শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১১

অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু রয়েছে, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোনো রোগ রয়েছে, পেঁচা ও ছফর মাসের মধ্যে অশুভ ও খারাবী রয়েছে- বিশ্বাস করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘সূরা লুকমান’-এর ১৩ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, তোমরা আল্লাহ পাক উনার সাথে কোনো কিছুকে শরীক করো না।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু রয়েছে, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোনো রোগ রয়েছে, পেঁচা ও ছফর মাসের মধ্যে অশুভ ও খারাবী রয়েছে- বিশ্বাস করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
মূলত মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী আক্বীদা সংক্রান্ত ইলম অন্তর্ভুক্ত না থাকার কারণে অনেকেই এরূপ কুফরী-শিরকী আক্বীদা পোষণ করে থাকে।
এরূপ কুফরী, শিরকী আক্বীদা থেকে বেঁচে থাকা সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব।
তাই ৯৭ ভাগ মুসলমান দেশের সরকারের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে ইসলামী আক্বীদা সংক্রান্ত ইলম অন্তর্ভুক্ত করা।
যে কোনো বিষয়ে অশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করা ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ। যেমন, অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু রয়েছে, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোনো রোগ রয়েছে, পেঁচার মধ্যে ও ছফর মাসের মধ্যে অশুভ ও খারাবী রয়েছে বলে বিশ্বাস করা ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ। 

আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এরূপ ভ্রান্ত আক্বীদা-বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই। পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই। তারকার (উদয় বা অস্ত যাওয়ার) কারণে বৃষ্টি হওয়াও ভিত্তিহীন এবং ছফর মাসে অশুভ বলতে কিছু নেই।”

ছফর মাস সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে- খাছ করে ছফর মাসের মধ্যে কোনো প্রকার অশুভ ও খারাবী নেই। আর আমভাবে কোনো মাস ও দিনের মধ্যেই খারাবী বা অশুভ বলতে কিছু নেই।


মাস-দিন-সময়কে খারাপ বলার অর্থ হলো, মহান আল্লাহ পাক উনাকে খারাপ বলা। কেননা, মাস-দিন-সময় এগুলো আল্লাহ পাক তিনিই সৃষ্টি করেছেন ও নিয়ন্ত্রণ করেন।

হাদীছ-এ কুদসী শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “আদম সন্তান মাস-দিন-সময়কে গালি দিয়ে, সমালোচনা করে, খারাপ বলে আমাকে কষ্ট দেয়। অথচ আমিই এর সৃষ্টিকর্তা এবং আমার নির্দেশেই এরা পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ আমিই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করি।” তাই ছফর মাসসহ কোনো মাস-দিন-সময়কেই খারাপ ও অশুভ বলা বা মনে করা যাবে না। যদি কেউ তা বলে বা মনে করে তবে সে কুফরী-শিরকী করার গুনাহে গুনাহগার হবে।

‘বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, শরহুত ত্বীবী শরহুস সুন্নাহ ইত্যাদি কিতাবের হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “কোনো বিষয়কে অশুভ কুলক্ষণে মনে করো না, তবে শুভ লক্ষণ আছে। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) উনারা আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! শুভ লক্ষণ কি? তখন তিনি বললেন, উত্তম কথা, যা তোমাদের মধ্য হতে কেউ শুনতে পায়।”

‘তিরমিযী শরীফ, মাওয়ারিদ, মিশকাত শরীফ এ বর্ণিত আছে, আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে কোনো বিষয়কেই অশুভ ও কুলক্ষণে মনে করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তিনি এ বাক্যটি তিনবার উল্লেখ করেন।” 
রোগ-ব্যাধি সম্পর্কে সঠিক আক্বীদা হলো -কোনো রোগই সংক্রামক নয়। কাজেই রোগ-ব্যাধিকে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে মনে করা কুফরী-শিরকীর অন্তর্ভুক্ত। হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত আছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “কোনো রোগই সংক্রামক নয়। পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই এবং ছফর মাসের মধ্যেও অশুভ কিছু নেই। তখন এক ব্যক্তি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাহলে উটের এ অবস্থা হলো কেনো? যে উটগুলো ছিলো জংলী হরিণের মত তরু-তজা, যেগুলো ময়দানে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতো। এমতাবস্থায় কোথা হতে এক চর্মরোগাক্রান্ত উট এসে সে উটের পালে মিলিত হলো এবং উটগুলোকে চর্মরোগী বানিয়ে দিলো। অর্থাৎ এ উটগুলোও খুজলীযুক্ত হয়ে গেল। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আচ্ছা তাহলে প্রথম উটটির চর্মরোগ কোথা থেকে হলো? অর্থাৎ প্রথম উটটি যেভাবে খুজলীযুক্ত হয়েছিল ঠিক পরবর্তী উটগুলোও সেভাবে খুজলীযুক্ত হয়েছে।” (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ, শরহুস সুন্নাহ) এ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, ইসলামে ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোন রোগ নেই। তাই ছোঁয়াচে বিশ্বাস করা কুফরী-শিরকীর অন্তর্ভুক্ত।

মূলকথা হলো- অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু রয়েছে, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোন রোগ রয়েছে, পেঁচা ও ছফর মাসের মধ্যে অশুভ ও খারাবী রয়েছে- বিশ্বাস করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। মূলত মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী আক্বীদা সংক্রান্ত ইলম অন্তর্ভুক্ত না থাকার কারণে অনেকেই এরূপ কুফরী আক্বীদা পোষণ করে থাকে। এরূপ কুফরী, শিরকী আক্বীদা থেকে বেঁচে থাকা সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব। তাই ৯৭ ভাগ মুসলমান দেশের সরকারের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে ইসলামী আক্বীদা সংক্রান্ত ইলম অন্তর্ভুক্ত করা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ