মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১১

বিরোধী দলকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে-- বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম


মন বড় অশান্ত। মানুষ বড় বেশি দুশ্চিন্তায়। রাস্তাঘাটে ঠিকভাবে চলা যায় না। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সময় হিসাব করে যাওয়া যায় না। এই তো গত ২০ তারিখে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সড়কে এক দুর্ঘটনায় ৮-১০ ঘণ্টা দেরিতে যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছেছে। বাজারঘাটের হিসাবও মেলে না। বাড়ির গৃহিণীরা আগামীকাল ক’টাকার বাজার করবে, সারারাত হিসাব করে সকালে বাজারে গিয়ে দেখে হিসাব মিলছে না। মানুষের চাকরি নেই, তেমন কোনো কর্মসংস্থানও নেই।
নাক-মুখ মুছে মহাজোট বললেও আইনশৃঙ্খলা খুবই খারাপ। জোর যার মুল্লুক তার মতো অবস্থা। গর্ব করে আমরা গণতান্ত্রিক সমাজের কথা বলছি; কিন্তু তেমন মূল্যবোধ আমাদের কারও মধ্যে নেই। আস্তে আস্তে বিরোধী দলকে, বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দলকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। সারা জীবন দেখে এলাম শাসক যত শক্ত হয়, তাদের বাঁধন তত টুটে। যে যত জনপ্রিয় হয়, পৃথিবীতে হিমালয়ের উপর উচ্চতা নেই, একদিক দিয়ে সর্বোচ্চ শৃঙ্গে উঠলে তারপর অন্যদিক দিয়ে আবার নিচের দিকে নামতেই হয়। এটাই নিয়ম। জন্মের পর মৃত্যু, একে সহজ ভাবে নিতে পারাই ভালো। 
আজ যে অনাদৃত, কাল সে-ই হতে পারে মধ্যমণি। বিষয়টি মনে না রাখা বোকামির কাজ। এ ধরনের অশান্ত অবস্থায় কোনো বিবেকবান মানুষের হৃদয় শান্ত থাকে না। আরও অস্বস্তি ও অশান্তি বোধ করছি, আমাদের সরকার কেমন যেন জনসাধারণকে অবিশ্বাস করে একের পর এক দেশের স্বার্থবিরোধী কাজ করে চলেছে। অন্যদিকে পরিপকস্ফ ভারত সরকার, তারাও কেমন যেন অপকস্ফ আচরণ করছে। সরকার অথবা আওয়ামী লীগের সঙ্গে খাতির হলেই সেটা গোটা বাংলাদেশের সঙ্গে খাতির এমন বলা যায় না। 
কেউ কেউ বলছেন, বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক সব থেকে ভালো। কথাটা গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট হতে পারে। গত কয়েক মাস ধরে আমার তো মনে হয় পাকিস্তান জমানার শেষের দিকেও বাংলাদেশের মানুষ ভারতকে এত অবিশ্বাস করত না, অপছন্দ করত না—যতটা এখন করে। গত তিন বছরে না হলেও এক বছরে বাংলাদেশ-ভারত প্রিয়তায় ধস নেমেছে। যারা এক বছর আগেও ভারতকে সম্মান করত, মর্যাদা দিয়ে কথা বলত, তারা এখন সবাই বিরক্ত। সত্যিকার অর্থেই দেশটা শুধু আওয়ামী লীগের না, বিএনপিরও না। এসবের বাইরেও একটা বিরাট বাংলাদেশ আছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ