

অতঃপর নবী করিম (সা.) বললেন, কাফের ও নাফরমানগণ খুবই ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্হায় উঠে বসে। তখন তার কাছে জিজ্ঞেস করা হয়, দুনিয়ার জীবনে তুমি কোন ধর্মে বিশ্বাসী ছিলে ? সে বলে, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা । এরপর তার কাছে আমার (নবী করিম (সা.)) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় যে, তোমার বিশ্বাস অনুযায়ী ইনি কে ? সে বলে- এ ব্যাক্তি সম্পর্কে আমি তাই বলতাম , যা অন্যান্যরা বলত । অতঃপরত তার কবরে জান্নাতের একটি জানাল খুলে দেয়া হয় । এ জানালা পথে সে জান্নাতের নয়নাভিরাম শোভা ও অন্যান্য জিনিষ অবলোকন করে । তখন তাকে বলা হয়, তুমি আল্লাহতায়ালার অবাধ্য হওয়ার কারণে তিনি তোমাকে এ চির শান্তিময় নেয়ামত হতে বন্চিত করেছেন । এরপর তার কবরে জাহান্নামের একটি জানালা খুলে দেয়া হয় । সে তখন উক্ত জানালা পথে দেখতে পায় যে, জাহান্নামের আগুনের অঙ্গারগুলো একে অপরকে খেয়ে ফেলছে । অনন্তর তাকে বলা হয় , এ জাহান্নাম-ই তোমার চিরস্হায়ী বাসস্হান । তুমি দুনিয়ার জীবনে এ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করতে, আর সে সন্দেহ নিয়েই তোমার মৃত্যু হয়েছে , আর আল্লাহর ইচ্ছায় সে সন্দেহ নিয়েই তুমি কেয়ামতের দিন কবর থেকে উত্থিত হবে । 

- ইবনে মাজা, মেশকাত । 

আল-কুরআনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন,

'জালেমগণ সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস ! আমি যদি রাসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম ! হায় আমার দুর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম । আমার কাছে উপদেশ আসার পর সে আমাকে তা থেকে বিভ্রান্ত করেছিল । শয়তান মানুষকে বিপদকালে ধোঁকা দেয় ।' (সূরা ফোরকান ২৭-২৯)

'যদি আপনি দেখতেন যখন অপরাধীরা তাদের পালনকর্তার সামনে নতশির হয়ে বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা , আমরা দেখলাম ও শ্রবণ করলাম । এখন আমাদেরকে পাঠিয়ে দিন, আমরা সৎকর্ম করব । আমরা দৃঢ় বিশ্বাসী হয়ে গেছি । (সূরা সেজদা-১২)

মহানবী (সাঃ) সতর্কবাণীঃ

হযরত আবু-হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত , তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, জীবনের স্বাদ বিনাশকারীকে (অর্থাৎ মৃত্যুকে ) বেশী বেশী স্বরণ কর ।'

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ