রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১১

ঈদ!!! আবর্জনা এবং আমার কিছু কথা।

বিরাট ভাবগাম্ভীর্য এবং ব্যপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মুসলমানদের পবিত্র ঈদ উল আযহা অবশেষে এসে উপস্থিত হল।সেই সাথে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে আনন্দের সাজ সাজ রব।ছেলে বুড়ো, ধনী গরীব সবাই সেই আনন্দে ভাসছেন।ভাসবেন ই বা কেন?ঈদ তো আর প্রতিদিন হয় না।সেই বছরে একবার এই পবিত্র ঈদ উল আযহা আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়।ভাবতে ভালোই লাগে যে হাজারো সমস্যাই জর্জরিত এই জাতিটি এই দিনে সব বিভেদ ভুলে একটা দিনের জন্য সবাই সবার খোঁজ নেন,সবাই সব বিভেদ ভুলে একে অন্যকে বুকে জড়িয়ে ধরেন,দুঃখ ভুলে সবাই আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেনB-)B-)B-)।ঈদের আগে যদিও কে কার থেকে বড় গরু কিনল কিংবা কার গরুর দাম বেশি নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতার সুত্রপাত হয়X(X(X(।সেই অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও এই দিনে এসে শেষ হয় বুকে বুক মিলিয়ে।ঈদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিস তা হল পশু জবাই।আমার লেখার উদ্দেশ্য মুলত এই জবাই পরবর্তী কার্যকলাপ কে কেন্দ্র করে।জবাই করার পরেই আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়ি আমাদের অতি আদরের পশুটিকে নিয়ে।চামরা এবং গোশত যে এইখানটাতেই আছে;););)।তাই হয়তো আমরা পশুটির জবাইয়ের সময় যে রক্ত গড়িয়ে পড়লো সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ ই করি না কারণ রক্তের তো আর আমাদের কোন প্রয়োজন নেইX(X(X(।আপনি যদি মাটির উপর জবাই করেন সেক্ষেত্রে হয়তো ময়লা পড়ে মাটি চাপা দেওয়া যায়।কিন্তু শহরে অধিকাংশ জায়গায় রাস্তার উপর কোরবানি দেওয়া হয়।সেক্ষেত্রে আপনি কি করবেন?তাই এমন ভাবে পূর্ব প্রস্তুতি নিন যা পরিবেশের জন্য হুমকির কারণ হবে না।সবাই হয়তো ব্যপার গুলো জানি তারপরও নিচে কিছু প্রস্তুতির স্তুতি বর্ণনা করলাম।

০১।প্রথমেই জবাই করার সময় এমন একটা জায়গা নির্ধারণ করুণ যেখানে মাটি আছে।এবার খানিক টা অংশ গর্ত করে জবাই এর সময় পশুটিকে এমন ভাবে ধরুন যেন পশুটির রক্ত ঐ গর্তে পড়ে।
০২।যারা শহরে থাকেন তাদের জন্য হয়তো মাটির অস্তিত্ব পাওয়া ভাগ্যের ব্যপার।কিন্তু তাই বলে তো আর কোরবানি থেমে থাকবে না।তাই এমন একটা জায়গা নির্ধারণ করুণ যে জায়গাটা ড্রেনের কাছাকাছি।যেন জবাইয়ের পর পশুর রক্ত পানি দিয়ে ধুয়ে আপনি ঐ ড্রেনে ফেলে দিতে পারেন।
০৩।এবার পশুটিকে যে জায়গাটিতে শুইয়ে আপনি চামরা ছিলবেন তার আগে ঐ জায়গাটিতে এমন কিছু একটা বিছিয়ে রাখুন যেন চামরা ছড়াতে গেলে যে রক্ত এবং আবর্জনা তা ঐ বিছানো জিনিসটির উপরই থাকে।
০৪।এবার গোশত ভাগাভাগি কিংবা কাটাকাটি করার পর অনুগ্রহ করে বাসায় যাবার আগেই ঐ বিছানো জিনিসটা সমেত যারা গ্রামে তাঁরা মাটি চাপা এবং যারা শহরে থাকেন তাঁরা নিকটস্থ ডাস্টবিনে এমন ভাবে রাখুন জাতে কুকুর এসে ওগুলো আবার রাস্তায় নিয়ে না ফেলতে পারে।কারণ পরিবেশটা আমাদের ই একে রক্ষার দায়িত্ব ও আমাদের।
০৫।শহরে অনেক সময় ই দেখা যায় গরুর পাকস্থলী বা ভুরি আমরা জত্রতত্র ফেলি।এ ভুলটিও যেন আমরা না করি এবং কেউ হয়তো এ ভুলটি করছেন তাকেও যেন আমরা জিনিসটি বুঝিয়ে ডাস্টবিনে ফেলার ব্যবস্থা করি।
০৬।পরিশেষে যে জায়গায় এই সমস্ত কার্যাদি সম্পন্ন হয়েছে সেই জায়গাটা ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি অথবা ডিটারজেন্ট মিশ্রিতপানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।


পরিশেষে কিছু বলি,এক সময় এ দেশে ফ্রীজ নামক বস্তুটির আমদানী ছিল না।তখন দেখতাম যারা অল্প সংখ্যক লোকের পরিবার তাঁরা তাদের ভাগের অর্ধেক ও গরীব মিসকিন দের দান করে যেতেন।জিনিসটা আমার ভালো লাগতো।কিন্তু ইদানীং পুরো ভাগটা তো নেনই উপরন্তু অন্যের ভাগ থেকেও পারলে কিছু নিয়ে যায়।এমন ও দেখেছি কিছু জায়গায় কিছু গরীব লোক পায়নি কিন্তু গৃহকর্তা তার ভাগটি ঠিকই তাদের সামনে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।যদি আমাদের আরেকটু সামরথ থাকে তাহলে যে গরীব লোক গুলো পাইনি আমরা যেন তাদের কেও বঞ্চিত না করি।ফ্রীজ আছে বলেই আমরা সব নিয়ে ফ্রীজে রাখব এ কেমন কথা।কারণ যে লোক গুলো আপনার কাছে এসেছে সে হয়তো কয়েকমাস গোশতের কিংবা একটু ভালো খাবার চোখেও দেখেনি।আর আপনিও সাড়া বছরে দানের এই সুযোগের মত সুযোগ কিছুতেই পাবেন না।আর একবার একজন ক্ষুধার্ত, একজন গরীব লোককে সাহায্য কিংবা নিদেন পক্ষে একবেলা খাইয়েই দেখুন না।গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনি যে ত্তৃপ্তি পাবেন তা অনেক বাদশাহী খাবার খেয়েও পাবেন না।তাই আসুন সবাই মিলে যার যতটুকু সামরথ আছে ততটুকু দিয়েই সাহায্য করি আমাদের গরীব ভাইদের।সবাইকে আরেকবার শুভ কামনা জানায়।ঈদ মোবারক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ