গাইবান্ধায় পাট চাষীরা পাটের উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছে না। গত বছরের তুলনায় শ্রমিকের মজুরী বেশী হওয়ায় এবার পাট চাষে খরচ হয়েছে একটু বেশী। গত বছরের চেয়ে পাটের মূল্য এবার কিছুটা কম হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ।
মাথায় যেন বাজ পড়েছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের। হাড়ভাঙা খাটুনির ফসল মুলা এখন বিক্রি হচ্ছে বলতে গেলে পানির দরে—প্রতি মণ ২৫ টাকায়। ফলে এক মণ মুলা বিক্রি করে তাঁরা এক কেজি চালও কিনে ঘরে ফিরতে পারছেন না।
কৃষকেরা জানান, এক মাস আগে প্রতি মণ মুলার দাম ছিল এক হাজার ২০০ টাকা। এখন সে মুলা ২৫ টাকা মণ দরেও বিক্রি করা যাচ্ছে না।
সিলেটের পাহাড়ি ও সীমান্তবর্তী এলাকা জকিগঞ্জে এবার সুপারির বাম্পার ফলন হলেও কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। ফলে সুপারিচাষীরা এবার হতাশ হয়ে পড়েছেন। জানা গেছে, গত মৌসুমে ‘গা’ সুপারির দাম ছিল ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা। এই সৌমুসে তার দাম ১২০ থেকে ৩শ’ টাকা। এই মূল্যের কারণে সুপারি বিক্রেতাদের মুখে আগের মতো হাসির ঝিলিক আর নেই।
এদিকে ডিজেলের দাম বাড়ায় রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের বোরো ধান চাষীরা বিপাকে পড়েছেন৷ কারন বোরো ধান চাষ সেচ নির্ভর৷ আর সেচ পাম্পগুলো ডিজেল চালিত৷ ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের জন্য ডিজেলে ভর্তুকি দেয়াও বন্ধ আছে৷ তাই কৃষকরা এখন বেশ চিন্তায় আছেন৷
কৃষি বান্ধব মহাজোট সরকার কৃষকের সুবিধার কথা ভেবে ৬০০ টাকার ইউরিয়া সারের দাম বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করেছে। সরকার জানিয়েছে তারা ক্ষমতায় আসার পর কৃষকের আয় ১০০ গুন বেড়ে যাওয়ায় তারা এমন সিন্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
অব্যাহত লোডশেডিং, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়হীনতা, দুর্বৃত্তদের বাধা, সেচ প্রকল্প নিয়ে দ্বন্দ্বসহ নানা কারণে বোরো আবাদে সেচ সঙ্কটে পড়েছেন কৃষক। এতে সেচ নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। গত দু’বছর ধরেই রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে ফসলের জন্য কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত হয়নি। এ কারণে কৃষককে মুখাপেক্ষী হতে হয়েছে সেচযন্ত্রের ওপর। কিন্তু বিদ্যুতের অভাবে সময়মত জমিতে সেচ দিতেও ব্যর্থ হয়েছেন চাষীরা। ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে অনেকেই রাতের পর রাত গভীর নলকূপের সামনে কাটিয়ে চেষ্টা করেছেন ফসল বাঁচাতে। অতীতের এই অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই এবার বোরো চাষের প্রতি কৃষকের অনীহা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ফসল উৎপাদনের মূল উপকরণ বীজ নিয়ে চরম প্রতারণা চলছে কৃষকদের সঙ্গে। চড়াদামে বীজ কিনে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাচ্ছেন না কৃষক। অনেক সময় পুরো ফসলই নষ্ট হয়। তারপরও বীজ কোম্পানির কাছে জিম্মি হয়ে আছেন কৃষক।
“বীজ নাই, রুমু কি ! ক্ষ্যাত এবার খিল রাহা ছাড়া উপায় থাকবেনা। আল্লায় মোগো ওপর গজব দেছে। দেওই আর জোয়ারের পানিতে মোগো আমনের বীজ শ্যাষ কইর্যা হালাইছে। আউশ আর ইরি ধানতো গ্যাছেই, এহোন আমনের চাষও করতে পারমুনা।” এ কথাগুলো বললেন, বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর গ্রামের কৃষিজীবী হারুন অর রশিদ হাওলাদার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন