মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১১

ঢাবি 'গ' ইউনিটে ভর্তি প্রশ্নে আবারও ভুল .

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে 'গ' ইউনিটে পুনঃভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও ভুল ধরা পড়েছে। প্রশ্নপত্রের 
হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবসায় নীতি অংশে কমপক্ষে ১০টি প্রশ্নে ভুল রয়েছে বলে দাবি করেছেন অনুষদেরই দুই শিক্ষক। ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা অবশ্য বলছেন, দুটি প্রশ্নে ভুল ধরা পড়ায় সব পরীক্ষার্থীকেই এর নম্বর দেওয়া হয়েছে। 
জানা গেছে, ২০ ডিসেম্বর পুনঃভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মজিবউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী অধ্যাপক মোঃ মিজানুর রহমান 'গ' ইউনিটের প্রশ্নে ১০টি ভুল আছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে জানান। তাদের দাবি অনুযায়ী হিসাববিজ্ঞান অংশের যে প্রশ্নগুলোতে ভুল আছে সেগুলো হলো_ (সেট ১ অনুযায়ী) ২, ৩, ৭, ১০, ১৩, ১৯, ২০ ও ২২ নম্বর প্রশ্ন। এর মধ্যে ৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তরে ভুল, ১৩ নম্বর প্রশ্ন ভুল, ৭ ও ২০ নম্বর প্রশ্নে একাধিক উত্তর, ১০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর নেই, ১৯ নম্বর প্রশ্নের কাঠামোতে ভুল এবং ২২ নম্বর প্রশ্নটি অস্পষ্ট বলে দাবি করেন তারা। এ ছাড়া ব্যবসায় নীতি অংশের ৮ ও ২২ নম্বর প্রশ্নে ভুল আছে বলেও তারা দাবি করেন। 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মজিবউদ্দিন আহমেদ ও মোঃ মিজানুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দুই শিক্ষক কিছু ভুল আছে বলে জানিয়েছিলেন। ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা প্রশ্ন মূল্যায়ন করে এর সত্যতা পাননি। 
'গ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সরোজ কুমার সাহা বলেন, প্রশ্নপত্রের অনুবাদে কিছু ভুল ছিল। ফল দেওয়ার আগেই ভুলগুলো সংশোধন করে ফল দেওয়া হয়েছে। কোন কোন প্রশ্নে ভুল ছিল তা জানতে চাইলে তিনি কমিটির প্রধান উপ-উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। 
উপ-উপাচার্য হারুন-অর-রশীদ দুটি প্রশ্নে ভুলের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, একটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল না (৩ নম্বর প্রশ্ন) এবং অন্য একটি প্রশ্নের টাইপে (১৩ নম্বর প্রশ্ন) ভুল ছিল। দুটি প্রশ্নের নম্বরই সব শিক্ষার্থীকে দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়েছে। কিছু শিক্ষক পুনরায় ভর্তি পরীক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে প্রশ্নের অহেতুক ভুল ধরছেন বলে দাবি করেন তিনি।
গত ২৮ অক্টোবর 'গ' ইউনিটে ৯৮০টি আসনের বিপরীতে ৩৮ হাজার ৮৫৫ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। ৩১ অক্টোবর ফল প্রকাশ করা হলে ২ হাজার ৭২৭ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। প্রত্যাশিত ফল না পেয়ে ১ নভেম্বর অনেক শিক্ষার্থী উত্তরপত্র মূল্যায়নে ভুল আছে বলে অভিযোগ করেন। বিষয়টি সাংবাদিকরা কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরলে উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়ন করে ২ নভেম্বর আবার ফল প্রকাশ করা হয়। সেখানে পাস করেন ৬ হাজার ৯৪ জন। 
১৯৪ শিক্ষার্থী প্রথমবার প্রকাশিত ফলের মেধাতালিকায় সামনে থেকে পেছনে চলে যান আর ৩৯ জন অকৃতকার্য হন। এরপর কয়েকশ' শিক্ষার্থী আবারও ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানালে ১৯ নভেম্বর রাতে ডিনস কমিটির জরুরি সভায় ফল বাতিল করা হয়। এ পর্যায়ে পুনর্মূল্যায়িত ফল বাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১২ শিক্ষার্থী রিট আবেদন করেন। ৭ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
গত ২০ ডিসেম্বর পুনঃভর্তি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩৭ হাজার ৯৭৩ জন। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৭৪৮ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। উত্তীর্ণ হয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৬ জন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

পৃষ্ঠাসমূহ