ঢাকা, নভেম্বর ২১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের তথ্য সংবাদ সম্মেলন করে প্রকাশের পর প্রায় দেড় বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন ঝালকাঠীর ইন্দ্রপাশা গ্রামের এক যুবক।
মোহাম্মদ ফোরকান নামে ওই যুবকের পরিবার বলছে, প্রথম দফায় নিখোঁজ হওয়ার পর তার লাশ ভেবে একজনকে দাফনও করা হয়েছিল। এর সাড়ে তিন মাসের মাথায় ফিরে এসে র্যাবের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন তিনি।
পরিবারের ধারণা, ফোরকানের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে ওই সংবাদ সম্মেলনের যোগ থাকতে পারে। তবে র্যাব এ অভিযোগ নাকচ করে বলেছে, মাদকের কারবারে জড়িত ফোরকানকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে হয়তো র্যাবের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ফোরকানের বড় ভাই মোহাম্মদ হাসান টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, র্যাব হেফাজত থেকে ফিরে সাংবাদিক সম্মেলন করে র্যাবের নির্যাতনের কথা বলেছিলো ফোরকান। ওই সংবাদ সম্মেলনের পর পরই সে নিখোঁজ হয়।
আইনগত ব্যবস্থা নিতে না পারার জন্য নিজেদের আর্থিক দৈন্যের কথা জানান ফোরকানের বাবা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “২০১০ সালের ১৬ অগাস্ট হাইকোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিল ফোরকান। গত দেড় বছর তার কোনো হদিস নাই। ছেলে বেঁচে আছে না মরে গেছে তাও জানি না।”
প্রথম দফায় ফিরে আসা
রাজধানীর উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় ১৭ নম্বর রোডের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন ফুটপাতের হকার ফোরকান। ২০১০ সালের এপ্রিলে হঠাৎ নিখোঁজ হন তিনি।
২৭ এপ্রিল তুরাগ নদীর তীরে অজ্ঞাতপরিচয় তিন ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। যাদের একজন ঝালকাঠির মিজান এবং অপরজন মুরাদ বলে শনাক্ত করে মোহাম্মদপুর থানা থেকে লাশ নিয়ে যায় তাদের পরিবার। ২৮ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে বিকৃত হয়ে যাওয়া তৃতীয় লাশটি ফোরকানের বলে শনাক্ত করেন বাবা। পরে ঝালকাঠিতে দাফনও হয়।
ওই ঘটনার প্রায় সাড়ে তিন মাস পর গ্রামে ফেরেন ‘মৃত’ ফোরকান। এর পরপরই সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরেন র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কথা।
নির্যাতন
সংবাদ সম্মেলনে ফোরকান জানান, উত্তরা হাউস বিল্ডিংয় এলাকায় এসএ পরিবহনের কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে এবং তার ব্যবসায়িক অংশীদার মিজানকে ধরে র্যাব। চোখ বেঁধে তাদের বসানো হয় পিকআপের পেছনে। পরে চোখের পট্টির ফাঁক দিয়ে ফোরকান দেখতে পান তাদের গাড়িটি উত্তরা র্যাব-১ এর অফিসের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা। গাড়িতে আটক আরো দুই যুবককে দেখেন তিনি।
এরপর থেকে র্যাব-১ এর কার্যালয়ে তাদের ওপর নিয়মিত নির্যাতন চালানো হতো বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ফোরকান। তিনি দাবি করেন, সাড়ে তিন মাস আটকে রাখার পর র্যাব সদস্যরা নির্জন এক জায়গায় তাকে ফেলে রেখে চলে যায়।
ফোরকানের ধারণা, গাড়িতে যে দুই যুবককে তিনি দেখেছিলেন, তারা ইন্দ্রপাশা গ্রামের দুই ভাই অসিম (৩৫) ও রাজিব (২৫)।
এ অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের প্রধান এম সোহায়েল দাবি করেন, ফোরকান টাকা জাল করা এবং মাদকের চোরা কারবারে জড়িত ছিলো।
ফোরকানের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে ঝালকাঠীর তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মোর্শেদ জমাদ্দার ও তার ভাই মিজান জমাদ্দার জড়িত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
ওই মোর্শেদকে ধরতে এক অভিযানেই র্যাবের গুলিতে পা হারান ঝালকাঠীর কলেজছাত্র লিমন।
এম সোহায়েল বলেন, “তুরাগে যে তিনটি লাশ পাওয়া গিয়েছিল- তাদের মোর্শেদ আর মিজানই খুন করেছিলো বলে আমাদের ধারণা। তারাই এর সঙ্গে র্যাবকে জড়িয়ে অপপ্রচার করেছে।”
“ফোরকানের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গেও ওই দুই সন্ত্রাসী এবং ফোরকানের পরিবার জড়িত থাকতে পারে। এমনও হতে পারে যে, তাকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে র্যাবের বিরুদ্ধে গুমের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে”, যোগ করেন তিনি।
অ্যামনেস্টির হিসাবে, ২০০৪ সালে র্যাব গঠনের পর এ পর্যন্ত অন্তত ৭০০ মানুষকে ‘বিনা বিচারে’ হত্যা করা হয়েছে। এ সব হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে তদন্ত হয়েছে, তাও অস্পষ্ট।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ২০১১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত ২০০ মানুষ র্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় বলে অ্যামনেস্টি জানায়।
মোহাম্মদ ফোরকান নামে ওই যুবকের পরিবার বলছে, প্রথম দফায় নিখোঁজ হওয়ার পর তার লাশ ভেবে একজনকে দাফনও করা হয়েছিল। এর সাড়ে তিন মাসের মাথায় ফিরে এসে র্যাবের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন তিনি।
পরিবারের ধারণা, ফোরকানের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে ওই সংবাদ সম্মেলনের যোগ থাকতে পারে। তবে র্যাব এ অভিযোগ নাকচ করে বলেছে, মাদকের কারবারে জড়িত ফোরকানকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে হয়তো র্যাবের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ফোরকানের বড় ভাই মোহাম্মদ হাসান টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, র্যাব হেফাজত থেকে ফিরে সাংবাদিক সম্মেলন করে র্যাবের নির্যাতনের কথা বলেছিলো ফোরকান। ওই সংবাদ সম্মেলনের পর পরই সে নিখোঁজ হয়।
আইনগত ব্যবস্থা নিতে না পারার জন্য নিজেদের আর্থিক দৈন্যের কথা জানান ফোরকানের বাবা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “২০১০ সালের ১৬ অগাস্ট হাইকোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিল ফোরকান। গত দেড় বছর তার কোনো হদিস নাই। ছেলে বেঁচে আছে না মরে গেছে তাও জানি না।”
প্রথম দফায় ফিরে আসা
রাজধানীর উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় ১৭ নম্বর রোডের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন ফুটপাতের হকার ফোরকান। ২০১০ সালের এপ্রিলে হঠাৎ নিখোঁজ হন তিনি।
২৭ এপ্রিল তুরাগ নদীর তীরে অজ্ঞাতপরিচয় তিন ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। যাদের একজন ঝালকাঠির মিজান এবং অপরজন মুরাদ বলে শনাক্ত করে মোহাম্মদপুর থানা থেকে লাশ নিয়ে যায় তাদের পরিবার। ২৮ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে বিকৃত হয়ে যাওয়া তৃতীয় লাশটি ফোরকানের বলে শনাক্ত করেন বাবা। পরে ঝালকাঠিতে দাফনও হয়।
ওই ঘটনার প্রায় সাড়ে তিন মাস পর গ্রামে ফেরেন ‘মৃত’ ফোরকান। এর পরপরই সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরেন র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কথা।
নির্যাতন
সংবাদ সম্মেলনে ফোরকান জানান, উত্তরা হাউস বিল্ডিংয় এলাকায় এসএ পরিবহনের কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে এবং তার ব্যবসায়িক অংশীদার মিজানকে ধরে র্যাব। চোখ বেঁধে তাদের বসানো হয় পিকআপের পেছনে। পরে চোখের পট্টির ফাঁক দিয়ে ফোরকান দেখতে পান তাদের গাড়িটি উত্তরা র্যাব-১ এর অফিসের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা। গাড়িতে আটক আরো দুই যুবককে দেখেন তিনি।
এরপর থেকে র্যাব-১ এর কার্যালয়ে তাদের ওপর নিয়মিত নির্যাতন চালানো হতো বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ফোরকান। তিনি দাবি করেন, সাড়ে তিন মাস আটকে রাখার পর র্যাব সদস্যরা নির্জন এক জায়গায় তাকে ফেলে রেখে চলে যায়।
ফোরকানের ধারণা, গাড়িতে যে দুই যুবককে তিনি দেখেছিলেন, তারা ইন্দ্রপাশা গ্রামের দুই ভাই অসিম (৩৫) ও রাজিব (২৫)।
এ অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের প্রধান এম সোহায়েল দাবি করেন, ফোরকান টাকা জাল করা এবং মাদকের চোরা কারবারে জড়িত ছিলো।
ফোরকানের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে ঝালকাঠীর তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মোর্শেদ জমাদ্দার ও তার ভাই মিজান জমাদ্দার জড়িত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
ওই মোর্শেদকে ধরতে এক অভিযানেই র্যাবের গুলিতে পা হারান ঝালকাঠীর কলেজছাত্র লিমন।
এম সোহায়েল বলেন, “তুরাগে যে তিনটি লাশ পাওয়া গিয়েছিল- তাদের মোর্শেদ আর মিজানই খুন করেছিলো বলে আমাদের ধারণা। তারাই এর সঙ্গে র্যাবকে জড়িয়ে অপপ্রচার করেছে।”
“ফোরকানের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গেও ওই দুই সন্ত্রাসী এবং ফোরকানের পরিবার জড়িত থাকতে পারে। এমনও হতে পারে যে, তাকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে র্যাবের বিরুদ্ধে গুমের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে”, যোগ করেন তিনি।
অ্যামনেস্টির হিসাবে, ২০০৪ সালে র্যাব গঠনের পর এ পর্যন্ত অন্তত ৭০০ মানুষকে ‘বিনা বিচারে’ হত্যা করা হয়েছে। এ সব হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে তদন্ত হয়েছে, তাও অস্পষ্ট।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ২০১১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত ২০০ মানুষ র্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় বলে অ্যামনেস্টি জানায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন