রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১১

এক আসরের ইতিকথা

জলের প্লাবন এসেছিল! যদিও তার চোখে প্লাবন ছিল (যেন) অনন্ত কাল ধরে। যেদিন থেকে লজ্জাবতী লাজে মরতে শিখেছে সেদিন থেকে। কারণ- তাকে ঘোমটার আঁড়ে লাজে মরতে দেখেছি, অন্তসলিলার মত বইতে দেখেছি, যদিও অঝোর ধারায় চোখের জল-সিঞ্চন কখনও কখনও- চাঁদের তিথিতে সাকার হত; আর সেদিন তটিনীও উত্তাল হত ঊর্মির সফেন মালায়। 

নগরের সকালে একদিন বেশ কোলাহল ছিল, শঙ্কার ডঙ্কা- আর কৌতূহল ছিল; সকাল না হতেই- রাজপথে দাঁড়িয়ে বুক-চাপড়ে কাঁদছিল হতভাগী প্রৌড়া। সে নাকি শেষ রাতে স্বপ্নে দেখেছে- নদী উঠে এসে কোলে করে নিয়ে গেছে কাকে। প্রৌড়ার কন্যাও ডুবেছিল বিশ-ভাদ্র আগে সাঁতরাতে গিয়ে এক অমানিশায়। 

তারপর বিতে গেল এক পক্ষকাল! হ্যাঁ, যা বলছিলাম- প্লাবন এসেছিল। 
ঋতুস্নানে জলে পড়েছিল তার এক পায়ের ঘুঙুর; খুঁজতে খুঁজতে সে গড়ালো দুপুর, তবু প্রয়াস যত তত বৃথা ছিল। বেলা অবসান শেষে কখন যে সন্ধ্যা নামল সে দেখেনি, কালো তিথির সর্বনাশ ডিঙাতে পারেনি। তার পরনের রেশমী-পীতাভ শাড়ী ঘাটে পড়ে রইল, আর- তার কালো চুল কালো জলে হারিয়েই গেল। নিমিষেই হারিয়ে গেল!

তার কথা ছিল, সে রাতে জুড়াবে নগরের মন ঘুঙুরের জলসায় রাতের নেশায়। জলসা হয়েছিল- জলসা হলো সেদিন জল সায়রে, নগর ভেসে গেল ফেনিল অথই সুরায়। হ্যাঁ, সেদিন প্লাবনই এসেছিল!

সেদিন প্লাবন এসেছিল, প্রতীক্ষায় সেই শাড়ী নাকি তার এখন পীতাভ-পাথর হয়ে গেছে। এখন, আসরের ভগ্ন দেওয়ালে পরগাছা-বিরুতের নিলাজ সমাবেশ, এখনও নাকি মঙ্গলের রাত্রিতে বেজে উঠে এক পায়ের ঘুঙুর। সেই যে গড়িয়েছিল মঙ্গলের দুপুর!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ