ধারাবাহিকতায়...
নিজেকে নিয়ে চলমান গল্প লেখার শুরুটা শেষ হতেই নিজেকে বারবার একটা প্রশ্ন করেছিঃ গল্পটা আমি কেন লিখছি, এই গল্প লেখার উদ্দেশ্য কি? সম্ভাব্য উত্তর হতে পারে এই বয়সে এসে নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছি প্রতিনিয়ত, পেছন ফিরে ফেলে আসা অতীতকে দেখার ও পর্যালোচনা করার একটা লোভ দেখা দিচ্ছে। তো এই পর্যালোচনায় আমি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোন থেকে নিজেকে কতখনি মূল্যায়ন করতে পারবো তা বিরাট এক ধাঁধাঁ। আমার লেখায় আমি কি নিজেকে মহৎ হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস পাবো নাকি ক্ষুদ্র জীবনে যে মানুষগুলোর সংষ্পর্ষে আসার সৌভাগ্য হয়েছে তাদের ও তাদের সাথে আমার সম্পর্কের মিথোজীবিতাকেই প্রাধান্য দেব!
ইতিহাস রচনা হয় কালে কালে, কিন্তু সেই রচিত ইতিহাস প্রায়সই বায়সড জয়ী পক্ষের দিকে। তাই যেখানে ইতিহাসকেই নিরপেক্ষতার মানদন্ডে পুরোপুরি নিরপেক্ষ তকমা দেয়া সম্ভব নয় সেখানে আমার গল্প হয়ত আমার নিজের দিকেই কিছুটা ঝুকে থাকবে নিজের চরিত্র অঙ্কনে নিজেকে ভালোমানুষ হিসেবে প্রমান করা বা তুলে ধরার চেষ্টার মাধ্যমে। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো ঘটনা যখন যেভাবে ঘটেছিল তা অক্ষুন্ন রাখতে। স্মৃতি বিভিন্ন সময়ের ঘটনাকে একদম ঘটমান অতীতে যেমনটি ছিল তেমনটি হয়ত রাখতে দেবেনা। তবে আশাকরি পার্সেন্ট ডেভিয়েশন খুব একটা বেশিও হবেনা।
কোনাবাড়ির কোন স্মৃতি আমার মনে নেই। তবে বাবা-মা'র কাছে শুনেছি আমরা সেখানে ভালো ছিলাম। বাবা দিনরাত ব্যস্ত থাকতেন তাঁত-মাকু-সুতা-কাপড় নিয়ে আর মা ব্যস্ত থাকতেন আমাদের নিয়ে। আমাদের প্রতিবেশী ছিল কয়েক ঘর চাকমা অথবা গাঁড়ো পরিবার। তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। তবে আমি ছোটবেলায় বেশ শান্ত স্বভাবের ছিলাম বলে অনেকেই বলেন; বিশেষ করে আমার মা। আমার দাবী-দাওয়া ছিল কম। কাগজ-কলম-রং পেন্সিল আর দেয়াল এই ছিল আমার খেলার সাথী।
আমার বোনের বয়স যখন পাঁচ তখন আমরা কোনাবাড়ি ছেড়ে চলে আসি বোর্ড বাজারে, গ্রামের নাম দক্ষিন খাইলকুর। আমার বয়স তখন তিন। আমরা ভাড়া থাকতাম একজন কর্নেলের বাড়িতে একটা কামরায়। আমার বয়স যখন পাঁচ তখন আমাকে একবার বটতলা প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু আমি স্কুলে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী ছিলামনা। আমার বোন তখন বড় ওয়ানে পড়তো। আর আমি আমার বোনের পাশে বসে ওর পড়া দেখতাম।
রুবীকে পড়াতেন সামসুল স্যার। স্যারের একটা চোখ ছিল নষ্ট, একদম স্বচ্ছ। আমার বোন স্যারকে খুব ভয় পেত কারণ পড়ালেখা বিষয়ে ওর মাথা কাজ করতোনা একদম। ও কোন পড়া না পারলে স্যার আমাকে বলতেনঃ
- রিয়াজ তুমি কওতো দেখি।
- এইটা রিডিং পড়।
- ২ আর ৭ গুন করলে ১২ হয় নাকি ১৪!
আমি পড়াগুলো পারতাম। তখন আমার বোনকে একটা শাস্তি দেয়া হত। সেই শাস্তিতে আমার একটা দাপুটে ভূমিকা ছিল কারণ বোনের কান আমিই মুলে দিতাম। আর লজ্জায় বোনের চোখ জলে ভরে উঠতো। অবশ্য স্যার চলে গেলে কানমলার বদলে কিছু শাস্তি আমার কপালেও জুটতো, বিশেষ করে বোনের হাতের চিমটি!
... ... চলবে
নিজেকে নিয়ে চলমান গল্প লেখার শুরুটা শেষ হতেই নিজেকে বারবার একটা প্রশ্ন করেছিঃ গল্পটা আমি কেন লিখছি, এই গল্প লেখার উদ্দেশ্য কি? সম্ভাব্য উত্তর হতে পারে এই বয়সে এসে নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছি প্রতিনিয়ত, পেছন ফিরে ফেলে আসা অতীতকে দেখার ও পর্যালোচনা করার একটা লোভ দেখা দিচ্ছে। তো এই পর্যালোচনায় আমি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোন থেকে নিজেকে কতখনি মূল্যায়ন করতে পারবো তা বিরাট এক ধাঁধাঁ। আমার লেখায় আমি কি নিজেকে মহৎ হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস পাবো নাকি ক্ষুদ্র জীবনে যে মানুষগুলোর সংষ্পর্ষে আসার সৌভাগ্য হয়েছে তাদের ও তাদের সাথে আমার সম্পর্কের মিথোজীবিতাকেই প্রাধান্য দেব!
ইতিহাস রচনা হয় কালে কালে, কিন্তু সেই রচিত ইতিহাস প্রায়সই বায়সড জয়ী পক্ষের দিকে। তাই যেখানে ইতিহাসকেই নিরপেক্ষতার মানদন্ডে পুরোপুরি নিরপেক্ষ তকমা দেয়া সম্ভব নয় সেখানে আমার গল্প হয়ত আমার নিজের দিকেই কিছুটা ঝুকে থাকবে নিজের চরিত্র অঙ্কনে নিজেকে ভালোমানুষ হিসেবে প্রমান করা বা তুলে ধরার চেষ্টার মাধ্যমে। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো ঘটনা যখন যেভাবে ঘটেছিল তা অক্ষুন্ন রাখতে। স্মৃতি বিভিন্ন সময়ের ঘটনাকে একদম ঘটমান অতীতে যেমনটি ছিল তেমনটি হয়ত রাখতে দেবেনা। তবে আশাকরি পার্সেন্ট ডেভিয়েশন খুব একটা বেশিও হবেনা।
কোনাবাড়ির কোন স্মৃতি আমার মনে নেই। তবে বাবা-মা'র কাছে শুনেছি আমরা সেখানে ভালো ছিলাম। বাবা দিনরাত ব্যস্ত থাকতেন তাঁত-মাকু-সুতা-কাপড় নিয়ে আর মা ব্যস্ত থাকতেন আমাদের নিয়ে। আমাদের প্রতিবেশী ছিল কয়েক ঘর চাকমা অথবা গাঁড়ো পরিবার। তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। তবে আমি ছোটবেলায় বেশ শান্ত স্বভাবের ছিলাম বলে অনেকেই বলেন; বিশেষ করে আমার মা। আমার দাবী-দাওয়া ছিল কম। কাগজ-কলম-রং পেন্সিল আর দেয়াল এই ছিল আমার খেলার সাথী।
আমার বোনের বয়স যখন পাঁচ তখন আমরা কোনাবাড়ি ছেড়ে চলে আসি বোর্ড বাজারে, গ্রামের নাম দক্ষিন খাইলকুর। আমার বয়স তখন তিন। আমরা ভাড়া থাকতাম একজন কর্নেলের বাড়িতে একটা কামরায়। আমার বয়স যখন পাঁচ তখন আমাকে একবার বটতলা প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু আমি স্কুলে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী ছিলামনা। আমার বোন তখন বড় ওয়ানে পড়তো। আর আমি আমার বোনের পাশে বসে ওর পড়া দেখতাম।
রুবীকে পড়াতেন সামসুল স্যার। স্যারের একটা চোখ ছিল নষ্ট, একদম স্বচ্ছ। আমার বোন স্যারকে খুব ভয় পেত কারণ পড়ালেখা বিষয়ে ওর মাথা কাজ করতোনা একদম। ও কোন পড়া না পারলে স্যার আমাকে বলতেনঃ
- রিয়াজ তুমি কওতো দেখি।
- এইটা রিডিং পড়।
- ২ আর ৭ গুন করলে ১২ হয় নাকি ১৪!
আমি পড়াগুলো পারতাম। তখন আমার বোনকে একটা শাস্তি দেয়া হত। সেই শাস্তিতে আমার একটা দাপুটে ভূমিকা ছিল কারণ বোনের কান আমিই মুলে দিতাম। আর লজ্জায় বোনের চোখ জলে ভরে উঠতো। অবশ্য স্যার চলে গেলে কানমলার বদলে কিছু শাস্তি আমার কপালেও জুটতো, বিশেষ করে বোনের হাতের চিমটি!
... ... চলবে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন