বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১১

দুঃখ যাবে সুখের নিমন্ত্রণে

এই প্রথম সুখের কাছ থেকে নিমন্ত্রণ পেলো দুঃখ

প্রিয় দুঃখের আমার কাছেই বায়না - সাজিয়ে দিতে হবে

কি দিয়ে সাজাই ? কিসে সুন্দর লাগবে দুঃখকে ?

বন্ধুদের কাছে কিছু উপহার পেয়েছিলাম , কিছু পাওনাও ছিল

সব দিয়েই সাজাবো তোমায় মেয়ে ।


প্রথমেই ভাবনা কি রঙের পোশাকে সাজাই

কষ্টের কাছ থেকে উপহার পাওয়া নীল শাড়িটা খুঁজে বের করলাম

কি গভীর নীল ! যা শুধু কষ্টই দিতে পারে

বিষাদের দেয়া কাঁটার হার আর দুল পরে বেজায় খুশি দুঃখ

কাঁটার আঘাত কষ্ট দিলেও সুন্দর লাগছে জেনে

হাসি মুখেই মেনে নিলো বাধ্য মেয়ে দুঃখ

প্রতারণা দিয়েছিলো অসংখ্য চুড়ি ; অনাদরে ভেঙেছে কিছু

ভাঙা চুড়িতে হাত কেটে গেলেও দুঃখ দেখলো

রক্তের লাল রঙ চুড়ির সাথে মিলে কেমন সুন্দর লাগছে

যন্ত্রণা পরিয়ে দিলো নাকফুল , দুঃখকে অসাধারণ লাগছিলো

মিথ্যে এঁকে দিলো কাজল ; কাজল দিতেই জ্বলে উঠলো দুঃখের চোখ

প্রাণপণ চেষ্টায় চোখের জল ঠেকালো সে

কিছুতেই সাজ নষ্ট করা যাবে না

সুখের জন্য এই সাজ ।

অভিশাপ কোথা থেকে এনে দিলো এক জোড়া নূপুর

ওগুলো কি সাপ ? কি ভয়ংকর সুন্দর দেখতে !

বোকা দুঃখ ছোবল দেবে জেনেও বাঁধা দিলো না

সুখকে খুশি করতে হবে তো ।

বিরহের দেয়া ফুলগুলো হাসছিলো দুঃখের খোঁপায়

সাজ শেষ , এবার যাবার পালা

কিছু বাদ গেলো না তো ?

এই যাহ ! টিপ পরানো হয়নি

চোখের কোল থেকে একফোঁটা অশ্রু কপালে পরিয়ে দিলাম

কি যে সুন্দর লাগছিলো সেদিন দুঃখকে !

হাসি মুখে বিদায় দিলাম ; যাও তোমার ভালোবাসার নিমন্ত্রণে


দুঃখ ভীরু পায়ে চললো সুখের ঘরে

মনে অনেক ভয় ওকে সুখের পাশে মানাবে তো ?

সুখ কি ওকে ভালোবাসবে ?

অবশ্যই বাসবে -নিজেকেই বলে দুঃখ

সাজগুলো প্রতিনিয়ত কষ্ট দিলেও

সে তো মুখতাকে একটুও মলিন করেনি

দৃঢ় পায়ে সুখের আঙিনায় দাঁড়ানো দুঃখ অবাক চোখে দেখলো

সুখের আলিঙ্গনে অন্য কেউ ,

হাসির উচ্ছলতায় কেঁপে উঠছে দুজন

আনন্দ ! ওকে আগে একবার দূর থেকে দেখেছে

প্রিয়জনকে খুশি দেখে দুঃখের ভালোই লাগলো

খুব মানিয়েছে দুজনকে, ওরা ভাল থাকুক

সুখের জন্য কালো নদী থেকে তুলে আনা

দীর্ঘশ্বাসের গোছা হাতে ফিরে এলো দুঃখ

চুপ করে ঘুমিয়ে গেলো আমার প্রিয় আয়নায়

ওর কষ্টে আমিই কাঁদলাম

মাঝে মাঝে ওকে দেখতে ইচ্ছে করে

আয়নায় দাঁড়াই

প্রশ্ন করি - কেমন আছো গো তুমি ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ