ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে তারা হলেন বৃহস্পতির ভার্যা (স্ত্রী)। আর অত্রি মুনির পুত্র চন্দ্র দেব হলেন বৃহস্পতিমুনির শিষ্য। অবাধ্য শিষ্য বললে ভুল হবে না। যে শিষ্য তার গুরুর স্ত্রীর সাথে বলপূর্বক সঙ্গম করতে পারেন তাকে অবাধ্যই বলা চলে। বলপূর্বক সঙ্গমের ফলে তারা দেবী গর্ভবতী হন। তারাদেবীর গর্ভে চন্দ্রদেবের ঔরসে পুত্র 'বুধ' এর জন্ম হয়। ইনি সেই চন্দ্র, ব্রহ্ম বৈবর্ত পুরাণের কবির বর্ণনা মতে যিনি ভাদ্র মাসের চতুর্থ তিথীতে আকাশে অবস্থান করেন। চন্দ্র কোন মানুষের নাম নয়, চন্দ্র দেবতা হলেন উজ্জল আলো রিচ্ছুরণকারী পৃথিবী গ্রহের একমাত্র উপগ্রহ। তারাদেবীর সাথে চন্দ্রের এই অবৈধ আচরণের কথা মহামুনি বৃহস্পতি জেনে গেলেন। তিনি স্বর্গদেব দেবরাজ ইন্দ্রের কাছে নালিস দিলেন। ইন্দ্রদেব স্বর্গের
অপরাপর সকল দেবতাগণদেরকে এই ঘটনা বর্ণনা করলেন। জগতের সংহার কর্তা মহাদেব শিব একথা জানার পর যোদ্ধা বেশে চন্দ্রের অনুসন্ধান করতে লাগলেন। কিন্তু চন্দ্রদেব গুরু শুটের সাহায্যে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করে ব্রহ্মার আশ্রয় গ্রহণ করলেন। কিন্তু তারপরও তিনি বাঁচতে পারেননি। তারাদেবী ও বৃহসপতির শাপে (অভিশাপে) চন্দ্র রাহুগ্রস্থ হল। সেই থেকে নাকি চন্দ্রগ্রহণ শুরু হল।
সুন্দর নিতম্ব শোভে নবীন যৌবন। (নিতম্ব = স্ত্রীলোকের
পূর্ণিমার চাঁদ সম সুন্দর বদন \\ কটিদেশ বা পাছা)
পক্ক বিম্বফল সম ওষ্ঠ ও অধর।
বঙ্কিম লোচনে দেবী চাহে নিরন্তর \\
স্নান শেষে চলে নিজ ভবনের পানে।
হেরি চন্দ্র জর্জ্জরিত হয় কামবাণে \\
লজ্জা পরিত্যাগ করি কহে শশধর। (শশধর = চন্দ্র)
শনি মোর কথা ধনি হইয়া তৎপর \\
রমণী-প্রধানা তুমি ওগো রুপবতী।
তোমারে হেরিয়া আমি মোহিত যে অতি \\
তব পতি বৃহস্পতি বৃদ্ধ অতিশয়।
তাহার সঙ্গমে তব কিবা সুখ হয় \\
কামবাণে প্রপীড়িত তোমার অন্তর।
বৃদ্ধ পতি সহ কেন রহ নিরন্তর \\
রুপবান যুবা আমি তুমি রুপবতী।
এস সুখ ভোগ করি যুবক যুবতী \\
মধুর বসন্তকাল আগত এখন।
গন্ধভারে আকুলিত কুসুম-কানন \\
মনোহর শয্যা রচি চম্পকের বনে।
মহাসুখে রতি-ক্রীড়া কর মোর সনে \\
শুনিয়া চন্দ্রের এই সকাম বচন।
রোষভরে তারাদেবী কুহলা তখন \\
ওরে ওরে পাপাশয় কুলাঙ্গার শঠ।
ধিক তোরে শত ধিক পাষন্ড লম্পট \\
তৃণসম আমি তোরে করি হেয়জ্ঞান।
হীনমতি তুই অতি দুরাত্মা প্রধান \\
পরকামিনীর প্রতি লোভ যার হয়।
সর্ব্ব কর্ম্মে অশুচি সে অতি নীচাশয় \\
আমার সতীত্ব নাশ করিলে এখন।
রাজযক্ষ্মা হবে তোর আমার বচন \\
শুনিয়া তাহার বাক্য ভীত নাহি হয়।
শশাঙ্ক তারার হাত ধরে সে সময় \\ (শশাঙ্ক = চন্দ্র)
কামেতে আকুল হ'য়ে রথেতে উঠায়।
জাহ্নবীর তীর ছাড়ি রথ বগে যায় \\
নন্দন বনেতে কভু পুষ্পিত কাননে।
পুষ্কর তীর্থেতে আর ভদ্রকের বনে \\
এইরুপে বগদিন করিল শৃঙ্গার। (শৃঙ্গার = রতি\\ীড়া)
অনন্তর মনে ভয় জম্মিল তাহার \\
(সূত্রঃ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, পৃষ্ঠা- ২৩০-২৩১, অনুবাদক- সুবোধচন্দ্র মজুমদার, প্রকাশক-শ্রীঅরুণচন্দ্র মজুমদার, দেব সাহিত্য কুটীর প্রাইভেট লিমিটেড, ২১, ঝামাপুকুর লেন, কলিকাতা-৯)
অপর অনুবাদকের ব্রহ্ম বৈবর্ত্ত পুরাণের ৫৯৩ পৃষ্ঠায় তারাদেবী ও চন্দ্রদেবের বর্ণনা এভাবে পাওয়া যায়-
পরমা সুন্দরী তারা নবীন যৌবনা।
বদন চন্দ্রিমা পূর্ণ সুচারু নয়না।
রুত্নে ভুষণ আর সরুবস্ত্র পরি।
উচ্চ স্তন সুশ্রোনি সুন্দর বেশ ধরি \\
কবরীতে মালতীর মালার বেষ্টন।
কপালে সিন্দু বিন্দু নাসাগ্রে চন্দন।
নয়নে কজ্জল শোভা মনোহর অতি \\
মুক্ত পংক্তি সম দন্তপংক্তি নিরমল।
রত্নে কুন্ডলে গন্ড হয়েছে উজ্জ্বল \\
স্বর্ণ মন্দাকিনী তারা জলে স্নান করি।
ভিজা বস্ত্রে বাড়ি যায় চিত্তানন্দ করি \\
ভাদ্র মাসে চতুর্থীতে চন্দ্রের গমন।
তারাকে দেখিয়া চন্দ্র কামে অচেতন \\
ক্ষণেকে চেতন পেয়ে নিকটে আইল।
তারাকে ধরিয়া চন্দ্র রথে উঠাইল \\
মদনে উন্মত্ত অঙ্গ করি আশ্লেষণ।
কামাতুর হয়ে করে বদনে চুম্বন \\
সঙ্গম করিতে চন্দ্র উদ্যত হইল।
দেখিয়া ত ভয়ে তারা কহিতে লাগিল \\
ছাড় মোরে ওরে চন্দ্র কুলের অঙ্গার।
বৃহস্পতি গুরু তব আমি পত্নী তার \\
তারার বচন চন্দ্র কিছু না শুনিল।
সম্ভোগ করিতে পুনঃ উদ্যত হইল \\
পতিব্রতা তারা সতী ক্রোধে দেন শাপ।
রাহুগ্রস্থ হয়ে দুষ্ট ভুহিঞ্জবে সন্তাপ \\
সুখ সম্ভোগের স্থানে কোকিলের ধ্বনি।
মধুপানে মধূকর করয়ে নিস্বনি।
নানা মতে সঙ্গম করিয়া তারা সহ।
পরে জ্ঞান প্রাপ্তে হইল দেবের সন্দেহ।
(সূত্রঃ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, পৃষ্ঠা- ৫৯৩, বাংলায় অনুবাদিত)
সূত্রঃ "ভ তে ভগবান ল-তে লীলা" লেখকঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
অপরাপর সকল দেবতাগণদেরকে এই ঘটনা বর্ণনা করলেন। জগতের সংহার কর্তা মহাদেব শিব একথা জানার পর যোদ্ধা বেশে চন্দ্রের অনুসন্ধান করতে লাগলেন। কিন্তু চন্দ্রদেব গুরু শুটের সাহায্যে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করে ব্রহ্মার আশ্রয় গ্রহণ করলেন। কিন্তু তারপরও তিনি বাঁচতে পারেননি। তারাদেবী ও বৃহসপতির শাপে (অভিশাপে) চন্দ্র রাহুগ্রস্থ হল। সেই থেকে নাকি চন্দ্রগ্রহণ শুরু হল।
সুন্দর নিতম্ব শোভে নবীন যৌবন। (নিতম্ব = স্ত্রীলোকের
পূর্ণিমার চাঁদ সম সুন্দর বদন \\ কটিদেশ বা পাছা)
পক্ক বিম্বফল সম ওষ্ঠ ও অধর।
বঙ্কিম লোচনে দেবী চাহে নিরন্তর \\
স্নান শেষে চলে নিজ ভবনের পানে।
হেরি চন্দ্র জর্জ্জরিত হয় কামবাণে \\
লজ্জা পরিত্যাগ করি কহে শশধর। (শশধর = চন্দ্র)
শনি মোর কথা ধনি হইয়া তৎপর \\
রমণী-প্রধানা তুমি ওগো রুপবতী।
তোমারে হেরিয়া আমি মোহিত যে অতি \\
তব পতি বৃহস্পতি বৃদ্ধ অতিশয়।
তাহার সঙ্গমে তব কিবা সুখ হয় \\
কামবাণে প্রপীড়িত তোমার অন্তর।
বৃদ্ধ পতি সহ কেন রহ নিরন্তর \\
রুপবান যুবা আমি তুমি রুপবতী।
এস সুখ ভোগ করি যুবক যুবতী \\
মধুর বসন্তকাল আগত এখন।
গন্ধভারে আকুলিত কুসুম-কানন \\
মনোহর শয্যা রচি চম্পকের বনে।
মহাসুখে রতি-ক্রীড়া কর মোর সনে \\
শুনিয়া চন্দ্রের এই সকাম বচন।
রোষভরে তারাদেবী কুহলা তখন \\
ওরে ওরে পাপাশয় কুলাঙ্গার শঠ।
ধিক তোরে শত ধিক পাষন্ড লম্পট \\
তৃণসম আমি তোরে করি হেয়জ্ঞান।
হীনমতি তুই অতি দুরাত্মা প্রধান \\
পরকামিনীর প্রতি লোভ যার হয়।
সর্ব্ব কর্ম্মে অশুচি সে অতি নীচাশয় \\
আমার সতীত্ব নাশ করিলে এখন।
রাজযক্ষ্মা হবে তোর আমার বচন \\
শুনিয়া তাহার বাক্য ভীত নাহি হয়।
শশাঙ্ক তারার হাত ধরে সে সময় \\ (শশাঙ্ক = চন্দ্র)
কামেতে আকুল হ'য়ে রথেতে উঠায়।
জাহ্নবীর তীর ছাড়ি রথ বগে যায় \\
নন্দন বনেতে কভু পুষ্পিত কাননে।
পুষ্কর তীর্থেতে আর ভদ্রকের বনে \\
এইরুপে বগদিন করিল শৃঙ্গার। (শৃঙ্গার = রতি\\ীড়া)
অনন্তর মনে ভয় জম্মিল তাহার \\
(সূত্রঃ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, পৃষ্ঠা- ২৩০-২৩১, অনুবাদক- সুবোধচন্দ্র মজুমদার, প্রকাশক-শ্রীঅরুণচন্দ্র মজুমদার, দেব সাহিত্য কুটীর প্রাইভেট লিমিটেড, ২১, ঝামাপুকুর লেন, কলিকাতা-৯)
অপর অনুবাদকের ব্রহ্ম বৈবর্ত্ত পুরাণের ৫৯৩ পৃষ্ঠায় তারাদেবী ও চন্দ্রদেবের বর্ণনা এভাবে পাওয়া যায়-
পরমা সুন্দরী তারা নবীন যৌবনা।
বদন চন্দ্রিমা পূর্ণ সুচারু নয়না।
রুত্নে ভুষণ আর সরুবস্ত্র পরি।
উচ্চ স্তন সুশ্রোনি সুন্দর বেশ ধরি \\
কবরীতে মালতীর মালার বেষ্টন।
কপালে সিন্দু বিন্দু নাসাগ্রে চন্দন।
নয়নে কজ্জল শোভা মনোহর অতি \\
মুক্ত পংক্তি সম দন্তপংক্তি নিরমল।
রত্নে কুন্ডলে গন্ড হয়েছে উজ্জ্বল \\
স্বর্ণ মন্দাকিনী তারা জলে স্নান করি।
ভিজা বস্ত্রে বাড়ি যায় চিত্তানন্দ করি \\
ভাদ্র মাসে চতুর্থীতে চন্দ্রের গমন।
তারাকে দেখিয়া চন্দ্র কামে অচেতন \\
ক্ষণেকে চেতন পেয়ে নিকটে আইল।
তারাকে ধরিয়া চন্দ্র রথে উঠাইল \\
মদনে উন্মত্ত অঙ্গ করি আশ্লেষণ।
কামাতুর হয়ে করে বদনে চুম্বন \\
সঙ্গম করিতে চন্দ্র উদ্যত হইল।
দেখিয়া ত ভয়ে তারা কহিতে লাগিল \\
ছাড় মোরে ওরে চন্দ্র কুলের অঙ্গার।
বৃহস্পতি গুরু তব আমি পত্নী তার \\
তারার বচন চন্দ্র কিছু না শুনিল।
সম্ভোগ করিতে পুনঃ উদ্যত হইল \\
পতিব্রতা তারা সতী ক্রোধে দেন শাপ।
রাহুগ্রস্থ হয়ে দুষ্ট ভুহিঞ্জবে সন্তাপ \\
সুখ সম্ভোগের স্থানে কোকিলের ধ্বনি।
মধুপানে মধূকর করয়ে নিস্বনি।
নানা মতে সঙ্গম করিয়া তারা সহ।
পরে জ্ঞান প্রাপ্তে হইল দেবের সন্দেহ।
(সূত্রঃ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, পৃষ্ঠা- ৫৯৩, বাংলায় অনুবাদিত)
সূত্রঃ "ভ তে ভগবান ল-তে লীলা" লেখকঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন