শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১১

টিপাই বাধের ক্ষতিকর দিক বুঝতে একটি খুব সাধারণ বৈজ্ঞানিক মডেল

নিচের লিঙ্কটা দেখুন - Click This Link

এটা ওপেনসোর্স সুতরাং আনুবাদ অথবা নুতন তথ্য সংযোগ করতে পারেন।

অফিসিয়াল ফেইসবুক মেসেঞ্জার

অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে খুব সম্ভবত ফেইসবুক তার উইন্ডোজ ৭ বেইজড মেসেঞ্জার সফট্ওয়্যার রিলিজ করেছে। যদিও এ ব্যাপারে আমি এখনো ফেইসবুক থেকে কোন নোটিফিকেশন পাইনি। সফট্ওয়্যারটির ডাউনলোড লিঙ্ক পাবেন এখানে

বিদায়

যদি হঠাৎ হারিয়ে যাই-
জানি খুঁজবে না আমায়,
মনে মনে খুশি হবে ;
ভাববে, ভালই হয়েছে-
আপদ বিদেয় হয়েছে !

মনের ভেতর জমে থাকা ক্ষতগুলো
বড় বেশী পোড়ায় ইদানীং,
যন্ত্রণার তীব্রতায় নিজেই নিজেকে
শেষ করে দিতে চায় ।

এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চাই আমি
তাইতো বহু দূরে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি,
নিজের ভেতর অন্য এক ‘আমি’-র অস্তিত্ব;
সবকিছু থেকে নিজেকে গুঁটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ।

বিষণ্ণ একাকীত্বকে সঙ্গি করে পথে নামলাম
ভেবো না ফিরে আসব ।
ভালবাসার দাবিগুলো তুলে নিলাম,
আজ থেকে তুমি স্বাধীন ;
ইচ্ছে মতো উরে বেড়াও
এডাল থেকে ওডালে...

ভুল.


ভুল.....

তেলের মূল্য ও জনগন

সরকারি অফিস এর এক এক টা গাড়ি দেখেছেন?? ২৫০০-৪২০০ সিসি পর্যন্ত আছে।এমনকি ইউপি চেয়ারম্যান এর ও পাজেরো জিপ। তাদের ফ্রী তেলের খরচ জংন কেনো দিবে??? সামরিক যান গুলো একটু হলেও ভারী হয়। তারমানে এইনা যে ঢাকা শহরে ৪২০০ সিসি র জীপ দরকার। সেডান কার ব্যবহার করলে ক্ষতি কি??? কেউ কি জবাব দিবেন??

ইঞ্জিনিয়ারিং উপদেষ্টার অনিয়ম, পৌনে ৫ লাখ টাকা..

অনিয়ম করে এক ইঞ্জিনিয়ারিং উপদেষ্টাকে ৪,৫৯,২০০/- টাকা ভাতা প্রদানের প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল এর কার্যালয়।

সরকার মালিকানাধীন এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানী লিঃ এর ২০০৬-০৭ অর্থ বছরের বিশেষ নিরীক্ষাাকালে পরিচালনা পষゥদের অনুমোদন বィতীত সাবেক ইトিনিয়ারিং এィাডভাইজারকে স、ァানী ভাতা পヨদান করায় পヨতিনের カতি ৪,৫৯,২০০/- টাকা টাকা ক্ষতি হয়েছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১৩২ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট পেশকৃত প্রতিবেদনে আরো অনেক অনিয়মের নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল এর কার্যালয়।

২০০৬-০৭ সালের নিরীক্ষাকালে ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যাডভাইজার নিয়োগ সংμান্ত নথি, লেজার, বিল ভাউচার পর্যালোচনায় দেখা যায় পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়াই সাবেক ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যাডভাইজার জনাব মোঃ আজিজুর রহমানকে সম্মানী ভাতা প্রদান করা হয়।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিচলনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়াই এপ্রিল/০৭ পর্যন্ত কর্ম¯’লে বহাল থেকে সম্মানী গ্রহণ করায় ৪,৫৯,২০০/- টাকা ক্ষতি হয়েছে।

এ টাকা আদায় করার সুপারিশ করা হয় নিরীক্ষায়।

তবে, এ টাকার ভাগ কারা পেয়েছে? কারা এ অনিয়মের সাথে জড়িত? তা কি জানা যাবে না?

আহমদ ছফার কল্পকন্যা রওশন আরা

আহমদ ছফার রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক প্রবন্ধের একটা প্রবন্ধের নাম কল্পকন্যা রওশন আরা।এই রওশন আরা এক বীর বাঙালী নারী।যে বুকে মাইন নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিলো পাকিস্তানি ট্যাংকের সামনে।

তাকে নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে।প্রবন্ধে বলা আছে, তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে দুটি নাটক, কিছু গান ও কিছু কবিতা।

ছফা লিখেছেন,

এই বিক্রমশালী কন্যার তারিফ করে প্রমথ নাথ বিশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের চেয়ে অধিক লম্বা কবিতা লিখেছিলেন।আপনারা সকলেই একমত হবেন।বিশী মশায় উৎকৃষ্ট রবীন্দ্র ভক্ত ও নিকৃষ্ট কবি ছিলেন।সেই কারনে তার কবিতা আমার স্মৃতি ধরে রাখে নি।

আমাদের এই কন্যাকে নিয়ে নাটক লেখা হয়েছিল দু খানা।এক খানি লিখেছিলেন সিপিআই অন্যখানি কংগ্রেস।সিপিআইয়ের নাটকখানা রওশন আরা দিবসে অভিনীত হয়েছিল এবং কংগ্রেসের নাটকখানি ছিল রওশন আরার স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত।

নাটকে যে গান গুলো ছিল তার উল্লেখ ও আছে কিছুটা প্রবন্ধে,

রওশন আরা বোনটি আমার/
কোন গায়েঁতে ছিলো তোমার ঘর/
সেথায় কি আজ বুটের তলে/
আকাশ বাতাস রৌদ্র জ্বলে/
ধু ধু করে পদ্মা নদীর চর/

অন্য গান,

শহীদ আমার ভাই ভগিনি/
শহীদ রওশন আরা/
তোমারা সবাই প্রানের আগুন/
চোখের ধ্রুবতারা/

রওশন আরা নিয়ে কতটা মাতামাতি হয়েছিলো তার একটা বর্ননা আছে,

সে সময়ে যাঁরা আনন্দ বাজার, স্টেটসম্যান, হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড, অমৃতবাজার এই সকল পত্র পত্রিকা পাঠ করেছেন; অল ইন্ডিয়া রেডিও র ধারাভাষ্য শুনেছেন তারা স্বীকার করতে কুন্ঠিত হবেন না ভারতে হালফিল যে কন্যাকে নিয়ে মাতামাতি করছে, তার চাইতেও রওশন আরার মরতবা কত বড় ছিল, কতো পবিত্র ছিলো!এই কন্যার শরীর ধূপের ঘ্রান দিয়ে তৈরী।কেননা কল্পনার কোমল উতস থেকেই তার জন্ম।কোনো কামগন্ধ তাকে স্পর্শ করে নি।

কেউ যদি বলে বসে ওহে আহমদ ছফা তোমার কথা মানব না।কারণ তুমি সত্যের মত কর মিথ্যা বল, মিথ্যের মত করে সত্য বলো।এই ধরনের নিন্দুকের মুখ বন্ধ করার জন্য আমি সংবাদ পত্র ঘেটে আস্ত আস্ত প্রমাণ হাজির করব।বলবো পড়ুন গিয়ে ৯৩ সালের হোসেন আলীর ডায়রী।মর্নিং সান পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।হোসেন আলী প্রথম ব্যাক্তি যিনি কলকাতার পাকিস্তান হাইকমিশনে বাংলাদেশের বাওটা উড়িয়েছিলেন।স্বাধীনতার পর তার পদোন্নতি হয় নি বলে যদি তার কথা বিশ্বাসযোগ্য মনে না হয়, সেক্ষেত্রে ভারতীয় পত্র পত্রিকা থেকে হাজার হাজার ক্লিপিং আপনাদের সামনে হাজির করব।আপনারা মেনে নিতে বাধ্য হবেন, আহমদ ছফা মিথ্যে বললেও স্বাক্ষ্য প্রমাণ রেখে মিথ্যা বলে।

এই সংবাদ্গুলোর একটি ছিল এরকম প্রখ্যাত কংগ্রেস নেত্রী অরুণা আসফ আলী একদল মহিলা সহ আগ্রা থেকে দিল্লী পদযাত্রা করেছেন এবং তার দলটির নাম রওশন আরা বাহিনী।রওশন আরা ব্রিগেড স্কোয়াড কতো যে গঠিত হয়েছিলো সে কথা কী আর বলবো।বেকার এবং স্থুলকায় মহিলারা একটি মনের মতো কাজ পেয়ে গিয়েছিলেন।



এই রওশন আরার স্রষ্টা ছিলেন বিকচকান্তি চোধুরী।বিকচকান্তি আগরতলা সংবাদ নামে একটি পত্রিকার সাংবাদিক ছিলেন।পত্রিকায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য উতসাহ মূলক অনেক মিথ্যা অপারেশন, গেরিলা হামলা ইত্যাদির কথা লিখতেন।ছফা লিখেছেন, যুদ্ধ লেগে যাবার পর সংবাদ এ ইয়াহিয়ার সৈন্যবদ করার চাকরিটা সে পেয়েছে।এ পর্যন্ত যতো ট্যাংক ধ্বংশ করেছে সবগুলো টোটাল দিলে দেখা যাবে দুই মহাযুদ্ধেও অতো ক্ষয়ক্ষতি হয় নি।বিকচের বিক্রমশালী প্রতিভা।

একদিন বিকচ ফুলিজান নামক এক মেয়ের কাহিনী লিখে ছফা কে দেখান।ফুলিজান নামে ১৮ বছরের এক যুবতী বুকে মাইন বেঁধে পাক ট্যাংকের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।অকুস্থলেই মেজর জেনারেলসহ তেইশ জন সৈন্য নিহত।

ছফা নামটা বদলে দিলেন রওশন আরা।আরো লাগিয়ে দিতে বললেন সে ইডেন কলেজে ইকোনোমিক্স অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে, নারী সুইসাইড দলের নেত্রী,শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নি হয়।

পত্রিকায় ছাঁপা হল নিউজ।মানুষ মুগ্ধ হল রওশন আরার সাহসে।উদ্দীপ্ত হল মুক্তিযোদ্ধারা।একেক পত্রিকায় একেক সাংবাদিক তার মনের মাধুরী মিশিয়ে আকঁতে থাকলে রওশন আরার ছবি।

সেই থেকে রওশন আরা হয়ে উঠল জীবন্ত এক চরিত্র।

ছফা তার প্রবন্ধ শেষ করেছেন এরকম ভাবে,

রওশন আরার কথা কেউ বলে না আর।তার স্মৃতি বুকে নিয়ে এক আমি বসে থাকি।এই রকম একটি মেয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে জন্মাতে পারত।যদি যুদ্ধটা আমরা নিজেরা করতাম,যে কোনো সাধারণ মেয়ে রক্ত-মাংসের বীরাঙ্গনা হিসেবে বিকশিত হয়ে উঠতে পারতো।তাকে নিয়ে কবি কালজয়ী কাব্য লিখতেন।হায়রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, হায়রে কল্পকন্যা “রওশন আরা”।


খুন

সকালের বাসি সংবাদ। তারপরও শেয়ার করলাম। কেউ মিস করে থাকতে পারেন।

একটি টেলিভিশনের প্রতিবেদনের বরাতে আমরা অনেকেই জেনেছি যে তিতাস এখন ‘খুন’ হয়ে যাওয়া একটি নদের নাম! সংবাদের সেই ক্লিপটি যে কত হাজারবার সামাজিক যোগাযোগের প্লাটফর্ম ও ব্লগগুলোতে শেয়ার হচ্ছে, তার হিসাব নেই। খবরের কাগজে বা মুদ্রণ মাধ্যমে অবশ্য এই তৎপরতার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। কিন্তু কয়েক দিন ধরে ভার্চুয়াল জগতে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঘটনা এই তিতাস নদের ‘খুন’। শোক পাখা মেলেছে অদ্বৈত মল্ল বর্মণের উপন্যাস এবং ঋত্বিক ঘটকের চলচ্চিত্র তিতাস একটি নদীর নামকে ঘিরে, কখনো বা আল মাহমুদের কবিতার ছন্দে। মেঘনার পেট থেকে জন্ম নেওয়া এই অসম্ভব সুন্দর নদ তিতাস বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন জনপদের মাঝ দিয়ে বয়ে শেষে বিলীন হয়েছে আবারও মেঘনাতেই। তার পায়ের মল যেখানেই বেজেছে, সেখানেই আমরা পেয়েছি লোকসংগীতের বিশাল ভান্ডার। কিন্তু তিতাস খুন হলো কীভাবে?
একুশে টেলিভিশন যে প্রতিবেদন প্রচার করেছে তা রীতিমতো রোমহর্ষক। আমার মতো দুর্বলচিত্তের জন্য তো বলাই বাহুল্য। বস্ফািরিত চোখে দেখলাম, একপাশে রেলসেতু আর অন্য পাশে সড়কসেতু রেখে একটা নদীকে আড়াআড়ি ভরাট করা হয়েছে পাথর আর সিমেন্টের বস্তা দিয়ে! ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়ার মাঝখানে কোনো এক জায়গায়। অবশ্য ভরাট রাস্তার নিচে তিন ফুট ব্যাসের কংক্রিটের পাইপ আছে কয়েকটা। নদীর চলাচলের জন্য! কংক্রিটের পাইপ দিয়ে নদী পার করে দেওয়ার চেয়ে সুঁইয়ের ছিদ্র দিয়ে আস্ত কম্বল পার করে দেওয়া বরং সহজ! এই মন্তব্য করেছেন ব্লগার দিনমজুর, তিতাস নদ নিয়ে সামহোয়ারইনব্লগে তাঁর লেখায়। এই খুন শুধু যে এক জায়গায় হয়েছে, তা নয়। ব্লগার আলী মাহমেদ তাঁর ব্যক্তিগত ব্লগে জানাচ্ছেন, আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত তিতাস নদ ও এর ডালপালার ওপর ব্রিজ ও কালভার্ট আছে কমপক্ষে ২৭টা। বাঁধ দেওয়া হয়েছে সব জায়গায়, বানানো হয়েছে রাস্তা, নদের বুক চিরে।
কিন্তু কেন এই নদ খুন? ভারতকে দেওয়া ট্রানজিটের শর্ত অনুযায়ী, আশুগঞ্জ থেকে সাড়ে তিন শ টন ওজনের ১২০ ফুট লম্বা ওডিসি বা ওভার ডাইমেনশনাল কার্গো আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ত্রিপুরায় যাবে। কিন্তু আশুগঞ্জ-আখাউড়া সড়কে যেসব ব্রিজ বা কালভার্ট আছে তা এ ধরনের ভারী পরিবহনের জন্য উপযুক্ত নয়। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্বাভাবিক যে রাস্তাটি ছিল, সেটি হলো ব্রিজগুলোকে চলাচলের উপযোগী করে তোলা। কিন্তু সেটি সময়সাপেক্ষ, আবার তাতে খরচও অনেক। গরম গরম ট্রানজিট-ভালোবাসায় তত ধৈর্য রাখার জায়গা কোথায়? সে কারণেই ক্ষীণতোয়া তিতাসের গলা টিপে রাস্তা বের করাটাকে সহজ সমাধান ভেবে নিয়েছে ট্রানজিটের রূপকারেরা!
মুদ্রণ মাধ্যম যেখানে নীরব, সেখানে টেলিভিশনের দুই মিনিটের একটি প্রতিবেদনে কতটুকুই আর প্রকাশ পাবে? ফলে সক্রিয় হয়ে ওঠে বিকল্প মাধ্যমগুলো। ব্লগারদের অনেকেই সরেজমিনে পরিদর্শন ও তথ্য যাচাই করেছেন। দিনমজুরের ব্লগে দেওয়া ছবি থেকে জানা যাচ্ছে কীভাবে এসব ভরাট সড়কের নিচের নদী-বাইপাসগুলো নানা বর্জ্যে আটকে গেছে, ব্রিজগুলো কীভাবে বিপজ্জনকভাবে বেহাল হয়ে আছে। সিটিজেন জার্নালিজম কীভাবে কাজ করে এটা যাঁরা জানতে চান, তাঁরা এঁদের ব্লগগুলো ঘুরে আসতে পারেন। আমার এই লেখাটিও তৈরি হয়েছে ব্লগের বিভিন্ন লেখা থেকে তথ্য-উপাত্ত সহায়তা নিয়ে। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে তাদের প্রকাশভঙ্গিও ধার করেছি।
জানা যায়, ট্রানজিটের আওতায় তিতাস নদ ভরাট করা রাস্তার ওপর দিয়ে যেসব মালামাল পরিবহন হয়েছে, তার অধিকাংশই ত্রিপুরায় নির্মীয়মাণ পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য। আগামী ১৫ মে চালু হতে যাওয়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন করবে ৭২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং এর থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশের। এ নিয়ে নীতিনির্ধারণী মহলে সমঝোতা হয়েছিল বলেও শোনা যায়। কিন্তু টিপাইমুখের মতো এখানেও লাভের খাতায় শূন্য যোগ হতে চলেছে। আগরতলা থেকে প্রকাশিত ডেইলি দেশের কথা পত্রিকার ১২ ডিসেম্বর সংখ্যার বরাত দিয়ে ব্লগার আলী মাহমেদ বিদ্যুৎ বণ্টনের হিসাবটি তুলে ধরেছেন তাঁর ব্লগে। সেখানে দেখা যায়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের ভাগ-বণ্টনেই ৭২৬ মেগাওয়াট শেষ, বাংলাদেশের জন্য কিছু নেই।
বাকি থাকে ট্রানজিট শুল্ক মারফত নগদ লাভের সুযোগ। গত ৪ অক্টোবর পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি এক আলোচনায় জানান, প্রযোজ্য সব চার্জ দিয়েই নাকি এই পরিবহন হচ্ছে। কিন্তু একুশে টেলিভিশনের পরবর্তী এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ট্রানজিটের ব্যাপারে প্রযোজ্য কোনো শুল্কই আদায় হচ্ছে না। বরং ভর্তুকি দিয়ে ট্রানজিট চালানো হচ্ছে বলে সেই প্রতিবেদনে মতামত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
সব মিলিয়ে যেটা দাঁড়ায় তা হলো, নগদ ও বাকি লাভালাভের যেসব মুলা ঝুলিয়ে ট্রানজিট চালু করা হয়েছে, সেগুলো ইতিমধ্যেই সোনার পাথরবাটি। চালু হয়েছে ট্রানজিট, সরকার নীরবে গুনছে ভর্তুকি আর খুন হয়ে গেছে তিতাস নদ। অতীতে ফারাক্কার মতো বাঁধ দিয়ে গোটা উত্তরবঙ্গের নদীগুলোকে কোমায় পাঠিয়েছে ভারত, অচিরেই টিপাইমুখ চালু করে এই খামাখা মুমূর্ষু হয়ে বেঁচে থাকার ঝামেলা থেকে বাংলাদেশের নদীগুলোকে চিরতরে মুক্তি দেবে সে, আশা করা যায়। বড়র পিরিতি বালির বাঁধ কে বলে, রীতিমতো জন্ম-জন্মান্তরের বাঁধ-বন্ধন! এ যেন জয় গোস্বামীর কবিতার মতো প্রেম: ‘নিঃশ্বাস নিতে দেব না তোমাকে নিঃশ্বাস নিতে দেব না!’ উত্তরবঙ্গের জন্য যেখানে বাঁধ, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের জন্য সেখানে ট্রানজিট-সড়ক।
এক নবীর আঙুলের ইশারায় নীল নদ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল আর তিতাস ভাগ হলো ভারতেশ্বরের ইশারায়। নীল নদ ভাগ হয়ে গিয়েছিল স্রোতধারার স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী দুটি আলাদা আলাদা স্রোতধারায়। অলৌকিক উপকথায়ও যে বিভক্তি কল্পনা করা হয়নি, তিতাস সেই দুঃস্বপ্নকেই বাস্তবে পরিণত করেছে আড়াআড়ি দুই খণ্ড হয়ে গিয়ে। কিন্তু প্রতিদানে কী পাবে বাংলাদেশ? বিধাতা যেসব লাভের টোপ ঝুলিয়েছিলেন, সেগুলো এই কদিনেই আকাশের তারা হয়ে গেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিকে সান্ত্বনা দিতে বাকি থাকল শুধু সুকুমার রায়ের ‘পেনসিল’ আর রবীন্দ্রনাথের গান: ‘আমার যেসব দিতে হবে সে তো আমি জানি!’

নারী

দূরে চেয়ে দেখি দূরে
যেখানে পথ মিলেছে কোন অভাগিনীর ধারে,
দূর জানালায় ভাগ্যহতা নারী
স্বপ্নের যার করুন শেষ জীবনের অনাহারে।

আরও অদূরে আরেক ভাগ্যহতা নারী
শত জীবনের স্বপ্ন যে ভাঙ্গে হেয়ালীপনা করে,
স্বপ্ন দেখিয়ে স্বপ্ন ভাঙ্গায়,যে খুঁজে পায় নারীত্বের গৌরব
অন্যের স্বপ্ন হত্যা করে যে হারে ।

এই দু্ই ভাগ্যহতা নারী মাঝখানে এক ভাগ্যবতী-
যার প্রেরনায় অজস্র প্রাণ নতুন করে বাঁচতে পারে....

এইতো সে সত্যিকারের নারী !
যাকে দেখে মনে হয় কিছু মানুষ, মানুষ গড়ে
নারী ! ওরা সবাই নারী-কিন্তু হায় !
তবু দূরত্ব ওদের মিলেনা কখনো এক সীমানায়...

আহা মায়া হে মায়া

পায়ে বেড়ির বয়স তখন উনিশ,
পায়ে বেড়ি আমার সাথে ছিলো বারোটি বছর,
এখন তিরিশোর্ধ বয়স তবে তার?
এভাবে অংক হলো শেখা;
অংকের ভেতর অনেকগুলো জীবন হলো লেখা,
জীবনগুলো হাঁটতে শেখে চলতে শেখে
পড়তে শেখে জোড়তে শেখে দৌড়াতেও শেখে,
দৌড়াতে দৌড়াতে ভাবতে শিখতে পারে যে,
অনেক জীবনের আবার মানেই থাকে না।

জীবনের কাঁধ ঘেষে দুঃখ এসে দাঁড়ায় খালি গায়ে,
মাঝে মাঝে তিরিশোর্ধের গলায় আটকে থাকে।
দুঃখগুলো তিরিশোর্ধের বুকের ডানদিকটাতে
অসুখ, আর দুঃখগুলো তিরিশোর্ধের বুকের তিলটাতে
উঠে লাফ দেয় আমার বুকের উপর,
আমার বুকের উপর উঠে মাড়িয়ে দেয় হাড়-পাঁজর,
আর খান খান হয়ে যাওয়া বুক নিয়ে আয়নার
ভেতর কালো রঙ দেখি একটা দীর্ঘ ছায়া দেখি,
ছায়ার অপর পারে কালাপাতার আড়াল সরিয়ে
একটা আবছা মুখ দেখি,
চেনার মধ্যে অচেনারা হাসে,
আমার নবুয়ত লাভের বয়স পার হয়ে যায়।
আচ্ছা, আমিও তবে রাখাল বালক?
আমার হাতে বাঁশি, রাধিকার মনে পরকীয়ার যাতনা!

তিরিশোর্ধ মেয়েটির স্বপ্ন মুখ বাড়ায়,
মুখটা লাফিয়ে পড়ে শান্ত দীঘির জলে, বৃত্তকার টেউ
দৌড়ে এসে খামচে ধরে কাঁধ, তখন মেয়েটি দীঘির
তীর ভেঙে ঢেউগুলো বইয়ে দেয় নদীতে সাগরে,
স্বপ্নগুলো বইতে দেবে আকাশ পারে।

নদীর জলে শুভদৃষ্টি ফেলে ঢেউগুলো কুড়িয়ে
বুকে জড়িয়ে নিয়ে সুপ্রিয় কার্ল মার্ক্সের নাম নিয়ে
কেউ কী বলেছে তাকে- ‘চল আমরা ঘর ভরে তুলি!’

ইন্দিরা ভবনের নাম পরিবর্তন করে নজরুল ভবন নামকরণ এবং বিতর্ক

সল্টলেকের ইন্দিরা ভবনের নাম পরিবর্তন করে নজরুল ভবন নামকরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রি মমতা ব্যানার্জি । মুখ্যমন্ত্রি মমতা ব্যানার্জী বলেছেন , ইন্দিরা ভবনে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংগ্রহশালা ও গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে, তার জন্য আমরা অদ্যবধি কিছুই করিনি । এই উদ্দেশ্য ইন্দিরা ভবনের দায়িত্ব নগরোন্নয়ন দফতরের কাছ থেকে নিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কাছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রি । আর এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে বিতর্ক । কেননা প্রয়াত নেত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নাম পরিবর্তন করায় বেজায় চটেছেন কংগ্রেস নেতারা । আবার প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রি জ্যোতি বসু তার জীবনের শেষ কয়েকটি দিন এই ভবনেই কাটিয়েছিলেন । তবে বাম নেতারা ঐ ভবন থেকে জ্যোতি বসুর সমস্ত জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে রাজী হয়েছেন । বাম নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কাজী নজরুল ইসলাম তাদের কাছে অত্যন্ত পূজনীয়, তাই তারা এই নিয়ে কোন বিতর্কে যেতে রাজী নয় । ১৯৭২ সালে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর তার স্মৃতির উদ্দেশ্য শ্রদ্ধা জানাতে এই ভবটির নাম পূর্নকুটিরের পরিবর্তে ইন্দিরা ভবন রাখেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রি জ্যোতি বসু । এই জন্য বাম সরকার নামটি আর পরিবর্তন করেনি । কিন্তু নতুন করে নাম পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্তে পশ্চিমবঙ্গবাসীও দীধবাবিভক্ত । তবে মনে করা হচ্ছে একরোখা মমতা ব্যানার্জীর কাছে এই সব বিতর্ক ধোপে টিকবে না , কেননা মমতা ব্যানার্জীর সিদ্ধান্তও পশ্চিমবঙ্গবাসীর নিকট পূজনীয়

প্রত্যয়

একা আমি একটি কাঠের ভেলায় চড়ে
প্রগাঢ় অন্ধকারে
বেঁচে থাকার প্রত্যাশায়
নিগূঢ়ভাবে প্রার্থনা করি।

একা আমি নোনা জলের ঝাঁপটা
মৃত্যুকে কাছে থেকে দেখা
বাতাসে নোনা গন্ধ শুঁকে
ডাঙ্গার খোঁজে কাঠের ভেলায় ভেসে যাই।

একা আমি সমুদ্রের সুবর্ণ বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে
সূর্য ওঠার অপেক্ষায়
সুবিশাল জলরাশির রূপালী ঝিলিক
প্রত্যয় জাগায় মনে নতুনের আশা।

রাজাকারের চোখ রাঙ্গানো আর কত দিন......???


দিনবদলের প্রতিশ্রুতির তিন বছর

মহাজোট সরকারের ৩ বছর পূর্ণ হলো। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের চরম দুর্নীতি ও দুঃশাসন এবং তদারকি সরকারের জরুরি অবস্থার বিপরীতে তারা দিনবদলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ভালো কিছু হবে এ আশায় এবং একই সাথে মানুষের সামনে রাজনৈতিক কোনো বিকল্প না থাকায় মানুষ তাদের ভোট দিয়েছিল। নির্বাচনে বিপুল বিজয় ও সংসদে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা মহাজোটের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিশ্চিত করেছিল। ক্ষমতায় আসার প্রথম বছরে তারা অতীতের ক্ষত দূর করার কথা বলেছিলেন। তিন বছর শেষে অতীতের ক্ষত কতটুকু দূর হলো আর তাদের প্রতিশ্রুত ভবিষ্যৎ স্বপ্নের পথে দেশ কতটা এগোলো এ প্রশ্ন সবার।
সরকারের ৩ বছর পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশ ও টিভিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে সরকারের সাফল্যগাথা প্রচার করা হয়েছে - দেশ শনৈ শনৈ উন্নতির পথে অগ্রসরমান বলে দাবি করা হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি, রপ্তানী আয়বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি ইত্যাদি পরিসংখ্যান আর অংকের হিসাবে দেশের কথিত অগ্রগতির ফিরিস্তি আমাদের শোনানো হল। পরিসংখ্যান নিয়ে রসিকতা করে বলা হয়, মিথ্যা তিন প্রকার - মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা আর পরিসংখ্যান। হিসাবের মার-প্যাঁচের ফাঁকি নিয়ে মানুষ তাদের অভিজ্ঞতা একটি বাংলা প্রবাদে তুলে ধরেছে, ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নাই’। পরিসংখ্যান আর হিসাব যাই বলুক, আমাদের দেখার বিষয় জনগণের গোয়ালে কি আছে, কেমন আছে দেশের সাধারণ মানুষ।
এ আলোচনায় যাবার আগে আরেকটি কথা বলে নেয়া দরকার। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বর্তমানে ৬%, মাথাপিছু আয় ৭৮০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেছেন, ২০২১ সালে মধ্যআয়ের (অর্থাৎ মাথাপিছু আয় ২০০০ ডলার) দেশে পরিণত হতে তারা পিপিপি (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) এর মাধ্যমে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন। বিনিয়োগ বাড়লে জিডিপি বাড়বে, জাতীয় আয় বাড়লে মাথাপিছু আয়ও বাড়বে। সুতরাং ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট ও নগরী, ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকার পদ্মা সেতু, টেলিকম-গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতে উচ্চহারে নিশ্চিত মুনাফা লোটার উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ, সস্তাশ্রমের লোভে ইপিজেড ও গার্মেন্টস শিল্পে দেশী-বিদেশী পুঁজি আকর্ষণ,ব্যয়বহুল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালের সংখ্যাবৃদ্ধি, ফাইভস্টার হোটেল-পর্যটন-বিনোদন খাতে বিনিয়োগ, রিয়েল এস্টেট-শেয়ারবাজার-মাল্টিলেভেল মার্কেটিং-ব্যাংক-বীমার প্রসার ইত্যাদি হতে থাকলেই জাতীয় আয় বাড়তে থাকবে।
এই উন্নয়ন দর্শনে ব্যক্তিখাতই হচ্ছে অর্থনীতির পরিচালিকা শক্তি, সরকারের ভূমিকা নিছক সহজীকরণ করা। তাই শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বিদ্যুত-গ্যাস-পরিবহন-অবকাঠামো নির্মাণসহ যেসব দায়িত্ব এতদিন রাষ্ট্র পালন করেছে- তার সবকিছুই পিপিপি’র নামে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ টাকাওয়ালাদের মুনাফা বৃদ্ধিই দেশের উন্নয়ন।এই তথাকথিত উন্নয়নের ছিঁটেফোটা মাত্র ভাগ শ্রমিক-কৃষক-গরিব মানুষ পেতেও পারে। পক্ষান্তরে পিপিপি আর বেসরকারিকরণের জোয়ারে বিদ্যুত-গ্যাসের দাম বাড়বে, ব্যক্তিমালিকানাধীন সেতু ও রাস্তার টোল দিতে গিয়ে পরিবহন ব্যয় বাড়বে, প্রাইভেট হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দাপটে শিক্ষা-চিকিৎসা দুর্মূল্য হবে, হোটেল-এয়ারপোর্ট-হাউজিং নির্মাণের জন্য উচ্ছেদ হবে সাধারণ মানুষ। শেয়ারবাজারে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে কষ্টার্জিত সঞ্চয় খুইয়ে সর্বস্বান্ত হবে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা, তাদের টাকায় পকেট ভরবে পুঁজির কারবারীদের। ইপিজেড ও গার্মেন্টসের প্রসারে মালিকদের লাভ বাড়ছে,আগামী দিনে আরো বাড়বে। আর শ্রমিক ন্যায্যমজুরির দাবি নিয়ে রাস্তায় নামলে পুলিশের গুলি খাবে, মাস্তান বাহিনীর ঠ্যাঙানি খাবে। ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি মানেই জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন নয়। এই আয়বৃদ্ধি কার ঘরে জমা হবে -এ প্রশ্ন খুব গুরুত্বপূর্ণ।
এখন দেখা যাক নির্বাচনী ইশতেহারে যে সকল প্রত্যয় ও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছিল তাকে সামনে রেখে সরকার জাতি গঠনের কাজে সাফল্যের সাথে এগিয়ে চলেছে-মহাজোট সরকারের প্রচারিত দিনবদলের ৩ বছর’ শীষর্ক ক্রোড়পত্রের এ দাবির মধ্যে সত্যতা কতটুকু ? আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অগ্রাধিকারের ৫টি বিষয় ছিল-দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ ও বিশ্বমন্দা মোকাবিলা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা, বিদ্যুত ও জ্বালানি সমস্যার সমাধান, দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস, সুশাসন প্রতিষ্ঠা। এসব প্রতিশ্র“তি কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে তা সাধারণ মানুষ নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছেন। তবে এসব খাতের বর্তমান চিত্র, সংকটের কার্যকারণ ও সমাধানের পথ আলোচনার দাবি রাখে।
দ্রব্যমূল্য : বাজার কি বলে ?
ইশতেহারের প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী দাম কমানো তো দূরে থাক, কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর হিসেবে গত ১ বছরে প্রধান খাদ্যপণ্যের গড়ে ২০.৩০% মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। গত দু’মাসে চালসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার আরো বেশি। মোটা চালের কেজি এখন ৩৬-৩৮ টাকা, পিয়াঁজ ৪৫ টাকা, সয়াবিন তেল লিটার ১২৫ টাকার উপরে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেছেন, ভরা মৌসুমে কেন চালের দাম বাড়লো তা তাঁর সরকার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। অর্থাৎ, মূল্যবৃদ্ধির কারণ তাঁর এখনো অজানা।কিন্তু, ইশতেহারের প্রতিশ্রুতিমতো মজুদদারি ও মুনাফাখোরি সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ দেশবাসী গত ৩ বছর দেখেনি। বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের কখনো অনুরোধ করেছেন, কখনো ধমক দিয়েছেন, কখনো যৎসামান্য ওএমএস চালু করে জনগণকে বোঝাতে চেয়েছেন যে সরকার দাম কমাতে খুব তৎপর। আর বাস্তবে টিসিবিকে নিস্ক্রিয় রেখে সরকার বাজার-নিয়ন্ত্রণ থেকে হাত গুটিয়ে রেখেছে, রেশনব্যবস্থা চালু করে গরিব-নিম্ন আয়ের মানুষকে রক্ষার দাবি উপেক্ষা করেছে। এভাবে খাদ্যপণ্যের ব্যবসা সিন্ডিকেটের হাতে পুরোপুরি ছেড়ে দিয়ে জনগণের পকেট কাটার সুযোগ করে দিয়েছে। বাজার মনিটরিংয়ের কাজ করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হাতে ম্যাজিস্ট্রেট লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও আমরা দেখেছি। সম্প্রতি ভোজ্যতেল ও চিনি বিপণনে ডিও প্রথা বাতিল করে পরিবেশক নিয়োগের বিধান চালু করা হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের হাতে বাজারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ থাকলে ডিলারশীপ, ডিস্ট্রিবিউটরশীপ-যাই করা হোক তা খুব একটা ফল দেবে না। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় চালের দাম বাড়ার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন এই বলে যে এতে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবে। মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ীদের আড়াল করে কৃষক ও ভোক্তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা-শাসকদের সেই পুরনো ‘ভাগ কর, শাসন কর’ কৌশলের পুনরাবৃত্তি। এর চেয়েও বড় কথা হল, বাজারে কৃষিপণ্য যে দামেই বৃদ্ধি হোক না কেন তার সুফল যে উৎপাদক কৃষক পায় না এটা বাংলাদেশে প্রমাণিত বিষয়।প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। অথচ মাত্র ৫% চাল আমদানী হয়। আরো বলা হয়েছে, গতবছর মানুষের আয় দেড়-দুইগুণ বেড়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়লেও মানুষ কিনছে তো আওয়ামী লীগ-বিএনপি সব শাসকদের নিষ্ঠুর মন্তব্যের মধ্যে কি অদ্ভূত মিল! এরা জনপ্রতিনিধি, কিন্তু গরিব মানুষের জীবনযন্ত্রণা কি তারা অনুভব করেন ? সরকারের হাতে খাদ্যশস্যের স্বল্প-মজুদ সংকট বাড়িয়েছে। বর্তমানে সরকারি মজুদ মাত্র ৭ লাখ টন, বিশেষজ্ঞদের মতে থাকা উচিত অন্তত ১২ লাখ টন। অথচ সরকার এবার কৃষকদের কাছ থেকে আমন ধান কেনেনি। মূল্যবৃদ্ধি সমস্যার সমাধান খাদ্যপণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু, অর্থাৎ কৃষকের কাছ থেকে সরকার সরাসরি কিনবে এবং নির্ধারিত দামে জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে। সরকার এ নীতি অনুসরণ করছেন না কেন?
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি : অন্ধকার ভবিষ্যৎ
গত ৩ বছরে বিদ্যুৎসংকট কাটেনি। সরকারি ভাষ্যমতেই আসন্ন বোরো মৌসুমে লোডশেডিং বাড়বে। ২০১০ সালের শেষে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংযোজনের সরকারি ঘোষণার মধ্যে ১০০০ মেগাওয়াট উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু এর পুরোটাই আসছে বেসরকারি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে। ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলচালিত এসব অস্থায়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিভিন্ন দেশি-বিদেশি কোম্পানির সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরকার কিনবে প্রতি ইউনিট ৮ থেকে ১৪ টাকায়। অথচ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পিডিবির উৎপাদিত বিদ্যুতের মূল্য প্রতি ইউনিট ২.৩৭ টাকা। উচ্চদামে বিদ্যুতের ফলস্বরূপ ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। পিডিবি-র পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি ছয়মাস অন্তর ১২.৫০% হারে দাম বাড়িয়ে ২০১৩ সালের মধ্যে বিদ্যুতের মূল্য প্রায় দ্বিগুণ করা হবে। পিডিবি চেয়ারম্যান বলেছেন, এই মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হলেও আগামী ৩ বছরে (২০১১-২০১৩) পিডিবি’র লোকসান হবে ৭,৩৫০ কোটি টাকা। আর দাম না বাড়ালে লোকসান হবে ২০,১৭৫ কোটি টাকা বিদ্যুতের দাম বাড়লে শিল্প-কৃষিপণ্য সবকিছুরই দাম বাড়বে। এভাবে সরকারি খাতে বিদ্যুৎউৎপাদন না বাড়িয়ে দ্রুত সংকট সমাধানের কথা বলে বেসরকারি খাতে Rental Power Plant বা Quick Rental Plant স্থাপনের নামে গ্রাহকদের পকেট কেটে টাকাওয়ালাদের মুনাফা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিদ্যুৎবিভাগের পরিকল্পনা অনুসারে, আগামী ৫ বছরে ১০,৬৭৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে যার মধ্যে ৬,৭৩৮ মেগাওয়াট অর্থাৎ মোট উৎপাদনের ৬৩% আসবে বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে। এদিকে পিডিবির তথ্যমতে, গ্যাস সরবরাহের অভাবে সরকারি খাতে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। জ্বালানি ঘাটতির কারণে সরকারি খাতে স্বল্পমূল্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হচ্ছে, অথচ জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করে ব্যক্তিখাতের (ইত্যাদি) উৎপাদিত বিদ্যুৎ বেশি দামে কেনা হচ্ছে। এরমধ্যে সরকার ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করেছে। এই বিদ্যুৎ ভারত থেকে আনতে সঞ্চালন অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশের খরচ হবে ১৪০০ কোটি টাকা যা দিয়ে দেশেই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা যেত। আমদানিকৃত বিদ্যুতের দামও নির্ধারণ করবে ভারত।
সমগ্র জ্বালানিখাতেই চলছে একই নীতি। দেশে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ২৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট, সরবরাহ হচ্ছে ১৯৮০ মিলিয়ন ঘনফুট । অনেক এলাকায় গ্যাসের চাপও কম। গ্যাসের অভাবে চুলা বন্ধ, শিল্পকারখানায় নতুন সংযোগ দেয়া হচ্ছে না, সিএনজি পাম্পগুলো দৈনিক ৬ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হচ্ছে। অথচ গত তিন বছরে গ্যাসউত্তোলন বাড়াতে নতুন কোনো গ্যাসকূপ খনন হয়নি। সরকার ঘোষিত ফাস্ট ট্র্যাক কর্মসূচি অনুযায়ী সিলেট, তিতাস, মেঘনা, হবিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাসউত্তোলন হার বাড়ানোর কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। সালদা নদী ও সেমুতাং-এ তিনটি উন্নয়নকূপের কাজ এখনো শুরু হয়নি। সম্ভাব্য গ্যাসক্ষেত্র শ্রীকাইল, কাপাসিয়া, মোবারকপুর, রূপগঞ্জ ও সদ্যআবিষ্কৃত সুনেত্রায় অনুসন্ধান কূপের কাজ এখনো শুরু হয়নি। এসব প্রকল্পে ধীরগতির কারণ হল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের অধীন এসব প্রকল্পের জন্য সরকার অর্থবরাদ্দ করছে না। অথচ গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে ১০০০ কোটি টাকার ওপর জমা আছে। উপরন্তু এসব প্রকল্প বিদেশে কোম্পানিকে লিজ দেয়ার চক্রান্ত চলছে। সেটা যদি করতে নাও পারে তাহলে পিপিপি’র মাধ্যমে বেসরকারিখাতে ছেড়ে দেয়ার পায়তারা করছে। গ্যাসের দাম বাড়ানো অথবা সরকারের বাইরে তৃতীয় পক্ষের কাছে বাজারমূল্যে গ্যাসবিক্রির অনুমতির দাবিতে বিদেশি কোম্পানিগুলো নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানের কাজ স্থগিত রেখেছে। ইতোমধ্যে সরকার কেয়ার্ন এনার্জি ও শেভরনকে তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাসবিক্রির অনুমতি দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় কোম্পানিকে নিস্ক্রিয় রেখে কৃত্রিম গ্যাসসংকট তৈরি করে বিদেশি কোম্পানির হাতে সমুদ্রের গ্যাসব্লক তুলে দেয়া হচ্ছে এমন চুক্তিতে যাতে ৮০% গ্যাস তারা পাবে এবং তরলায়িত গ্যাস রপ্তানি করতে পারবে। কনোকো ফিলিপসকে সমুদ্রের গ্যাসব্লক পাইয়ে দিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও জ্বালানি উপদেষ্টার গোপন সমঝোতার খবর সম্প্রতি উইকিলিকস ফাঁস করেছে। বাংলাদেশে কর্মরত ৩টি আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি যারা বর্তমানে দেশের ৫৫% গ্যাস উৎপাদন করে, তাদের কাছ থেকে সরকার গ্যাস কেনে প্রতি হাজার ঘনফুট ২২৫ টাকায়; যেখানে বাপেক্স ও অন্য দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি থেকে যথাক্রমে ২৫ ও ৭ টাকায় গ্যাস পাওয়া যায়। ফলে গ্যাস উত্তোলনে বিদেশি কোম্পানি-নির্ভরতার সরকারি নীতির ফলে আগামীতে গ্যাসের দাম আরো বাড়বে। এদিকে জ্বালানিসংকটের অজুহাতে ফুলবাড়ি ও বড়পুকুরিয়ায় পরিবেশ ও জনবসতি ধ্বংসকারী উন্মুক্ত কয়লাখনির কাজ গ্লোবাল কোল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে দেওয়ার পক্ষে তৎপরতা চালাচ্ছেন জ্বালানি উপদেষ্টা, মার্কিন রাষ্ট্রদূত, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও সংসদীয় কমিটি। উইকিলিকস প্রকাশিত তথ্যে এর প্রমাণ মিলেছে। ফলে জ্বালানিসংকট সমাধানের নামে দেশি-বিদেশি লুটেরাদের হাতে জাতীয় সম্পদ তুলে দেবার আয়োজনে ব্যস্ত মহাজোট সরকার। আর এখাতে কোনো দুর্নীতির বিচার যাতে না হতে পারে সেজন্য দ্রুত বিদ্যুৎসরবরাহ নিশ্চিত করার নামে সংসদে দায়মুক্তি আইন পাশ করানো হয়েছে।
গতিশীল দুর্নীতি
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে স্বাধীন ও শক্তিশালী দুর্নীতি দমন কমিশন নিশ্চিত করা, কালো টাকা ও অনুপার্জিত আয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। বাস্তবে, বিরোধীদলের নেতাদের মামলা পরিচালনা ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। গত দুটি বাজেটেই ১০% কর দিয়ে কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্ষমতাসীনদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ করা হয়নি। সংসদসদস্যদের বিনাশুল্কে গাড়ি আমদানির সুযোগ পুনরায় চালু করা হয়েছে। সরকার প্রধানসহ দলীয় নেতাদের মামলা ঢালাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। সদ্যপ্রকাশিত টিআইবি রিপোর্ট অনুসারে বিচারবিভাগ, পুলিশসহ সরকারি সেবাখাতগুলোর ঘুষ-দুর্নীতি বেড়েছে বলে মানুষ আভিযোগ করেছে। দুর্নীতির বিশ্বসূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি ঘটেছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের লাগামহীন চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির ঘটনা নিয়মিত পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঋণখেলাপীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। শিক্ষক-চিকিৎসকসহ সরকারি বিভিন্ন পদে নিয়োগবাণিজ্য চলেছে লাগামহীনভাবে যার সাথে প্রধানত যুক্ত সরকারিদলের নেতাকর্মীরা।
সুশাসন : আইনি বিশৃঙ্খলা
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী সুশাসন প্রতিষ্ঠার দাবি করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেছেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেকোনো সময়ের তুলনায় ভালো। অথচ পুলিশের রেকর্ড অনুসারে দেশে প্রতিদিন গড়ে ১১টি খুন ও ৫০টি ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। খোদ সরকারদলীয় এমপির বাসায়ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। নারীনির্যাতন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ক্রসফায়ার বন্ধের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে আওয়ামী লীগ। গত দুইবছরে বিচারবহিভূর্ত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন অন্তত ২৪৩ জন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ দলীয় এমপি নুরুন্নবী শাওনের বিরুদ্ধে নিজ পিস্তলের গুলিতে যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম হত্যার অভিযোগের সুরাহা হয়নি। নাটোরে প্রকাশ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যাকারী আওয়ামী লীগ কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও প্রতিপক্ষের সাথে সংঘর্ষে ১২ জন ছাত্র প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন কয়েক শত, ৪৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিভিন্ন মেয়াদে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনী ইশতেহারে দলীয়করণমুক্ত অরাজনৈতিক প্রশাসন এবং যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ ও পদোন্নতি’র কথা বলা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের দিনেই পাবনায় এডিসি-এসপিসহ সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের মুক্তিপ্রাপ্তির ঘটনা থেকেই এক্ষেত্রে বাস্তব পরিস্থিতি বোঝা যায়। প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী তো প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে যে ১৩,৩৫০ জন কর্মচারী নিয়োগ পাবে তাতে দলীয় লোকদের বাইরে কাউকে নিয়োগ দিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের শাসন, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায়ে জিয়ার স্বৈরশাসন অবৈধ ঘোষণায় শাসকদল যতটা উল্লসিত হয়েছে, সপ্তম সংশোধনী বাতিল ও এরশাদের বিচার করা উচিত মর্মে হাইকোর্টের রায়ে তাদের সে প্রতিক্রিয়া দেখা যায় নি। বরং সংবিধান লঙ্ঘনকারী পতিত স্বৈরশাসক এরশাদকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একই বিমানে রংপুর গিয়ে মঞ্চে পাশাপাশি বসে ভাষণ দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে ’৭২-এর সংবিধান কার্যকর করার সদিচ্ছা সরকারের দেখা যাচ্ছে না। একইভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে একদিকে দীর্ঘসূত্রতা এবং অন্যদিকে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের বক্তব্যে ‘প্রতীকি বিচারের কথা শেষপর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের আইনি স্বীকৃতি প্রদানের পথ তৈরি করা হচ্ছে কিনা-এ নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে।
পররাষ্ট্রনীতিতে সরকার মার্কিন-ভারতের প্রতি নতজানু নীতি নিয়ে চলছে। অভিন্ন নদীর পানি প্রত্যাহার, টিপাইমুখ বাঁধ, সমুদ্রসীমা ইত্যাদি বিষয়ে ভারত কোনো ছাড় না দিলেও ভারতকে বিনাশুল্কে ট্রানজিট প্রদান, ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানি, উচ্চসুদে ও কঠিন শর্তে ১০০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি ইত্যাদিতে সরকারের নতজানু তৎপরতা লক্ষ্যণীয়। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী হত্যা চলছে, অথচ সরকার জোরালো প্রতিবাদ জানাতে পারছে না।
দারিদ্র ও বৈষম্য : উন্নতির(!) লক্ষণ স্পষ্ট
দারিদ্র্যবিমোচনে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করা হয়েছিল দারিদ্র্যের হার বর্তমানের ৪০.৪০% থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। বর্তমানে ৬.৫ কোটি দরিদ্রের সংখ্যা ২০১৩ সালে হবে ৪.৫ কোটি। অথচ বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০০৯ সালে সার্বিকভাবে দারিদ্র্যের মাত্রা এক শতাংশ বেড়েছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, দেশের ৮১% পরিবারে দীর্ঘমেয়াদী খাদ্যঘাটতি রয়েছে।
বছরে ন্যূনতম ১০০ দিনের কর্মসংস্থান করে প্রতি পরিবারের একজন কর্মক্ষম বেকার তরুণকে চাকুরি দেয়ার অঙ্গীকার পূরণ করা হয়নি। ন্যাশনাল সার্ভিস নামে মাত্র ৭৫০০০ যুবককে ২ বছরের জন্য অস্থায়ী কাজ দেয়া হয়েছে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সরকারি পরিকল্পনা ঋণবিতরণ, আত্মকর্মসংস্থানে উৎসাহ প্রদান, প্রশিক্ষণ ও বিদেশে শ্রমশক্তি রফতানির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। পাট, চিনি, কাগজসহ শ্রমঘন কৃষিভিত্তিক শিল্পবিকাশের উদ্যোগ নেই। যদিও পাটের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের কৃতিত্ব দাবি করা হয়েছে।
গার্মেন্ট শ্রমিকসহ সব ধরনের শ্রমিক, হতদরিদ্র ও গ্রামীণ ভূমিহীন ক্ষেতমজুরদের জন্য রেশনিং চালুর ওয়াদাও বাস্তবায়িত হয়নি। গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য যে মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে তা মানুষের মতো বাঁচার উপযোগী নয়।
সকলের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়েছিল, অথচ সরকারি হাসপাতালগুলোতে ইউজার ফি চালুর মাধ্যমে চিকিৎসা খরচ ৪ গুণ বাড়ানো হয়েছে।
যুগান্তকারী’ একটি শিক্ষানীতি প্রণয়নের দাবি করছে সরকার। কিন্তু সাধারণ, মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেন-এই তিন ধারায় বিভক্ত বৈষম্যমূলক শিক্ষাব্যবস্থা বহাল রেখে কিছু সংস্কারের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে মাত্র। পশ্চাৎপদ মাদ্রাসা ও ধর্মীয় শিক্ষায় জোর দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও অসাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতির শ্লোগান দেয়া হচ্ছে। অষ্টমশ্রেণীর পর কারিগরি শিক্ষাকে উৎসাহিত করে উচ্চশিক্ষার ব্যয়বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, একদিকে নতুন শিক্ষানীতি সংসদে অনুমোদিত হচ্ছে অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের ফি-বৃদ্ধি ও বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হচ্ছে, নতুন বছরে স্কুলগুলোতে উচ্চহারে ভর্তি ফি নেয়া হচ্ছে।
কৃষকরা বারবার বাম্পার ফলন ফলিয়েছে কিন্তু ফসলের ন্যায্যদাম পায়নি। সার-বীজের কৃত্রিম সংকট, সেচে বিদ্যুতের অভাব, ভেজাল সার-কীটনাশক ও ভেজাল বীজের দৌরাত্ম্য-এসব ঘটনায় বিএডিসি-কে সংকুচিত করে কৃষিউপকরণের ব্যবসা ব্যক্তিখাতে ছেড়ে দেয়ার কুফল টের পাওয়া যাচ্ছে। সার, সেচের ডিজেল ও বিদ্যুতে ভর্তুকি কৃষকরা পায়নি, সুফল ভোগ করেছে সার ব্যবসায়ী ও পাম্পের মালিক ধনী কৃষক। ফলে উৎপাদক কৃষক ও শ্রমিক জনগোষ্ঠী ন্যায্যমূল্য ও মজুরি যদি না পায়, শিক্ষা-স্বাস্থ্য পরিসেবা সব কিছুর বেসরকারিকরণের ফলে মূল্যবৃদ্ধি যদি ঘটতে থাকে তাহলে হতদরিদ্রদের জন্য যৎসামান্য নিরাপত্তা জাল দিয়ে দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাস করা সম্ভব নয়।
আন্দোলনই অধিকার আদায়ের পথ
দিনবদল, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ভিশন ২০২১-ইত্যাদি কথামালায় যে আশাবাদ মানুষের মনে তৈরি করা হয়েছিল, গত ৩ বছরের অভিজ্ঞতায় তা ফিকে হয়ে এসেছে। অন্যদিকে ভবিষ্যতে পরিবর্তনের সম্ভাবনাও দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে না। কারণ প্রধান বিরোধীদল হিসাবে পরিচিতি বিএনপি-জামাত জোটের অতীত দুঃশাসন মানুষ দেখেছে, বর্তমানেও জনজীবনের সমস্যা নিয়ে কোনো আন্দোলনে তারা নেই। বাস্তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিরোধ ক্ষমতার মসনদের দখল নিয়ে, দেশ পরিচালনায় তাদের নীতি একই। গার্মেন্ট শ্রমিকের মজুরির আন্দোলন প্রশ্নে উভয়ের অবস্থানই মালিকদের পক্ষে। দু'দলই দুর্নীতির মাধ্যমে গ্যাস-কয়লা সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দিয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতি-বিশ্বায়ন-বেসরকারিকরণ নীতি অনুসরণ করে পানি-বিদ্যুৎ-শিক্ষাচিকিৎসাসহ যাবতীয় পরিসেবা পুঁজিপতিদের ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে তারা একমত। সন্ত্রাস-দখলদারিত্ব-দুর্নীতি-দলীয়করণে একে অপরকে ছাড়িয়ে যাবার প্রতিযোগিতায় তারা লিপ্ত। রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ নেই। রাজনীতির মাঠে যতই যুদ্ধংদেহী ভাব থাকুক, সংসদ সদস্যদের জন্য ট্যাক্স ফ্রি গাড়ী আমদানি আর মন্ত্রী-এমপিদের বেতন বাড়ানোর প্রশ্নে তারা একমত।
কিন্তু কালোটাকা নির্ভর দলগুলো জনগণের ভোট নিয়েই ক্ষমতায় যায়, অথচ দেশ পরিচালনা করে গণপ্রত্যাশার বিপরীতে দাঁড়িয়ে। কেন এমন হয়? আসলে ধনী-গরিবে, মালিক-শ্রমিকে বিভক্ত সমাজে ক্ষমতাধর পুঁজিপতিশ্রেণীর স্বার্থে দেশ পরিচালনা করতে গেলেই তা সাধারণ মানুষের বিপক্ষে যাবে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয়েই পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক দর্শনের অনুসারী। সাম্প্রতিক বিশ্বমন্দা ও অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী একই চিত্র দেখা যাচ্ছে- পুঁজিবাদী দেশগুলো রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থে পুঁজিপতিদের প্রণোদনা প্যাকেজ, বেইল আউট দিচ্ছে অথচ সাধারণ মানুষের পেনশন-শিক্ষা-চিকিৎসার বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে, ছাঁটাই করছে। এর বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্রিস, পর্তুগাল, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, পুয়ের্তেরিকো এমনি অসংখ্য দেশে বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে জনগণ। কিন্তু তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে বসে ভোটারদের আকাংক্ষার বিপরীতে বিল পাস করছে।
বাংলাদেশে দুর্নীতি-দুবৃত্তায়িত রাজনীতির এই দ্বি-দলীয় বৃত্তের বাইরে ছোট দলগুলো দুর্বল হলেও তারা ধারাবাহিকভাবে জনগণের স্বার্থে লড়াই করছে। মূল্যবৃদ্ধির কবল থেকে গরীব মানুয়কে রক্ষায় রেশন চালু ও সিন্ডিকেট দমনের দাবি তারাই তুলেছে, শ্রমিকদের ন্যায্যমজুরির আন্দোলনে সাধ্যমত পাশে ছোট দলগুলো দাঁড়িয়েছে। গ্যাস-কয়লা রক্ষায় ধারাবাহিক আন্দোলন করেছে। জনজীবনের প্রতিটি সংকটের প্রতিবাদে তারা সোচ্চার। শোষণ-দুর্নীতি-লুটপাটের এ সমাজে কালোটাকা-পেশীশক্তি-নির্ভর অসুস্থ রাজনীতির বিপরীতে মানুষের মুক্তিসংগ্রামে নিবেদিত ছোট দলসমূহ। ঐক্যবদ্ধ সুস্থ ধারার নেতৃত্বে জনজীবনের সংকট নিয়ে লাগাতার গণআন্দোলনের পথে জনগণের শক্তি নির্মাণ করতে পারলেই মানুষের পরিবর্তন প্রত্যাশা ও উন্নততর ভবিষ্যতের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পাবে।

কিছু অদ্ভুত আইন সম্পর্কে বলি আজ আপনাদের!!

কিছু অদ্ভুত আইন সম্পর্কে বলি আজ আপনাদের!!

►► অস্ট্রেলিয়াতে বাচ্চারা সিগারেট কিনতে পারবে না!! কারণ এটা আইনবিরোধী!! কিন্তু সিগারেট খেতে/টানতে পারবে!! এতে কোনো বাধা নেই!!

►► জাপান-এ কোন মহিলাকে কোন পুরুষ ডেটিং এর জন্যে একাধিকবার প্রস্থাব করলে ঐ মহিলা তা ২য় বার প্রত্যাক্ষান করা আইনত নিষিদ্ধ।

►► ইংল্যান্ডে টেলিভিশন ব্যাবহার করার জন্য লাইসেন্স করতে হয়!! (একটু কনফিউশন আছে।। ইংল্যান্ডে যারা আছেন তারা কি বলতে পারবেন ঘটনা সত্য কিনা??)
...
►► থাইল্যান্ডে গাড়ি চালানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে শার্ট পড়তে হবে!! অর্থাৎ, আপনি খালি গায়ে গাড়ি চালাতে পারবেন না!!

►► আমেরিকার ফ্লোরিডাতে আপনি যদি পার্কিং স্পটে কোনো হাতি বেঁধে রাখেন, তবে আপনাকে সেই হাতির জন্য পার্কিং ফি দিতে হবে!!

►► বিস্ময়কর একটা আইন জানাচ্ছি এইবার!! আমেরিকার নিউইয়র্কে কোনো উঁচু বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে পড়ার শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড!! (অর্থাৎ, কেউ লাফিয়ে পড়ে যদি বেঁচে যায় তবে তাকে সুস্থ করে বাঁচিয়ে তুলে এরপর আবার মেরে ফেলা হবে!!) WTF......

►► আমেরিকাতে আপনি আপনার বৌ-কে পিটাতে পারবেন আইনগত বৈধ ভাবে। কিন্তু সেটা প্রতি মাসে একাবেরর জন্যে।

►► কানাডাতে কোন অপরাধী যদি কারগার থেকে মুক্তি পায়, তাহলে তাকে একটি বুলেট ভর্তি হ্যান্ডগান ও একটি ঘোড়া দেওয়া আইন রয়েছে, যাতে সে সহজে শহরে গিয়ে পৌছতে।

►► আমেরিকাতে একবারে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা একটি ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

►► আমেরিকাতে যদি ৫জনের অধিত মানুষ আপনার বাড়িতে বা সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশ করে তাহলে যে কোন একজনকে গুলি করে হত্যা করা আইনত বৈধ।

►► বাংলাদেশে কোন ১৫ বছরের কম বয়সি শিশু পরীক্ষায় প্রতারনামুলক ভাবে নকল করলে তাকে কারাগারে বন্দি করার বিধান রয়েছে।

►► বাংলাদেশে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করা আইনত ১০ বছর করাদন্ডে দন্ডনীয় অপরাধ।

►► কানাডাতে আপেল আইনগত ভাবে অবশ্যই সবুজ হতে হবে।

►► কানাডাতে পাবলিক প্লেসে প্রস্রাব করা ও থুথু ফেলার জন্যে ১০০ কানাডিয়ান ডলার জরিমানা দিতে হয়।

►► কানাডাতে যদি বাড়ির সামনে কোন জলাধার থাকে তাহলে তা প্রতিদিন ভোর ৫টায় কানায় কানায় ভর্তি করে রাখার বিধান রয়েছে।

►► সৌদি আরবে দরিদ্র হওয়া আইনত নিষিদ্ধ। যদি কোন সৌদি নাগরিক যথাযথ আইনসম্মত আয়-রোজগার না করেন তাহলে তাকে কারাগারে বন্দি রাখার বিধান রয়েছে।

►► আমেরিকার নিউ ইয়র্ক-এ জ্যাকেট ও ট্রাউজার -এ ম্যাচ না করে পোশাক পরে ঘরের বাইরে বের হওয়া আইনত নিষিদ্ধ।

►► আমেরিকার নিউ ইয়র্ক-এ দুপুর ১:০৫ এর আগে কোন ধরনের সভা/সিমিতি, মিঞিল, মিটিং, পাবলিক ডেমনষ্ট্রেশন করা আইনত নিষিদ্ধ।

যৌন হয়রানি : সচেতন হোন আজ

আপনার বোন কিংবা আপনার মা হলে কি করতেন? এজাতীয় বায়বীয় বানী না ছেড়ে রুখে দাড়ানোর চেষ্টা করুন।

আপনার মাবোন দের আপনি ছেড়ে দেবেন আর বাকী নারীদের লোভের সামগ্রী ভাববেন এজাতীয় মানসিকতা পরিত্যাগ না করলে যৌন হয়রানীর মতো ব্যাধি কখনো দূর করা সম্ভব নয়!

আপনার বাসার পাশে,স্কুলে ইভটিজিং হয় এটা ভেবে বসে আছেন তো বোকার স্বর্গে বাস করছেন।

আমার দেখা মতে সবচেয়ে বেশি যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে পাবলিক পরিবহন গুলোতে।

বাস,টেম্পো, সি এন জি অটোরিক্সার ড্রাইভার আর কন্ট্রাকটার গুলো একাজ টি সবচেয়ে মজার সাথে করে।

এদের বিরূদ্ধে সচেতন হোন! নিজে প্রতিবাদ না করতে পারেন, যদি কেউ প্রতিবাদ করে উঠে তার সাথে গলা মেলান।

এবার বায়বীয় কথাটি আমি বলছি,সবাইকে নিজের মা বোনের মতো দেখুন! নারীদের যোগ্য সম্মান দিন, সম্মান আদায় করিয়ে ছাড়ুন।

নয়তো তারা ও আপনাকে পুরুষ তান্ত্রিক সমাজের একটি অংশ বলে ভাবতে শুরু করবে।।

বিলিভ ইট অর নট!!! যৌনবাণিজ্যে ছেলেশিশুদেরও জড়ানো হচ্ছে

১১ বছরের শিশু বেল্লাল (ছদ্মনাম), নয় বছর বয়সেই বাড়ি থেকে পালিযে আসে। সে থাকছে কমলাপুর রেল স্টেশনে। স্টেশনে আশ্রয় নেওয়ার পরপরই এক গার্ড কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয় শিশুটি।

বেল্লালের দাবি, সমকামী না হয়েও তাকে যৌনসম্পর্ক গড়তে বাধ্য করা হয়েছে। স্টেশনের আরো অন্তত আটটি পথশিশুর সঙ্গে কথা বলে বেল্লালের কথার সমর্থন পাওয়া যায়।

বেল্লালের ভাষ্য, “আমি এই স্টেশনের অন্তত ১০০ জনরে চিনি, যারা ট্যাকা নিয়া এই কাম করে।” এই শিশুদের কেউ হকার, কেউ বাদাম বিক্রি করে, কেউবা অন্য কোনো কাজ করেন; অনেকটা বাধ্য হয়ে তারা যৌনবাণিজ্যে ঢুকে পড়েছে। আর এই অর্থের পুরোটা তাদের হাতে আসে না, তার নিয়ন্ত্রণ অন্য হাতে।

মেয়েশিশুদের নিয়ে যৌনবাণিজ্যের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকলেও ছেলে শিশুরাও যে ঝুঁকিমুক্ত নয়, সে চিত্র বেসরকারি গবেষণায় উঠে এসেছে।

২০১১ সালে ইউনিসেফের চালানো একটি গবেষণার সূত্র ধরে জাতিসংঘ সংস্থাটির শিশু নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ শাবনাজ জেহরিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছেলেশিশুদের যৌন নির্যাতন এবং যৌনবাণিজ্যে যুক্ত হওয়ার মতো আশঙ্কার বিষয়টি গবেষণায় প্রকাশ্য হয়, যা এর আগে সেভাবে চিহ্নিত করা যায়নি।”

তবে ২০০৬ সালে থাইল্যান্ডভিত্তিক একপ্যাট (ঊঈচঅঞ ওঘঞ.) ইন্টারন্যাশনাল এবং ইনসিডিন বাংলাদেশ পরিচালিত ‘দি বয়েজ অ্যান্ড দ্যা বালিজ : অ্যা সিচুয়েশনাল অ্যানালিসিস রিপোর্ট অন প্রস্টিটিউশন অব বয়েজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি গবেষণায় দেখা যায়, দেশের পথশিশুদের ৮০ শতাংশ ছেলে, আর এর বেশিরভাগই কোনো না কোনোভাবে যৌনবাণিজ্যে সম্পৃক্ত।

ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৭৮৭টি শিশুর ওপর চালানো এই গবেষণায় দেখা যায়, এই সব শিশুদের ২৯ দশমিক ২৯ শতাংশ শিশু সিফিলিস এবং ২৯ দশমিক ২৯ শতাংশ গনোরিয়ায় ভুগছে। তবে আক্রান্ত ৯৬ শতাংশই কোনো ধরনের চিকিৎসা নেয় না।

ইউনিসেফের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপরাধী একটি চক্রের নিয়ন্ত্রণে থাকছে এই পথশিশুরা। যৌনবাণিজ্যের পাশাপাশি তাদের মাদক ও অস্ত্র পাচার, চুরিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হচ্ছে।

২০০৫ সালে পরিচালিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) এর জরিপ অনুযায়ী, ঢাকায় পথশিশুর সংখ্যা ২ লাখ ৪৯ হাজার ২০০। সারা দেশে এই সংখ্যা ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭২৮। তবে ঢাকায় পথশিশুর সংখ্যা এখন চার থেকে সাড়ে ৪ লাখ, তা বলছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরিন শারমিন চৌধুরী।

শিশুদের যৌনবাণিজ্যে যুক্ত হওয়া প্রতিরোধে সরকারের কী ব্যবস্থা- জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার এই বিষয়ে অবগত আছে। যারা শিশুদের এইরকম কাজে (যৌনবাণিজ্যে) নামাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনগত বিধানও আছে।”

শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ণের বিষয়ে কাজ করে আসা ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মুশতাক আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কমলাপুর, সদরঘাট, সোহরাওর্য়ার্দী উদ্যানসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড বা জনবহুল এলাকায় অপরাধী চক্র এই পথশিশুদের নিয়ন্ত্রণ করে।

“বয়স্ক দুটি মানুষ যদি সমকামে মিলিত হয়, সেটা একটা ব্যাপার। কিন্তু দালাল আর তাদের সহযোগীদের নিয়ন্ত্রিত এই শিশুদের খদ্দের পথের বয়স্ক মানুষ থেকে হোমোসেক্সুয়াল কমিউনিটি, ইনফর্মাল ওয়ার্ক সেক্টরের লোকজন, সবাই। এই শিশুরা শুধুই শিকার,” বলেন তিনি।

কীভাবে এরা শিকার হয়- বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মুশতাক বলেন, “দালালরা কিছু সুবিধা দিয়ে এদের আটকে ফেলে। যেমন বড় অঙ্কের অর্থ সাহায্য কিংবা থাকার জায়গা। সে ক্ষেত্রে টাকা শোধ না হওয়া পর্যন্ত কিংবা থাকার কোনো স্থান না হওয়া পর্যন্ত শিশুটির মুক্তি থাকে না।”

ইউনিসেফের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যৌনবাণিজ্যের এই দিকটিতে সব ক্ষেত্রে অর্থ মূল বিষয় থাকে না। এক বেলা খাওয়া, থাকা, কাজের সুবিধা দিয়েও এই শিশুদের এই পথে টেনে নেওয়া হয়।

মুশতাক জানান, যৌনসম্পর্কের ব্যথা ও লজ্জা ভুলতে এই সব পথশিশুরা বিভিন্ন ধরনের মাদক নেয়। পরে এই শিশুরা একইসঙ্গে পাপবোধ এবং পরিচয় সঙ্কটে ভুগতে থাকে।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ পরিচালিত চাইল্ড হেল্প লাইনের প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত পিকার প্রকল্পের মাস্টার ট্রেইনার চৌধুরী মো. মোহাইমেন বলেন, “যৌনকর্মী হিসাবে কাজ করতে বাধ্য হওয়ার পর শিশুরা নানা মানসিক টানাপোড়েনে ভোগে, নিজের প্রতি ঘৃণা বাড়ে। তখন যে কোনো অপরাধে তাদের যুক্ত করা সহজ হয়ে যায়।”

ইউনিসেফের বিশেষজ্ঞ শাবনাজ জেহরিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঢাকার বাইরে বিশেষত চট্টগ্রাম, বরিশালের মতো বন্দরপ্রধান এলাকায়ও এই ধরনের যৌনবাণিজ্য দেখা যায়।

তবে ছেলেশিশুদের নিয়ে যৌনবাণিজ্যের বিষয়টি সামাজিক কারণেই আড়ালে থাকছে বলে মনে করছেন ইনসিডিন কর্মকর্তা মুশতাক।

তিনি বলেন, “আমাদের দৈনন্দিন চিন্তা-ভাবনা, আলোচনায় সমকামিতা বিষয়টি নেই, বিষয়টি ধর্মীয়ভাবেও স্পর্শকাতর। ছেলেশিশু যে এই রকম নির্যাতনের শিকার হতে পারে তা অনেকের মাথায়ই আসে না।”

ইউনিসেফের শাবনাজ মনে করেন, ছেলেশিশু নির্যাতনের এই চিত্রটি আশঙ্কার দিকে এগোলেও এ নিয়ে সরকারের যথাযথ মনোযোগ নেই।

তবে প্রতিমন্ত্রী শিরিন বলেন, পথশিশুদের উন্নয়নের জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। “দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার রয়েছে। যেখান থেকে নির্যাতনের শিকার সব নারী ও শিশুকে সহায়তা দেওয়া হয়,” বলেন তিনি।

ইনসিডিনের নির্বাহী পরিচালকের পরামর্শ, পথশিশুদের নিরাপদ রাত কাটানোর ব্যবস্থাটিই আগে করতে হবে। তাহলে সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে।

আওয়ামীলীগ সরকারের কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ড

১. বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা হত্যা ও সীমান্ত অরক্ষিত করা।
২. ভারতের সঙ্গে অধীনতামূলকফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট সই।
৩. গোপন চুক্তির মাধ্যমে অথবা কোনো চুক্তি ব্যতীত ভারতকে নিলজ্জভাবে করিডোর প্রদান।
৪. টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণেরবিরোধিতার পরিবর্তে ভারতেরপক্ষে সাফাই।
... ৫. দেশের জনগণকে তিস্তা পানি চুক্তির আশা দিয়ে ভারতের ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ।
৬. ভারতকে বাংলাদেশের জমি একতরফা প্রদান।
৭. বিচারবিভাগসহ প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নগ্নদলীয়করণ।
৮. শেয়ারবাজার থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীর লাখো-কোটি টাকা লুট।
৯. পঞ্চম সংশোধনী বাতিল।
১০. সংবিধান থেকে আল্লাহ্র প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস উঠিয়ে দেয়া।
১১. কথিত ইসলামী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নামে সারা দেশে ইসলাম বিরোধী আবহ তৈরি।
১২. ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের জোর করে বাঙালি বানিয়ে পিতার মতো পুনরায় পার্বত্য অঞ্চলকে অশান্ত করা।
১৩. তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল।
১৪. বিরোধী মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্রের ভয়াবহ নির্যাতন।
১৫. মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
১৬. সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরন। শীর্ষ নিউজ/আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদককে গ্রেফতার
১৭. সরকারে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির ভয়াবহ বিস্তার।
১৮. ড. ইউনূসসহ সমাজের অন্যান্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গকে অপমান ও নিগ্রহ।
১৯. জাতীয় সংসদকে অকার্যকর, একদলীয় করে তোলা।
২০. বিরোধী দলীয় চিফ হুইপকে প্রকাশ্য রাজপথে অর্ধউলঙ্গকরে লাঠিপেটা এবং পুলিশের গাড়ি থেকে লাথি মেরে ফেলে প্রাণনাশের চেষ্টা করা।
২১. নাটোরের বাবু, নরসিংদীর লোকমান, ঢাকার চৌধুরী আলমেরমতো জনপ্রতিনিধিদের সরকারিপেটোয়া বাহিনী কর্তৃক প্রকাশ্যে হত্যা অথবা গুম-খুন।
২২. দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় বৃদ্ধি।মূল্যস্ফ ীতি ডাবল ডিজিটে আনা।
২৩. আইন-শৃঙ্খলার ভয়াবহ অবনতি।
২৪. দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে ধস সৃষ্টি।ক্রমাগতভ াবে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ কমা।
২৫. দেউলিয়া পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে মুসলিম বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা।
২৬. অপরিকল্পিত ভাবে উচ্চ মূল্যের তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানেরমাধ্যমে সাশ্রয়ী সরকারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহ অকার্যকর করা।
২৭. দলীয় বিচেনায় বিভিন্ন মামলায় ফাসির আসামিদের ক্ষমা মওকুফ করা
২৮. পদ্মা সেতুতে দূর্নীতিরমাধ্যমে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার সাথে বিরুপ সম্পর্ক তৈরী করা
২৯. জনশক্তি রপ্তানীতে ধস নামানো।
৩০. পররাষ্ট্র মন্ত্রির বিদেশ সফরে বিশ্ব রের্কড...



প্রাপ্তি শুন্য

আসামীর কাঠগড়ায় উমর(রাঃ)


হযরত উমর(রা) খলীফাতুল মুসলিমীন। মদিনা শাসনকেন্দ্র, অঘোষিত রাজধানী। পবিত্র মসজিদে মদিনা এখানেই। এই শহরেই মুসলমানদের প্রধান বিচারালয়। প্রধান বিচারপতি কাজী উবাই ইবনে কাব (রা)।

মসজিদে নববীতে মুসলমানদের অবিরাম যাতায়াত। ভিড় লেগেই থাকে। খলীফাতুল মুসলিমীন এই মসজিদেই নামাজ পড়েন। এই মসজিদের দেয়াল ঘেঁষেই হযরত আব্বাস(রা) এর ঘর। সম্পর্কে তিনি রাসূলুল্লাহ(সা) এর চাচা হন। তাঁর ঘর আর মসজিদের নববীর মাঝে ফাঁক ছিল না। তাঁর ছাদের নালাটিও ছিল মসজিদ বরাবর। এই নালা দিয়ে বৃষ্টি হলেই পানি পড়তো। মুসল্লিদের কষ্ট হতো এতে। এই ভেবে দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর(রা) নালাটি তুলে ফেললেন। ঘটনাক্রমে হযরত আব্বাস(রা) তখন ছিলেন বাড়ির বাইরে, অন্য কোথাও। বাড়িতে এসে যখন এই কাণ্ড দেখলেন, চটে গেলেন। মামলা দায়ের করলেন মদীনার আদালতে। মদীনার এক নাগরিকের অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছেন মুসলিম জাহানের মহান শাসক উমর(রা)। কিন্তু তাতে কি? খলীফা বলেই কি তাঁর বিচার হতে নেই? তাহলে আইন বেঁচে থকবে কার ভরসায়!

কাজী উবাই মোকদ্দমা গ্রহণ করলেন। পরোয়ানা জারী করলেন। যথাসময়ে হাজির হওয়ার আদেশ দিলেন খলীফা উমর(রা)কে।
উমর(রা) প্রস্তুত। প্রহর গুনছেন। যথারীতি যথাসময়ে আদালতে হাজির হলেন।অনুমতি চাইলেন প্রবেশের। কিন্তু অনুমতি এলো না। খবর এলো কাজী এখন ব্যস্ত। বাইরে অপেক্ষা করতে হবে। আরো দশজনের মত আদালতের আঙিনায় অপেক্ষায় রইলেন খলীফা উমর(রা) ।কিছুক্ষণ পর অনুমতি এলো। প্রবেশ করলেন উমর(রা) । দাঁড়ালেন আসামির কাঠগড়ায় এবং বলতে চাইলেন কিছু। কিন্তু বাধা দিলেন বিচারক উবাই(রা)। বললেন- আমিরুল মুমিনীন! একটু থামুন। আদালতের বিধান মতে আগে বাদীকে বলতে দিন। তারপর আপনি বলুন। উমর(রা) খামোশ হয়ে গেলেন। এবার বলা শুরু করলেন আব্বাস(রা)। তিনি তাঁর ঘরের পানির নালা স্থানান্তরের পুরো ঘটনা আদালতে উত্থাপন করলেন। সবশেষে বললেনঃ"আমি এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, মর্মাহত হয়েছি, সীমাহীন দুঃখ পেয়েছি। আমার অনুরোধ, আমি আশা করবো, আদালত আমার প্রতি ইনসাফ করবেন।"
- আপনি নিশ্চিত থাকুন। আপনার প্রতি ইনসাফ করা হবে। আদালতের আশ্বাস।
-আমিরুল মুমিনীন! বলুন,আপনার কি বলার আছে। আদালতের জিজ্ঞাসা।
- নালাটি আমি সরিয়েছি। আমি এর দায়িত্ব নিচ্ছি। উমর(রা) বললেন।
- কিন্তু অনুমতি ছাড়া অন্যের বাড়িতে হস্তক্ষেপ করলেন কেন? সে কারণও বলতে হবে আপনাকে।
-জনাব ! এই নালা বেয়ে পানি পড়তো। কখনো কখনো মুসল্লিদের কাপড়ও নষ্ট হয়ে যেত। মুসল্লিদের সুবিধা ও আরামের দিকে লক্ষ্য করেই আমি এমনটি করেছি। আমার ধারণা, আমি অন্যায় করিনি।
-এর জবাবে আপনার কিছু বলার আছে, আব্বাস? আদালতের প্রশ্ন।
হযরত আব্বাস(রা) বললেনঃ অবশ্যই বলার আছে, আদালত! আমার মনে আছে, প্রিয় নবী(সা) এর হাতে লাঠি ছিল। লাঠি দিয়ে তিনি মাটিতে ক'টি চিহ্ন এঁকে দিলেন। আর আমাকে বললেন- সেই চিহ্ন অনুসরণ করে ঘর বানাতে। আমি তাই করলাম। আমার ঘর যখন তৈরি হয়ে গেল , তখন রাসূলুল্লাহ(সা) বললেনঃ আব্বাস! আমার কাঁধের উপর ওঠ এবং এখানে পানি সরে যাবার নালাটি লাগিয়ে দাও। আমি বেয়াদবি মনে করলাম। বললাম; এ কি করে সম্ভব! হুযুর আমাকে বারবার বলতে লাগলেন। অগত্যা রাসূল(সা) এর কাঁধে চড়েই আমি নালাটি স্থাপন করেছিলাম। রাসূলের যুগে এটি সেখানেই ছিল। প্রথম খলীফার আমলেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু আপনি আমিরুল মুমিনীন, আমার সেই নালাটি উঠিয়ে ফেলেছেন। সত্যি আমি মর্মাহত।
- এই ঘটনার কোন সাক্ষী আছে আব্বাস? আদালত জানতে চাইলেন।
হযরত আব্বাস(রা) বললেনলঃ শুধু সাক্ষী, অসংখ্য সাক্ষী আছে।
কাজী উবাই বললেনঃ তাহলে সাক্ষী ডাকুন। ফয়সালা এখনই হয়ে যাবে।

হযরত আব্বাস(রা) বাইরে গেলেন। কয়েকজন আনসারী সাহাবী(রা)সহ আদালতে প্রবেশ করলেন। তাঁরা সকলেই বললেন - হ্যাঁ, আমরা তখন উপস্থিত ছিলাম যখন রাসূল(সা) তাঁর চাচা হযরত আব্বাস(রা)কে রাসূলের কাঁধে চড়ে এই নালাটি স্থাপন করেতে বলেছিলেন।
অবনতে মস্তকে দাঁড়িয়েছিলেন এতক্ষণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শাসক উমর(রা) । এবার এগিয়ে এলেন ধীর কদমে হযরত আব্বাস(রা) এর কাছে। কাছে এসে অনুশোচনা জানালেন। অবনমিত কণ্ঠে বলতে লাগলেন- আবুল ফযল! আমি ঘুণাক্ষরে জানতাম না এটা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ(সা) স্থাপন করিয়েছিলেন। অন্যথায় আমি ভুল করেও এমনটি করতাম না। রাসূলের নালা ওঠাবার হিম্মত কার আছে- তুমিই বল! যতটুকু হয়েছে ভুলক্রমে হয়েছে।আমার এই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত এই হতে পারে, আপনি আমার কাঁধের উপর উঠে নালাটি যথাস্থানে স্থাপন করবেন।
বিচারক উবাই বললেন- হ্যাঁ, আমিরুল মুমিনীন ! এটাই ইনসাফের কথা এবং আপনাকে এমনটিই করতে হবে।

থমথমে পরিবেশ। রা নেই কারো মুখে। ধীর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন আমিরুল মুমিনীন হযরত আব্বাসের বাড়ির দিকে। সকলের অপলক দৃষ্টি উমর(রা) দিকে। বিশ্বের পরাক্রমশীল শক্তি কায়সার-কিসরা-রুম-পারস্য যার তলোয়ারের কাছে পরাজিত, কম্পমান পৃথিবী যার নামে, সে উমর দেয়ালের কোল ঘেঁষে দাঁড়ালেন যেন পাথরের সিঁড়ি হয়ে। তাঁর কাঁধে চড়ে আপন ঘরের ছাদে নালা স্থাপন করছেন তাঁরই প্রজা হযরত আব্বাস(রা)
পৃথিবীর কোন ইতিহাসে এর তুলনা পাওয়া যাবে কি? নিশ্চয়ই না। তাঁর সে ইনসাফ সকলকেই বিস্মিত হয়েছিল। হৃদয়টি গলে গিয়েছিল হযরত আব্বাসেরও। তাই নালাটি স্থাপনের পর তিনি বলেছিলেন-
"আমিরুল মুমিনীন! একটি অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যেই আমি এতখানি করেছি। আপনি আমাকে মাফ করে দিবেন এবং আমি আমার এই বাড়িটি আল্লাহর নামে ওয়াকফ্‌ করে দিচ্ছি। আপনি ইচ্ছে করলেই ওটাকে ভেঙ্গে মসজিদে নববীর অংশে হিসেবে শামিল করে নিতে পারেন।"

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১১

ঘুরে যান আমার মাইক্রোফটো ব্লগ জগত থেকে। ভাল লাগবে নিশ্চিত


ব্যস্ততার ফাঁকে ছবি তুলতে পছন্দ করি।আমার প্যাশন বলা চলে।এসেলার বা ডিএসেলার নাই।ডিজিক্যাম দিয়ে তোলা কিছু ছবি আমার অনেক পছন্দের।আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছি।

শিশির জমে আছে মাকড়শার জালে।ঠিক মুক্তোর মত।তাই না?


একটি জবা।গোধুলির ঠিক আগে তোলা।


একটি ফুটন্ত গোলাপ।


দেখুন তো।পাতার রঙ এর সাথে কিরকম মিলে গেছে অসাধারন সুন্দর প্রজাপতিটির রঙ।


রোদের আলোয় রঙ্গন।


একটি শিশির বিন্দু।বটগাছের একটি শীর্ষে।


প্রজাপতিটি মধু খাচ্ছে।

রান কামন্ডের সংক্ষিপ্ত সংকেত ......।। না পড়লে মিস করবেন

কোন প্রোগ্রামকে সহজে চালু করতে রানে (Start+R চেপে) গিয়ে উক্ত প্রোগ্রামের সংক্ষিপ্ত রূপ লিখে ok করলেই সেই প্রোগাম চালু হয় । 
যদিও বেশিরভাগ প্রোগ্রামই সরাসরি চালু করা যায় । নিচে দরকারি বেশ কিছু রান কামন্ডের (উইন্ডোজ এক্সপি) সংক্ষিপ্ত সংকেত দেওয়া হলো ।

একসেসিবিলিটি কন্ট্রোলস – access.cpl
একসেসিবিলিটি উইজার্ড – accwiz
এড হার্ডওয়্যার উইজার্ড – hdwwiz.cpl
এড/রিমুভ প্রোগ্রামস – appwiz.cpl
এডমিনিষ্ট্রিটিভ টুলস – control admintools
অটোমেটিকস আপডেট – wuaucpl.cpl
ব্লু-টুথ ফাইল ট্রান্সেফার উইজার্ড – fsquirt
ক্যালকুলেটর – calc
সার্টিফিকেটস – certmgr.msc
ক্যারেকটার ম্যাপ – charmap
চেক ডিক্স (ডস) – chkdsk
ক্লিপবোর্ড ভিউয়ার – clipbrd
কমান্ড প্রোম্পট – cmd
কম্পোনেন্ট সার্ভিস – dcomcnfg
কম্পিউটার ম্যানেজমেন্ট – compmgmt.msc
কন্ট্রোল প্যানেল – control
ইউজার একাউন্টস – control userpasswords2
ডেট এন্ড টাইমস – timedate.cpl
ডি.ডি.ই শেয়ার্স – ddeshare
ডিভাইস ম্যানেজার – devmgmt.msc
ডাইরেক্ট এক্স – dxdiag
ডিক্স ক্লিনআপ – cleanmgr
ডিক্স ডিফ্রাগমেন্ট – dfrg.msc
ডিক্স ম্যানেজমেন্ট – diskmgmt.msc
ডিক্স পার্টিশন ম্যানেজার – diskpart
ডিসপ্লে প্রোপার্টিস – control desktop
ডিসপ্লে প্রোপার্টিস – desk.cpl
ড: ওয়াটসন ফর উইন্ডোজ – drwtsn32
ড্রাইভার ভেরিফায়ার ম্যানেজার – verifier
ইভেন্ট ভিউয়ার-eventvwr.msc
ফাইল এন্ড সেটিংস ট্রান্সেফার টুল – migwiz
ফাইল সিগ্নেচার ভেরিফিকেশন টুল – sigverif
ফাইন্ড ফার্ষ্ট findfast.cpl
ফোল্ডার প্রোপার্টিস – control folders
ফন্টস – control fonts
ফন্টস ফোল্ডার – fonts
গেম কন্ট্রোলারস – joy.cpl
গ্রুপ পলিসি এডিটর – gpedit.msc
হেল্প এন্ড সাপোর্ট – helpctr
হাইপারটার্মিনাল – hypertrm
আই.এক্সপ্রেস উইজার্ড – iexpress
ইনডেক্সসিং সার্ভিস – ciadv.msc
ইন্টারনেট কানেক্‌শন উইজার্ড – icwconn1
ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার – iexplore
ইন্টারনেট প্রোপার্টিস – inetcpl.cpl
কীবোর্ড প্রোপার্টিস – control keyboard
লোকাল সিকিউরিটি সেটিংস – secpol.msc
লোকাল ইউজারস এন্ড গ্রুপস – lusrmgr.msc
উইন্ডোজ লগঅফ – logoff
মাইক্রোসফট চ্যাট – winchat
মাইক্রোসফট মুভি মেকার – moviemk
এমএস পেইন্ট – mspaint
মাইক্রোসফট সিনক্রোনাইজেশন টুল – mobsync
মাউস প্রোপার্টিস -control mouse
মাউস প্রোপার্টিস – main.cpl
নেট মিটিং – conf
নেটওয়ার্ক কানেকশনস – control netconnections
নেটওয়ার্ক কানেকশনস – ncpa.cpl
নেটওয়ার্ক সেটআপ উইজার্ড – netsetup.cpl
নোটপ্যাড – notepad
অবজেক্ট পেজ মেকার – packager
ওডিবিসি ডাটা সোর্স এডমিনিস্ট্রেটর – odbccp32.cpl
অন স্ক্রিন কীবোর্ড – osk
আউটলুক এক্সপ্রেস – msimn
এমএস পেইন্ট – pbrush
পাসওয়ার্ড প্রোপার্টিস – password.cpl
পারফরমেন্স মনিটর – perfmon.msc
পারফরমেন্স মনিটর – perfmon
ফোন এন্ড মডেম অপশনস – telephon.cpl
ফোন ডায়ালার – dialer
পাওয়ার কনফিগারেশন – powercfg.cpl
প্রিন্টারস এন্ড ফ্যাক্স – control printers
প্রিন্টারস ফোল্ডার – printers
রিজিউনাল সেটিংস – intl.cpl
রেজিষ্ট্রি এডিটর – regedit
রেজিষ্ট্রি এডিটর – regedit32
রিমোট একসেস ফোনবুক – rasphone
রিমোট ডেক্সটপ – mstsc
রিমুভাল স্টোরেজ – ntmsmgr.msc
রিমুভাল স্টোরেজ অপারেটর রিকোয়েষ্ট – ntmsoprq.msc
রেজাল্টেন্ট সেট অপ পলিসি – rsop.msc
স্ক্যানার এন্ড ক্যামেরা – sticpl.cpl
শিডিউল টাস্ক – control schedtasks
সিকিউরিটি সেন্টার – wscui.cpl
সার্ভিসেস – services.msc
শেয়ার্ড ফোল্ডার – fsmgmt.msc
উইন্ডোজ শার্ট ডাউন করা – shutdown
সাউন্ডস এন্ড অডিও – mmsys.cpl
সিস্টেম কনফিগারেশন এডিটর – sysedit
সিস্টেম কনফিগারেশন ইউটিলিটি – msconfig
সিস্টেম ইনফোমেশন – msinfo32
সিস্টেম প্রোপার্টিস – sysdm.cpl
টাস্ক ম্যানেজার – taskmgr
টিসিপি টেষ্টার – tcptest
টেলনেট ক্লাইন্ট – telnet
ইউজার একাউন্ট ম্যানেজার – nusrmgr.cpl
ইউটিলিটি ম্যানেজার – utilman
উইন্ডোজ এড্রেস বুক – wab
উইন্ডোজ এড্রেস বুক ইমপোর্ট ইউটিলিটি – wabmig
উইন্ডোজ এক্সপ্লোরার – explorer
উইন্ডোজ ফায়ারওয়াল – firewall.cpl
উইন্ডোজ ম্যাগনিফায়ার – magnify
উইন্ডোজ ম্যানেজমেন্ট – wmimgmt.msc
উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ার – wmplayer
উইন্ডোজ ম্যাসেঞ্জার – msmsgs
উইন্ডোজ সিস্টেম সিকিউরিটি টুলস – syskey
আপডেট লাঞ্চ – wupdmgr
উইন্ডোজ ভার্সন – winver
উইন্ডোজ এক্সপি টুর – tourstart
ওয়ার্ড প্যাড – write


কোন প্রকার ভুল হলে ক্ষমা করবেন । যদি কাজে লাগে তাহলে দয়া করে comments কইরেন ......।।:D

দুঃস্বপ্নের দুঃসময়....


ঝুলবারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। গভীর রাত, শুনশান নিরবতা। ঘুমিয়ে পড়া শহর দেখতে ভালোই লাগছে। কেমন যেনো মায়া ছড়ানো, যা দিনের আলোয় উবে যায়। রাত জাগা পাখি একটা উড়ে গেলো, অজানা কোনো ঠিকানায়। গভীর রাত নিকষ অন্ধকার হওয়ার কথা থাকলেও, সেটা হয়না। হালকা আলো থেকে যায়। রাত্রিতে বুঝা যায় রাতের সৌন্দর্য। আগে একসময় দেখতামনা এই মায়াময়তা, সৌন্দর্যের প্রকাশ। এখন দেখি কিংবা দেখতে হয়। অভ্যাসের নদীরা পথ খুঁজে নেয়, খুঁজে দিতে হয়না। 

অভ্যাসটা শুরু হয়েছিলো কিশোর বয়স থেকে। দুঃস্বপ্নের প্রচন্ড তাড়া খেয়ে উঠে বসতাম গভীর রাতে। শীতের রাতেও ঘামতাম অবলীলায়। কখনো কোনো পশু আমাকে তাড়া করে ফিরতো। কখনোবা আমি পড়তে থাকতাম সুউচ্চ কোনো স্থান থেকে। যে পড়ার আদি কিংবা অন্ত নেই। থাকতো শুধু শূন্যতা। কখনোবা দেখতাম এলোমেলো ছবি যার কোনো মাথামুন্ডু নেই, মিলাতে গেলে আরো বিশৃঙ্খ্যল হয়ে যেতো ছবিগুলো। রুপ নিতো ভয়ঙ্কর কোনো বস্তুর। হয়তো নিজেই পরিবর্তিত হতাম অন্যকিছুতে কিংবা পরিবর্তিত বস্তুর তাড়নায় ঘুরে ফিরতাম। এক একটা রাত ছিলো দুঃসহ। যার দরুন রাত পরিনিত হয়েছিলো ঘুমের সমাধিক্ষেত্রে। অসহ্য যন্ত্রনায় কাটতো এক একটা রাত। নিঃসঙ্গ রাত। একাকীত্বের রাত। 

রাত্রীর উপভোগ্যতা টের পেয়েছিলাম কিছুদিন পরেই। যান্ত্রিক যুগের কৃত্তিম বলয়ে নিজেকে সঁপে দিয়ে। খুঁজে পেয়েছিলাম আমার মত অসংখ্য যন্ত্রনায় দগ্ধ মানুষকে। যাদের সংস্পর্শে আমার রাতো আলোকিত হয়ে উঠছিলো, হয়ে উঠছিলো বর্ণিল। একসাথে আমরা ভাগাভাগি করে নিয়েছিলাম রাতের দুঃস্বপ্নকে যা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হয়ে উঠেছিলো নির্জীব। তার নির্জীবিতা আমাদের কাছে ছিলো উল্লাসের বিষয়, আমাদের উপভোগ্যের বিষয়, তামাশার বিষয়। তাকে কাঁটাছেড়া করতাম জীববিজ্ঞানের ল্যাবের ব্যঙ এর মত করেই, সে বেঁচে থাকুক কিংবা মরে যাক সে বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ ছিলো কমই। ভালো লাগতে শুরু করেছিলো রাতের চাঁদ, হিমেল হাওয়ার পরশ। অন্ধকারে জেগে থাকা স্ট্রীট ল্যাম্পের মায়া ছড়ানো আলো। তেমনি কোনো এক রাতে আমার সাক্ষাত হয়েছিলো পৃথিবীর সবচেয়ে মায়া ছড়ানো মানুষটির সাথে, কোনো এক য়ান্ত্রিক সভ্যতার ঘরে। তার হাসি, খুশি, ক্রোধ, কিংবা হেয়ালী সব কিছুই মায়াময় মনে হতো। কথা হতো আমাদের কবিতার ছন্দ মিলানোতে, কথা হতো জীবন যুদ্ধের কঠিন সময় নিয়ে, কথা হতো গল্পের উপসংহার নিয়ে। হয়তো মিলে যেতো আমাদের অধিকাংশই। কিংবা মিলিয়ে নিতাম জয় পরাজয়ের মাধ্যমে। যেখানে পরাজয়ের স্বাদই ছিলো বেশি আনন্দের। তার মন খারাপটুকু নিয়ে নিয়ে হাসি ফিরেয়ে দেওয়াই সচেষ্ট ছিলাম, ছিলাম স্বপ্ন দেখায়। স্বপ্ন গুলো আকাশ ছোঁয়া হলেও বাস্তবতায় নিয়ে আসায় সচেষ্ট ছিলাম। স্বপ্ন দেখতাম হাসিমুখের, স্বপ্ন দেখতাম হাটছি দুজনায় কোনো উত্তাল সাগরের পাশ দিয়ে একে অন্যের বাহুডোরে আবদ্ধ হয়ে। সূর্যটা উঠছে কিংবা ডুবছে সেদিকে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই, আমরা হাটছি পানির সমান্তরালে সামনের দিকে পিছনে ফেলে দুঃস্বপ্ন, দুঃসময়কে। 

ঝুলবারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। রাত্রি উপভোগ করছি। হিমেল পরশ শরীর জুড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে। স্বপ্ন পুরনে কয়েক ধাপ বাকি। তারপর একটি হাত আমার হাতের মুঠোর ভিতর থাকবে, যখন সুউচ্চ স্থান থেকে পড়বো সে আঁকড়ে ধরে রাখবে। কখনোবা ঘর্মাক্ত আমার ঘাম মুছিয়ে দিয়ে প্রশ্রয়ের হাসি দিবে। পরিবর্তিত যন্তুর সামনে সে দাত কেলিয়ে হাসবে কিংবা আমরা দুজনেই হাসি দিয়ে ভড়কে দেবো তাকে। আমরা হবো দুঃস্বপ্নের দুঃসময়।

মাতৃভূমির জন্য দয়া করে সবাই ভোট দিন.....


ফেসবুকে পেলাম তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। এর আগে হয়তো কোন ব্লগার ভাই এটা শেয়ার করে থাকতে পারেন। তারপরও দিলাম।

----""" টিপাইমুখ বাঁধ বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের জন্য দরকার ১ লক্ষ সাইন। আর তাই সাইন করতে হবে আমাদের। আসুন, মাত্র ২টা মিনিট সময় ব্যয় করি দেশের জন্য।
First Name, Last Name, Email, Address, City এই ঘরগুলো পূরণ করুন। State ঘরে পাশে Outside U.S. এ ক্লিক করুন। দেখবেন State শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে Country হয়েছে। এইবার সেখান থেকে Bangladesh সিলেক্ট করুন। Post Code এ আপনার এলাকার পোস্ট কোড দিন। তারপর Sign এ ক্লিক করে পিটিশনে সাইন শেষ করুন।
এই লিঙ্কে যান -
Click This Link
এই লিঙ্কে যান -
দেশের জন্য ২ টা মিনিট সময় দিন, আর কিছু না হোক অন্তত নিজের বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থাকবেন।।"""

মোহরানা স্ত্রীর অধিকার, স্বামীর করুনা নয়

লেখাটা শুরু করার আগে কয়েকটা ঘটনা উল্লেখ করতে চাই।

ঘটনা-১

আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়তাম তখন আমার এক ক্লাসমেটের বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের ঘটনা বর্ননা দিতে গিয়ে এক সময় বলে ফেলে যে, “জানিস বাসর রাতে দুলাভাই আপাকে বলেছে যে মোহরানা মাফ না করে দিলে দুলাভাই নাকি আপাকে ছুবে না”। আমি বললাম, “কেনো? এইটা আবার কি কথা! তারপর তোর আপা কি করলো?” সে বলল, “কি আর করবে,মাফ করে দিল”।

ঘটনা-২

আমার এক কলিগের বিয়ে। বিয়ের সময় বৌ এর জন্য সৌদি আরব থেকে লেটেস্ট ডিজাইনের গহনা আনিয়েছে। গলার-কানের সেট। চুড়ি আনাতে চেয়েছিল কিন্তু সম্ভব হয়নি। বিয়ের সময় তার বড় ভাবীর দুটো চুড়ি আর নতুন কেনা গহনার সেট বৌকে দেয়। কাবিনে উল্লেখ করে যে, গহনা দিয়ে মোহরানা উসুল করা হলো। বিয়ের এক সপ্তাহ পরে বলল, “চুড়ি দুটো দিয়ে দাও।
চুড়ি দুটো ভাবীর। তোমাকে পরে সুযোগ মত বানিয়ে দিব”।নতুন

বৌ দিবে না। আর এদিকে ভাবীও তার চুড়ি না নিয়ে যাবে না। শেষে নতুন বৌ পরাজিত হলো।

ঘটনা-৩

আমার ছোট ভাইয়ের বন্ধু। দেশের বাইরে থাকতো। বিয়ে করতে দেশে এসেছে। বিয়ের পর দেশেই থাকবে। মেয়ে পছন্দ হয়েছে। তো কথাবার্তা সব ঠিকঠাক। কাবিন নিয়ে কথা বলার সময় বিয়ে প্রায় ভেঙ্গে যায় অবস্থা। কেনো? কারন ছেলের কথা হলো যে, সে তার সামর্থের বাইরে মেয়েকে মোহরানা দিতে পারবে না। মেয়েরা বলছে তিন লাখ টাকা দিতে হবে। ছেলে বলছে ৫০০ ডলারের বেশী দিতে পারবে না। যাই হোক, শেষে সেখানেই বিয়ে হলো। বিয়ের সাথে সাথেই মেয়ের হাতে ৫০০ ডলার দিয়ে দিল।

ঘটনা-৪

কিছুদিন আগে আমার পরিচিত এক মেয়ের বিয়ে হলো।ছেলে ভালোই চাকরি করে।তো সেই মেয়ের কাবিন হলো ১৪ লাখ টাকা। ভালো চাকরি করার পরও এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য ছেলের নেই। কিন্তু মেয়েরা নাছোরবান্দা। কম টাকার মোহরানা হলে আত্মীয় স্বজনের কাছে নাকি তারা মুখ দেখাতে পারবে না। এক পর্যায়ে মেয়ে পক্ষের কথাই মানতে হলো। গহনা দিয়ে কিছু উসুল করলো এবং বাকিটা পরে দেওয়া হবে বললো।

ঘটনা-৫

আমার এক পরিচিত ব্যাক্তি বিয়ের সময় মোহরানা ধার্য করলো ৫ লাখ টাকা। উসুল দেখানো হলো গহনা দিয়ে ৩ লাখ টাকা। বলা হলো পরে দু’লাখ দেওয়া হবে। বিয়ের দশ বছর পর কোন এক কারনে জানা গেলো যে গহনা যা দেওয়া হয়েছিল তা তিন লাখ টাকার না। আরো কম। বাকী দ’লাখ টাকার কথা স্বামী ভুলে গিয়েছে।

ঘটনাগুলো পড়লেন তো? এখন মূল কথায় আসি। মোহরানা মেয়েদের অধিকার। এটা কোন হেলা ফেলার বিষয় না। স্বামীর কোন করুনা না। বিয়ের পর স্ত্রীকে বাধ্যতামুলক ভাবে তার প্রাপ্য মোহরানা দিতে হবে। নিয়ম হলো বিয়ের সাথে সাথেই মেয়ের হাতে তার মোহরানা দিয়ে দেওয়া। স্ত্রীর কাছে মাফ চাইলে যদি স্ত্রী মাফ করে দেন তাহলে সেটা মাফ হবে না।স্ত্রী যদি স্বামীর ব্যবহারে খুশী হয়ে বা ভালবেসে মাফ করে, তাহলে সেটা মাফ হবে। কেউ যদি অন্যের কাছ থেকে ধার করে এনে মোহরানা দেয় আবার বিয়ের পর সেই মোহরানা স্ত্রীর কাছ থেকে নিয়ে ধার শোধ করে (ঘটনা-২ এর মত), তাহলে সে ক্ষেত্রে বিয়ে কতটুকু হালাল হবে সন্দেহ আছে। অথচ এমন অহরহই ঘটছে। আবার ঘটনা ৫ এর মত ঘটনা দেখা যায়। এখানেও কি বিয়েটা হালাল হবে? অনেক পরিবারে বিশেষ করে উচ্চবিত্তের পরিবার গুলোতে দেখা যায় যে, মোহরানার টাকা যত বেশী হয় ততই তাদের সম্মান বেশী। কয়েকদিন আগে পেপারে পড়লাম চিটাগাং এ একজনের বিয়েতে মোহরানা দিয়েছে ৫০ লাখ টাকা।খুব ভালো হবে যদি তা পরিশোধ করা হয়।নিয়ম হচ্ছে ছেলের সামর্থ অনুযায়ী ছেলে মোহরানা পরিশোধ করবে। সামর্থের বাইরে মোহরানার জন্য জোর করলে সেটাতো জুলুম হবে। আর পরিশোধ করতে না পারলে সংসারে শুরু হবে অশান্তি। যেমনটা ঘটনা ২ এর বেলায় ঘটেছে।এই ঘটনার পাত্র-পাত্রীর বিচ্ছেদ হয় বিয়ের দুই বছরের মাথায় সেই চুড়ির জন্য। আমি আমার আশেপাশের বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করেছি তাদের মোহরানা সম্পর্কে। বেশীরভাগ মহিলারাই এ ব্যাপারে একদম সচেতন না। অনেক শিক্ষিত মহিলারা জানেন না যে মোহরানা দেওয়া স্বামীর জন্য ফরয।আর অনেকে জানলেও সংসারে ঝামেলা এড়ানোর জন্য এ ব্যাপারে কোন কথা বলেন না। আমি কাজের বুয়া এবং তাদের আশেপাশের মানুষের সাথে কথা বলে যা বুঝলাম, সেটা হলো যে তারা শুধু জানে বিয়ের সময় একটা কাবিন ধরা হয় এবং সেটা বিয়ে করার সময় এমনি কাগজে লেখার জন্যই লেখা। তবে এমন পুরুষের সাথে কথা হয়েছে যে কিনা তার মোহরানা অর্ধেক পরিশোধ করেছে আর বাকিটা প্রতি মাসে মাসে দিচ্ছে। আল্লাহ কি বলেছেন মোহরানার ব্যাপারে? সুরা নিসার ৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে-“নারীদের তাদের মোহরানার অংক একান্ত খুশি মনে তাদের দিয়ে দাও। অতঃপর তারা যদি নিজেদের মনের খুশিতে এর কিছু অংশ তোমাদের দেয়, তাহলে তোমরা তা খুশি মনে ভোগ করতে পারো”। লক্ষ্য করুন, আয়াতে বলা হয়েছে যে, খুশি মনে মোহরানা দিয়ে দিতে। তার মানে মন খারাপ বা নিমরাজী হয়ে দেওয়া ঠিক না।কিন্তু আজকাল ঘটনা ৪ এর মত এত ঘটনা ঘটছে যে কয়জন ছেলে যে খুশি মনে মোহরানা দেয়, তা আল্লাহই ভালো জানেন। অনেক মহিলার সাথে কথা বলার সময় একটা দীর্ঘনিশ্বাস এবং চাপা দুঃখের হাসি দেখেছি। এমন অবস্থাও হয়েছে যে তারা তাদের হাসি দিয়ে আমাকে বলছে, “এই বেকুব কি বলে? আমার সংসারে কি আগুন লাগাতে চায় নাকি”? না, আমি কারো সংসারে আগুন লাগাতে চাই না। শুধু বলতে চাই যার যেটা প্রাপ্য তার সেটা পাওয়াই উচিত এবং অবশ্যই সেটা সুন্দর সমঝোতার মাধ্যমে। এ ব্যাপারে নারী আন্দোলনকারীদের বলবো, “প্লিজ সম অধিকার নয়, কারন নারী-পুরুষ কখনোই সমান হতে পারবে না, আপনারা নারীর যে প্রাপ্য আছে সেটা আদায়ের জন্য আন্দোলন করুন, মানুষকে সচেতন করুন”। 

পৃষ্ঠাসমূহ